somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যায়নাব রাঃ কে নিয়ে রটনার প্রকৃত ঘটনা।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিবাহ একটি অতি প্রাচীন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রথা। সেই অতি প্রাচীন কাল থেকে আজ পর্যন্ত বিয়েতে ব্যক্তির সুবিধা, পরিবারের সুবিধা, সামাজিক বিষয়াদি, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দিক দেখা হয়ে থাকে। এমনকি কোন কোন বিয়েতে রাজনৈতিক কিংবা আন্ত-রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের স্বার্থও থাকতে দেখা যায়। কিন্তু এতে বিয়ের আসল উদ্দেশ্য ক্ষুণ্ণ হয়না।

নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর জীবনের প্রধান অংশ খাদিজা (রাঃ)-এঁর সাথে কাটানোর পর, তাঁর বয়স যখন পঞ্চাশের ঊর্ধ্বে, তখন তিনি আরও কয়েকটি বিয়ে করেন। এই বিবাহগুলির মধ্যেও পাওয়া যেতে পারে তাঁর ধর্মের প্রচার ও প্রসারের সুবিধা, এবং সামাজিক ও গোত্রীয় বিষয়াদির বিবেচনা। তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে এমনই একজন ছিলেন তাঁরই ফুফাতো বোন হযরত যায়নাব (রাঃ) বিনতে জাহাশ।

তবে অন্যান্য বিয়ের মোকাবেলায় এই বিয়েটি নিয়ে ইসলাম-বিদ্বেষী মহলের অনেকে ভ্রু-কুঞ্চন করে থাকেন। তারা যুগ যুগ ধরে কিছু পরিকল্পিত প্রেক্ষাপট তৈরি করে নানা ধরণের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন।

মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর খুঁত সন্ধানীরা এই ঘটনাকে তাঁর অতৃপ্ত যৌন ক্ষুধা পূরণের ব্যাপার হিসাবে অভিযোগ করেন এবং এই ঘটনাকে অনৈতিক বলে প্রচারণা করেন। আসল ঘটনার ঐতিহাসিক বিচার-বিশ্লেষণে যাবার আগে আমাদেরকে নৈতিকতা বা অনৈতিকতা’র সংজ্ঞা বুঝা দরকার।

আমরা জানি যে, এক দেশের বুলি কখনো অন্য দেশে গালি বলে গণ্য হতে পারে। তেমন করে এক ধর্মে, সভ্যতায়, রাষ্ট্রে কিংবা সমাজে যা অনৈতিক তা অন্য ধর্মে, সভ্যতায়, রাষ্ট্রে কিংবা সমাজে নৈতিকতার মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হয়ে থাকতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ- হিন্দু সমাজে চাচাতো, ফুফাতো, খালাতো, মামাতো বোনকে বিয়ে করা অনৈতিক কাজ। কিন্তু মুসলিম সমাজে শুধু যে নৈতিক তা-ই নয়, ঐ কাজিনদের সন্তানদেরকে বিয়ে করাও অনৈতিকতা নয়।

আবার দেখি হিন্দু সমাজে ক্ষেত্রজ সন্তান গ্রহণ (স্বীয় পত্নীর গর্ভে অন্য পুরুষের দ্বারা সন্তান উৎপাদন)(১) একজন নারীর একাধিক একাদিক স্বামী (২), আপন দুই বোনের এক স্বামী, কুম্ভ বিয়ে যা মানুষের সাথে গাছের বিয়ে,(৩) বিধবা ভাইয়ের স্ত্রীকে স্বামীর ভাইয়ের শয্যা সঙ্গিনী হওয়া (৪), যা কোন অনৈতিকতা নয় বরং আইনসিদ্ধ বলে মান্য করা হয়ে থাকে। তেমন করে- হিন্দু সমাজে রাক্ষস বিয়ে পিশাচ বিয়ে (৫), আইনসিদ্ধ বলে গণ্য করা হয়ে থাকে কিন্তু ইসলামে এই প্রকার বিয়ে নিষিদ্ধ। এই কাজগুলো মুসলিম সমাজে শুধু অনৈতিক-ই নয় বরং পাপ হিসেবে বিবেচিত হয়। (৬)

