দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে দেশে যেমন অস্থিরতা বিরাজ করছে তেমনি ভালোবাসার মানুষের দেখা পেওে কাছে না পাওয়ার বেদনায় আকাশের মন অস্থিরতায় পরিপূর্ণ। প্রতি সপ্তাহে হরতাল দিয়ে জনগণ ও সরকারকে জিম্মি করে কি পরিবর্তন চায় রাজনৈতিক দলগুলো? প্রতিদিন গাড়ী ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, পেট্রোল বোমা হামলা করে জানমাল ও সরকারি সম্পত্তির ধ্বংস করে কার লাভ? দেশের এই টালমাটাল অবস্থায় আকাশ আর ইশরাতের কথা ভেবে সময় নষ্ট করতে চায় না । দেশের কথা ভাবা তার জন্য উপযুক্ত সময়। মনে পড়ে যায় হেলাল হাফিজের কবিতার কথা,
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
মিছিলের সব হাত/কণ্ঠ/পা এক নয়।
সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,
কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার।
কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসার
শাশ্বত শান্তির যারা তারাও যুদ্ধে আসে
অবশ্য আসতে হয় মাঝে মধ্যে
অস্তিত্বের প্রগাঢ় আহ্বানে,
কেউ আবার যুদ্ধবাজ হয়ে যায় মোহরের প্রিয় প্রলোভনে
কোনো কোনো প্রেম আছে প্রেমিককে খুনী হতে হয়।
যদি কেউ ভালোবেসে খুনী হতে চান
তাই হয়ে যান
উৎকৃষ্ট সময় কিন্তু আজ বয়ে যায়।
এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়।
সেই সাথে ছাত্র রাজনীতির প্রথম দিকে বন্ধু তপনের কথা মনে পড়ে, “আমরা কোন মেয়ে মানুষের প্রেমে না পড়ে, দেশের প্রেমে পড়ে রাজনীতি করছি, এখন থেকে দেশের সাথে প্রেম করবো, দেশকে ভালোবাসবো এবং দেশের জন্য কাজ করব”।
আকাশ দেশের ক্ষমতা পালাবদলের একটা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে আর তা হচ্ছে সচিবলায় ঘেরাও কর্মসূচী। নির্ধারিত দিনে দোয়েল চত্ত্বরে পুলিশি বেষ্টনিতে কর্মসূচী থমকে দাড়ায়। আকাশ শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে এবং আশেপাশের সহযোদ্ধাদের ধ্বংসাত্বক কাজ থেকে বিরত রাখতে চেষ্ট করে। তবে কিছু অতি উৎসাহী কর্মীদের অশালীন আচরণ ও ইট পাটকেল ছোড়ার কারনে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। টিয়ারশেল, ইট পাটকেল ছোড়া ও লাঠিপেটা শেষে সংঘর্ষে আহত পুলিশ-জনতা সবাই এক কাতারে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নেয়।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো মুদ্রার এপিট ওপিট। সবাই চায় ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে দেশের কথা কেউ ভাবে না। আকাশ দেশ ও দশের কল্যানে সুস্থ ধারার রাজনীতিকে বেগবান করার জন্য বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনের সাথে আলাপ আলোচনা করতে থাকে। সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে একটা নতুন রাজনৈতিক দলের কথা ভাবতে থাকে যারা তৃতীয় শক্তি হিসেবে দেশগঠনে ভূমিকা রাখবে নিজেদের জীবন বাঁজি রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, “এ বারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম”।বাঙ্গালী জাতির পিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিলেও বাঙ্গালীকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে পারেন নাই, ব্রিটিশ/বৈদেশিক প্রভুদের দাসত্ব থেকে মানষিক মুক্তি দিতে পারে নাই। তাই আকাশ দীর্ঘদিন ধরে একটা প্লাটফরম খুজঁছিল যেখানে দেশ ও দশের কল্যানে কাজ করে সাধরণ জনগণের মুক্তির মাধ্যমে প্রকৃত স্বাধীন জাতিতে রূপান্তর করতে পারে। নতুন ধারার বিকল্প শক্তি খুঁজতে থাকে আকাশ। এ তো বিশাল জনগোষ্ঠী দেখে আকাশ আশাবাদী যে সকলে যদি মানব সম্পদে পরিণত হয় তবে বাংলাদেশ হবে সম্পদশালী । সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে দেশ হবে সোনার বাংলা। কিন্তু আশার গুড়ে বালি। নিজেদের সম্পদে পরিণত না করে বোঝায় পরিণত করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে দেশের জনগণ। নেতারা দেশ ও জনগণের কথা না ভেবে শুধু নিজের কথা ভাবে। এ যেন সর্ব অঙ্গে ব্যাথা ঔষধ দেব কোথা।
দেশ ও দশের কথা ভাবতে ভাবতে একদিন খবর এলো ইশরাত পরিবারের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছে। ইসরাতের বর ঢাকার বাইরে পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত তাই ইসরাত রাজধানী ঢাকায় বসে এখন আর লাল নীল বাতি দেখে মজা পাওয়া যায় না। ঢাকা বসবাসের দিক থেকে উপযুক্ত নয় তাই বরের সাথে চলে গেল মফস্বল শহরে। কিন্তু আকাশ রাজধানীতে বসে এখনো স্বপ্ন দেখে সোনার বাংলা একদিন সোনার মানুষে ভরে যাবে। তাদের চিন্তায় ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। তাই সুশিক্ষা বিতরণে বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকান্ড করতে থাকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২০