somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

আজান: মিনার থেকে মিনারে, বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়ে আমার প্রভূ মহিয়ানের বড়ত্বের অলৌকিক কথামালা......

২০ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজান: বিশ্বময় মিনারে মিনারে সুমধুর সুর:
আজান। কল্যানের পথে আহবান। নাজাত, মুক্তির পথে আহবান। চির শান্তির ধর্ম ইসলামের অন্যতম বিধান সালাত তথা নামাজের জন্য জামাআতবদ্ধ হওয়ার ঘোষনা দেয়ার নামই আজান। আজানের আবেদন চিরকালীন-শাশ্বত। প্রতিদিন সময়ের ক্রমবিবর্তনে সকাল-সন্ধ্যা পৃথিবীর সর্বত্র সবসময় মসজিদের মিনারে মিনারে বাজে আজানের সুমধুর সুর। আরব আজমের সীমানা পেরিয়ে আজান ছড়িয়ে পড়ে মাশরিক-মাগরিবে। দেশ-মহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৃথিবীর ভূখন্ডে ভূখন্ডে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় আজানের সুমধুর সুরমালা। এশিয়ার দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তর ছাপিয়ে ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার শেষ স্থলভূমিটি পর্যন্ত পৌঁছে যায় আজানের মায়াবি আহবান। আল্লাহু আকবার।

আজান বাংলা, বাঙালির চেতনা ও অনুভূতিতে অসামান্য অভিব্যক্তির স্ফুরণরূপে অন্তরের অতলান্ত গভীরে স্থান করে নিয়েছে। সাহিত্যের নানা অঙ্গনে আজানের প্রাসঙ্গিক ব্যবহার সমুজ্জ্বল। আজানের মাহাত্ম্য, ফজিলত এবং গুরুত্ব বর্ণনায় আমাদের সামনে রয়েছে মহানবি হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুখ নিসৃত বানীসম্ভার। একটি হাদিসে এসেছে, 'যত দূর আজানের শব্দ পৌঁছে, ততটুকু এলাকা ছেড়ে শয়তান দৌড়ে পালায়।' প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামও আজানের মধ্যে মানসিক প্রশান্তির ঠিকানা আবিষ্কার করেছেন—‘মসজিদে ঐ শোন রে আজান, চল নামাজে চল।/দুঃখে পাবি সান্ত্বনা তুই বক্ষে পাবি বল।’

‘কে ওই শোনাল মোরে আজানের ধ্বনি/মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিল কী সুমধুর/আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী। কী মধুর আজানের ধ্বনি!’ -হ্যাঁ, প্রাণের কবি, মহাকবি কায়কোবাদের অমর কবিতা 'আজান' পাঠ করার পরে হৃদয়-মন আপ্লুত হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। ‘আজান’ মহাকবি কায়কোবাদের নিবেদনে বাঙালির হৃদয়ে এক অমীয় সুধা, অপূর্ব সুরধ্বনি। আজান নিয়ে যুগে যু্গে আরও কত কবি সাহিত্যিক রচনা করেছেন গান-গজল-কবিতা তার ইয়ত্তা নেই। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় আযান এসেছে নানাসময়ে-নানাভাবে-নানা আঙ্গিকে। বাঙালি মননে সাহিত্যে-গানে-গজলে ইসলামী ঐতিহ্য এবং আবহ তিনিই জাগিয়েছেন।

মানবপ্রেম ও অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে তিনি ধারণ করেন ‘বাঁশের বাঁশরী’ ও ‘রণতূর্য’। তিনি সবার ও সারা বিশ্বের। কিন্তু তিনি ইসলাম ও মুসলমান—এই বৃত্তের বাইরের কেউ নন। তাই তো তাঁর অনুভবে আজান বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে—“আমার মনের মসজিদে দেয়/আজান হাজার মোয়াজ্জিন/প্রাণের ‘লওহে’ কোরআন লেখা/রুহ পড়ে তা রাত্রিদিন।”

কাজী নজরুলের বিবেচনায় আজানের শক্তি মানুষকে পৌঁছে দেয় এক অনন্য উচ্চতায়। তিনি আজানের মধ্যে শোনেন আত্মবিশ্লেষণের তাগিদ—‘ঘুমাইয়া কাজা করেছি ফজর/তখনো জাগিনি যখন জোহর/হেলায়-ফেলায় কেটেছে আসর/মাগরেবের ঐ শুনি আজান....।’

ইসলামের পরিভাষায় বিশেষ শব্দমালায় উচ্চ স্বরে নামাজের জন্য আহ্বান ধ্বনি আজানের মধ্যেও কাজী নজরুল শোনেন অসাধারণ সুধাময় সুর মূর্ছনা—‘দূর আজানের মধুর ধ্বনি বাজে মসজিদেরই মিনারে।/এ কী খুশির অধীর তরঙ্গ উঠল জেগে প্রাণের কিনারে।’