নৈতিকতা বা অনৈতিকতা গোষ্ঠী, সমাজ, সভ্যতা ও ধর্মে আপেক্ষিক। প্রতিটি জীবন দর্শন গড়ে উঠেছে স্বীয় প্রয়োজনের তাগিদে, তাই প্রতিটি জীবন দর্শন সে প্রেক্ষিতে স্বীয় নৈতিকতার মানদণ্ড প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছিল। কাজেই এক জনগোষ্ঠীর মানদণ্ড দিয়ে অন্য জনগোষ্ঠীর নৈতিকতা পরিমাপ করাটি হলো সব চেয়ে বড় অনৈতিকতা।

তবে অধুনা সভ্য সমাজ বলে যারা দাবি করেন, তারা বলেন যে- ২জন প্রাপ্ত বয়স্ক নর নারী যদি তাদের পারস্পারিক সম্মতি যৌন চাহিদা মিটায় (বিয়ে ছাড়া) তাহলে তা কোন অনৈতিক নয়।

আসুন এবার চোখের ঠুলি আর মনের জিঘাংসার চাদর সরিয়ে ইতিহাসের নান্দীপাঠ থেকে দেখি যায়নাব (রাঃ) ও নবী মোহাম্মদ (সাঃ) বিয়েতে কোন্‌ সত্য কোথায় বিরাজ করছে!

যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) (জন্ম – ৫৮৮ খৃঃ) ছিলেন মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের বিখ্যাত বনি হাশেম গোত্রের জাহাশ পরিবারের মেয়ে। এখন যেমন আমাদের দেশে মন্দির/মাজারের দায়িত্বে থাকেন ব্রাহ্মণ/খাদেম বংশের লোকজন। সে সময় এই কুরাইশ বংশ কাবার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর আপন ফুফু, উমাইমাহ বিনত আব্দ আল মোতালিবের মেয়ে ছিলেন। কাজেই তিনি রক্তের সম্পর্কে মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর আপন ফুফাতো বোন ছিলেন। (৭) এবং ইসলামি বিধি মোতাবেক ফুফাতো বোনের সাথে বিয়ে কোন অনৈতিক কিছু নয়। কিন্তু যারা মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর খুঁত ধরার প্রচেষ্টায় ব্যস্ত তারা কখনো পাঠকদের কাছে এই সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন না। বরং মোটা হেডিং-এ মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর আপন ছেলের বধূ হিসাবে প্রচার চালানো হয়। এই অভিযোগ জঘণ্য মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

মোহাম্মদ (সাঃ)-এঁর আপনজন যারা মক্কা থেকে মদিনায় বাধ্য হয়ে এসেছিলেন, যায়নাব (রাঃ) তাদের মধ্যে একজন ছিলেন। তবে সেই সময় যায়নাব (রাঃ) বিধবা ও নিঃসঙ্গ ছিলেন। রাসুল (সাঃ) উনার জন্য একজন সঙ্গীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি তাঁর পালিত পুত্র যায়েদের (রাঃ) সাথে তার বিয়ের প্রস্তাব দেন। যেহেতু যায়েদ (রাঃ) একজন উঁচু মানের আলেম এবং যায়নাব (রাঃ) একজন দানশীলা মহিলা ছিলেন; রাসুল (সাঃ) তাদের বিয়ের মাধ্যমে তাদের উভয়ের ইসলামী জীবন সমৃদ্ধ হওয়ার চিন্তা করেন। অধিকন্তু এই বিয়ের মাধ্যমে কোরাইশ বংশের সামাজিক উঁচু-নীচু মূল্যবোধের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন মূল্যবোধ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। মানে আন্তবর্ণের বিয়ে ঘটিয়ে যুগ যুগ ধরে চলে বর্ণ বিদ্বেষী প্রথা উচ্ছেদ করতে চেয়েছিলেন। যায়নাব (রাঃ) তাঁর নিজ আত্মীয় বিধায় তাঁর ধারণা ছিল যে এ কাজটি তার জন্য সহজ হবে। কিন্তু যায়নাব (রাঃ) সহ গোটা জাহাশ পরিবার এই প্রস্তাব শুনার সাথে সাথে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন! এবং চরম প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছিলেন। কেউই এ বিয়েতে সম্মতি দেন নাই। অবশেষে কোরানের এই আয়াত নাজিল হয়:-

আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়। (৩৩:৩৬)

