ভার্চুয়াল জগৎ বলতে ফেসবুক, ইউটিউব, ইমো,ভাইবার, হোয়াটস আপ, ইমেইল, ইন্টারনেট ইত্যাদির ব্যবহার করে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে নতুন জগৎ তৈরী। এই জগৎ কি বাস্তবে কোন ভূমিকা রাখছে নাকি ভার্চুয়ালে থাকছে ভুয়া জগৎ হিসেবে?
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যারা ভার্চুয়াল জগতের সাথে জড়িত তারা এর ব্যবহার না করে অপব্যবহার করে বেশি। ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রয়োজনের চেয়ে অপ্রয়োজনীয় কাজই বেশি করা হয়। বহিঃবিশ্বে তরুনেরা যেখানে ইন্টারনেটে ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপস ও গেম তৈরি করে ব্যবসা করে প্রচুর আয় করে সেখানে বাংলাদেশের তরুনেরা ভিডিও গেম খেলে মূল্যবান সময় ও অর্থ নষ্ট করে। দ্রুত যোগাযোগের জন্য ইমেইল করুন, ফোন না করলে ইমেইল চেক করা হয় না। ইউটিউব আর ফেসবুক ব্যবহার করা হয় ভুয়া নিউজ বা গুজব ছড়ানোর কাজে। মেসেঞ্জারে কোন ম্যাসেজ পাঠালে না পড়ে লাইক দিয়ে দেয়। আপনি মনে করলেন ম্যাসেজ পাঠিয়েছি, দেখেছে পড়েছে কিন্তু ফলাফল শুন্য জিজ্ঞেস করলে বলবে মেসেজ দেখি না পড়ি নাই। ফেসবুক হতে পারে কারো ব্যক্তিগত নোটিশবোর্ড বা চৌরাস্তায় টাঙানো বিলবোর্ড। তাই বলে আপনার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় এখানে শেয়ার করতে পারেন না। চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করা যেমন অনুচিত তেমনি নিজের ওয়ালে সব কথা লেখা উচিৎ না। অন্যের শেয়ার করা লেখা পড়ে বা ছবি দেখে মূল্যায়ন করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা উচিৎ এবং গঠনমূলক মন্তব্য করা উচিৎ। না পড়ে লাইক এবং ভুল তথ্য শেয়ার করে ভুল কাজের অংশীদার হওয়ার দরকার কি? ভালো কাজের যখন প্রশংসা করা না হয় এবং খারাপ কাজে নিরুৎসাহিত করা না হয় তখন ফেসবুক ব্যবহারের স্বার্থকতা থাকে না।
আমি ভেবেছিলাম বর্তমান সমাজের লোকজন কর্মব্যস্ততার কারনে সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে ব্যক্তি কেন্দ্রীক হয়ে গেছে তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত ফেসবুক,টুইটার,মেসেঞ্জার সবাই কে সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করবে। আশার গুড়ে বালি। এই মাধ্যম গুলোতে মানুষ আরও অসামাজিক। যে সকল খারাপ কাজ মানুষ চৌরাস্তায় না করে ঘরের ভিতরে গোপনে করে তা নির্দিধায় ফেসবুকে শেয়ার করে।
সৃজনশীল কথা বা গঠনভূলক কাজ বা ছবি শেয়ার করলে কেউ চেয়েও দেখে না বরং নেতিবাচক মন্তব্য করে। অপরদিকে খারাপ কথা বা কাজ বা জোকস বা বা ভুয়া নিউজ বা অশ্লীল ছবি প্রকাশ করলে লাইক কমেন্ট আর শেয়ার এর অভাব হয় না। আপনি একটা সৃজনশীল কাজে সামাজিক আন্দোলনের ডাক দেন সবাই চুপ। কারো বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে ফেসবুক সিদ্ধহস্ত। মেসেঞ্জারে সবার সাথে গ্রুপ আলোচনা করবেন অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা করে মেসেজ বক্স ভরিয়ে ফেলবে। ভাষার বিকৃতি ফেসবুকের আর একটা অবদান। যেমন Happy Birthday হয়ে গেছে HBD, Thank You হয়েছে Tanx.
অন্যান্য দেশে যেখানে ফেসবুক ব্যবহার করে ব্যবসা করছে, চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে, ইতিবাচক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলছে সেখানে বাংলাদেশের তরুনেরা ফেসবুক পেয়ে টেক্সট বুক ছেড়ে দিয়ে খারাপ কাজের নেশায় মত্ত হয়ে সোনালী সময় নষ্ট করে সোনার বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায় হয়ে দাড়িয়েছে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪৬