
ভারতের এমন পাঁচ জন বন্দি ছিলেন যাদের কারনে ভারত সরকারের রাতের ঘুম এক প্রকার বলা চলে হারাম হয়ে গিয়েছিল। কারন হিসেবে জানা যায় সে বন্দী পাঁচজন জেল থেকে পালাতে গিয়ে এমন সব ঘটনা ঘটিয়েছিলেন যা আজও সবাইকে শিহরিত করে।এবং অনেকের মাঝেই ইতিহাস হয়ে রইবে। আমার এ পোস্টটি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ তেমন পাঁচটি জেল পালানো ইতিহাস নিয়ে।
শের সিংহ রানাঃ
২০০১ সালে ডাকাতরানি ফুলনদেবীকে হত্যা করার পরে তিহার জেলে ঠাঁই হয় শের সিংহ রানার। একদিন নকল পুলিশ সেজে তিহার জেলে হাজির হন শের সিংহ রানার বাল্যকালের বন্ধু সন্দীপ ঠাকুর। আদালতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে সে রানাকে নিজের হেফাজতে নিয়ে নেয়। জেল কর্তৃপক্ষের সামনে নকল কাগজপত্র জমা করে। বন্ধুর সাহায্যে সেবার পালিয়ে যায় শের সিংহ রানা।

জগতার সিংহ হায়োরাঃ
বাব্বর খালসার জঙ্গি জগতার সিংহ হায়োরা। ১৯৯৫ সালে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিয়ন্ত সিংহকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন অভিযুক্ত ছিলেন হায়োরা। চণ্ডীগড়ের বুরেইল জেলে বন্দি ছিল সিংহ হায়োরা। জেল থেকে পালাতে রান্নাঘরের ব্যারাকের তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল সিংহ হায়োরা। ৩৫ ফুট সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পর ধরা পড়ে যায় সিংহ হায়োরা।আর তারপরেও সেই জেলে আরও দুবার সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিল সে কিন্তু কোনোটাই কাজে আসেনি। দ্বিতীয় সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় ফের ধরা পড়ে যায়। তৃতীয় সুড়ঙ্গ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করার আগেই তাকে অন্য জেলে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল।কিন্তু নতুন জেলে সিংহ হায়োরা ফের ৮ ফুট গভীর এবং ১০৮ফুট লম্বা সুড়ঙ্গ খোঁড়েন। এমনভাবে সুড়ঙ্গ খোঁড়া হয়েছিল যা নিরাপত্তাকক্ষীদের ব্যারাকের তলা দিয়ে জেলের পাঁচিলের বাইরে বের করা হয়। সেইবার সফল হন হায়োরা। ২০০৪ সালের ২রা জানুয়ারি ভোররাতে জেলের আরও ৩ বন্দিকে নিয়ে পালিয়ে যান হায়োরা। আর তারপরে পুলিশ আর ধরতে পাডরেননি হায়োরা কে।
বেতাই জেলভাঙার ঘটনাঃ
২০০২ সালের আগস্টে বিহারের পশ্চিম চম্পারণের জেল থেকে ৮জন বন্দি পালিয়ে যায়। খুন ডাকাতি এবং ধর্ষণের ঘটনায় তারা অভিযুক্ত ছিলেন। কোনোভাবে একটি লোহা কাটার ব্লেড জোগাড় করেছিল সেই ৮ বন্দি। আর তা দিয়ে কয়েদখানার লোহার গরাদ কেটে ফেলেছিলেন তারা। গরাদ কাটার সময় যাতে আওয়াজ না হয় তার জন্য বুদ্ধি খাটিয়ে হ্যাসকো ব্লেডে গ্রিজ মাখিয়ে নেন তারা। তারপর জেলের পাঁচিল টপকে পালিয়ে যান। তবে মোহন শাহ নামে এক বন্দি পাঁচিল টপকাতে ব্যর্থ হন। তার ফলে সে ধরা পড়ে যায়।

চার্লস শোভরাজঃ
ভারতের অন্যতম এক কিংবদন্তী অপরাধী। যার অপরাধের তীক্ষ্ণতা তাক লাগিয়েছে দুদে পুলিশ থেকে তাবড় তাবড় গোয়েন্দাদের। মাদক চোরাকারবারে অভিযুক্ত ছিল শোভরাজ। তিহারে ১৮ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল শোভরাজ। ভারতের সাজা শেষ হলে থাইল্যান্ডে শোভরাজকে প্রত্যর্পণ করার কথা ছিল। থাইল্যান্ডের আইন অনুযায়ী কোনো অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ২০ বছরের মধ্যে কোনো অভিযোগ না থাকলে তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে। ফলে তিহারে ১৮ বছরের সাজা শেষে থাইল্যান্ডে ২ বছরের সাজা কাটাতে হত শোভরাজকে।কিন্তু অন্যরকমই ভেবেছিল শোভরাজ। বন্ধু ডেভিড হলের সাহাযয্যে তিহারে সে মাদক মেশানো লাড্ডু আনায়। তারপর জেলের নিরাপত্তাকর্মীদের সেই লাড্ডু খাইয়ে অচৈতন্য করে বন্ধু ডেভিডকে নিয়ে পালিয়ে যান শোভরাজ। কিন্তু দু সপ্তাহ পরেই গোয়ার একটি বারে ধরা পড়ে যায় শোভরাজ।
নটবরলালঃ
তাজমহল এবং লালকেল্লাকে একাধিকবার বিক্রি করে অপরাধের শিরোনাম হয়ে এসেছিল নটবরলাল। ১৯১২ সালে বিহারের সিওয়ান জেলার বাঙরা গ্রামে জন্মানো নটবর সকলের ঘুম হারাম করে দিয়েছিল। প্রতারণায় তার নিত্য নতুন কৌশল সকলকে তাক লাগিয়ে দিত। ১১৩ বছরের জন্য কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছিল নটবরলাল। তারমধ্যে ৯ বার জেল ভেঙেছিল সে।একদম বৃদ্ধ বয়সে জেল থেকে পালাতে এক পন্থা নেয় সে। অসুস্থতার নাটক করে এইমস-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা আঁটে সে। দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে এক সুইপারের জিম্মায় রেখে দুই পুলিশ কর্মী অন্যত্র যেতেই চম্পট দেয় নটবরলাল। তারপর আর তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