আবার ‘উমর ফারুক’ কবিতার মাধ্যমে তিনি আমাদের শুনিয়েছেন এক মানবিক হাহাকারের চিরায়ত প্রতিধ্বনি ও পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্তির কান্না—‘তিমির রাত্রি এশার আজান শুনি দূর মসজিদে।/প্রিয় হারা কার কান্নার মতো এ বুকে আসিয়ে বিঁধে।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের অন্তিম আকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গনে তাঁর সমাধি হওয়ার মাধ্যমে। তাঁর আবেগঘন আকুতি মনে দাগ কাটে—‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই।/যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।’



আজানের প্রচলন ঘটে যেভাবে:
ইসলামের প্রাথমিক যুগে পবিত্র নগরী মক্কায় আজান ছাড়াই নামাজ পড়া হতো। প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় হিজরত করে মসজিদ নির্মাণ করলেন তখন মুসলমানদের নামাজে অংশগ্রহণের জন্য একত্রিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট সংকেত নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন এবং সাহাবাদের কাছে পরামর্শ চাইলেন।

সাহাবাদের পরামর্শ:
সাহাবায়েকেরাম নামাজে অংশগ্রহণ একত্রিত হওয়ার জন্য সংকেত ঠিক করতে পরামর্শ সভায় বসলেন। পরামর্শ সভায় ৪টি প্রস্তাব উপস্থাপন হয়:
এক. ঝাণ্ডা উড়ানো,
দুই. আগুন প্রজ্জ্বলন,
তিন. শিঙ্গা বাজানো,
চার. ঢোল বাজানো।

পরমার্শ সভার ৪টি প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করা হয়। কারণ, প্রথমত: ঝাণ্ডা উড়ালে সব মানুষ তা তাদের বাড়ি হতে অথবা দূর থেকে দেখতে পাবে না। দ্বিতীয়ত: অগ্নি প্রজ্বলন করা হলে তা অগ্নি উপাসকদের কাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে যায়। তৃতীয়ত: শিঙ্গা বাজানো খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীগনের কাজ। আর চতুর্থত: ঢোল বাজানো ইয়াহুদিদের কাজ। এ কারণে সেদিন সমাধান ছাড়াই পরামর্শ সভা মূলতবি করা হয়।

সাহাবায়েকেরামগণ এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে করতেই যার যার বাড়ি চলে গেলেন। ঐ রাতে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু স্বপ্নে দেখেন- ‘এক ব্যক্তি শিঙ্গা নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ঐ ব্যক্তিকে শিঙ্গাটি বিক্রি করতে বললেন। শিঙ্গাটি কেনার কারণ জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বললেন, ‘আমি শিঙ্গাটি দিয়ে মানুষকে নামাজে আসার জন্য আহ্বান করব।’

তখন শিঙ্গার মালিক ব্যক্তি বললেন, ‘আমি কি এটি হতে উত্তম একটি জিনিসের সংবাদ দিব না?' এ বলে তিনি আজানের বাক্যগুলো তাঁকে শিখিয়ে দিলেন।

সকালে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে স্বপ্নের কথাগুলো জানালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমার স্বপ্ন সত্য। তুমি বেলালকে আজানের বাক্যগুলো শিখিয়ে দাও। আজ থেকে বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আজান দেবে।’

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর শেখানো বাক্যগুলো দিয়ে হজরত বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু আজান দিলে, তা শুনে হজরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু প্রিয়নবির দরবারে দৌড়ে এসে বললেন-

‘হে আল্লাহর রাসুল! ঐ সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য রাসুল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। অবশ্যই আমি অবিকল এ বাক্যগুলোই স্বপ্নে দেখেছি।’

উল্লেখ্য যে, ঐ রাতে একই স্বপ্ন সাহাবিদের মধ্য থেকে ১৪ জনই দেখেন। তখন (হিজরি দ্বিতীয় সন) থেকে নির্দিষ্ট বাক্যাবলীর মাধ্যমে নিয়মিত হজরত বিলাল রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু নামাজের জন্য আজান দিতেন।

আজান ও ইক্বামাতের জবাব:
আজানের মাধ্যমে মানুষকে নামাজের জন্য আহবান করা হয়। মানুষ যখন মসজিদে এসে একত্রিত হয়, তখন নির্ধারিত সময়ে জামাআতে নামাজ আদায়ের জন্য মুয়াজ্জিন ইক্বামত দেন। আজান এবং ইক্বামাত শুনলেই এর জবাব দিতে হয়। এ জবাবে রয়েছে অনেক ফজিলত।

আজান ও ইক্বামাতের জবাবে ফজিলত:
হজরত উমার রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুয়াজ্জিন বলবে, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার তখন তোমাদের কেউ যদি বলে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; এরপর যখন মুয়াজ্জিন বলে আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (শ্রবণকারী) বলে আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; এরপর যখন মুয়াজ্জিন বলে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুলল্লাহ্ (শ্রবণকারী) বলে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), পরে মুয়াজ্জিন যখন বলে হাইয়্যা আলাস্ সালাহ্ (শ্রবণকারী) বলে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ,পরে মুয়াজ্জিন যখন বলে হাইয়্যা আলাল ফালাহ, (শ্রবণকারী) বলে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ; এরপর মুয়াজ্জিন যখন বলে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার (শ্রবণকারী) বলে আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, পরে মুয়াজ্জিন যখন বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (শ্রবণকারী) তখন বলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ -এ বাক্যগুলো (আজানের উত্তর) যদি অন্তর থেকে বলে তবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসলিম, আবু দাউদ)

হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে, হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু ইকামত দিচ্ছিলেন। যখন তিনি 'ক্বাদ ক্বামাতিস্ সালাহ' বললেন, তখন রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, 'আকামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা' অর্থাৎ 'আল্লাহ তাআ'লা তা প্রতিষ্ঠিত রাখুন এবং তা চিরস্থায়ী করুন।' (আবু দাউদ) বর্ণনাকারী আরো বলেন, রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইকামাতের অন্যান্য শব্দের বেলায় (হযরত উমার রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত) আজানের হাদিসের অনুরূপ বলেছেন।

সর্বোপরি কথা হচ্ছে- আজান ও ইক্বামাতের জবাবের মনস্তাত্বিক লাভ হচ্ছে, মানুষ যখন এর জবাব দেন তখন শয়তান অন্তর থেকে দূর হয়ে যায়। বিনা অসওয়াসায় মানুষ নামাজের দিকে ধাবিত হতে পারে এবং একনিষ্ঠতার সাথে নামাজ আদায় করতে পারে। মানুষ যতক্ষণ নামাজে ও মসজিদে থাকে, অন্তত: ততক্ষণ যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। এর ধারা অব্যাহত থাকলে সমাজের নানবিধ খারাপ কাজ কমে আসবে। শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

অত্র হাদিসদ্বয় থেকে শিক্ষনীয়:
হাদিসদ্বয় থেকে প্রমাণিত যে, আজানের ন্যায় ইক্বামাতেরও জবাব দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি আজান ও ইক্বামাতের জবাব দিবেন। আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাত দান করবেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাঅা'লা আমাদেরকে আজান ও ইক্বামাতের জবাব দেয়ার তাওফিক দান করুন।

ফজরের আজানের বাড়তি বাক্য ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’:
ফজরের আজানের বাড়তি বাক্য ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ সম্পর্কে জানা যায় যে- একদিন ফজরের সময় হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু আজান দিতে আসলেন, তখন তাকে বলা হলো, প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমে আছেন। তখন হজরত বেলাল রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু উচ্চকণ্ঠে ঘোষণা করলেন- ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম। অর্থাৎ ঘুমের চেয়ে নামাজ উত্তম।’

হজরত সাঈদ ইবনে মুসায়্যিব বলেছেন, ‘পরে ফজরের আজানের সঙ্গে এ বাক্যটি শমিল করে দেয়া হয়।’

আর এভাবেই সর্বপ্রথম আজানের প্রচলন হয়। আজানের আওয়াজ শুনার সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানরা মসজিদে জামাআতে নামাজ আদায়ে একত্রিত হয়।

আজান ইসলামের প্রতীক। কারণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কারও বিপরীতে অভিযান পরিচালনা করতেন; ঐ সময় তাদের মধ্য থেকে যদি আজানের ধ্বনি আসত তবে তিনি তাদের সঙ্গে অভিযান বন্ধ করে দিতেন এবং বলতেন, তারা মুসলিম।’

মুয়াজ্জিনের বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা:
যিনি আজান দেন তাঁকে মুয়াজ্জিন বলা হয়। আজান প্রদানকারীর জন্য রয়েছে অনেক ফজিলত ও মর্যাদা। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজান প্রদানকারীর অসামান্য ফজিলত ঘোষণা করেছেন। হাদিসে ঘোষিত মুয়াজ্জিনের আজান দেয়ার বরকত ও ফজিলত তুলে ধরা হলো-

মুয়াজ্জিনের মর্যাদা:
আজান উচ্চ শব্দে হওয়া বিধিসম্মত, কেননা মুয়াজ্জিনের আজানের শব্দ যত দূর যাবে ততদূরের মধ্যে যে কোন মানুষ, জিন বা যে কোনো বস্তু এ শব্দগুলো শুনবে কিয়ামতের দিন এগুলো তার জন্য সাক্ষ্য দিবে। হাদিসে এসেছে- হজরত মুআবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, ‘কিয়ামাতের দিন সবচেয়ে বেশি লম্বা ঘার হবে মুয়াজ্জিনদের।’ (মুসলিম)

মুয়াজ্জিনের শব্দ যত দূর যাবে ততদূর পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে। যে কোনো জীব ও জড় পদার্থ তার শব্দ শুনবে; তাকে (মুয়াজ্জিনকে) সমর্থন দেবে বা সত্যায়িত করবে। যত মানুষ মুয়াজ্জিনের আজানের দ্বারা নামাজ পড়বে তাদের সকলের সমপরিমাণ সওয়াব তারও (মুয়াজ্জিনের) হবে। হাদিসে এসেছে- হজরত আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যদি মানুষ জানতো আজানে ও নামাজের প্রথম সারিতে কি আছে এবং লটারী ছাড়া তা অর্জন করা সম্ভব নয়। তাহলে ঐ ব্যক্তি লটারী করে হলেও তা অর্জনের চেষ্টা করতো।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মুয়াজ্জিনকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই:
আমাদের সমাজে মুয়াজ্জিনকে ছোট জ্ঞান করে তাকে অবজ্ঞার দৃষ্টিতে দেখার একটা প্রবনতা রয়েছে। এটি কোনোভাবেই ঠিক নয়। আজান প্রদানকারীকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। উল্লেখিত হাদিস দ্বারা প্রমাণ হয় যে, আজান দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। মুয়াজ্জিন পরকালে অসামান্য মর্যাদার অধিকারী হবেন। আল্লাহ তাআলা সমাজে নামাজের জামাআত প্রতিষ্ঠায় মুয়াজ্জিনের আজান প্রদানের অসামান্য অবদানকে কবুল করুন।



