somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অপরাধীদের জেল থেকে পালানোর দুর্ধর্ষ কিছু ইতিহাস

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভারতের এমন পাঁচ জন বন্দি ছিলেন যাদের কারনে ভারত সরকারের রাতের ঘুম এক প্রকার বলা চলে হারাম হয়ে গিয়েছিল। কারন হিসেবে জানা যায় সে বন্দী পাঁচজন জেল থেকে পালাতে গিয়ে এমন সব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন যা আজও সবাইকে শিহরিত করে।এবং অনেকের মাঝেই ইতিহাস হয়ে রইবে। আমার এ পোস্টটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ তেমন পাঁচটি জেল পালানো ইতিহাস নিয়ে।

শের সিংহ রানাঃ
২০০১ সালে ডাকাতরানি ফুলনদেবীকে হত্যা করার পরে তিহার জেলে ঠাঁই হয় শের সিংহ রানার। একদিন নকল পুলিশ সেজে তিহার জেলে হাজির হন শের সিংহ রানার বাল্যকালের বন্ধু সন্দীপ ঠাকুর। আদালতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সে রানাকে নিজের হেফাজতে নিয়ে নেয়। জেল কর্তৃপক্ষের সামনে নকল কাগজপত্র জমা করে। বন্ধুর সাহায্যে সেবার পালিয়ে যায় শের সিংহ রানা।


জগতার সিংহ হায়োরাঃ
বাব্বর খালসার জঙ্গি জগতার সিংহ হায়োরা। ১৯৯৫ সালে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ছিলেন হায়োরা। চণ্ডীগড়ের বুরেইল জেলে বন্দি ছিল সিংহ হায়োরা। জেল থেকে পালাতে রান্নাঘরের ব্যারাকের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল সিংহ হায়োরা। ৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পর ধরা পড়ে যায় সিংহ হায়োরা।আর তারপরেও সেই জেলে আরও দুবার সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল সে কিন্তু কোনোটাই কাজে আসেনি। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় ফের ধরা পড়ে যায়। তৃতীয় সুড়ঙ্গ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করার আগেই তাকে অন্য জেলে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।কিন্তু নতুন জেলে সিংহ হায়োরা ফের ৮ ফুট গভীর এবং ১০৮ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ খোঁড়েন। এমনভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছিল যা নিরাপত্তাকক্ষীদের ব্যারাকের তলা দিয়ে জেলের পাঁচিলের বাইরে বের করা হয়। সেইবার সফল হন হায়োরা। ২০০৪ সালের ২রা জানুয়ারি ভোররাতে জেলের আরও ৩ বন্দিকে নিয়ে পালিয়ে যান হায়োরা। আর তারপরে পুলিশ আর ধরতে পাডরেননি হায়োরা কে।

বেতাই জেলভাঙার ঘটনাঃ
২০০২ সালের আগস্টে বিহারের পশ্চিম চম্পারণের জেল থেকে ৮জন বন্দি পালিয়ে যায়। খুন ডাকাতি এবং ধর্ষণের ঘটনায় তারা অভিযুক্ত ছিলেন। কোনোভাবে একটি লোহা কাটার ব্লেড জোগাড় করেছিল সেই ৮ বন্দি। আর তা দিয়ে কয়েদখানার লোহার গরাদ কেটে ফেলেছিলেন তারা। গরাদ কাটার সময় যাতে আওয়াজ না হয় তার জন্য বুদ্ধি খাটিয়ে হ্যাসকো ব্লেডে গ্রিজ মাখিয়ে নেন তারা। তারপর জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান। তবে মোহন শাহ নামে এক বন্দি পাঁচিল টপকাতে ব্যর্থ হন। তার ফলে সে ধরা পড়ে যায়।


চার্লস শোভরাজঃ
ভারতের অন্যতম এক কিংবদন্তী অপরাধী। যার অপরাধের তীক্ষ্ণতা তাক লাগিয়েছে দুদে পুলিশ থেকে তাবড় তাবড় গোয়েন্দাদের। মাদক চোরাকারবারে অভিযুক্ত ছিল শোভরাজ। তিহারে ১৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল শোভরাজ। ভারতের সাজা শেষ হলে থাইল্যান্ডে শোভরাজকে প্রত্যর্পণ করার কথা ছিল। থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী কোনো অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ২০ বছরের মধ্যে কোনো অভিযোগ না থাকলে তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে। ফলে তিহারে ১৮ বছরের সাজা শেষে থাইল্যান্ডে ২ বছরের সাজা কাটাতে হত শোভরাজকে।কিন্তু অন্যরকমই ভেবেছিল শোভরাজ। বন্ধু ডেভিড হলের সাহাযয্যে তিহারে সে মাদক মেশানো লাড্ডু আনায়। তারপর জেলের নিরাপত্তাকর্মীদের সেই লাড্ডু খাইয়ে অচৈতন্য করে বন্ধু ডেভিডকে নিয়ে পালিয়ে যান শোভরাজ। কিন্তু দু সপ্তাহ পরেই গোয়ার একটি বারে ধরা পড়ে যায় শোভরাজ।

নটবরলালঃ
তাজমহল এবং লালকেল্লাকে একাধিকবার বিক্রি করে অপরাধের শিরোনাম হয়ে এসেছিল নটবরলাল। ১৯১২ সালে বিহারের সিওয়ান জেলার বাঙরা গ্রামে জন্মানো নটবর সকলের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। প্রতারণায় তার নিত্য নতুন কৌশল সকলকে তাক লাগিয়ে দিত। ১১৩ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল নটবরলাল। তারমধ্যে ৯ বার জেল ভেঙেছিল সে।একদম বৃদ্ধ বয়সে জেল থেকে পালাতে এক পন্থা নেয় সে। অসুস্থতার নাটক করে এইমস-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা আঁটে সে। দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে এক সুইপারের জিম্মায় রেখে দুই পুলিশ কর্মী অন্যত্র যেতেই চম্পট দেয় নটবরলাল। তারপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫৫
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×