somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

নবী জীবনে সংঘটিত তিনটি ঘটনা এবং একটি সত্যের সাক্ষ্য

২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছবিঃ অন্তর্জাল।

নবী জীবনে সংঘটিত তিনটি ঘটনা এবং একটি সত্যের সাক্ষ্য

মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষ নবী এবং রাসূল। তাঁর নবুয়তের সত্যতার সবচেয়ে বড় প্রমান তাঁর প্রতি নাযিলকৃত মহাগ্রন্থ আল কুরআন। এটি তাঁর শ্রেষ্ঠতম মুজিজা। এর বাইরে অসংখ্য ছোট বড় মুজিজা আল্লাহ তাআ'লা তাঁর দ্বারা প্রকাশ করিয়েছেন। তেমনি তিনটি ঘটনা আলোকপাত করার প্রয়াস পাব বক্ষমান নিবন্ধে।

প্রথম ঘটনাঃ

প্রিয় নবীজী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের চাচা আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব ছিলেন বেশ ধনী মানুষ। ইসলামের ইতিহাসে মক্কাবাসী অবিশ্বাসীদের সাথে সংঘটিত সর্বপ্রথম সম্মুখ সমর বিখ্যাত বদর যুদ্ধে তিনি মক্কার মুশরিক কুরাঈশ সৈন্যদলের সাথে ছিলেন। মক্কা থেকে রওনা হবার আগে গভীর রাতে খুব গোপনে বেশ কিছু সম্পদ স্ত্রীর কাছে লুকিয়ে রেখে যান এবং কিছু সম্পদ তিনি সাথে নিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মক্কা থেকে তিনি যখন বদর অভিমুখে যদ্ধের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন, তখন কুরাঈশ সৈন্যদের জন্য ব্যয় করার লক্ষ্যে বিশ উকিয়া স্বর্ণমুদ্রা সাথে নিয়ে যাত্রা করেন। কিন্তু ঘটনাক্রমে সেগুলো কুরাইশ বাহিনীর জন্য ব্যয় করার পূর্বেই তিনি মুসলমানদের হাতে গ্রেফতার হয়ে যান। বলা বাহুল্য, এ যুদ্ধে পরাজিত মক্কার কুরাঈশদের অনেকেই মুসলিমদের হাতে বন্দী হয়েছিল। পরবর্তীতে এসব যুদ্ধবন্দীদের মুক্তিপণ নিয়ে মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল।

মুক্তিপণ গ্রহন করে ছেড়ে দেয়া হচ্ছিল মক্কার অবিশ্বাসী বন্দিদেরকে।

একসময় আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব মুক্তিপণ দেয়ার পালা এল। তাকে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটে আনা হল। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তিনি বললেন, “আমি তো মুসলিম ছিলাম!”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আপনার ইসলাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআ'লাই ভালো জানেন। যদি আপনার কথা সত্য হয় তবে আল্লাহ তাআ'লা আপনাকে এর প্রতিফল দেবেন। আমরা তো শুধু প্রকাশ্য কর্মকাণ্ড দেখে তার উপরে নির্ভর করেই হুকুম দেব। সুতরাং, আপনি আপনার নিজের এবং দুই ভাতিজা আকিল ইবন আবি তালিব ও নওফেল ইবন হারিসের মুক্তিপণও পরিশোধ করবেন।”

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব আবেদন করলেন, “আমার এত টাকা কোথায়? মানে, এত টাকা কোত্থেকে আসবে?”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “কেন, আপনার নিকট কি সে সম্পদগুলো নেই, যা আপনি মক্কা থেকে রওনা হওয়ার সময়ে আপনার স্ত্রী উম্মুল ফযলের নিকট রেখে এসেছেন এবং বলেছিলেন [1] , আমি যদি এ যুদ্ধে মারা যাই, তাহলে এ মাল ফযল আবদুল্লাহ ও কুছামের সন্তানরদেরকে দিও?”

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বললেনঃ “আপনি সে কথা কেমন করে জানলেন?! আমি তো রাতের অন্ধকারে একান্ত গোপনে সেগুলো আমার স্ত্রীর কাছে দিয়েছিলাম এবং এ ব্যাপারে তৃতীয় কোন লোক তো জানতো না!”

