অধরা হাসানের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে। এত বছরের সংসার জীবনে কোন দিন তাদের একটু ঝগড়া-ঝাঁটি পর্যন্ত হয়নি। অনেকে বলে মনোমালিন্য না হলে নাকি সম্পর্ক পূর্ণতা পায়না কিন্তু অধরার তা কখনোই মনে হয়না। সে অনেক ভালো বুঝতে পারে হাসানকে। হাসান ছেলেটা অন্যরকম। অন্য পাঁচ-দশটা ছেলে থেকে অন্তত ভিন্ন। অধরা একবার ইচ্ছা করেই হাসানের উপর মন খারাপ করার চেষ্টা করলো। তার ইচ্ছা ছিল হাসান ছেলেটাকে সে দেখবে,রাগলে তাকে কেমন দেখায়।
অধরা রাগ রাগ স্বরে হাসানকে প্রশ্ন করে বসলো, তুমি সারাটা দিন একবার খোঁজ নাওনি কেন আমার?? আমি যে একটা মানুষ সারাদিন একা বাসায় থাকি, একবারও খোঁজ নিতে ইচ্ছে হয়নি?? অধরা ঠিকই জানে, হাসান সারাদিন ব্যস্ত থাকে, নতুন চাকরী এত সুযোগ কই! কিন্তু ঘটনা ঘটলো উল্টো, হাসান সরি বলে অধরার মান ভাঙাতে বসে গেলো। সেদিন অধরা হাসানকে জড়িয়ে ধরে অনেক কাঁদলো। সম্ভবত ভালোবাসার কান্না।
মাঝে মাঝে জীবনটাকে অনেক ছোট মনে হয় অধরার। ইস হাসানের সাথে আগে কেন যে দেখা হয়নি!!! পুরো জীবনটাও যেন কম লাগে তার কাছে। পাশে ঘুমিয়ে থাকা হাসানকে সে আসলেই ভালোবাসে, নিজের থেকেও হয়তো বেশি।
ভোর হয়েছে অনেক আগেই। ফ্ল্যাটে ভোরের আলো তখনো পৌঁছায়নি। জানালা খুলতেই সোনালী রোদে ঘরটা মেখে গেলো। প্রত্যেকদিন জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই সব কিছু কেন জানি ভালো লাগে তার। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া ব্যস্ত মানুষ,ইলেকট্রিক পোলে বসে থাকা ধূসর-কালো কাকগুলো। জানালা গলিয়ে একগুচ্ছ আলো এসে হাসানের মুখে ছড়িয়ে পড়লো। হাসান পাশ ফিরিয়ে শুলো। অধরা জানালাটা বন্ধ করে দিলো।
ইস!! ছেলেটা যে এত ঘুম কাতুরে!!!!!!!
উৎসর্গঃ অধরাকে। সেই অভিমানী মেয়েটিকে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:০৫