somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২২ঘন্টা পর কবর থেকে উদ্ধার জীবন্ত মানুষ [শেষ পর্ব]

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দীর্ঘ ৩ মাস চিকিৎসাধীন থেকে সুস্থ হয়ে মোহনগঞ্জে ফিরে এল হাবিবুর রহমান। তাকে দেখে এলাকাবাসী কৌতুহলী হয়ে উঠল।সবাই ভাবল এবার সত্যি তথ্য প্রকাশ হবেই। কেউ কেউ বলতে লাগল এমন কি হল যার কারণে এক বন্ধু অন্য দুই বন্ধুকে মেরে ফেলার জন্য জীবন্ত কবর দিল?কেউ কেউ বলতে লাগল একজন তো মরেই গেল আর একজন হলো পাগল।কিন্তু এসব কথায় নির্বাক হাবিবুর।শত চেষ্টা করেও কেউ-ই তার কাছ খেকে সঠিক কোন তথ্য পেল না।কারণ তখনও পর্যন্ত সে ছিল শঙ্কিত।অবশেষে কাজী আবেদ হোসেন তাকে একদিন তার অফিসে ডেকে পাঠালেন।সত্যি ঘটনা বলার জন্যে অনেক চাপাচাপি করলেন। কিন্তু সত্যি ঘটনা বলতে হাবিবুর ছিল নারাজ।কেননা সে নিজেকেও অপরাধী ভাবছিল।কিন্তু কাজী আবেদ হোসেনের অনেক পীড়াপীড়ির পর সে মুখ খুলল।তার ভাষ্যমতে -সে,শাহজাদা আর ঘাতক বাবলু ৩ জন খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল।তাদের অন্তরঙ্গতা এতই বেশী ছিল যে তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের বাড়িতে সব সময় যাতায়াত ও খাওয়া-দাওয়া করত।এটা পুরো এলাকাবাসীও জানত।তাই তারা প্রত্যেকে প্রত্যেকের সব খবরা -খবর জানত।একদিন গল্পের মধ্যে হাবিবুর আর শাহজাদা বাবলুকে বলেছিল ,তাদের দু’জনের কাছে ৩ লাখ টাকা গচ্ছিত আছে। একথা শুনে বাবলুর মনে লোভ বাসা বাঁধল।সে মনে মনে ফন্দি আটল যে করেই হোক ঐ ৩ লাখ টাকা তার পেতে হবে।সেই মোতাবেক সে একটা মিথ্যে গল্প তৈরি করল ।সে তার ২ বন্ধুকে বলল তার কাছে একটা কৃষ্ণমূর্তি আছে যার মূল্য কোটি টাকা।ওরা দুজন যখন বলল কোথায় পেয়েছিস?তখন সে তার পরিকল্পিত গল্পটি বলতে শুরু করল।শিয়ালজানি খাল খননের সময় তার কোদালে ঝন করে একটা শব্দ হয়,সে বুঝতে পারে মাটির নিচে কিছু আছে।তাই খোঁড়ার কাজ বন্ধ করে জায়গাটা মাটি দিয়ে ঢেকে সে বাড়ি চলে যায়।সন্ধ্যায় সে খালে যায় ,মাটি সরাতেই সে অবাক হয়ে যায়।সে দেখতে পায় একটা কৃষ্ণমূর্তি যা থেকে আলো বের হচ্ছে।কেউ যাতে দেখতে না পায় তাই সে তাড়াতাড়ি একটা কাপড়ে মুড়িয়ে মূর্তিটা বাড়ি নিয়ে আসে।পরে সে ওটা ময়মনসিংহের এক স্বর্ণকারের কাছে নিয়ে যায়।সেখানে তারা ওটা পরীক্ষা করে এক কোটির উপরে মূল্য আছে বলে জানান।কিন্তু সেই মুহূর্তে তাদের কাছে অত টাকা ছিল না তাই মূর্তিটি তারা কিনতে পারল না। সে ওদেরকে বলল অল্প দামে এখন এটা সে বিক্রি করতে চায়।তার কথা শুনে ওরা ওদের গচ্ছিত ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে মূর্তিটি কিনতে চাইল।অতি সহজেই ওরা বাবলুর পাতা ফাঁদে পা দিল তাই সে আনন্দিত চিত্তে বলল,টাকাটা দে,মূর্তিটা রাতে দিব।