আজকে সবাই কাঁদি
আজকে সবাই কাঁদি এসো ভাই,
আজকে এসো কান্নায় বুক ভাসাই।
ফরিয়াদের দু'হাত তুলে দাড়াই,
মহাত্মনে আজ কান্নাগাঁথা শুধাই।
জল-স্থল-অন্তরীক্ষে কেন বিপর্যয়?
নিজকে প্রশ্ন করো, এমন কেন হয়?
মোদেরই পাপের ফল কি ইহা নয়?
নিরবে ভাবো, উত্তর পাবে নিশ্চয়!
যেই অপরাধ শুধুই একার করা,
রাতের কোলে ঘুমিয়ে যখন ধরা।
যেই অপরাধ কেউ দেখেনি কভূ,
সেসব পাপও অজ্ঞাত নন প্রভূ।
সেসব পাপের ক্ষমার তরে আজ,
রবের সামনে দাঁড়াও ভুলে লাজ।
চক্ষু জলে সিক্ত, অশ্রুর নাজরানা-
'দাও ক্ষমা,' বলো- 'হে প্রিয় রব্বানা'।
অশ্রুসিক্ত হও, কান্নায় ভাসাও বুক,
অশ্রুতে মুক্তি, অশ্রুতে খোঁজো সুখ।
পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে দাঁড়াও,
ফরিয়াদের বিনীত দু'হাত বাড়াও।
নিষ্পাপ হবে তুমি, পাপী জেনো যদিও,
ক্ষমা করা প্রভূর খুবই যে বড় প্রিয়।
বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে পরে হাসেন,
বান্দাকে তিনি কতই না ভালোবাসেন!
প্রেক্ষাপট: জলে-স্থলে বিপর্যয়ের ঘনঘটা যেন আমাদের আজ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরেছে। একের পর এক অগ্নিকান্ডে পুড়ে ছাই হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ। আমাদেরই ভাই বোনেরা। আমাদের সন্তানেরা। এ কিসের আলামত? চুড়িহাট্টার আগুনে পোড়ার দগদগে ক্ষত না শুকোতেই আবার বনানীর এফআর টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। ভয়াবহ একেকটি অগ্নিকান্ড পুড়ে ছাই করে দিয়ে যায় বিশালাকার ভবনগুলোর কিছু আসবাবপত্র। তার সাথে সাথে পুড়ে যায় মানবতা। ভবনের ভেতরে আটকে পড়া বিপন্ন মানুষ। চোখের সামনে আমরা মানুষের পুড়ে যাওয়া দেখি আর আর্তনাদ করি। আমাদের ক্ষমতা থাকে না, তাদের উদ্ধারেরও। আহ! আমরা কতই না অসহায়! অসম্ভব লোভী আমরা বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মানের প্রয়োজনটুকুতেও বিশ্বাসী নই। অর্থ-বিত্ত আর ক্ষমতার জোরে আমরা যেমন খুশি ভবন নির্মান করি। আইন কানূনের তোয়াক্কা করে সুউচ্চ বিল্ডিংগুলো নির্মান করি না।
এখানে, আমাদের দেশে বিপর্যয় এলে কিছু সময় আমরা হাহাকার করি। নড়েচড়ে উঠি। সজাগ হয়ে ওঠে সকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কিছু দিন পরে সব আবার ঠিক হয়ে যায়। শত অনিয়মের বেড়াজালে বন্দিজীবনে ফিরে যাই আমরা সবাই আবার। পাপের নগরে পরিনত করি প্রিয় দেশটাকে।
আমরা কিছু মানুষ হয়তো অশ্রুতে মনের শান্তনা খুঁজি। কেঁদে বুক ভাসাই। দেশ এবং দেশের কল্যান কামনা করে যাই। আমাদের এছাড়া আর করারই বা কি থাকতে পারে? সন্দেহ নেই, আমাদের ক্রমবর্ধমান অপরাধেরই শাস্তি আমাদের উপরে একে একে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ অপরাধের পথ থেকে ফিরে আসতে হবে। ফিরে আসার পথই তো মহান প্রতিপালকের সামনে ফরিয়াদের হাত তুলে ক্ষমাপ্রার্থনায় রত হওয়া। সকল পাপের পথ থেকে ফিরে আসা। এ পথেই মুক্তি। এ পথেই শান্তি। এ পথেই নাজাত।
ছবি: অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৪৭