somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

পেট ফাঁপার চিকিৎসা এবং আল্লাহর কালামের গুন ক্ষমতা - রিপোস্ট

২৬ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

পেট ফাঁপার চিকিতসা এবং আল্লাহর কালামের গুন ক্ষমতা

পুরাকালে বাদশাহদের দরবারে আলেম উলামাদের খুব কদর ছিল। এক বাদশাহ দ্বীনী বিষয় নিয়ে তার দরবারে এক আলেমের সাথে আলোচনা করছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি একটি শিশুকে নিয়ে এসে সেই আলেমের খেদমতে আরজ করলেন: ''হুজুর, আমার ছেলেটির পেট ফেঁপেছে, ব্যথায় খুব কষ্ট পাচ্ছে। দয়া করে কিছু করুন যেন আল্লাহ পাক আরোগ্য দান করেন।''

উক্ত বুযুর্গ আলেম শিশুটির পেট লক্ষ্য করে একটি ফুঁক দিলেন এবং বললেন: ''যান, নিয়ে যান। ইনশাআল্লাহ ভাল হয়ে যাবে।''

বাদশাহ বিষয়টি লক্ষ্য করলেন; কিন্তু সন্তষ্ট হতে পারলেন না।

তিনি বুযুর্গকে বললেন: ''হযরত! আমি আপনাকে জ্ঞানী ব্যক্তি ভেবেছিলাম! কিন্তু আপনি যা করলেন তার কোন যুক্তি দেখি না। শিশুটি যন্ত্রনায় কাতর, অথচ তার চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা না করে শুধুমাত্র একটি 'ছু' করে দিলেন। এই 'ছু' করাতে কী যায় আসে? রুগ্নদের প্রতি দয়া দেখানোই তো মহৎ ব্যক্তির লক্ষন।''

বুযুর্গ বললেন: ''বাদশাহ আপনার লক্ষণ বেশি ভাল নয়। দেশের লোক আপনার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েছে। তারা আপনার বদনাম ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। জনগনের অসন্তুষ্টি মঙ্গলজনক হয় না।''

বুযুর্গ আলেমের কথা শ্রবণে বাদশাহর মুখমন্ডল কালো হয়ে একেবারে যেন নূয়ে পড়লো।

একটু থেমে বুযুর্গ বললেন: ''তবে দুষ্টু প্রকৃতির লোকেরাই শুধু বদনাম ছড়ায়। কারণ, দুষ্টুদের দমনের জন্য আপনার কঠোরতায় তারা সন্তুষ্ট হতে পারে না। এতে প্রকৃতপক্ষে আপনার মর্যাদাই বৃদ্ধি পাবে।''

বাদশাহর মুখ এবার হাস্যোজ্জ্বল হয়ে উঠলো। আনন্দে মুখে কথার খৈ ফুটতে লাগলো।

বুযুর্গ বললেন: ''কিন্তু দেশে দুষ্ট লোকের সংখ্যাই অধিক। এরা বিদ্রোহ করলে আপনার ক্ষমতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।''

একথা শুনে বাদশাহর মুখমন্ডল আবার লাল হয়ে উঠলো। ক্রোধে তিনি ফেটে পড়লেন। আসন ছেড়ে উঠে পড়লেন। দুই হাতের আস্তিন গুটাতে গুটাতে বললেন, ''কে আছে আমার সঙ্গে বিদ্রোহ করবে? আমার সৈন্য আছে, অস্ত্র আছে, বিদ্রোহ কিভাবে দমন করতে হয় তাও আমার জানা আছে ......।"

বুযুর্গ এবার বললেন: ''দুষ্টু লোকেরা সংখ্যায় অধিক হলেও তাদের সাহস কম। বিদ্রোহ করার মত মনোবল তাদের নেই। আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। আপনার মত ন্যায়পরায়ন বাদশাহ ইনশাআল্লাহ শান্তিতে থাকবেন এবং দেশেও শান্তি বিরাজ করবে।"

একথা শুনে বাদশাহ শান্ত সুবোধ বালকের মত আসনে বসে পড়লেন। তার চেহারায় পূর্বের প্রশান্তির ভাব ফিরে এলো। যেন তার কিছুই হয় নি।

এবার বুযুর্গ বললেন: "দেখুন বাদশাহ! আমি আপনাকে চারটি কথা বলেছি। এর দ্বারা আপনার অবস্থা চারবার পরিবর্তন হয়েছে। প্রথম কথায় লজ্জায়, অপমানে আপনার চেহারা কালো হয়ে পড়লো। দ্বিতীয় কথা দ্বারা আপনি আনন্দিত হলেন। তৃতীয় কথায় আপনার মুখমন্ডল ক্রোধে লাল হয়ে উঠলো, আপনি আসন ছেড়ে উঠে ছটফট করতে লাগলেন। চতুর্থ কথায় আপনার মুখমন্ডলে পুনরায় প্রশান্ত ভাব ফিরে এলো। আপনি নিশ্চিন্তে আসন গ্রহন করলেন।"