আর এই আয়াত নাজিলের পর ৬২৬ খৃঃ যায়নাব (রাঃ) রাজি হয়েছিলেন শুধু আল্লাহ-রসূলের প্রতি তাঁদের আনুগত্যের কারণে। এ বিয়ের কারণে রাসুল (সাঃ) খুব খুশি হয়েছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁদের বিয়েতে উনি প্রচুর উপহার সামগ্রী দান করেছিলেন।

যুগ যুগ ধরে ও বংশানুক্রমের মানুষ যে সংস্কারের মধ্যে জীবন ধারণ করে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে সংস্কারকে এক ঝটকায়, কাপড় বদলানোর মতো কেউ বদলে ফেলতে পারেনা- যায়নাব (রাঃ) ও যায়েদ (রাঃ) এর পারিবারিক জীবনে তা প্রমাণিত হয়। তাদের স্বল্পস্থায়ী দাম্পত্য জীবনে দূরত্ব থেকে গেল। স্বাভাবিক স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বোঝাপড়া বা ভালবাসার যে বন্ধন থাকে তা তাদের মধ্যে আসে নাই।

ইসলামের দৃষ্টিতে-

আল্লাহ্‌ পৃথিবীতে নারী ও পুরুষকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে, সুখ ও শান্তিতে পৃথিবীর জীবনকে উপভোগ করতে পারে। কিন্তু যদি এই বন্ধন সুখের না হয়, তবে তাদের সে বিয়ে ভেংগে দেবারও নির্দেশ দিয়েছেন। (৮)

ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে অসুখী বিবাহ বন্ধন টিকিয়ে রাখার প্রচেষ্টা অপেক্ষা সেই বন্ধন ছিন্ন করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই বন্ধন ছিন্ন করতে হবে উভয়েরই স্বার্থ রক্ষা করে, যাতে কোন পক্ষ ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।

আগেই উল্লেখ করেছি যে, যায়নাব (রাঃ) ছিলেন মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের বনি হাশেম গোত্র আর জাহাশ পরিবারের মেয়ে, আর যায়েদ (রাঃ) ছিলেন বনি কালব/মাখদুম গোত্রের যুদ্ধবন্দী দাস। পরে মোহাম্মদ (সাঃ) উনাকে আযাদ করে পালক পুত্রের মর্যাদা দান করেছিলেন। একদিকে একজন আযাদ দাস অন্যদিকে আমির ঘরের কন্যা, এক দিকে কাল গায়ের রঙের যায়েদ (রাঃ) অন্যদিকে ফর্সা গায়ের রঙের যায়নাব (রাঃ)।

আমরা যদি আরবদের নৃতাত্ত্বিক ইতিহাস দেখি, তাহলে দেখব কোন আরব কালো রঙের নন। যায়েদ (রাঃ)-এর গায়ের রঙ এর জন্য অনুমান হয় উনার পূর্ব পুরুষ হয়তো আফ্রিকান ছিলেন। চরম সভ্যতার উৎকর্ষময় আজকের এই পৃথিবীতে এখনো কালো লোকদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করার মানুষের অভাব নাই। তাই সে যুগে দুই অসম বংশ, অসম সামাজিক অবস্থান ও অসম গায়ের রঙের মধ্যে বিয়ের কথা কেউ ভাবতে পারতো না। এই রকম বিয়ে ছিল চরম অপমানকর এবং অসম্ভব এক কাজ। এই আন্তবর্ণের বিয়ে শুধু ব্যক্তি বা পরিবারের মানদণ্ডে অসম্ভব ছিলনা বরং গোটা অভিজাত শ্রেণীকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল।

ইতিহাসবিদ মন্টোগোমারী ওয়াটের মতে- যায়নাব (রাঃ) নিজে উম্মুল মুমিনীন হবার বাসনা পোষণ করতেন। হ্যাঁ, সেই সময়ে আরবের যে কোন মেয়েদের উম্মুল মুমিনীন হবার বাসনা থাকাটাই স্বাভাবিক ছিল। সহজ ভাবে বললে যেহেতু যায়নাব(রাঃ )এর যোগ্যতা ছিল যে তিনি সে সময়ের আরবের সাইদ মুহাম্মদ (সাঃ) বিবি হয়ে আরব দুনিয়ায় সম্মানিতা হবার। তখনকার সমাজে নেতৃ-পর্যায়ের এবং প্রতাপশালী ব্যক্তি/ সাইদ/ আমির ব্যক্তিদের অপরাপর স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করতে অনেক মহিলা এগিয়ে আসতেন।

