somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

কেমন ছিল গৃহকর্মীর সঙ্গে মহানবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর আচরণ?

০২ রা নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মদিনা মুনাওওয়ারায় পবিত্র মসজিদে নববী লাগোয়া প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজায়ে আতহার। যেখানে ঘুমিয়ে আছেন সাইয়্যিদুল কাওনাইন ওয়াসসাকালাইন। ছবি: অন্তর্জাল।

প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন:
আমাদের ভেতরে কিছু মানুষ রয়েছেন, যাদের চিন্তায় সমস্যা। তাদের সামনে আপনি যদি সুন্দর শিক্ষনীয় বিষয়ের উপরে কোনো একটি হাদিস বলেন, দেখবেন অবলীলায় তারা বলে উঠবে- 'আরেহ, হাদিসের এইসব কথা কি এই যুগে পালন করা সম্ভব? এগুলো তো সেই দেড় হাজার বছর আগের সময়ের জন্য ঠিক ছিল।' তাদেরকে যদি সাহাবীদের উত্তম চরিত্র এবং তাকওয়া পরহেজগারি বিষয়ে কিছু বলেন, তারা দেখবেন হৈচৈ করে বলবে, 'আরেহ, এটা তাদের জন্য তখন শোভা পেত। এখন উত্তম চরিত্রের দিন নেই। এগুলো শুনিয়ে এখন আর লাভ নেই।'

আরেক ধাপ এগিয়ে কেউ কেউ বলে ওঠেন, 'আমাদের কাছে তাদের কথা বলে লাভ কি? আমরা কি আর তাদের মত হতে পারবো? পারবো না। এটা সম্ভবও না।'

দেখলেন তো, কি সুন্দর যুক্তি!

সাহাবিদের মত হতে পারবে না বলে তাদের জীবনাচারের বিষয়ে শুনবেও না। প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মত হওয়া যাবে না বলে তাঁর পবিত্র জীবনাদর্শ শুনবেও না। এ সম্মন্ধে আলোচনাও শুনবে না। আলোচনা হোক, এটাও চায় না। হায় হায়! এ কোন অন্ধকারের দিকে ফিরে যাচ্ছি আমরা!

গৃহকর্মীদের জীবন-মৃত্যু গৃহকর্তার ইচ্ছের উপরে:
আজকাল গৃহকর্মীদের মারধোরের খবর অহরহ শোনা যায়। কত খবর তো খবরই হয় না। রয়ে যায় গোপনে। কদাচিত কোনো গৃহকর্মী নির্যাতন-নিপীড়নে একান্ত মরনাপন্ন না হলে, কিংবা মৃত্যুমুখে পতিত না হলে তাদের সংবাদ পত্রিকায়ও আসে না। গৃহকর্মীদের খোঁজ নেয়ার কেউ নেই। তাদের বাঁচা-মরা, জীবন-মৃত্যু নির্ভর করে গৃহকর্তার ইচ্ছের উপরে। আচ্ছা, ইসলাম পূর্ব আইয়্যামে জাহিলিয়াত কি আরও বেশি জঘন্য ছিল? বিষয়টি ভাবতেই গা শিউরে ওঠে- এখন এই সমাজ, আমাদের মানসিকতা দিনকে দিন এমনই অনুভব-অনুভূতিতেই যেন ধাতস্ত হয়ে উঠছে যে, এসব সংবাদ শুনতে শুনতে, এগুলো আমাদের নিকট অতি স্বাভাবিক ঘটনার পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন আর আমরা এসব সংবাদে তেমন বিচলিতও হই না। মারধোর তো সাধারণ ঘটনা, প্রায়শই গৃহকর্মী খুনের ঘটনাও এখন আমাদের অনুভূতিতে আঘাত হানে না। যার বা যাদের আশ্রয়ে, তত্ত্বাবধানে, অভিভাবকত্বে থাকে একটি মানুষ, একটি শিশু, একটি কিশোরী, একজন নারী- তার প্রতি নির্মম নির্যাতন, এমনকি নানাবিধ নিপীড়নে তাকে মেরে ফেলাও এখন আর কোনো ঘটনা বলে বিবেচিত হয় না। গৃহকর্মীদের প্রতি এই ধরণের জঘন্য নির্যাতন, নির্মম নৃশংসতা কেন? মানবতার এমন করুন দুর্দশা পৃথিবী এর আগে কি কখনো প্রত্যক্ষ করেছে কি না কে জানে!