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “সে ব্যাপারে আমার রব আমাকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন।” [2]

আব্বাস বিন আব্দুল মুত্তালিব বললেন, ''আল্লাহর কসম, আমি নিশ্চিত হয়েছি যে, আপনি আল্লাহর রাসুল! কেননা, এই লুকানো সম্পদের কথা আমি আর আমার স্ত্রী উম্মুল ফযল ছাড়া আর কেউই জানতো না।'' [3]

তিনি সাথে সাথে পাঠ করে নিলেন কালিমা শাহাদাহ এবং মুহূর্তকাল দেরি না করে আশ্রয় নিলেন ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। সে দিন হতে তিনি হয়ে গেলেন একনিষ্ঠ একজন মুসলিম। সাহাবায়ে কেরামের আলোকিত পথের সহযাত্রী হওয়ার সৌভাগ্যলাভে সমুন্নত হল তাঁর মর্যাদা। নামের সাথে যুক্ত হয়ে থেকে গেল 'রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু'র মর্যাদাবান খেতাব। তিনি হয়ে গেলেন আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা ‘আনহু।

দ্বিতীয় ঘটনাঃ

খাইবারের দুর্গ বিজয়ের পরের ঘটনা। এক ইহুদি মহিলা বকরীর মাংসে বিষ মিশিয়ে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যা করার চেষ্টা করল। এ ঘটনায় মারাও গিয়েছিলেন একজন সাহাবী। [4]

সেই সাহাবী মারা যাওয়ার কিছুক্ষন পরের ঘটনা। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “এখানে যতজন ইহুদি আছে আমার কাছে তাদের সকলকে একত্রিত কর।”

তাদের সকলকে একত্রিত করে তাঁর কাছে আনয়ন করা হল।

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ “আমি তোমাদের কাছে একটা ব্যাপারে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে?”

তারা বললঃ “হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম।” (আবুল কাসিম হচ্ছে, রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপনাম)।

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “তোমাদের পিতা কে?”

তারা বললঃ ''আমাদের পিতা অমুক...''

রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ ''তোমরা মিথ্যে বলেছ; বরং, তোমাদের পিতা অমুক।'' (তিনি তাদের সত্যিকার বাবার নাম বলে দিলেন)।

তারা বললঃ “আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন।”

এরপর তিনি বললেনঃ “আমি যদি তোমাদের নিকট আরেকটি প্রশ্ন করি, তাহলে কি তোমরা সেক্ষেত্রে আমাকে সত্য কথা বলবে?”

তারা বললঃ “হ্যাঁ, হে আবুল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি, তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে।” … [5]

যারা খাবারে বিষ মিশিয়ে তাঁকে মেরে ফেলতে চাইলো, তাদের কাছে এভাবে তিনি নিজ নবুয়তের সত্যতার একটা চিহ্ন দেখিয়ে গেলেন। সঠিকভাবে তাদের বাবার নাম বলে দিয়ে আসলেন। [6] তারাও দ্বিধাহীনভাবে স্বীকার করে নিল যে, তারা মিথ্যা বলার পরেও রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সঠিকভাবে তাদের বাবার নাম বলে দিয়েছেন এবং তারা এরপর পুনরায় মিথ্যা বললে সেটাও যে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধরে ফেলবেন বলে তারা মিথ্যা বলার সাহস পেল না।

তৃতীয় ঘটনাঃ

মক্কা বিজয়ের প্রাক্কালে সংঘটিত একটি ঘটনা। মক্কা বিজয় করে মুসলিমগণ মক্কা নগরে প্রবেশ করার পর যখন রাতের আগমন ঘটল, তখন রাতভর তাঁরা তাকবির ধ্বনি ও কালিমার আওয়াজে চার দিক মুখরিত করে রাখলেন। এমনকি, এভাবেই সকাল হয়ে গেল।

তখন আবু সুফিয়ান স্ত্রী হিন্দকে ডেকে বললেন- “দেখ না, এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে।”