আযান বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত:
১-আযানদাতাকে মুসলমান, পুরুষ ও সজ্ঞানব্যক্তি হতে হবে।
২-আযানের শব্দমালায় তরতীব তথা ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে।
৩- আযানের শব্দমালার উচ্চারণে নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে হবে, অর্থাৎ একবাক্য উচ্চারণের পর অন্যবাক্য উচ্চারণে অতিরিক্ত দেরি করা যাবে না।
৪- নামাযের ওয়াক্ত প্রবেশের পর আযান দিতে হবে।

আযানের সুন্নত:
১- কেবলামুখী হয়ে আযান দেয়া।
২- ছোট-বড় উভয় নাপাকি থেকে আযানদাতাকে পবিত্র থাকা।
৩- হাইয়া আলাস্সালাহ ও হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় ডানে ও বামে ফেরা।
৫- মুয়ায্যিনের দুই কানে দুই তর্জনী আঙ্গুল রাখা।
৬- মুয়ায্যিনকে সুন্দর আওয়াজসম্পন্ন হওয়া।
৭- সুর দিয়ে ধীরস্থিরতাসহ আযান দেয়া।

আযান ও ইকামত প্রদানের পদ্ধতি:
আযান প্রদানের পদ্ধতি :

الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، الله أكبر، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن محمداً رسول الله، أشهد أن محمداً رسول الله، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الصلاة، حَيَّ على الفلاح، حَيَّ على الفلاح، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله

(বর্ণনায় মুসলিম)

ইকামত প্রদানের পদ্ধতি :

الله أكبر الله أكبر، الله أكبر الله أكبر، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن لا إله إلا الله، أشهد أن محمداً رسول الله، أشهد أن محمداً رسول الله، حيَّ على الصلاة، حيَّ على الصلاة، حَيَّ على الفلاح، حَيَّ على الفلاح، قد قامت الصلاة، قد قامت الصلاة، الله أكبر، الله أكبر، لا إله إلا الله

আযান শ্রবণকারীর ক্ষেত্রে যা মুস্তাহাব:
১- মুয়াজ্জিন যা বলে তা বলা, তবে হাইয়া আলাস্সালাহ এবং হাইয়া আলাল ফালাহ বলার সময় لا حَوْل ولا قُوَّة إِلا بالله বলা।
(বর্ণনায় বুখারী)

২- আজানের পর বলা :

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إلا الله وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ، وَأَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللهِ رَبًّا، وَبِمُحَمَّد صلى الله عليه وسلمٍ رَسُولًا، وَبِالْإِسْلَامِ دِينًا.

'আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই। তাঁর কোনো শরীক নেই। আর মুহাম্মদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। রব হিসেবে আল্লাহর প্রতি, রাসূল হিসেবে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি এবং দীন হিসেবে ইসলামের প্রতি আমি সন্তুষ্টচিত্ত।' (বর্ণনায় মুসলিম)

৩- আজানের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর দরুদ পড়া। এরপর বলা :

اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلَاةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ.

'হে আল্লাহ, যিনি এই পরিপূর্ণ আহবান এবং কায়েমতব্য নামাজের রব! আপনি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ওয়াসিলা তথা জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান ও মর্যাদা দান করুন এবং আপনি তাঁকে প্রেরণ করুন প্রশংসিত স্থানে যার ওয়াদা আপনি তাঁকে দিয়েছেন।' (বর্ণনায় আবু দাউদ)

৪- আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নিজের জন্য দুআ করা; কেননা এসময় দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, 'আজান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ের দুআ ফিরিয়ে দেয়া হয় না।' (বর্ণনায় আহমদ)

আজান ও ইকামতের কিছু আহকাম:
১. দুই নামাজ একসাথে জমা করে পড়লে আযান একবারই দিতে হবে। আর ইকামত প্রতি নামাজের জন্য আলাদা আলাদা দিতে হবে।
২. ইকামতের পর যদি নামাজ শুরু হতে দেরি হয় তবে পুনরায় ইকামত দেয়ার প্রয়োজন নেই।
৩. মুয়াজ্জিনের উচিত আজানের শব্দমালা উচ্চারণে ভুল না করা। যেমন : 'আল্লাহু আকবার' এর জায়গায় (آلله آكبر؟) 'আ-আল্লাহু আকবার' বলা। যার অর্থ হবে, 'আল্লাহ কি সবচেয়ে বড়?' অথবা 'আল্লাহু আকবা-র' বলার ক্ষেত্রে 'আকবা-র' এর 'বা' এর উচ্চারণের সময় অক্ষরটিকে টেনে লম্বা করে উচ্চারণ করা। কিংবা الله وأكبر 'আল্লাহু ওয়াকবার' অতিরিক্ত একটি ওয়াও যুক্ত করে বলা। এগুলোর কোনোটিই ঠিক নয়। এসব ভুল করা থেকে সাবধানে থাকতে হবে।