আর যায়নাব (রাঃ) তো রসুলের (সাঃ)-এঁর পরিবারের সদস্য ছিলেন। এবং আশৈশব থেকে যৌবন, আর যৌবন থেকে এই পৌঢ়া সময় পর্যন্ত রাসুল (সাঃ)-কে কাছে থেকে দেখে এসেছেন। অবস্থা দৃষ্টে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে, যায়নাবের (রাঃ) এই ইচ্ছার কথা নিশ্চয় রাসুল (সাঃ)-এঁর জানা ছিলনা। থাকলে অবশ্য রাসুল (সাঃ) যায়নাব (রাঃ)-কে পালক পুত্রের কাছে বিয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করতেন না। তখন অন্য কোন আপন জন দিয়ে উনার আন্ত-বর্ণীয় প্রথা ভাংতে চেষ্টা করতেন। কারণ এর আগে আমরা দেখেছি যে, মায়মুনা (রাঃ) যখন রাসুলের (সাঃ) কাছে উম্মুল মুমিনীন হবার অভিপ্রায় জানিয়েছিলেন, তখন রাসুল (সাঃ) তাকে ফিরিয়ে দেন নাই।

আল-কোরআন সকল বৈষম্যকে অস্বীকার করে বলে-

হে মানব, আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি হও। নিশ্চয় আল্লাহ্‌র কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (৪৯:১৩)

এই ঘোষণার বাস্তবায়নের একটি ধাপ ছিল-এই অসম বর্ণ আর শ্রেণির মধ্যে বিয়ে সংগঠন করা। অসম শ্রেণীর মধ্যে বিয়ে ছিল সেই পৌত্তলিক সমাজে এক বিরাট বিপ্লব। তৎকালীন সমাজ ব্যবস্থায় কুঠারাঘাত করে সামাজিক ইনসাফ ও সমানাধিকারের পয়গাম, শুধু মৌখিকভাবে নয়, কার্যত বাস্তবায়নের মাধ্যমে নজির স্থাপন করা; আশরাফ-আতরাফ, আমির-ভিখারি, সাদা-কালো, দাস-মালিক, ব্রাহ্মণ-শূদ্রের সকল সামাজিক বৈষম্যের মোকাবেলা করা। দাসপ্রথা-নির্ভর সমাজের যুগে এ ছিল অচিন্তনীয় এবং অসম্ভব। এই ক্ষেত্রটি ছিল দুই আদর্শ ও মূল্যবোধের মুখামুখি সংঘর্ষ।

যায়েদের (রাঃ) প্রথম ও একমাত্র স্ত্রী ছিলেন না যায়নাব (রাঃ)। বারাকা নামের মোহাম্মদ (সঃ)-এঁর এক মুক্ত দাসীও উনার স্ত্রী ছিলেন। সেই বারাকার গর্ভে এক ছেলে (ওসামা) ও এক মেয়েও (নাম অজ্ঞাত) ছিল। এই বিয়ের মাধ্যমে যায়নাব (রাঃ)-কে শুধু দাসকে বিয়ে নয়, সাথে দাসের অন্য স্ত্রী ও দাস কন্যার সাথে এক বাড়িতে সমান মর্যাদায় থাকতে হয়েছিল।

যায়েদ (রাঃ) ও যায়নাব (রাঃ) এর বিয়ে ভেঙ্গে গেলেও ঐ বিয়ে দ্বারাএতে যুগ যুগ ধরে চলে আসা একটি বৈষম্যমূলক প্রথার দেয়ালে পেরেক টুকে দেয়া হয়েছিল।

একদিকে যেমন যুগে যুগে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার আশরাফদের মিথ্যা আভিজাত্যের মূলে কুঠারাঘাত, অন্যদিকে যুগ যুগ থেকে হতবঞ্চিত দাসদের মধ্যে বুঝিয়ে দেওয়া হল যে- তারাও মানুষ, তাদেরও আছে সমাজের অন্যান্য মানুষের মতো সমাধিকার। আজকের মানুষের পক্ষে এই বিয়ে যে কত বড় বিপ্লব ছিল- তা বুঝার ক্ষমতা হয়তো অনেকের হবেনা। এই নতুন প্রথাকে অবশ্য কায়েমি স্বার্থবাদিরা (মুনাফিক) সহজে মেনে নিতে রাজি ছিলনা। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এইরূপ অনেক প্রথার মোকাবেলা করতে হিমসিম খেয়েছিলেন।