সউদি আরবে আর একজন নারীও নয়:
সউদি আরব আমাদের প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেশ। তাঁর আগমনের কারণে আমাদের নিকট সম্মানিত এই দেশটি। বর্তমান সউদির সব মানুষ ভালো তা বলা যাবে না। আবার সেখানকার সব মানুষকে খারাপ ভাবারও কোনো কারণ নেই। হয়তো কিছু সংখ্যক মানুষের কারণে পরিস্থিতি দিনকে দিন ঘোলাটে হয়ে উঠছে। আমাদের মনের কোনে সউদি আরবের প্রতি আজীবনের লালিত সম্মান ও সম্ভ্রমবোধের স্থানটিতে জমা হতে শুরু করেছে ঘৃণা আর গ্লানি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন আজকের এই দুরবস্থা? কেন সউদি আরবের প্রতি আমাদের এই আস্থার সংকট?

এর উত্তর হচ্ছে, ইদানিং আমরা আমাদের নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল দিচ্ছি। আমরা আমাদের মা-বোনদের অর্থ আয়ের জন্য বিদেশে পাঠাচ্ছি। একজন নারীকে কোন সাহসে, কোন নিরাপত্তার জোরে বিদেশ বিভূইয়ে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিচ্ছি? কেন তাদের বিদেশ পাঠাচ্ছি? একজন নারী, যিনি কর্মঠ, যিনি বিদেশে গিয়ে কাজ করতে সমর্থ। তাকে দেশেই কেন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি না? ঘরের সামনে, বাড়ির সামনের অংশে তাকে একটি দোকান কেন করে দিচ্ছি না? গ্রাম-গঞ্জে গরু-ছাগল-হাঁস-মুরগি পালনে ভাগ্য ফেরানো সম্ভব জেনেও তাকে কেন এসব কাজে উতসাহ দিচ্ছি না? আমাদের দেশের অবলা, সরলা মা-বোনদের লোভ-লালসায় ফেলে বিদেশে পাঠিয়ে তাদের জীবন-সম্ভ্রম হুমকিতে ফেলে দেয়ার এই সীমাহীন অপরাধ আমরা ঢাকবো কি দিয়ে? আমাদের লোভ, আমাদের নৈতিকতা বর্জিত মানসিকতা, আমাদের কাপুরুষোচিত চিন্তা-চেতনা আমাদেরকে অন্ধকারের পাদপীঠে এনে দাঁড় করিয়েছে। আমরা দুপয়সা কামাই করার জন্য আমাদের সম্মানিত মা-বোনদের ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছি। ইজ্জত-সম্ভ্রম এমনকি জীবন পর্যন্ত হারিয়ে তারা ফিরে আসছে। বিমান বন্দরে হাসিমুখে আমরা তাদের লাশ গ্রহন করছি। আমাদের মৃত্যু শ্রেয়। আমাদের শরম থাকা উচিত। আমাদের লজ্জা-হায়া থাকা উচিত। আমাদের মাতৃজাতির প্রতি দরদ থাকা উচিত। শ্রদ্ধা-সম্মানবোধ থাকা উচিত।

দু'মুঠো খাবার, একটু আশ্রয় আর সামান্য অর্থের বিনিময়ে কত কিছুই না করতে হয়!
যার বা যাদের আশ্রয়ে থাকে একজন গৃহকর্মী তাদের থেকে সর্বোচ্চ এবং সবচেয়ে উত্তম আচরণ কাম্য সেই কর্মীটির প্রতি। নিজের বাবা-মা, নিজের বাড়ি-ঘর, নিজের স্বাধীনতা-স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে অন্যের বাড়ি-ঘরে যারা কাজ করে, নিছক পেটের দায়েই তারা তা করে থাকে। একটি বাচ্চা শিশুর যে বয়সে খেলাধুলা আর মা-বাবা এবং আত্মীয়-স্বজনের আদর-স্নেহ পেয়ে বড় হওয়ার কথা, সেই শিশু-কিশোর বয়সেই তাকে যেতে হয় পরের ঘরে। বুঝে নিতে হয়, পৃথিবীতে বেঁচে থাকার প্রয়োজনে তাকে কাজ করতে হবে। দু'মুঠো খাবারের জন্য তাকে থালা-বাটি-বাসন মাজা, ঘরদোর পরিষ্কার করা, ফ্লোর মোছা, কাপড় কাচা, বাজার করা, রান্না-বান্না করা, রুটি বানানো, মাছ-গোশত কাটা, কাপড় চোপড় আয়রণ করা, তরিতরকারি কুটে দেয়া, মসলা বাটাসহ সংসারের যাবতীয় কাজ বুঝে নিতে হয়। এই কাজগুলোই শুধু নয়, সংসারের এরকম আরও অসংখ্য কাজ তাদের নিয়মিত করে যেতে হয়। এতসব কাজের বোঝা কে চায় মাথা পেতে নিতে? নিতান্ত অভাবের কারণেই গৃহকর্মীরা পরের ঘরে এক মুঠো ভাতের জন্য, একটু আশ্রয়ের আশায় গায়ে খেটে দু'মুঠো খাবার আর অতি সামান্য বেতনের ঋণ শোধ করে। বিনিময়ে পান থেকে চুন খসলেই নেমে আসে নির্যাতন। কিন্তু গৃহকর্মীদের নির্যাতনের বিষয়ে ইসলাম কী বলে? এদের প্রতি কেমন আচরণের নির্দেশ দেয় ইসলাম? আসুন, সংক্ষিপ্তাকারে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টিতেই একটু তাকিয়ে দেখি, গৃহকর্মীদের সাথে কেমন ছিল মানবতার দিশারী প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আচরণ।