৪. নামাজের ইকামত হয়ে গেলে কোনো নফল নামাজ শুরু করা বৈধ নয়। আর যদি ইতোমধ্যেই নফল নামাজ আদায় শুরু করা হয়ে থাকে তাহলে যদি সামান্য অংশ বাকি থাকে তবে উক্ত নামাজ পরিপূর্ণ করে নেবে। এর অন্যথা হলে সালাম ব্যতীতই নামাজ ছেড়ে দিয়ে ইমামের সাথে ফরয নামাজে ইকতেদা করবে।

৫. ভালো-মন্দ যাচাই করতে পারে এমন শিশুর আজান শুদ্ধ হবে।

৬- ঘুম অথবা ভুলে যাওয়ার কারণে কাযা হয়ে যাওয়া নামাজ আদায়ের জন্য আজান-ইকামত শুদ্ধ। একবার সাহাবায়ে কেরাম নিদ্রারত অবস্থায় সূর্য উঠে গেলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে আজান দিতে বলেন। এরপর সবাই অজু করেন ও দু'রাকাআত ফজরের সুন্নত আদায় করেন। এরপর তিনি বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুকে ইকামত দেয়ার নির্দেশ দেন এবং সাহাবায়ে কেরামদেরকে নিয়ে ফজরের ফরয নামাজ আদায় করেন। (বর্ণনায় আবু দাউদ)

৭- যে ব্যক্তি আজানের সময় মসজিদে থাকবে সে আজানের পর ওযর ব্যতীত মসজিদ থেকে বের হবে না। আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বর্ণনা করেন, 'রাসূূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এই বলে নির্দেশ দিয়েছেন যে, 'যখন তোমরা মসজিদে থাকবে আর নামাজের আজান দেয়া হবে, তখন তোমাদের কেউ যেন নামাজ আদায় না করে মসজিদ থেকে বের না হয়।' (বর্ণনায় আহমদ)

ফজরের আজান:
১- ফজরের আজানের সাথে, (الصلاة خيرمن النوم) দু'বার বলতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, '...যদি ফজরের নামাজ হয়, তবে (আজানের সময়) বলবে- الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ، الصَّلَاةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ

নবজাতকের কানে আজান; অন্যরকম ভাবনার বিষয়:
সন্তান ছেলে হোক কিংবা মেয়ে হোক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর প্রথম কাজ হলো নবজাতকের ডান কানে আজান এবং বাম কানে ইকামাত দেয়া। হজরত আবু রাফে রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘ফাতিমা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহার ঘরে হাসান ইবনে আলি রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুমা ভূমিষ্ঠ হলে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তার কানে আজান দিতে দেখেছি।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

নবজাতকের ডান কানে আজান আর বাম কানে ইকামত দেয়া হয়। প্রচলিত বিধানে দেখা যায়, আজান এবং ইকামত দেয়া হয় নামাজের জন্য। আজান এবং ইকামত দেয়া হয়ে গেলে বাকি থেকে যায় নামাজ। তো প্রশ্ন আসতেই পারে, নবজাতকের কানে আজান এবং ইকামত তো দেয়া হল, নামাজ কখন হবে? আসলে এই প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে, জন্মের পরপরই নবজাতকের কানে যে আজান ইকামত দেয়া হয়ে থাকে, তারপরে সামান্য সময় অপেক্ষা করতে হয় আমাদের এবং একসময় অভিনব একটি নামাজের দৃশ্য আমরা ঠিকই প্রত্যক্ষ করি, যাকে বলা হয় জানাজার নামাজ। নবজাতকের জীবদ্দশায় যে নামাজটি পড়ার সুযোগ থাকে না। যে নামাজ পড়তে হয় তাকে ছাড়াই। তারই জন্য অন্যরা যে নামাজ আদায় করেন তাকে সামনে রেখে।

অাহ! মসজিদের কোনে রক্ষিত খাটিয়ায় শুইয়ে দিয়ে কবরে রেখে আসার পূর্বক্ষনে জীবনাবসানের পরে শেষ পার্থিব নামাজের অপূর্ব দৃশ্য। কি অদ্ভূত ভাবনার বিষয়! কি দারুন চিন্তার বিষয়! কি বুঝা যায় এ থেকে? আমাদের বুঝে নিতে হবে, আজান ইকামত তো হয়ে গেল, এখন বাকি রয়েছে নামাজের জামাআতে সকলের দন্ডায়মান হওয়া। খুব অল্প সময়। মাত্র সামান্য সময়ের অপেক্ষা। অতি ক্ষুদ্র প্রতীক্ষার সময়ের জীবন। তারপরেই জামাআতে দাঁড়িয়ে যাবেন মুসল্লীগন। সুতরাং, ভুলে যেয়ো না, বিপথে চলো না। বিপদে পড়ো না। এই অল্প সময়ে, এই ক্ষুদ্রতম সময়ে প্রস্তুতি নাও দীর্ঘ-দীঘল অচেনা পারকালীন অন্তহীন পথের সফরের।

আমরা কি পেরেছি প্রস্তুতি নিতে অন্তহীন পরকালের সফরের যাত্রী হতে?

