আমি মুভি, সিনেমা কিংবা ওয়েব সিরিজ নিয়ে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করি না। মাঝে মাঝে অবসরে বিনোদনের অংশ হিশেবে সাউথ ইন্ডিয়ান মুভি দেখা হয়। এর মধ্যেও যেগুলোর মধ্যে সাসপেন্স বা থ্রিল পাওয়া যেতে পারে এমন মুভি খুঁজে খুঁজে দেখি। থ্রিল পাওয়া যায় হরর এবং সাইকো কিলিং/ মার্ডার কেইস/ডিটেকটিভ এর উপর করা মুভিগুলোতে। বলিউডকে ফেলে সাউথ সিনেমা এগিয়ে যাওয়ার মধ্যে একটা কারণ হিশেবে আমি মনে করি তারা দর্শকের প্রধান আগ্রহের বিষয়গুলো আগে ধরে ফেলতে সফল হয়েছে এবং মানসম্পন্ন মুভি উপহার দিচ্ছে। সাউথ ইন্ডিয়ান মুভিগুলোতে প্রায় সবসময় একটা সচেতনতা, শিক্ষামূলক ভাব তুলে ধরতে চায় হোক সেটা রোমান্টিক মুভি। তা যাকগে!
আমি সাইকো থ্রিলার মুভিতে আসি। বর্তমানে সবার আলোচনা ও আগ্রহের শীর্ষে আছে সাইকো থ্রিলার মুভিগুলো। আমার দেখা কিছু মুভি যেমনঃ Ratsasan, Mayabhan, Thadam, 369 a murder case, HIT, Agent Sai, Police Story, Seetharam Benoy-case no 18, Warning 2, U-turn, 7th day, Forensic সহ আরও বেশ কয়েকটি। এগুলো বেশ নাম করেছে। নেটফ্লিক্সসহ ওটিটি প্লাটফর্মগুলোয় এখনো নতুন নতুন বের হচ্ছে। এই মুভিগুলোতে এক একটা সিরিয়াল কিলিং মার্ডার কেইস (সত্য ঘটনা অবলম্বনে) তুলে ধরেছে। কিছু আবার গল্প থেকেও বানানো। শুধু সিরিয়াল কিলিং বলেই যে এত হীট হচ্ছে তা কিন্তু না! তারা সাসপেন্স ধরে রাখতে সক্ষম। একটা খুন হওয়ার পর একজন দর্শক প্রাথমিক অনুমান করে নেন- কেন কিভাবে হচ্ছে। পরবর্তীতে ঘটনাকে এমনভাবে ঘুরিয়ে আনা হয় যে দর্শক শেষে অনুমানে হার মেনে নিতে বাধ্য হয় এবং কি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে রোমাঞ্চকর পরিস্থিতির মধ্যে থাকে। সবসময় একটা চিন্তা থাকে যে এরপর কি হবে, এভাবেও হতে পারে ভাবি নি কেন! আর একটা বিশেষ দিক খেয়াল করেছি। সম্ভবত এটা দর্শকদের রুচিশীলতাকে কেন্দ্র করেই। বিষয়টা হচ্ছে এসব মুভিতে গান লাগিয়ে অভিনেত্রী কে নাচানো বা এক্সট্রিম লেভেলের অশ্লীল রোম্যান্স দেখা যায় না। আপনারা হয়তো জানেন Ratsasaan মুভির রিমেক করেছে বলিউড। যেখানে তারা এক মুভিতে ৫ টা গান রেখেছে যদিও আসল মুভিতে কোনো গান/নাচ ছিল না। সাথে রিমেক মুভিতে শিক্ষিকা চরিত্রে অভিনেত্রীর শাড়ি পরার ধরণ দেখে কেউ বলতে পারবে না যে এটা শিক্ষিকার চরিত্র নাকি র্যাম্প শো এর কোনো (অতি আধুনিক) মডেল। এসব জায়গাগুলোতে সূক্ষ্মভাবে কাজ করতে পারায় সাউথ ইন্ডিয়ান থ্রিলার মুভিগুলো ভালো জায়গা নিতে পেরেছে। সাউথ মুভিগুলোতে নায়ক নায়িকার ফেইস ভেল্যু এতটা মাইনে রাখে না। ডিরেক্টরের অভিজ্ঞতা ও নতুন নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীদের অভিনয়ের দক্ষতা দিয়েও খুব সহজে তারা মুভি হীট করে ফেলে। এতে অভিনেতা অভিনেত্রীদেরও ভালো সুযোগ হচ্ছে। আসলেই প্রশংসার দাবিদার।
এখন সিরিয়াল কিলিং, সাইকো পেশেন্ট বা ডিটেকটিভ নিয়ে অনেক মুভি বানানো হচ্ছে৷ এই সেক্টরের টার্গেটেড দর্শকও বেশিদিন আর থাকবে না। সর্বদা সিরিয়াল কিলিং নিয়ে চলতে থাকলে মানুষের আগ্রহ কমে যেতে পারে। এখন নেটফ্লিক্সসহ অনেক মিডিয়া আছে যেগুলোতে সারা পৃথিবীর মুভির স্বাদ নেয়া যাচ্ছে। পছন্দ নির্বাচনে দর্শকদের মধ্যে এর প্রভাব খুব ভালোভাবেই লক্ষ্য করা যায়। দর্শকের পছন্দের সাথে পাল্লা দিয়ে নতুন নতুন সাসপেন্স আনতে পারলে আশা করি সাউথ ইন্ডিয়ান মুভিগুলো মানুষের মন থেকে এত সহজে হারাবে না।
(পরামর্শ ও মন্তব্য জানাতে কার্পণ্য করবেন না)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২২ রাত ১২:০৬