গৃহকর্মীদের প্রতি নির্মমতার ব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
ইসলাম ধর্মে গৃহকর্মীদের প্রতি নির্মমতার কোনো সুযোগ নেই। এটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। গৃহকর্মী কোনো কাজে-কর্মে ভুল করলে তাকে উত্তম কথা দ্বারা শুধরে দিতে হবে। ইসলাম এই নির্দেশই দিয়েছে। রাসূলে পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং নিজের জীবনে গৃহকর্মীদের সাথে এরকম সদাচারের সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত এবং এমন উপমা রেখে গেছেন, মানবতার ইতিহাসে যার কোনো নজীর খুঁজে পাওয়া যায় না। গৃহকর্মীর প্রতি প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অসাধারণ ক্ষমা এবং অপরিমেয় সহনশীলতা সম্পর্কে সম্যক ধারণালাভের জন্য একটি হাদিসই যথেষ্ট। প্রখ্যাত সাহাবি হযরত আনাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেন, ‘আমি দশ বছর ধরে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম! তিনি কোনো দিন আমাকে বকা দেননি। কোনো দিন উফ্ বলেননি। কখনো বলেননি, এ কাজটি কেন করেছ? অথবা, এ কাজটি কেন করোনি?’ সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ৬৪৩০

আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। উম্মুল মু'মিনীন আয়েশা রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহা বলেন, 'রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করা ব্যতিত কখনো কোনো বস্তুকে কিছু দিয়ে আঘাত করেননি। তার কোনো স্ত্রী ও সেবক-গৃহকর্মীকে প্রহার করেননি। কারো থেকে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। কিন্তু আল্লাহ তাআ'লার অসম্মান করা হলে, তখন আল্লাহর জন্য প্রতিশোধ নিয়েছেন।’ সহিহ মুসলিম, হাদিস নং: ২৩২৮

সত্যি কথা বলতে কি, বাস্তবতার নিরিখে শুধু সেবক কিংবা গৃহকর্মীরাই নন, কোনো মানুষের পক্ষেই নির্ভুল থাকা সম্ভব নয়। মানুষ মাত্রেরই ভুল-ভ্রান্তি থাকা স্বাভাবিক। সেবক কিংবা গৃহকর্মীরাও ছোটখাট ভুলত্রুটি করেই থাকেন। কাজে-কর্মে ভুল, কথা-বার্তায় ভুল, আচার-আচরণে ভুল- এরকম নানাবিধ ভুল-ভ্রান্তির সমন্বয়েই তাদেরও জীবন। মানবিক দুর্বলতার ফলে কোনো কোনো সময়ে কাজের ক্ষেত্রে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ পেতে পারে। আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পবিত্র সান্নিধ্য এবং সংস্পর্শে যারা ছিলেন, তারাও মানবীয় এসব ভুল-ত্রুটি মুক্ত ছিলেন না। তারাও কখনো কখনো ভুল-ভ্রান্তিতে নিপতিত হতেন, কিন্তু এতদসত্ত্বেও রাসূলে আরাবি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ভুল-ত্রুটিগুলোর দিকে নজর দিতেন না। বরং তাদের দুর্বলতাগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতেন। তাদের প্রতি সদয় হতেন। তাদের ভালো দিকগুলোর প্রশংসা করতেন। তাদের শুদ্ধ এবং সংশোধিত হওয়ার সুযোগ দিতেন।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক একবার রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছে এসে অভিযোগ করলেন, গৃহকর্মীদের আমরা আর কত ক্ষমা করবো? তখন তিনি চুপ থাকেন। লোকটি আবারও একই প্রশ্ন করে। এভাবে তিনবার প্রশ্ন করার পর রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তাদের দৈনিক সত্তুর বার করে ক্ষমা করো।’ সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং : ৪৪৯৬