হিন্দা বললো, “হ্যাঁ- এ আল্লাহর পক্ষ থেকেই।”

কুরাঈশদের নেতা আবু সুফিয়ান ও তার স্ত্রী হিন্দা সবসময়েই ইসলামের বিরোধিতা করে আসতেন। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে শত্রুতা পোষণ করে করে তারা এত দিন অনেক কিছুই করে এসেছেন।

এরপর আবু সুফিয়ান খুব সকালে উঠে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট গিয়ে উপস্থিত হলেন। তাকে দেখে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেনঃ “তুমি হিন্দাকে বলেছিলে, “দেখ না- এসব আল্লাহর পক্ষ থেকে হচ্ছে। আর হিন্দা বলেছিল, হ্যাঁ- এ আল্লাহর পক্ষ থেকে।”

তখন আবু সুফিয়ান বললো, “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল। সেই আল্লাহর কসম, যার নামে কসম খাওয়া হয়- আমার এ কথা হিন্দা ব্যতিত অন্য কোন ব্যক্তি শোনেনি! ” [7]

যারা নিজেদের ইসলামের প্রতিপক্ষ ভাবেন, সেই বন্ধুদের প্রতি দু'টো কথাঃ

প্রিয় ভাই, ইসলাম কারও অকল্যানের জন্য নয়। কাউকে প্রতিপক্ষে দাঁড় করানোও রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাজ ছিল না। কাছের দূরের প্রত্যেককে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে টেনে নিতেন। বুকে টেনে নিতেন। আর তিনি যে আল্লাহ তাআ'লার প্রেরিত নবী এবং রাসূল এ কথা বিগত প্রায় দেড় হাজার বছর যাবত বহুভাবে প্রমানিত হয়ে এসেছে। এখন এটি স্বতঃসিদ্ধ। নতুন করে প্রমানের কোনো বিষয় আর এটি নয়। তবু কেন অহেতুক সময়ক্ষেপন? আসুন, প্রিয় মানুষ, প্রিয় ভাই ও বোন, ইসলামের সুশীতল ছায়াতলেই প্রশান্তির পরশ। শান্তি ও মুক্তি এখানেই। যদিও দুঃখজনকভাবে ইদানিংকালে বিভিন্ন মাধ্যম বিশেষ করে অনলাইনের কিছু কিছু প্লাটফর্মে রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করে কিছু কিছু আপত্তিকর কথাবার্তা লিখতে দেখা যায়। এগুলো যারা লিখে থাকেন, তারা কুরআন, হাদিস, সিরাহ (জীবনী গ্রন্থ) এসব সূত্র থেকেই বিভিন্ন ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে উদ্ধৃত করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন যে- রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন নবী ছিলেন না, বরং তিনি জোর জুলুম করে আরব দেশে একটা নতুন মতবাদ প্রতিষ্ঠা করে গেছেন! (নাউযুবিল্লাহ) তিনি না কি তাঁর নবুয়তের কোন নিদর্শন (signs) বা প্রমাণও দেখিয়ে যাননি। (নাউযুবিল্লাহ)

প্রশ্ন হচ্ছে, এসব প্রশ্ন উত্থাপনকারীগণ যদি এত এত পরিমান সিরাহ (জীবনী) সত্যিই অধ্যায়ন করে থাকেন, উপরের ঘটনাগুলোর একটিও কি তাদের চোখে পড়েনি? গায়েবের জ্ঞান তো কেবলমাত্র আল্লাহ তাআ'লাই রাখেন, আর তিনি তাঁর নবীদের নিকট ওহীর দ্বারা সংবাদ প্রেরণ করেন। [8] রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি আল্লাহর নবী না-ই হয়ে থাকতেন, তাহলে তিনি কী করে উপরের ৩ টি ঘটনায় গোপন সংবাদগুলো বলে দিলেন?