সমাজে প্রচলিত কিছু ভুল:
এক. কেউ কেউ আজানে ‘আল্লাহু আকবার’-এর জবাবে ‘কাল্লা জালালুহু’ পড়ে থাকে। এটি সুন্নাহপরিপন্থী। (ইমদাদুল আহকাম : ১/৪১৬)

দুই. অনেকেই আজানের সময় জবাব দিতে গিয়ে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’-এর জবাবে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’ বলে থাকে। এটিও উচিত নয়। কেননা এ সময় দরুদ পড়ার নির্দেশ নেই। বরং তখনো মুয়াজ্জিনের অনুরূপ ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলাই সুন্নাত। (আলবাহরুর রায়েক : ১/২৭৩, আহসানুল ফাতাওয়া : ২/২৭৮)

এই দরুদ আজান শেষ হওয়ার পরে পাঠ করা যেতে পারে।

তিন. আমাদের দেশে আজানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ’ বলার সময় অনেকেই বৃদ্ধাঙুলে চুমু খেয়ে চোখে মুছে থাকেন। কেউ কেউ আবার সঙ্গে ‘কুররাত আইনি’—এ দোয়াও পড়ে থাকে। অথচ ইসলামী শরিয়তে এর কোনো প্রমাণ নেই। সুতরাং এটি বর্জনীয়। (আল মাকাসিদুল হাসানা, পৃষ্ঠা-৬০৬, ইমদাদুল ফাতাওয়া : ৫/২৫৯)

চার. প্রসিদ্ধ আছে, আজানের জবাব না দিলে বা আজানের সময় কথা বললে বেঈমান হয়ে যায় কিংবা বেঈমান অবস্থায় মারা যাওয়ার ভয় আছে—এরূপ কোনো বর্ণনা হাদিসের কিতাবে নেই। সুতরাং এটি ভ্রান্ত বিশ্বাস। (ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪৩০)

যাদের আজানের জবাব দিতে হবে না:
নামাজ আদায়কারী, পানাহার অবস্থায় রত ব্যক্তি, ইস্তিনজাকারী, স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত, মহিলাদের ঋতুকালীন ইত্যাদি সময়। তবে অনেক আলেমের মতে, আজানের পরক্ষণেই যদি উল্লিখিত কাজ থেকে অবসর হয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আজানের জবাব দিয়ে দেওয়া উত্তম। কুরআন তিলাওয়াতকারীর জন্য তিলাওয়াত সাময়িক বন্ধ রেখে আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৩৯৭)

জুমুআর নামাজের পূর্বে দ্বিতীয় আজানের জবাব:
জুমুআর নামাজের পূর্বে দ্বিতীয় আজানের সময় যখন খতিব সাহেব মিম্বরে উপবিষ্ট থাকেন, তখন ফেকাহবিদদের নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী জুমুআর দ্বিতীয় আজানের জবাব মৌখিক না দেওয়াটাই উত্তম। তা সত্ত্বেও কেউ দিতে চাইলে মনে মনে জবাব দিতে পারে। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/২৯৯, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ২/৫৮)

আজানের সময় দুনিয়াবি কথা ও কাজে লিপ্ত থাকা:
আজানের সময় চুপ থাকা সুন্নত। একান্ত প্রয়োজন না হলে সাধারণ দ্বীনি ও দুনিয়াবি কথা বা কাজে লিপ্ত থাকা অনুচিত। বক্তৃতা বা সেমিনার চলাকালে আজান হলে সাময়িক তা স্থগিত রাখবে। ওয়াজ বা কোনো দ্বীনি মাহফিল চলাকালেও তা সাময়িক বন্ধ রেখে উপস্থিত সবার জন্য আজানের জবাব দেওয়া উত্তম। মনে রাখতে হবে, একজন আজানের জবাব দিলে সবার পক্ষ থেকে তা আদায় হয়ে যায় না। কেননা আজানের জবাব দেওয়া শ্রবণকারী সব মুসলমানের জন্য সুন্নত। আর আজানের জবাব দেওয়া সুন্নতে কেফায়া নয়। (ফাতহুল কাদির : ১/২৪৮, রদ্দুল মুহতার : ১/৩৯৯, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ৫/৪২৭)

আজান ইকামত শ্রবনে শয়তান পলায়ন করে:
শয়তান আজান বা ইকামত শুনলে বায়ু ত্যাগ করতে করতে আওয়াজ পৌঁছা পর্যন্ত দূরত্বে পলায়ন করে। যেমন সুনানে দারেমীতে সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ: إِذَا نُودِيَ بِالصَّلَاةِ، أَدْبَرَ الشَّيْطَانُ لَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى لَا يَسْمَعَ الْأَذَانَ، فَإِذَا قُضِيَ الْأَذَانُ، أَقْبَلَ، وَإِذَا ثُوِّبَ، أَدْبَرَ، فَإِذَا قُضِيَ التَّثْوِيبُ، أَقْبَلَ حَتَّى يَخْطِرَ بَيْنَ الْمَرْءِ وَنَفْسِهِ، فَيَقُولُ: اذْكُرْ كَذَا وَكَذَا، لِمَا لَمْ يَكُنْ يَذْكُرُ قَبْلَ ذَلِكَ.