কাউকে মারার অধিকার আমার নেই:
আজকের আধুনিক দাবিদার আমাদের এই সমাজের অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি দিক হচ্ছে, গৃহকর্মীদের প্রতি নিরতিশয় নির্মমতা প্রদর্শন। কথা-কাজে একটু এলোমেলো হলেই, যথাসময়ে যথাযথভাবে সকল কাজ না করলেই আমরা তাদের প্রতি অত্যাচার-অবিচারের পথ অবলম্বন করি। অবুঝ, কচিকাঁচা একেবারে শিশু বয়সের নিষ্পাপ বাচ্চাদের আমরা গৃহকর্মী নিয়োগ দিই। বিনিময়ে তাদের থেকে প্রাপ্তবয়স্ক কাজের লোকের দায়িত্ব চাপিয়ে দিই। অত:পর তারা যখন তাদের শারিরীক অক্ষমতার কারণে এতসব কাজের আঞ্জাম দিতে ব্যর্থ হয়, আমরা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠি। তাদের প্রতি রুদ্রমূর্তি ধারণ করি। আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে দিই তাদের ছোট্ট শরীর। এমনকি মানবতার সকল স্তর ও পর্যায়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে একটি জীবনকে খতম করতেও কুন্ঠিত হই না। ক্ষনিকের জন্য ভুলে যাই, যে অবুঝ নিষ্পাপ শিশুটি আমার বাসায় গৃহকর্মে নিয়োজিত, এই শিশুর জীবনের মালিক আমি নই। ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে পশুত্বের পর্যায়ে নেমে যাই আমরা। বেমালূম ভুলে যাই, তাকে মারার কোনো অধিকার আমার নেই। শুধু তাকে নয়, কোনো মানুষকেই নয়। কোনো প্রাণীকেই নয়। কোনো প্রাণীকে একটি আঘাত করার অধিকার আমার নেই। গৃহকমীকে মারধোর তো করা যাবেই না। এমনকি একটি থাপ্পরও নয়। কাউকে প্রহার করার অধিকার সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেননি। সে অন্যায় করলে কিংবা আমার ধন-সম্পদের কোনো ক্ষতিসাধন করলে তার শাস্তি বিধানের জন্য রাষ্ট্রীয় আইন-আদালত রয়েছে। কোনো অবস্থায় তাকে নিপীড়ন করার ন্যূনতম অধিকার কিংবা সুযোগ আমার থাকতে পারে না। আমার জেনে রাখা উচিত, একজন মানুষ হিসেবে সে স্বাধীন। আমার মতই সৃষ্টিকর্তা তাকে সেই স্বাধীনতা দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। সে স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ধৃষ্টতা যদি আমি দেখাই পরকালে অবশ্যই এর জন্য আমাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। জীবনদাতার এজলাসে নিশ্চিতভাবে জবাবদিহি করতে হবে।

সকল প্রাণীর সাথে চাই সর্বোত্তম আচরণ:
পরিশেষে মহান আল্লাহ তাআলার কাছে একান্ত ফরিয়াদ, তিনি আমাদের আচরণগত ত্রুটি মার্জনা করুন। শুধু গৃহকর্মী বা গৃহপরিচারিকা নয়, শুধু মানব জাতিই নয়, সৃষ্টি জগতের সকল প্রাণীর সাথে রাসূলে মাকবুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রদর্শিত সর্বোত্তম আচরণে অভ্যস্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন।

কৈফিয়ত: যদিও গৃহকর্মীদের নিয়ে এই পোস্ট, তবুও এটিতে সউদি আরবে নারী গৃহ কর্মীদের দুর্দশার বিষয়টি যুক্ত করার ইচ্ছে ছিল না। আমাদের কোনো কোনো বন্ধু যাতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক, মানবতার মুক্তির দূত প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি আমাদের ভালোবাসাকে ভিন্ন অর্থে গ্রহন করে অনর্থক প্রশ্ন তুলতে না পারেন, সেজন্যই বিষয়টিতে সামান্য টাচ দেয়ার চেষ্টা। পরবর্তীতে সউদিসহ অন্যান্য দেশে আমাদের দেশের নারী গৃহকর্মীদের দুর্দশা লাঘবের বিষয়ে সম্মানিত ব্লগার বন্ধুদের থেকে সবিস্তারে আরও লেখা প্রত্যাশা করছি।

নিবন্ধটি মনযোগের সাথে পাঠ করায় অভিনন্দন। শুভকামনা সকলের জন্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১১:২৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×