somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আফগান মাটিতে এক সপ্তাহ-দ্বিতীয় কিস্তি

২৯ শে জুলাই, ২০০৮ সকাল ৯:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম কিস্তি [si](গত বছর আফগানিস্তানে যাবার সুযোগ হয়েছিল। অফিসিয়াল কারণে। অনেক দিন ধরে ভাবছি আফগান ভ্রমণের টুকরো টুকরো অভিজ্ঞতাগুলো ব্লগের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি। সে প্রয়াসে আজ দ্বিতীয় কিস্তি.....)
প্রস্তুতি পর্ব
আমাদের আফগান সফরের প্রস্তুতির তরী ইতোমধ্যে চলতে শুরু করেছে। বলে রাখা দরকার এ ভিজিটের আবশ্যকীয় মাল-মশলার জোগান দিয়েছে সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টার প্রাইজ। সংক্ষিপ্ত নাম সাইপ। এটি ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা। বিশ্বের প্রায় শতাধিক দেশে কর্পোরেট গভার্নেস, ব্যক্তিখাতের উন্নয়ন, বাজার অর্থনীতির বিকাশ, দুর্নীতি, সুশাসন, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ইত্যাদি ইস্যুতে কাজ করে। সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়াতে চলমান ও ভবিষ্যত কার্যক্রম দেখভাল করার দায়িত্বে আছে মিস ব্রুক মিলিজ। প্রায় সাড়ে ছয় ফুট লম্বা আমেরিকান এ শ্বেতাঙ্গ তরুনী স্বভাবে কিছুটা অন্তর্মুখী। কথা কম বলেন, প্রয়োজনে এবং মেপে মেপে। বলার চেয়ে পর্যবেক্ষণ করেন বেশি। কিন্তু খুবই বুদ্ধিদীপ্ত এবং সহযোগিতাপরায়ণ। তার কর্মনিষ্ঠা এবং আন্তরিক সহযোগিতা যে কাউকে তাকে মনে রাখতে বাধ্য করার মতো। কোন কিছু মনে ধরলে ভনিতা ছাড়াই প্রশংসা করেন। আবার দাপ্তরিক নিয়ম মানা এবং মানানোর ক্ষেত্রে শতভাগ সিদ্ধহস্ত। খুটিয়ে খুটিয়ে বুঝে নেয়ার ওস্তাদ। জবাবদিহী করার প্রায়োগিক ব্যাকরণটা খুব ভালভাবে রপ্ত করেছেন। এ করিৎকর্মা তরুনীটিই যখন সূদুর ওয়াশিংটন থেকে আমাদের আফগান ভিজিটের যাবতীয় আয়োজন সমন্বয় করছেন তখন ভ্রমণ সম্পর্কিত অনেক ভাবনাই ঝেটিয়ে বিদায় দিতে আপত্তি থাকার কথা নয়। আমরাও আপত্তি করিনি। ইলেক্ট্রনিক যোগাযোগের অভূতপূর্ব বিকাশের সূযোগে ব্রুক আমাদের প্রতিদিন আপডেট করছেন। ই-মেইলে। ই-মেইলের বক্তব্যে 'বস' কনভিন্স না হলে তাতেও চিন্তা নেই। রাতের সক্রিয় হয়ে ওঠে বসের সেল ফোনটি। মুঠোফোনে বাতচিৎ চলতে থাকে বস ও ব্রুকের মধ্যে। পরের দিন সকালে আমাকে করণীয় সহ সারমর্মটা জানানো হয়। বসের তথ্যভান্ডারে অদম কর্মচারীর যৎকিঞ্চিৎ প্রবেশাধিকারের সুখকর দৃশ্য ভোগে আমিও প্রীত হই।

