somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

জুমুআতুল বিদা এবং রমজান পরবর্তী করণীয়

০৭ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ অন্তর্জাল।

জুমুআতুল বিদা এবং রমজান পরবর্তী করণীয়

রমযান মাসের তৃতীয় দশকের বিদায়কালীন শুক্রবার তথা শেষ জুমআর দিন মুসলিম বিশ্বে ‘জুমআতুল বিদা’ নামে পরিচিত। রমযানের প্রতিটি দিনই পবিত্র। তবে শুক্রবার, আর সেটা যখন জুমআতুল বিদা হয়, তখন রোজাদারসহ মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেকের কাছেই তা বিশেষভাবে সম্মানিত, মহিমাময় এবং পবিত্র।

এই দিনে জুমআর নামাজ আদায়ের জন্যে সবার মন-প্রাণ আকুল থাকে এবং আল্লাহ পাকের দরবারে হাজিরা দিয়ে বিগলিত চিত্তে নিজের জন্যে এবং পুরো মুসলিম উম্মাহর জীবিত ও মৃত সবার জন্য ক্ষমা, মাগফিরাত, নাজাত, সওয়াব, পুরস্কার, জান্নাত এবং সর্বোপরি মাওলার দিদার কামনা করা হয়।

ইসলামের সূচনাকালে মদিনায় যখন রমযান মাসের সিয়ামের হুকুমসংক্রান্ত আয়াত নাযিল হয়, তখন থেকেই প্রতি বছর রমযান মাসের জুমআতুল বিদা মুসলিমজাহানের দেশে দেশে শহর-গ্রামের মসজিদে মসজিদে জোর তাগিদ দিয়েই পড়া হয়। যেমনিভাবে সাপ্তাহিক জুমআর নামায মুসলমানদের বৃহত্তর জামাতে অনুষ্ঠিত হয়, তেমনি রমযান মাসের জুমআবার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও ফযিলতময়।

জুমআতুল বিদাসহ মাহে রমযানের প্রতি জুমআবারে ইবাদত-বন্দেগিতে অধিকতর সওয়াব লাভের সুবর্ণ সুযোগ থাকে। রমযান মাসের শেষ শুক্রবার সারা বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা একটি মাস ত্যাগ-তিতীক্ষার সঙ্গে সিয়াম সাধনার পর এ দিনটিতে জুমআর নামায আদায় করে মাহে রমজানকে বিদায় সম্ভাষণ জানায়। রমযান মাসের সর্বোত্তম রাত হলো লাইলাতুল কদর, আর সর্বোত্তম দিনটি হলো জুমআতুল বিদা।

ইসলামের ইতিহাস থেকে জানা যায়, রমযান মাসের শেষ শুক্রবার হযরত সুলায়মান আ. জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদুল আকসা’ প্রতিষ্ঠা করেন। এ জন্য প্রতি বছর সারাবিশ্বের মুসলমানদের কাছে রমযান মাসের শেষ শুক্রবারকে ‘আলকুদস’ দিবস হিসেবেও পরিচিত।

জুমআতুল বিদা রমযান মাস শেষ হয়ে যাওয়ার সতর্কতামূলক দিবস। জুমআতুল বিদা রোযাদারদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, মাহে রমযানের সমাপনান্তে এ বছর এর চেয়ে ভালো দিবস আর পাওয়া যাবে না। সুতরাং এ পুণ্যময় দিনটির যথাযথ সদ্ব্যবহার করা অবশ্য কর্তব্য। মাহে রমযানের শুরু থেকে যে সব ইবাদত ব্যস্ততাবশত ফেলে রাখা হয়েছে, যে গোনাহ-খাতা মাফের জন্য কান্নাকাটি করে ক্ষমা প্রার্থনা করতে ভুল হয়েছে, জুমআতুল বিদার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সময়ে তা-ই করা উচিত।

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার পর ঈদুল ফিতর হলো রোযা ভাঙ্গার উৎসব। নামেই বুঝা যায়, এ কোনো সচরাচর আনন্দোৎসবের দিবস নয়, এ হলো রোযাদারের সাধনার সুফলের বহিঃপ্রকাশ, সিয়ামের মাসের বহুবিধ শিক্ষা প্রতিফলনের পহেলা মঞ্জিল। একইভাবে সত্যিকারের ঈদের আনন্দ রোযাদারের আমল বৃদ্ধি করে, নাজাতের পথকে করে সুগম।

ঈদের পূর্বের রাতকে ইসলাম ঘোষণা করেছে পুরস্কার বিতরণের রাত হিসেবে। ঈদুল ফিতর প্রসঙ্গে বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. এক দীর্ঘ হাদীসে বর্ণনা করেন—যখন ঈদের সকাল নামে মহান আল্লাহ প্রতিটি দেশে দেশে ফেরেশতা প্রেরণ করেন। তারা অবতরণ করে পথের ধারে দাঁড়িয়ে থাকেন। তারা ডাকতে থাকেন। তাদের আহ্বান মানুষ ও জ্বীন ব্যতীত আল্লাহর সব মাখলুকই শুনতে পায়। তারা বলেন—ওহে উম্মতে মুহাম্মাদী! বের হয়ে এসো অতি মর্যাদাবান প্রতিপালকের নিকট। তিনি অধিক পরিমাণে দান করে থাকেন। আর মারাত্মক অপরাধও ক্ষমা করেন।

রমযান পরবর্তী করণীয়

রমযানের রোযা পালনের পর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখা সুন্নত-মুস্তাহাব; ফরজ নয়। শাওয়াল মাসে ছয়দিন রোযা রাখার বিধান রয়েছে। এ রোযা পালনের মর্যাদা অনেক বড়, এতে প্রভূত সওয়াব রয়েছে। যে ব্যক্তি এ রোযাগুলো পালন করবে, সে যেন গোটা বছর রোযা রেখেছে। এ বিষয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আবু আইয়ুব রা. হতে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন— “যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখল এরপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখল সে যেন গোটা বছর রোযা রাখল।”

এ হাদিসকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য হাদিস দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন— “যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পরে ছয়দিন রোযা রাখবে, সে যেন গোটা বছর রোযা রাখল: যে ব্যক্তি একটি নেকি করবে সে দশগুণ সওয়াব পাবে।”

সুতরাং এক মাসের রোযা দশ মাসের রোযার সমান। বাকি ছয়দিন রোযা রাখলে এক বছর হয়ে গেল। আল্লাহ আমাদের সকলকে বেশি বেশি আমলের তাওফিক দান করুন। তার সাথে রমজানের বেশি বেশি আমলের প্রভাব সারা বছর বিস্তৃত করুন এবং আগামী রমযান পর্যন্ত আমাদের হায়াত সুদীর্ঘ করুন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২১ সকাল ১১:৩৮
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×