অর্থাৎ আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু সূত্রে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'যখন নামাযের জন্য আজান দেয়া হয় তখন শয়তান বায়ু ত্যাগ করতে করতে এতাদূর পলায়ন করে, যেখানে আজান শোনা যায় না। যখন আজান শেষ হয় তখন সে আবার সামনে অগ্রসর হয়। এরপর যখন ইকামত দেয়া হয় তখন আবারো পলায়ন করে। যখন ইকামত শেষ হয় তখন আবার এগিয়ে এসে মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দিতে থাকে। বলতে থাকে, অমুক বিষয় স্মরণ করো, অমুক জিনিস মনে করো, যা তার পূর্বে স্মরণ ছিলো না।' (সুনানে দারেমী : ২/৭৬৯, হা. নং ১২৪০)

রেডিও-টেলিভিশনের আজানের জবাব:
মুয়াজ্জিনের আজান রেডিও-টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নাত। রেকর্ড করা হলে তার জবাব দেওয়া সুন্নাত নয়। (বাদায়েউস সানয়ে : ১/৬৪৬, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ১/১৭০)

আজানের পর দুআ:
আজানের পর দরুদ শরিফ ও দুআ পাঠ করা সুন্নাত। হাদিস শরিফে এর ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আজানের পর আল্লাহুম্মা রাব্বা হাজিহিদ...’ এ দুআটি পাঠ করবে, তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (বুখারি, হাদিস : ৬১৪)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘তোমরা মুয়াজ্জিনের অনুরূপ শব্দে আজানের জবাব দাও, অতঃপর দরুদ পাঠ করো, এরপর আমার জন্য বেহেশতের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থানের জন্য দুআ করো। আশা করি, আল্লাহ তাআলা আমাকেই সে স্থান দান করবেন। যে ব্যক্তি এ দুআ করবে, তার জন্য আখিরাতে আমার সুপারিশ অবধারিত।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৪)

আজানের পর হাত তুলে মুনাজাত:
আজানের পর দরুদ শরিফ পড়ে একটি বিশেষ দুআ পড়ার কথা হাদিস শরিফে রয়েছে, তবে আজানের পর হাত তুলে দুআ পড়া ও মুনাজাত করার কথা হাদিসে নেই। (ফয়জুল বারি : ২/১৬৭, ফাতাওয়া মাহমুদিয়া : ১৬/২০৮)

ইকামতের জবাব দেওয়াও মুস্তাহাব:
আজানের মতো মুসল্লিদের ইকামতের জবাব দেওয়াও মুস্তাহাব। (ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/৫৭) ইকামতের জবাবও আজানের অনুরূপ। শুধু ইকামতের মধ্যে ‘ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ’-এর জবাবে’ ‘আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’ বলবে। হজরত আবু উমামা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত, ‘একবার হজরত বিলাল রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু ইকামত দিচ্ছিলেন, তখন নবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তাঁর সঙ্গে আজানের অনুরূপ উত্তর দিয়েছেন, তবে ‘ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ’ বলার সময় বলেন, ‘আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহা’। (আবু দাউদ, হাদিস : ৫২৮)



আজানের শব্দে লুকিয়ে থাকা কিছু রহস্য:
অপূর্ব এবং মহিমান্বিত কিছু শব্দমালার নাম আজান। এই আজানের ভেতর লুকিয়ে আছে অনেক রহস্য। আজানের শুরু হয় ‘আল্লাহ’ শব্দ দিয়ে আবার শেষও হয় ‘আল্লাহ’ শব্দ দিয়ে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা বহন করে যে আল্লাহই শুরু, আল্লাহই শেষ। আল্লাহর বিকল্প কিছু হতে পারে না।

এক. পবিত্র কুরআন মাজিদে আজানের কথা বিভিন্ন শব্দে যেমন- ‘আজ্জানা’ শব্দটি দুইবার, ‘উজ্জিনা’ একবার ও ‘মুয়াজ্জিন’ দুইবার সব মিলে মোট পাঁচবার এসেছে। আর মুসলমানদের উপর ফরজকৃত নামাজের ওয়াক্তের সংখ্যাও ৫।

