ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার ইংরেজির শিক্ষক ভিয়েত থান নগুয়েন (Viet Thanh Nguyen) । ভিয়েতনামিজ-আমারিকান এ লেখক ২০১৬ সালে ‘ দি সিম্প্যাথাইজার’ বইয়ের জন্য পুলিৎজার পুরষ্কার লাভ করেন।
আজ ভিয়েত থানের সাক্ষাৎকার পড়ে ‘ দি সিম্প্যাথাইজার’ বইটি সম্পর্কে আগ্রহ জন্মালো। ভিয়েত নামের যুদ্ধই এ বইয়ের উপজীব্য। আরও আছে রাজনীতি আর ইতিহাসের গল্প।
বিজয়ীরাই নাকি ইতিহাস লিখে থাকে কিন্তু ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকানরা হেরে গেলেও সে যুদ্ধের ইতিহাস আমরা শিখি আমেরিকা থেকে। হলিউড অথবা সে দেশের গণমাধ্যম থেকে। কূটনৈতিক/যুদ্ধ ভিত্তিক মুভিগুলোতে হলিউড অ্যামেরিকানদেরকে মোটামুটি সাধু-সন্ন্যাসী বানিয়ে ফেলে। ‘অ্যামেরিকান স্নাইপার’ মুভির একটা দৃশ্য দেখার পর আমি মুভিটি সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলি, আর দেখা হয়নি কোনদিন। মিথ্যাকে সত্যের মলাটে উপস্থাপন আর যাই হোক আধুনিকতা হতে পারেনা।
ভিয়েত থানের নিজের মুখে কিছু কথা শুনি...
হলিউডের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক একটি অধ্যায় এটি। আশির দশকে হলিউড যুদ্ধের ওপর নানান ছবি বানিয়ে আমাদের দেখিয়েছে কীভাবে একজন আমেরিকান তার মতো করে গল্প বলে, ইতিহাস বিকৃত করে এবং ঠিক করে দেয় গল্পের কেন্দ্রে কে থাকবে আর প্রান্তে কার অবস্থান। আমি আমেরিকান সংস্কৃতির নিজের মতো করে গল্প বানানোর ক্ষমতার কথা তো জানিই, বরং এ-ও জানি কীভাবে তারা সেসব গল্প পৃথিবীময় প্রচার করে। আপনারা জানেন, ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা পরাজিত হয়। কিন্তু তাদের লেখা ফিকশনের দিকে একবার তাকান, দেখবেন তারা সারা বিশ্বে যুদ্ধের গল্প নিজেদের মতো করে প্রচার করেছে। ভিয়েতনামীয়রাও যুদ্ধের গল্প বলে কিন্তু সেগুলো বিশ্বময় প্রচারের সামর্থ্য তাদের নেই।
এ বইটি পড়লে ভিয়েতনাম যুদ্ধের সঙ্গে ইরাক, আফগানিস্তানে বর্তমানে যা যা হচ্ছে সেসবের মিল পাওয়া যাবে। শেষ করতে চাই এই বলে, আমেরিকানরা মনের মতো গল্প তৈরি করে তুলে ধরছে, কেন বিভিন্ন জায়গায় তারা যুদ্ধ করছে এবং কীভাবে তারা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ করছে।
একজন প্রকৃত লেখক একই সাথে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক। প্রেক্ষাপট নির্ণয়ে তাকে জাতীয় হতেই হয় কিন্তু যুক্তি আর মানবিকতায় সে আন্তর্জাতিক। সত্যের জয় হোক পুরো পৃথিবীতে। বিশ্বাসযোগ্য করে উপস্থাপন করলেই বিশ্বাস করতে হবে এরকম হওয়া উচিৎ নয়।
সমাপ্ত
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৮