নূন্যতম লজ্জাবোধ থাকা উচিত Daily Star পত্রিকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতা করেছিলেন কি না সে তর্কে যদি না-ও যাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথের কোন ভূমিকা ছিলনা। শতবর্ষে এসে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, বঙ্গবন্ধুর সাথে রবীন্দ্রনাথের ছবি বড্ড বেমানান। এখানে তার ছবির বদলে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী, ফজলুল হক, বালিয়াটির জমিদার (জগন্নাথ হলের নামকরণ হয় তাঁর পিতা জগন্নাথ রায় চৌধুরীর নামে) কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ছবি থাকতেই পারতো। যে ইতিহাসেই নেই তাকে জোর করে ইতিহাসে ঢুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। যারা এই চাষাভুষার দেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শ্রম-মেধা-সম্পত্তি ব্যায় করল তাদের যথাযথ সম্মান আর রইলো কোথায়!
সারা ইন্টারনেট জগতে ঘাঁটাঘাঁটি করেও "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথের ভূমিকা কি ছিলো? " এর কোন উত্তর পাবেন না। যা পাবেন তা হল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ বিরোধিতা করেন নাই এই নিয়ে বড় বড় লিখা। বিষয়টা অনেকটা এমন যে আপনার প্রতিবেশীকে জিজ্ঞেস করলেন "কি মিয়া বিয়াশাদি করবা কবে?" আর উত্তর পাইলেন "না ভাই,আমি তো ভাবীর দিকে ঐ নজরে তাকাই না।" অনেকে যুক্তি দিতে পারেন ১৯৩৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিলিট উপাধি প্রধান করা হয় এই জন্যেই বোধহয় তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসে জুড়ে দেয়া যায়। ধরে নিন কাল যদি বর্তমাম ভিসি আক্তারুজ্জামান স্যার কে ইউরোপের কোন বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করে তারা কি তাকে তাদের শতবর্ষের কোন প্রতীকী ছবিতে স্থান দিবে ?
রবীন্দ্রনাথ নিঃসন্দেহে এই উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক কিন্তু তার মানে এই না যে দেশের উপরের সারির একটি পত্রিকা তাকে জোর করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসে জুড়ে দিবে।এটা ইতিহাস বিকৃতি। এভাবেই একটু একটু করেই ইতিহাস পরিবর্তন করা হয়। একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ডেইলি স্টারের এই নিকৃষ্ট ইতিহাস বিকৃতির নিন্দা জানাচ্ছি।
(ছবিটি ১-৭-২১ ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রথম পাতায় CELEBRATING 100 YEARS OF UNIVERSITY OF DHAKA,University of Hope শিরোনামে প্রকাশিত)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৫