দামী জিনিস তাছাড়া ওটা থেকে আলো ছড়ায় তাই দিনে দেয়া যাবে না।ওরা তার কথা বিশ্বাস করল।ও যে বিশ্বাস ঘাতকতা করবে তা ওরা কখনোই ভাবেনি।ওরা দু’জন টাকা দিয়ে দিল।কিন্তু বাবলু ওদেরকে আর মূর্তি দেয় না।আজ নয় কাল এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেল।ওরা দুজন যখন মূর্তির জন্যে চাপ দিল তখন সে ওদেরকে বলল কাল আমার বাড়ি আয়।সারাদিন থাকবি,খাওয়া-দাওয়া করবি আর সন্ধ্যার পর মূর্তি নিয়ে যাবি। ওর কথা মত পরদিন ওরা দুজন তার বাড়িতে এল,খাওয়া-দাওয়া করল আড্ডা দিল ।এবার মূর্তি দেবার পালা ।ঘাতক বাবলু ওদের দু’জনকে নিয়ে বাঁশ ঝাড়ের দিকে গেল।করব দেখিয়ে বলল আমি অনেক কষ্ট করে এটা তৈরি করেছি।মূর্তিটা ওর ভেতরে গিয়ে দিব যাতে কেউ দেখতে না পায়।তবে রাত আর একটু বাড়লে ভাল হয়।ততক্ষণ আমরা ৩ জন ওর ভেতরে আড্ডা দেই।৩ জন একসঙ্গে কবরের ভেতর প্রবেশ করল।অনেক গল্প করল,বিড়ি খেল।এবার ঘাতক বলল তোরা বস আমি মূর্তি নিয়ে আসি।সে বেরিয়ে এল।পাশে রাখা বালুর বস্তা টেনে যখন কবরের মুখ বন্ধ করতে গেল তখন শাহজাদা মাথা দিয়ে সজোরে ধাক্কা দিতে গেল।সাথে সাথে কোদাল দিয়ে তার মাথায় আঘাত করা হল।সে কবরের ভেতরে ঢুকে গেল,তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল বিকট চিৎকার।সেই চিৎকারে বাবলুর বউ বেরিয়ে এল।বাবলু তাকে বলল এ কথা যেন সে কাউকে না বলে।কেননা এটা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই।এটা না করলে ওরা দু’জন ওকে মেরে ফেলবে। বাবলুর বউ আর কিছু বলল না।ওরা কবরের মধ্যে আটকা পড়ে গেল।মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বাঁচার জন্যে ওরা ছটফট করতে লাগল।সদ্য খোঁড়া কবর তাই এর মাটি ছিল ঝুরঝুরে।হাবিবুরের বুক পকেটে একটা কলম ছিল যার সাহায্যে সে কবরের উপরের দিকে ছিদ্র করেছিল আর ঐ ছিদ্র দিয়েই ওরা নিশ্বাস নিচ্ছিল।কোদালের বাড়িতে শাহজাদার মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে যায়।ফলে brain hammer age এ সে মারা যায়।ঘাতক যখন বুঝতে পারল সে গুরুতর অপরাধ করেছে,বাঁচার আর কোন পথ নেই তখন পরদিন বিকাল ৫টার দিকে কাজী আবেদ হোসেনকে ফোন দিয়ে সে নিখোঁজ হয়ে যায়।



[তথ্যসূত্রঃ৯/০৩/২০০৯ইং তারিখের দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় হেড লাইন হিসেবে আসে-‘‘মোহনগঞ্জের ২ ব্যবসায়ীকে ডেকে নিয়ে জীবন্ত কবর”১জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার।এছাড়া আরও তথ্য পাওয়া যাবে মোহনগঞ্জের হিমেল সরকার ও তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক,মোহনগঞ্জ সাধারণ পাঠাগার ,মাহবুবুর রহমান(নান্টু)এর কাছ থেকে। বিস্তারিত জানতে ডায়াল করুনঃ০১৭১৬-৪১৭২৪৩ ও ০১৭১২-৭২৮৬২৩ নম্বরে।]
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×