বস ও ব্রুকের মধ্যে চলমান দূরালাপনীর বেশির ভাগই দিন, ক্ষণ আর সম্ভাব্য রুট নিয়ে। বস দেশের অন্যতম বিজনেট ম্যাগনেট। সৌখিন সামাজিক কর্মী। ধনতন্ত্রকে সহনীয় করে তোলার টেবলেট হিসেবে বিকশিত ধারণা 'করপোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি'র আওতায় বস বহুমাত্রিক কর্মযজ্ঞের সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং বসের প্রাত্যহিক জীবন মানেই রুটিন মাফিক নিরবিচ্ছিন্ন ব্যস্ততা। ফলে সমস্যাটা দাড়িয়েছে সময় মেলানো। বসের টাইম মেলেতো সাইপের মেলে না। সাইপের মিলেতো বসের মিলে না। আমি নগন্য চাকুরে। ব্যস্ততম ঢাকার নগর জীবনে একজন প্রান্তিক মধ্যবিত্ত। গ্রামীণ শেকড় থেকে বিচ্ছিন্ন কিন্তু শহুরে শেকড় গজাবার সাধ্য নেই, সাধ আছে। স্বাভাবিকভাবে আমার কোন ধরনের 'আভিজাত্যের ব্যস্ততা' থাকতে নেই। নেইও। বিশ্ববিদ্যালয়ের একখান ডিগ্রী আর শ্রমদান ক্ষমতা আমার একমাত্র বিক্রয়যোগ্য পুঁজি। সে পুঁজিকেই সম্বল করেই বাঙালী মধ্যবিত্তের অন্যতম প্রধান মূল্যবোধ 'মানসম্মানের সাথে বেঁচে থাকা'র লড়াইয়ে নাগরিক সৈনিক। অতএব আপাতত: এক শৃঙ্খলেই আমি বন্দী। আধুনিক ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এ শৃঙ্খল চলমান তবে তবে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে স্থায়ী নয়। যেমনটা ছিল দাস সমাজে। চাকরি বদলের সাথে সাথে শৃঙ্খলও বদলায়। কিন্তু শৃঙ্খলরে রঙ, গন্ধ পাল্টায় না। অনেকটা পিতৃতান্ত্রিক ভালবাসায় নারীর অদৃশ্য বন্দী দশার মতো। আমার শৃঙ্খলের তালা-চাবি দু'টোই নিয়োগকর্তা হিসেবে আপাতত বসের কাছে। আভিধানিক অর্থে বস যেহেতু এ সফরে আমার সহযাত্রী সেহেতু এ শৃঙ্খল আমার জন্য কোন বাধা নয়। ব্রুক ও বসের বাতচিতে শেষ পর্যন্ত কী ঠিক হয় তার জন্য অপেক্ষা করাটাই আমার একমাত্র কর্তব্য বলে মনে করলাম।

ঢাকা থেকে কাবুল যাবার সম্ভাব্য রুট তিনটি। ঢাকা-দিল্লী-কাবুল, ঢাকা-দুবাই-কাবুল আর ঢাকা-ব্যাংকক-কাবুল। সাইপ আমাদের তিনটি বিকল্পের যেকোন একটি বেছে নিয়ে তাদের জানাতে অনুরোধ করল। ঢাকার লক্কর-ঝক্কর বাসে কখনো রড ধরে, কখনো আধা সিট নিয়ে চলাচলে অভ্যস্ত মানুষ আমি। আন্তর্জাতিক রুট সম্পর্কে আমার ধারণা 'আদার ব্যাপারীর জাহাজের খোজ নেয়ার মতো। যধারীতি দায়িত্বটা পড়লো বসের কাছে। বস নিজে ভাবেন। এখানে ফোন করেন। মন্তব্য নেন। যাচাই-বাছাইয়ের পথ পরিক্রিমা আমি দেখতে থাকি। দুবাই থেকে সপ্তাহে দু'দিন কাবুলের উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের ফ্লাইট ছেড়ে যায়। সে ফ্লাইট যান্ত্রিক এবং নিরাপত্তার বিচারে অগ্রগন্য। বসেরও ইচ্ছে সে ফ্লাইট ধরা। আমি আফগানিস্তান নিয়ে শুরু থেকে আক্ষরিক অর্থে 'ভীতুর ডিম'। ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা। মনে মনে বলি, বিধাতা যেন বসের ইচ্চাই পূরণ করেন। আফগানিস্তান নির্বাচনের ব্যাপারে বসকে বেশ এ্যাডভেন্সারাস মনে হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে তিনিও কিছুটা ভাবিত। মুখে না বললেও চোখে মুখে প্রকাশিত। যত দিন যাচ্ছে আমি না চাইলেও আমার মনের কোণে নানা দুশ্চিন্তা উকিঝুকি মারে। তালেবানদের চোরাগুপ্তা হামলার নানা কাহিনী দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।