অনেকের আজকে বুঝতে কষ্ট হবে মোহাম্মদ (সাঃ) কেন তাঁর অনুসারীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে ভেবে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন? যারা তাঁর জীবনী পড়েছেন তারা জানেন, পৌত্তলিক সমাজের অনেক কিছুকে বদল করতে গিয়ে তাঁকে কতবার তাঁর অনুসারীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়াকে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে সামালাতে হয়েছিল।

যায়েদ (রাঃ) পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে বারংবার উনার সাথে যায়নাব (রাঃ)-এঁর বিয়ে ভেঙ্গে দিতে নবী মোহাম্মদ (সাঃ)-কে অনুরোধ করে যাচ্ছিলেন আর নবী তা শুনে যায়েদকে (রাঃ) এই বিয়ে ভাংতে নিষেধ করেছিলেন এই বলে যে, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় করো। কিন্তু এরপরও যখন যায়েদ (রাঃ) যায়নাব (রাঃ)-কে তালাক দিয়ে দেন তখন সেই ঘটনার উপরে কোরআনের এই আয়াত নাজিল হয়:-

আল্লাহ যাকে (যায়েদ) অনুগ্রহ করেছেন; আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন; তাকে যখন আপনি বলেছিলেন, তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। অতঃপর যায়েদ যখন যয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পোষ্যপুত্ররা তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে। (৩৩:৩৭)

“এখানে আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করেছিলেন” এই বাক্যকে মুনাফিকেরা ভুল ব্যাখ্যা করে বলে যে রাসুল (সাঃ)-এঁর অন্তরে নাকি স্বল্প বসনা যায়নাব (রাঃ) দেখে কামনার লোভ জেগে উঠেছিল! এই ঘটনা যখন ঘটেছিল তখন যায়নাব (রাঃ)-এঁর বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর (৯)।

যায়েদ (রাঃ)-এর বিয়ের আগেও যায়নাব (রাঃ)-এর বিয়ে হয়েছিল। তিনি বিধবা ছিলেন এবং সারা জীবন শুকনো রোগাক্রান্ত শরীরের অধিকারী ছিলেন। কাজেই এই বয়সী মহিলাকে দেখে সাধারণ পুরুষেরই চিত্ত বৈকল্য হবার কথা নয় সেখানে আল্লাহর রাসুল (সাঃ) চিত্ত বৈকল্য হয়ে গিয়েছিল বলা স্রেফ অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু ছিলনা। যদি হত তাহলে যখন যায়নাব (রাঃ) যৌবনে ছিলেন তখন তাকে বিয়ে করতে পারতেন। তাই প্রমাণিত হয় যে এই বিয়েতে মোটেই যৌন আকর্ষণ ছিলনা।

ইসলামের দুশমনরা আগের ঘটনার সাথে পরের ঘটনায় গোঁজামিল মিশিয়ে তাদের অপপ্রচারের ‘ঐতিহাসিক নাটক’ তৈরি করে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) যায়নাব (রাঃ)-কে তার চুল খোলা অবস্থায় দেখার ঘটনা, যায়েদ (রাঃ) কর্তৃক শুধুমাত্র তালাকের পর পর নয় এবং তার ইদ্দতেরও (তিন মাস) পরের। ঘটনাটি এভাবে:-

ইদ্দত শেষ হবার পর রাসূলুল্লাহ যায়েদ (রাঃ)-এঁর মাধ্যমে যায়নাব (রাঃ)-এঁর সাথে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। যায়েদ (রাঃ) প্রস্তাব পেশ করলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত আমি কিছুই করতে যাবনা।’ (বাহা/আনাস/মুসলিম) অতঃপর তিনি আবার তার নামাজের স্থানে দাঁড়িয়ে যান। … (১০)

