স্বাগত পবিত্র মাহে রমজানুল মুবারাক
বছর ঘুরে আসলো আবার,
মোদের মাঝে রোজারই চাঁন,
আল্লাহ বলেন, এই মাসেই,
বান্দাদের দিয়েছি কুরআন।।
হ্যাঁ, বছর ঘুরে আবারও আমাদের দরোজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমজান। রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের অমিয় পয়গাম বিশ্ববাসীর দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেয়ার জন্য আবারও রমজান আমাদের সন্নিকটে। আর মাত্র মাসখানিকের সামান্য বেশি সময়। চলতি বছর ১৪৪২ হিজরির পবিত্র রমজান মাসের প্রথম তারিখ কবে হতে পারে এ বিষয়ে জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত গণনার মাধ্যমে জানা গেছে, আমাদের বাংলাদেশ, পার্শ্ববর্তী ভারত এবং পাকিস্তানসহ কিছু দেশে ১৪ এপ্রিল রমজান শুরু হতে পারে।
ইতোমধ্যে রমজানের তারিখ ঘোষণা করেছে বিশ্বের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশ ইন্দোনেশিয়া। দেশটিতে আগামী ১৩ এপ্রিল প্রথম রোজা পালন করা হবে বলে জানানো হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার মোহাম্মাদিয়া অর্গানাইজেশনের প্রধান কার্যালয় এই তথ্য জানিয়েছে। একই দিন আরব বিশ্বেও রোজা শুরু হবে বলে তারা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
ঘোষণা অনুযায়ী আমাদের দেশে ১৪৪২ হিজরি সালের পবিত্র রমজান মাস ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল, মঙ্গলবার শুরু হতে যাচ্ছে।
এই গণনা অনুসারে, ১৪৪২ হিজরির শাওয়াল মাস শুরু হচ্ছে ১৪ মে, বৃহস্পতিবার। অর্থাৎ, এই দিনে পালিত হবে ঈদুল ফিতর। এ ছাড়া তাদের গণনা অনুযায়ী কোরবানির ঈদ পালিত হতে পারে ২০ কিংবা ২১ জুলাই, অর্থাৎ ১০ জিলহজ ১৪৪২ হিজরি।
রমজান মুমিনের আনন্দের কারণ এবং পাপাচারিদের কষ্টেরঃ
মুমিন মুসলমানের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি উত্তম কাজই ইবাদত। আর ইবাদতের শ্রেষ্ঠ মাস বা বসন্তকাল হলো রমজান মাস। রমজান এলে মুমিন হৃদয়ে আনন্দ দোলা দেয়। তারা এই মাসকে ইবাদাতের মওসুম মনে করেন। পাপ তাপ সকল কিছুর মার্জনা করিয়ে নেয়ার মোক্ষম সময় হিসেবে এই পবিত্র মাসকে বেছে নেন। হাদিসে এই মাসকে ক্ষমার মাস বলা হয়েছে।
পক্ষান্তরে পার্থিব মোহে ডুবন্ত পাপাচারে লিপ্তগণ রমজানের আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকে। তাদের জন্য রমজান কষ্টের কারণ হয়ে আসে। এরা রমজানে ইচ্ছেমত পথে ঘাটে যত্র তত্র খেতে এবং পান করতে পারেন না। এ কারণে তারা ক্ষুব্ধ হন। বিষোদগার করেন। রমজানের প্রতি বিদ্রুপ প্রকাশক মন্তব্য করে। শেষমেষ না পেরে নিজেকে 'অসুস্থ' বলে রোজা রাখার হাত থেকে বাঁচতেও চেষ্টায় ত্রুটি করেন না।
বস্তুতঃ আল্লাহ তাআলা রমজান মাসের রোজা ফরজ করার কারণ উল্লেখ করে বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে; যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া (আত্মশুদ্ধি) অর্জনে করতে পার। -সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩
প্রিয় একটি দোআঃ
রমজানের আগমনের পূর্বের দু'টি মাস হচ্ছে রজব এবং শা'বান। রজবের চাঁদ দেখার পর থেকে রমজানের আগমন পর্যন্ত রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিচের দোআটি বেশি বেশি পড়তেন-
[اللّھُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيْ رجَبَ و شَعْبَانَ و بَلِّغْنَا رَمَضَانْ]
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা বা-রিক লানা ফি- রজাবা ওয়া শা`বান, ওয়া বাল্লিগনা- রমাদা-ন।
অর্থঃ হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে রজব ও শাবান মাসের বরকত দান করুন এবং আমাদেরকে রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন, অর্থাৎ, আমাদের হায়াতকে রমজান পর্যন্ত প্রলম্বিত করুন।
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে সুন্নত অনুসরণ করে চমৎকার এই দোয়াটি বেশি বেশি করে পড়ার তাওফিক দান করুন এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের হায়াতকে দীর্ঘায়িত করে দিন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০২১ সকাল ১১:৩০