বুযুর্গ আলেম বলে চললেন:
''দেখুন, আমি আল্লাহ পাকের অতি নগন্য এক বান্দা। আমার কথা যদি আপনার উপর এতটা প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তবে মহান আল্লাহর কথায় কি কোনো প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া হতে পারে না? তাঁর পবিত্র বানীর প্রভাবে কি পাহাড় চূর্ণ হয়ে যেতে পারে না? তাঁর কথা কি মানুষের দেহের উপর প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম নয়? রোগের উপশম ঘটাতে পারে না? তবে কেন আপনার এই ধারণা জন্মালো যে, শিশুটির দেহের উদ্দেশ্যে প্রয়োগ করা পবিত্র কুরআনের বানী তার উপর কোন আছর করবে না, তার রোগ উপশম হবে না?"

বাদশাহ এবার নিজের ভুল বুঝতে পেরে লজ্জিত হলেন এবং তওবা করলেন, জীবনে আর এরূপ কথা বলবেন না।

নোট: উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলেম হাকিমুল উম্মত হযরত আশরাফ আলী থানভী রহমাতুল্লাহ আলাইহির খলিফা হযরত কারী মুহাম্মদ তাইয়েব রহমাতুল্লাহ আলাইহির ওয়াজ থেকে সংগৃহীত অতি মূল্যবান এই ঘটনাটি। ১৯৬১ ইং সনে করাচীর জুন মার্কেটের দারুল কুরআন মাদ্রাসায় এক মাহফিলে তিনি এই বয়ানটি করেন। আল্লাহ পাক তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন।

দুঃখিত! যাদের বিশ্বাসের মূলে সমস্যা, তাদের জন্য মূলঃ এই পোস্ট নয়- কথাটা আগেই বলা হয়নি। বলা প্রয়োজন ছিল। তাহলে তাদের জন্য ভালো হতো। আমাদের জন্যও। যাক, তাদেরকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, আমরাও বিজ্ঞানকে সাথে নিয়েই চলতে চাই। আগাতে চাই। আজকের উন্নয়ন-আবিষ্কার বিজ্ঞান ছাড়া অকল্পনীয়। জীবনও বিজ্ঞানের উপর বিভিন্নভাবে নির্ভরশীল। কিন্তু অহেতুক আমাদেরকে বিজ্ঞানের বিপরীতে এনে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর মানসিকতা দুঃখজনক। আমাদের মনে রাখতে হবে, জগতের অনেক কিছুকে বিজ্ঞান দিয়ে প্রমান করা গেলেও কিছু কিছু জায়গায় এসে বিজ্ঞান কিন্তু ঠিকই থেমে যায়। আর বিজ্ঞান যেখানে থেমে যায়, বিজ্ঞানের দৌড় যেখানে গিয়ে শেষ হয়; মহাগ্রন্থ আল কুরআন সেখানে কথা বলে। সেখান থেকে আল কুরআন শুরু করে। পথ দেখিয়ে দেয়। এমনটা হবেই না বা কেন? বিজ্ঞান তো মানব সৃষ্ট, মানুষের গবেষনালব্ধ জ্ঞান; আর কুরআন যে এই মানবজাতিরই সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত বাণী। উদাহরণস্বরূপ, রূহ, আত্মা বা প্রাণের বিষয়ে বিজ্ঞানের বক্তব্য কি? বিজ্ঞান এই ব্যাপারে কি ব্যাখ্যা দেয়? দিতে পেরেছে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা? আমাদের জানামতে, পারেনি। কিন্তু কারও কারও কাছে সেকেলে মনে হওয়া মহাগ্রন্থ আল কুরআন প্রায় সাড়ে চৌদ্দশো বছর পূর্বে রূহ সম্মন্ধে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে এমন তথ্য দিয়েছে, যা পাঠ করলে, চিন্তা করলে শরীর শিউরে ওঠে। শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি। বিশ্বাসের বীজ অঙ্কুরিত হয় হৃদয়ের গহীনে।

তাই বিজ্ঞানের ফতোয়া ছাড়া কোনো কিছু যদি বিশ্বাস করতেই না চান, তাহলে আপনি যে বেঁচে আছেন, অর্থাৎ আপনার ভেতরে বসবাস করা রূহ বা আত্মার ব্যাপারে সঠিকভাবে জেনে তারপরেই বেঁচে থাকা আপনার নৈতিক দায়িত্ব। আপনার কাছে কি মনে হয়?

সম্মানিত আগ্রহী এবং উৎসাহী বন্ধুগণ রূহ প্রশ্নের বৈজ্ঞা্নিক ব্যাখ্যা জানা থাকলে দয়া করে মন্তব্যে উপস্থাপন করুন। আমরাও জেনে নিজেদের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জ্ঞানের পরিধিকে একটু হলেও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করি। ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:২৪
২৪টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×