আর এর পরই এব্যাপারে কোরানের (৩৩:৩৭) আয়াত নাজিল হয়। আয়াতটি মসজিদে পঠিত হয়।

পরের ঘটনা যায়নাব (রাঃ) নিজেই বলছেন,

আমাকে যায়েদ তালাক দেন। তারপর আমার ইদ্দত শেষ হয়। তারপর [অর্থাৎ উপরোক্ত বর্ণনাদির পর] রসুলুল্লাহ আমার গৃহে আসেন, আর আমি বুঝতে পারি যে তিনি আল্লাহর নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছেন। সে সময় (অর্থাৎ তিনি যখন আমার ঘরে আসেন তখন) আমার মাথার চুল খোলা ছিল। (১১)

তাছাড়া যায়নাবের ‘সৌন্দর্য’ হঠাৎ দেখার কিছুই ছিলনা, কেননা যায়নাবকে তিনি ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছিলেন।

আসলে- আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয় করা উচিত। আয়াতের এই অংশটুকুর অর্থ বুঝতে হলে আমাদেরকে সেই সময়ে আরবে প্রচলিত কিছু কুসংস্কারের কথা জানতে হবে।

যেমন- সে সময়ে কোন স্বামী যদি রাগ করে তার স্ত্রীকে বলে ফেলত যে- তুমি আমার মা। ব্যস এই কথার কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ কার্যকর হয়ে যেত। যেটিকে আরবিতে যিহার করা বলে। কিন্তু শুধুমাত্র মুখের উচ্চারণে যেহেতু জেনেটিক ধারা বদলে যায় না, তাই এই তালাক মোটেই যুক্তিসঙ্গত নয়। এই কুসংস্কার বাতিল করতে নীচের আয়াত নাজিল হয়:-

তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর, তাদেরকে তোমাদের জননী করেননি এবং তোমাদের পোষ্যপুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। (৩৩:৬)


কেউ যদি তার বিয়ে করা স্ত্রীকে হাজার বার মা বলে ডাকে তাহলে সেই স্ত্রী কখনও স্বামির সত্যিকারে মা হয়ে যাবেনা। কারণ কারো মুখের কথাতে কেউ কারও মা হয়ে যেতে পারেনা। ঠিক তেমনি কোন ব্যক্তি যদি কাউকে সন্তান বলে স্বীকৃতি দেয়, তার ঐ স্বীকৃতিতে সত্যি সত্যি ঐ সন্তানটি বায়োলজিক্যাল সন্তান হয়ে যায়না। কিন্তু সে সময়ে আরবে পালক সন্তানকে স্বীয় ঔরশজাত সন্তানের মত মনে করা হত এবং পালক পুত্র ঐ ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার যাবতীয় সম্পদের মালিক হয়ে যেত।

রাসুল (সাঃ) যখন বুঝতে পেরেছিলেন যায়নাব (রাঃ)-এঁর উম্মুল মুমিনীন হবার বাসনা, যায়েদ (রাঃ) যায়নাব (রাঃ)-কে তালাক দেবার ঘটনাগুলো যে আল্লাহর অভিপ্রায়। তারপরও প্রচলিত রীতি রেওয়াজকে উপেক্ষা করতে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন। তিনি আশংকা করেছিলেন, এই বিষয় নিয়ে মদিনার মোনাফেকেরা সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে এবং উম্মাহকে বিভ্রান্ত হবে এই শংকায় তিনি তা বারংবার এড়িয়ে যাচ্ছিলেন।

৩৩:৩৭ আয়াত নাজিলের পর আল্লাহর নির্দেশে যায়নাব (রাঃ)-কে উম্মুল মুমিনীনের মর্যাদা দেওয়া হয়। কিন্তু কোন অর্বাচীন যেন মনে করে বসেন না যে- যায়েদ (রাঃ) তালাক দিলেন আর অমনি রাসুল (সঃ) যায়নাব (রাঃ)-কে বিয়ে করে ফেলেন! না, এমনটি মোটেও নয়, তালাকের পর ইসলামিক রীতি অনুযায়ী ইদ্দত এর সময় তালাকের ৩ মাস পর যায়নাব (রাঃ)-কে রাসুল (সঃ) উম্মুল মুমিনীন হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।

