কবির লেখা শেষ কবিতাটি সম্পর্কে নিশ্চিত হলেও প্রথম কবিতা নিয়ে শংশয় আছে। রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞের মতে ১৮৭২ সালের কোনো এক সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভানুসিংহ ছদ্মনামে প্রথম কবিতা প্রকাশ করেন। কবিতাটি হলো-
‘মরণরে তুঁহু মম শ্যাম সমান
তাপ বিমোচন করুণ কোর তব
মৃত্যু অমৃত করে দান
তুঁহু মম শ্যাম সমান।’
তারপর জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন কবি। একে একে সৃষ্টি করেছেন অবিনাশী সব কবিতা। যা মানুষের মনে প্রাণে মিশে আছে রক্তপ্রবাহের মতো।
৩০ জুলাই ১৯৪১ (১৪ শ্রাবণ ১৩৪৮) জোড়াসাঁকোয় জীবন সায়েহ্নে কবি রচনা করলেন শেষ কবিতা। কবি প্রায় আচ্ছন্ন অবস্থায় বলেছিলেন। লিখেছিলেন রানী চন্দ-
তোমার সৃষ্টির পথ
-------------------------
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে
হে ছলনাময়ী!
মিথ্যা বিশ্বাসের ফাঁদ পেতেছ নিপুণ হাতে
সরল জীবনে!
এই প্রবঞ্চনা দিয়ে মহত্ত্বেরে করেছ চিহ্নিত;
তার তরে রাখ নি গোপন রাত্রি।
তোমার জ্যোতিষ্ক তারে
যে পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তারে চিরসমুজ্জ্বল।
বাহিরে কুটিল হোক, অন্তরে সে ঋজু
এই নিয়ে তাহার গৌরব।
লোকে তারে বলে বিড়ম্বিত।
সত্যেরে সে পায়
আপন আলোকে-ধৌত অন্তরে অন্তরে।
কিছুতে পারে না তারে প্রবঞ্চিতে,
শেষ পুরস্কার নিয়ে যায় সে যে
আপন ভাণ্ডারে।
অনায়াসে যে পেরেছে ছলনা সহিতে
সে পায় তোমার হাতে
শান্তির অক্ষয় অধিকার।
[সংগৃহীত]
আসলে আশেপাশে কাছাকাছি আর সমবয়সীদের মৃত্যু দেখে নিজেরও ওই চিন্তা জেগে উঠেছে...অনেকে আবার এমন মুহূর্তে রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে বাঁকা চোখে নেবে!!! তাদের বলি- ‘তোমরা না ইকবালকে নিয়েছ না রবীন্দ্রনাথকে, যাকে যতটুকু দরকার তাকে ততটুকুই নাও না...’
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:১৩