বৃষ্টির রাত।ইলেক্ট্রিসিটি অনেক আগেই চলে গেছে।বিছানায় শুয়ে শুয়ে ফোন গুতাচ্ছে রোদ।নামটা তার বাবা রেখেছে।রোদেলা থেকে রোদ। মাঝেমধ্যে নাম বলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয় রোদকে।রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। বৃষ্টির জন্য আরও বেশি মনে হচ্ছে।এমন সময় টয়লেটের জন্য প্রচন্ড বেগ পেল।কিছুটা বিরক্ত হলো রোদ।কিন্তু কিছুই করার নেই।বাঘ বা সিংহ হলেও আটকানো যেত।কিন্তু এ যে প্রাকৃতিক চাপ!চার্জলাইটে চার্জ ছিল না।অগত্যা ফোনের ভরসায়ই যেতে হলো। তার বাসাটা নিচতলায়,সাবলেট নিয়েছে।তবে খারাপ না।মাঝখানের দরজাটা সবসময় বন্ধই থাকে।
ঢুকে আর দেরি করলো না। বসে পড়লো রোদ।প্রচন্ড বেগে গুহ্যদ্বার ভেদ করে বেরিয়ে এল ২০০-৩০০ গ্রাম।এবার কিছুটা চাপহীন অনুভব করলো। পুরো টয়লেট অন্ধকার। এক ধরনের ভুতুড়ে পরিবেশ তৈরি হয়েছে।রোদের কিছুটা ভয় ভয় লাগছিল।ফেসবুকিং করার কথা চিন্তায় এলো।এতে সময়ও কাটবে আর কিছুটা আলোও পাওয়া যাবে।বাকিটুকু বের হওয়ার অপেক্ষা করতে ফেসবুকিং করতে লাগলো সে।টয়লেটে আজকে মন্দ লাগছে না।ভেন্টিলেটর দিয়ে হিমশীতল হাওয়া কিছুক্ষণ পরপর গা ছুয়ে দিচ্ছে।বেশ কিছুটা সময় কেটে গেল।হঠাৎ মনে হলো দুপায়ে কিছু ধরে রেখেছে।অগ্রাহ্য করতে চাইলেও পারলো না।ফোনের স্ক্রিনের আলো পায়ে ধরতেই হকচকিয়ে গেল রোদ।ইঞ্চি দেড়েকের তিনটা জোঁক তার বাম পা থেকে রক্ত খেয়েই যাচ্ছে।মুহূর্তের মধ্যে পা ঝাঁকিয়ে নিচে ফেলে দিল জোঁক তিনটিকে।একেবারে দাগ পড়ে গেছে।এবার বেশ ভয়ে ভয়ে ডান পায়ে স্ক্রিনের আলো ফেললো সে।
তার চক্ষু ছানাবড়া!
ইঞ্চি সাতেক লম্বা একটি খয়েরী-লাল কেঁচো তার পায়ে বিড়বিড় করছে।এক-তৃতীয়াংশ জুতায় এবং মেঝেতে এবং বাকিটা তার পায়ে।মাথা খানিকটা উঁচু করে কি যেন খুঁজছে।এক মুহূর্তও দেরি না করে পা থেকে সরিয়ে নিল কেঁচোটিকে।যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
এবার আর স্ক্রিনের আলোতে নয়,ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে ভালোভাবে সারা টয়লেট এবং নিজের শরীর তন্যতন্য করে খুঁজলো সে।আর কিছুই দেখলো না রোদ।স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে নিশ্চিন্ত মনে আবার ফেসবুকিং করতে লাগলো সে।গুহ্যদ্বারের লোম গুলো হাতাতে লাগলো। কয়েকটা লোম আঙ্গুলে চলে এলো। কিছুটা বিস্মিত হলো। এবার দুই আঙ্গুল দিয়ে ইচ্ছাকরেই লোমগুলো টানতে লাগলো রোদ।বেশ অবাক হলো রোদ।হাতে বেশ কয়েকটা পশম চলে এলো। আর সেগুলো যেন পশমের মতো ঠেকছে না।কিছুটা নরম।কৌতুহলবশত আবার ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে গুহ্যদ্বার পরীক্ষা করতে লাগলো সে।এবার যেন তার নিজের চক্ষুকেই বিশ্বাস করতে পারছে না!অজ্ঞান হয়ে যেতেও হলো না। শ'খানেক সুতাকৃমি কিলবিল করছে তারই গুহ্যদ্বারে।সর্পদেবীর মাথার সর্পগুলোর মতোই কিলবিল করছে। লোমগুলোর মধ্যে সেগুলো যেন মাথা উঁচু করে নেমে যেতে চাইছে।আর এতক্ষণ এগুলোই তার হাতে লাগছিল।যতগুলো পারলো টেনে ফেলতে লাগলো রোদ।সাথে কিছু লোমও ছিঁড়ে আসলো। কিন্তু তার সেদিকে খেয়াল নেই।বেশ ভয় পেয়ে গেলো সে।আর যেন পারছে না।ছুটে যেতে ইচ্ছা করছে তার।ফোনটি উপুড় করে রেখে বদনার দিকে হাত বাড়ালো।বদনাতে খানিকটা পানি আছে।এতে তার হবে না।পাশেই বালতি থেকে মগে করে বদনাটি ভর্তি করলো। ধৌত পর্ব বেশ তাড়াতাড়িই শেষ করলো।বদনাটা আগের জায়গায় রাখতে গিয়ে খটকা লাগলো। একটু যেন ভারী ভারী লাগছে।কৌতূহলবশত আবার ফোনের ফ্ল্যাশ মারলো বদনায়।গুপটি মেরে বসে আছে একটি দোরা সাপ।বেশ বড়ই। তবে এই সাপের বিষ নেই।দংশনে মারা যায় না।তবে তার আর দরকার পড়লো না।হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে টয়লেটেই মারা গেল রোদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ২:৩১