এই ঐতিহাসিক ঘটনার পর থেকে- ইসলামে পালক সন্তানের অবস্থান বদল হয়ে যায়। কোন শিশুকে পালক সন্তান নিলেও সেই সন্তান পালক পিতার পরিচয়ে পরিচিত হবার প্রথা বাতিল হয়ে যায়। যিনি লালন পালন করেন না কেন সে শিশু তার জন্ম দাতা পিতার পরিচয়ে নিয়ে থাকতে হবে। সাথে সাথে পালক সন্তান পালক পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রাপ্তির পথও রহিত হয়ে যায়। পালক পিতা যদি ইচ্ছা করেন যে, এই সন্তানকে তিনি কিছু সহায় সম্পত্তি দিয়ে যাবেন তাহলে তার জীবিত অবস্থায় তা দিয়ে যেতে হবে। নতুবা পালক পিতার মৃত্যুর পর পালক সন্তান মৃত ব্যক্তির কিছুই পাবেনা। সারা পৃথিবীতে সেই সময়ে এই দত্তক ধারণা একমাত্র মুশরিক ছাড়া অন্য কোন একেশ্বরবাদী ধর্মে প্রচলিত ছিলনা।

রাসুল(সাঃ)-এঁর আশংকা মতো মোনাফেকেরা এই নিয়ে যেমন অনেক রটনা রটিয়েছিল, এখনও ইসলাম-বিদ্বেষীরা সেই সব রটনা প্রচার করে চলছে। এই সব লোকজন কোরআন-হাদিসের নির্দেশকে মিথ্যা অমূলক দাবি করে থাকলেও- যদি কিছু ইসলাম বা মোহাম্মদ (সাঃ) বিপক্ষে যায় এবং তাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ করে এমন কিছু পায়, যার কোন ঐতিহাসিক প্রামাণিকতা নাই, তথাপি সেই সব অপ্রমাণিত মিথ নিয়ে জোরেশোরে গোয়েবলসী অপপ্রচার চালিয়ে যায়।

আর এই অপপ্রচারের সুযোগ করে দিয়েছেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগের এক মুসলিম ঐতিহাসিকের আল-ওয়াকিদীর (৭৮৪-৮২২ খৃঃ) সংকলিত, প্রধান দুটি গ্রন্থ: কিতাবুসসীরাহ ও কিতাবুততারিখ ওয়াল মাজাগী ওয়াল মাবআস। এই ওয়াকিদী ইতিহাসের উপদান সংগ্রহের নামে সনদবিহীন অত্যন্ত দুর্বল ঘটনা বর্ণনা করে গেছেন। যারা সেই সময়ে এই ওয়াকাদীর কঠোর সমালোচনা করেছেন তারা হলেন ইমাম শাফিয়ী, আলখাতিব আল-বাগদাদী, আয-যাহাবী, ইবন মুমীন, দারকুৎনী, ইবন আদি এবং আরও অনেকে।

শাফেয়ী (রঃ) বলেন, তার রেওয়ায়াৎ ‘পুঞ্জিভূত মিথ্যা’, ইমাম আহমদ তাকে ‘ঘোর মিথ্যাবাদী’ বলেছেন। তবে তার গ্রন্থে গ্রহণীয়-বর্জনীয় উভয়ের সমাহার আছে, তাই বিশেষজ্ঞরা তার লিখা বিবেচনার সাথে দেখতে পারেন। কিন্তু ইসলাম বিদ্বেষীরা আল-ওয়াকিদীর দুর্বল বর্ণনাকে তাদের প্রচারণার হাতিয়ার বানিয়ে ব্যবহার করে আসছেন। পরবর্তী ঐতিহাসিক মোঃ ইবন সা’দ (জন্ম ৭৮৪ খৃঃ মৃত্যু ৮৪৫), আল-ওয়াকিদীর একসময়কার সেক্রেটারি, এর সংকলিত ‘কিতাব তাবক্বাত আল কুবরা’য় কিছু কিছু ত্রুটি সংকলিত থেকে যায়। আল-ওয়াকিদীর ব্যাপারে মূল কথা হল তিনি কোন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সংকলক নন।

পাঠকদেরকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি- যায়নাব (রাঃ)-এর সাথে রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এঁর বিয়ে হয়েছিল ৬২৬/২৭ খৃঃ, তার মানে এই আলওয়াকিদীর জন্মের ১২২ বছর আগে। এই ঘটনা লিপিবদ্ধ করা হয় ৮২০ এর কাছাকাছি কোন সময়। তিনি সনদ পরম্পরা দেখিয়ে দিতে পারেন নাই যা ইসলামে হাদিস শাস্ত্রে মুরসাল হাদিস বলে যার গ্রহণযোগ্যতা ইসলামি স্কলারদের কাছে নাই। এই ঘটনা ওয়াকিদী শুনেন- আব্দুল্লাহ আমর আল আসলামীর কাছ থেকে, তিনি শুনেন-মোহাম্মদ ইবন ইয়াহিয়াই ইবন হাব্বানের কাছে থেকে- তিনি শুনেন আবার উমর ইবন সালিমের কাছ থেকে যিনি ৭৩৮ খৃঃ ৭৪ বছর বয়সে মারা যান। তার মানে এই ইবন সালিমের জন্মের আরও ২৮ বছর আগে এই বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর এই সালিম তিনি বলে যান নাই এই ঘটনার কথা তিনি কার কাছ থেকে শুনেছিলেন।

স্বাক্ষী প্রমাণের ভিত্তিতে বোঝা যায় যে, অরিয়েন্টালিষ্ট লেখক, উইলিয়াম মূর বা মারগোলীয়ুথরা মোহাম্মদ সাঃ খুঁত বাহির করার মনোবাসনা নিয়ে হাদিস ঘাটাতে গিয়ে যখন এই সনদ পরম্পরা বিহীন হাদিস পেয়ে যান। তখন এই পাইছিরে- বলে তা বিশ্বে ছড়িয়ে দিলেন। আর তা এন্টি মুসলিমরা লুফে নেয়

এই দাবি যে শুধু ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের তা নয়। পাশ্চাত্যের অনেক লেখক যেমন ক্যারেন আর্মস্ট্রং, মন্টোগোমারী ওয়াট, স্যার জন গ্লাব এ-ধরণের অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

মোহাম্মদ (সঃ)-এঁর লক্ষ্য শুধু মৌখিকভাবে ইসলামের পুনঃ প্রবর্তন নয়, বরং সাথে সাথে স্তূপীকৃত কুসংস্কার, বর্ণ বৈষম্য এবং সামাজিক অবিচার ও অনিয়মের নির্যাতন থেকেও মানবজাতিকে মুক্তি দেওয়া। ইসলামের মূলমন্ত্র হল- সব মানুষ এক। ইসলাম জাতিভেদ প্রথা, বর্ণবাদ প্রথা, ধনী-গরীব, দাস-মালিকের মধ্যে সব ব্যবধানকে প্রত্যাখ্যান করে নতুন এক মানবজাতি গঠন করতে চায়।

তবে এ-কথাও সত্য যে, যুগ যুগ ধরে চলে আসা সামাজিক অনেক প্রথাকে ধর্ম ভেঙ্গে দিলেও তা আবার ফিরে আসে, ভেঙ্গেও যেন সম্পূর্ণ ভাঙ্গা হয়না, অনেক কিছুর জের থেকেই যায়।

সূত্র:-

১. ক্ষেত্রজ বিয়ে
২. এক নারীর একাধিক স্বামী সেকাল এবং একাল
৩. কুম্ভ বিয়ে
৪. ঋগ্বেদ ১০/৪০/২
৫. রাক্ষস বিয়ে,পিশাচ বিয়ে
৬. আল কোরআন আয়াত নং ৫-৫, ৬-১৫১, ১৭-৩২, ২৪-৩ শুধু তাই নয়, আইন ভঙ্গকারীর জন্য শাস্তির বিধান আছে- ৪-১৬, ২৪-২, ৪-১৫
৭. মাওলানা মওদূদি, তাফহিমুল কোরআন অধ্যায় সূরা আল আহযাব (১৯৬৭)
৮. আল কোরআন আয়াত নং ২-২২৯
৯. ক্যারেন আর্মস্ট্রং – মুহাম্মদ মহানবীর জীবনী ২২৯ পৃঃ
১০. (আদ্দিমাশকী, উ, হা, (২০০২), নিসা ফী যিল্লি রাসূলুল্লাহ (সঃ), বাইরূতঃ দার আল কুতুব আল আলামিয়্যাহ, আদ্দিমাশকী, ২০০২, পৃঃ ১৭৫
১১. প্রাগুক্ত ১৭২ -১৮০ পৃঃ

কেউ যদি ব্যক্তিগত ভাবে কিছু বলতে চান তাহলে [email protected] যোগাযোগ করতে পারেন।
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×