দুই. অাবার গননা করে দেখা গেছে আজানের শব্দসংখ্যা ৫০। যথা— ১. আল্লাহু ২. আকবার ৩. আল্লাহু ৪. আকবার ৫. আল্লাহু ৬. আকবার ৭. আল্লাহু ৮. আকবার ৯. আশহাদু ১০. আন ১১. লা ১২. ইলাহা ১৩. ইল্লা ১৪. আল্লাহ ১৫. আশহাদু ১৬. আন ১৭. লা ১৮. ইলাহা ১৯. ইল্লা ২০. আল্লাহ ২১. আশহাদু ২২. আন্না ২৩. মুহাম্মাদ ২৪. রাসুল ২৫. আল্লাহ (উল্লেখ্য এখানে ‘রাসুল’ শব্দটি ‘আল্লাহ’ শব্দের সঙ্গে সন্ধি হয়ে ‘রাসুলুল্লাহ’ হয়েছে। যার অর্থ, আল্লাহর রাসুল) ২৬. আশহাদু ২৭. আন্না ২৮. মুহাম্মাদ ২৯. রাসুল ৩০. আল্লাহ ৩১. হাইয়া ৩২. আলা ৩৩. সালাহ ৩৪. হাইয়া ৩৫. আলা ৩৬. সালাহ ৩৭. হাইয়া ৩৮. আলা ৩৪. ফালাহ ৪০. হাইয়া ৪১. আলা ৪২. ফালাহ ৪৩. আল্লাহু ৪৪. আকবার ৪৫. আল্লাহু ৪৬. আকবার ৪৭. লা ৪৮. ইলাহা ৪৯. ইল্লা ৫০. আল্লাহ।

আজানের শব্দসংখ্যা ৫০; আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা এই উম্মতের উপর প্রথমে নামাজ ফরজও করেছিলেন ৫০ ওয়াক্ত। এর আরেকটি ব্যাখ্যা এমনও হতে পারে যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে তাকে ১০ গুণ সাওয়াব দিয়ে ৫০ ওয়াক্ত নামাজের সাওয়াবই প্রদান করা হবে। সূরাহ অাল আনআমের ১৬০ নম্বর আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন, ‘কেউ সৎকাজ করলে সে তার ১০ গুণ প্রতিদান পাবে।’

তিন. আজানের বাক্যসংখ্যা ১২, আর বছরের মাসের সংখ্যাও ১২। এর দ্বারা বুঝা যায়, মুমিন বান্দার জন্য ১২ মাসই নামাজ ফরজ।

চার. আবার দেখুন, পুরো আজানের মধ্যে ঘুরে ফিরে যে কয়টি অক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে তার সংখ্যা ১৭। যেমন—১. আলিফ ২. লাম ৩. হা ৪. কাফ ৫. বা ৬. র ৭. শিন ৮. দাল ৯. নুন ১০. মিম ১১. হা (বড়) ১২. সিন ১৩. ওয়াও ১৪. ইয়া ১৫. আইন ১৬. ছদ ১৭. ফা।

এর বিপরীতে সারা দিনে বান্দার উপর ফরজকৃত নামাজের রাকাআত সংখ্যাও আশ্চর্যজনকভাবে ১৭। যেমন—ফজরের ২, যুহরের ৪, আছরের ৪, মাগরিবের ৩, ইশার ৪, (২+৪+৪+৩+৪)=মোট ১৭।

পাঁচ. আজানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ‘আল্লাহ’ শব্দ, যার মধ্যে মৌলিক অক্ষরের সংখ্যা তিনটি—১. আলিফ ২. লাম ৩. হা। পুরো আজানের মধ্যে আলিফ অক্ষরটি এসেছে ৪৭ বার, লাম ৪৫ বার, হা ২০ বার। ৪৭+৪৫+২০=১১২। পবিত্র কুরআনের ১১২ তম সূরাটি হচ্ছে সূরা ইখলাস, যেখানে আল্লাহ তাআ'লার একত্ববাদের কথা বলা হয়েছে।

প্রার্থনা মহান মনিবের নিকট:
আজান প্রচারিত হয় বিশ্বজগতজুড়ে। ইথারে ইথারে ভেসে বেড়ায় আজানের সুমধুর ধ্বনি তরঙ্গ। বাতাসের শরীর ভেদ করে সে পবিত্র আহবান এসে প্রবেশ করে আমাদের কর্ণকুহরে। পবিত্রতার ছোঁয়া দিয়ে যায় আমাদের হৃদয়-মনে। আল্লাহ পাক আজানের পবিত্রতায় পরিশুদ্ধ করুন আমাদের অন্তকরণ। ঋদ্ধ-শুদ্ধ করুন আমাদের আত্মাকে। আজানের আহবান শুনে শুনে আমরা যেন দৃপ্ত পায়ে ছুটে যেতে পারি মহান মনিবের সামনে মস্তক অবনত করার প্রত্যয়ে মসজিদ পানে। মালিক মহিয়ান, আপনি তাওফিক দান করে ধন্য করুন আমাদের সকলের জীবন।

কৈফিয়ত:
বরাবরের মতই পোস্টের আকার নিয়ে আপত্তি করার সুযোগ থেকেই যায়। কিন্তু এই পোস্ট একবার পাঠ করে রেখে দেয়ার জন্য নয়। বরং অনুসন্ধানীদের কাছে আশা করি, আজীবনের জন্য সংগ্রহে রাখার প্রয়োজনে। সুতরাং, পোস্ট ছোট কিংবা বড় এটা নয় আমাদের অগ্রযাত্রা হোক জ্ঞানের দিকে। আলোকের দিকে।

ছবি: অন্তর্জাল।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:১৭
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×