একদিন সকালে বসের ফোন। সরাসরি আমার মোবাইলে। কয়েক সপ্তাহের মেইল চালাচালি আর টেলিসংলাপের আইটপুট হিসেবে নির্দিষ্ট দিন, ক্ষণ আমাকে জানানো হয়। সাথে বিমানের রুটও। জানলাম আমরা দুবাই হয়ে যাচ্ছি। তবে ইউএন ফ্লাইটে নয়, আফগানিস্তানের একটি বিমানে। আফগান প্রশ্নে আমার যাবতীয় ভীতি দু্বাই হয়ে যাচ্ছি এ সংবাদে দূর হয়ে গেল। আমি মহা খুশি। আমার কাছে দুবাই এয়ারপোর্ট 'প্রথম দর্শনে প্রেমে পড়া'র মতো। এর নয়ানভিরাম সৌন্দর্য আর কার্যকর ব্যবস্থাপনা আমাকে প্রথম বারই মুগ্ধ করেছিল। দুবাই এয়ারপোর্ট যেমন আমাকে মুগ্ধতার সাগরে ভাসিয়েছিল ঠিক বিপরীতভাবে লন্ডন হিথ্রো বিমান বন্দর হতাশার সাগরে ডুবিয়েছিল। তাও প্রথম দর্শনে। আমি আমার কল্পনার তুলিতে অনেক দিন আগে দেখা দুবাই এয়ারপোর্টের সৌন্দর্য দেখতে শুরু করলাম। সাথে আরও একটি উত্তেজনাকর সংবাদ যুক্ত হলো। কাবুল যাবার পথে আমাদের একদিন বাধ্যতামূলক বিরতি। দুবাইয়ে। সিদ্ধান্ত হলো দুবাইয়েরও ভিসা নেয়া হবে। এয়ারপোর্টের কোন হোটেল নয়, দু্বাই শহরের হোটেলে থাকবো একরাত। পাগলা ঘোড়ার মতো লাগামহীন মূল্যস্ফীতির বাংলাদেশের জীবনযাত্রায় লড়াকু আমি এখনও বাংলাদেশটাও পুরো ঘুরে দেখার যেখানে সৌভাগ্য হয়নি সেখানে দুবাইয়ে একদিনের বাধ্যতামূলক বিরতি। অনেকটা প্যাকেজ অর্থনীতির যুগে কেনা পণ্যের সাথে ফ্রি পাওয়ার মতো।

ভিসা প্রক্রিয়াকে সহজ ও গতিশীল করার জন্য ব্রুককেই আগেই একটি অনুরোধ জানিয়েছিলাম। বলেছিলাম ব্রুক যেন ঢাকাস্থ আফগান দূতাবাসকে আমাদের ভ্রমণ বৃত্তান্ত জানিয়ে একটি চিঠি দেয়। করিৎকর্মা ব্রুক একটি নয়, দু'টি চিঠির ব্যবস্থা করে। একটি চিঠি সাইপের নির্বাহী পরিচালকের পক্ষ থেকে। অন্যটি সাইপ আফগানিস্তানের চীফ অব পার্টি মিঃ মার্ক এর পক্ষ থেকে। সাথে বস এবং আমি, আমাদের দু'জনের জন্যও সাইপ আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে দু'টি আমন্ত্রনপত্র। আমাদের চাহিদা লিস্টের চেয়ে অনেক বেশি ডকুমেন্টের ব্যবস্থা করে ব্রুক আবারও তার কর্মনিষ্ঠা ও আন্তরিকতার পরিচয় তুলে ধরলেন। মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়ে আমরাও ভীষণ তৃপ্ত।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বসের নির্দেশ মতো ট্রাভেল এজেন্সির কাছে পাঠিয়ে দেয়া হলো। বিজনেস ম্যাগনেট বসের সাথে কাজ করার একটি সুবিধা খুব কাছে থেকে টের পেলাম। ভিসার জন্য কোন ট্রাভেল এজেন্সীতে যেতে হলো না। দূতাবাসেও নয়। সবই বসের মালিকানাধীন ট্রাভেল এজেন্সীর বদৌলতে ব্যবস্থা হয়ে গেল। আমার পরিশ্রম বলতে মোবাইল ফোনে বার কয়েক তথ্য সরবারাহ। তারপর খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। আমাদের জানানো হলো আফগান এবং দুবাইয়ের ভিসা হয়ে গেছে। সাথে এ্যামিরেটসের টিকিটও পাঠিয়ে দিল। আমি বিমান উড্ডয়নে জন্য দিন ক্ষণের অপেক্ষায় থাকলাম.....(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×