আমরা কোনোভাবেই বিজ্ঞানের বিরোধী নই, কিন্তু কথা হচ্ছে, যারা নিজেদের বিজ্ঞানের পক্ষের লোক দাবি করে ইসলাম ধর্মকে বিজ্ঞানের সাথে সঙ্ঘাতে লিপ্ত দেখতে পছন্দ করেন, তাদের কোন ‘বিজ্ঞানমনস্ক’ চেতনা বা অন্য কোন চেতনা ইত্যাদি দিয়ে কি এগুলো ব্যাখ্যা করা যাবে? যে সূত্রগুলো (হাদিস ও সিরাত গ্রন্থ) ব্যবহার করে উল্লেখিত বন্ধুগণ রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়তকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চান, সে সূত্রগুলো থেকেই তো এ ঘটনাগুলো নেয়া। তারা যদি এ ঘটনাগুলো অবিশ্বাস করেন বা অগ্রহণযোগ্য বলেন, তাহলে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করবো, তাহলে আপনারা কোন মুখে ইসলামকে মিথ্যা প্রমাণের জন্য হাদিস ও সিরাত গ্রন্থসমূহ থেকে কোট করেন? ঐ কাজগুলোও তাহলে বন্ধ করুন। সরাসরি বলে দিনঃ আমরা কোন ইতিহাস বিশ্বাস করি না! এত ডাবল স্ট্যান্ডার্ড কেন আপনাদের?

বস্তুতঃ উপরের ৩ টি ঘটনার মত আরো বহু ঘটনা ছড়িয়ে আছে হাদিস ও সিরাতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থগুলোতে। সবগুলো একত্র করলে বিশালাকার বই হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ কাজগুলো দেখে সে যুগে বিবেকবান লোকেরা ঈমান এনেছে। আজও এ ঘটনাগুলো দেখে মানুষ ঈমান আনবে- যদি সে বিবেকবান ও সত্যানুসন্ধানী হয়। এ ঘটনাগুলো একটি মহাসত্যেরই সাক্ষ্য দেয়- রাসুলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ তাআ'লার প্রেরিত রাসুল।

কুরআনুল কারিমে ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে-

وَكَذَٰلِكَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ رُوحًا مِّنْ أَمْرِنَا ۚ مَا كُنتَ تَدْرِي مَا الْكِتَابُ وَلَا الْإِيمَانُ وَلَـٰكِن جَعَلْنَاهُ نُورًا نَّهْدِي بِهِ مَن نَّشَاءُ مِنْ عِبَادِنَا ۚ وَإِنَّكَ لَتَهْدِي إِلَىٰ صِرَاطٍ مُّسْتَقِيمٍ

এমনিভাবে আমি আপনার কাছে এক ফেরেশতা প্রেরণ করেছি আমার আদেশক্রমে। আপনি জানতেন না, কিতাব কি এবং ঈমান কি? কিন্তু আমি একে করেছি নূর, যাদ্দ্বারা আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করি। নিশ্চয় আপনি সরল পথ প্রদর্শন করেন। -সূরা আশ শুরা, আয়াত ৫২

অন্য আয়াতে ইরশাদ বর্ণিত হয়েছে-

عَالِمُ الْغَيْبِ فَلَا يُظْهِرُ عَلَىٰ غَيْبِهِ أَحَدًا إِلَّا مَنِ ارْتَضَىٰ مِن رَّسُولٍ فَإِنَّهُ يَسْلُكُ مِن بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ رَصَدًا لِّيَعْلَمَ أَن قَدْ أَبْلَغُوا رِسَالَاتِ رَبِّهِمْ وَأَحَاطَ بِمَا لَدَيْهِمْ وَأَحْصَىٰ كُلَّ شَيْءٍ عَدَدًا

“তিনি [আল্লাহ] অদৃশ্যের জ্ঞানী, আর তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। তবে তাঁর মনোনিত রাসুল ছাড়া। আর তিনি তখন তাঁর সামনে ও তার পিছনে প্রহরী নিযুক্ত করেন। যাতে তিনি এটা জানতে পারেন যে, তারা তাদের রবের রিসালাত পৌঁছিয়েছে কিনা। আর তাদের কাছে যা রয়েছে, তা তিনি পরিবেষ্টন করে রেখেছেন এবং তিনি প্রতিটি বস্তু গুণে গুণে হিসাব করে রেখেছেন।” [10]

শেষের প্রার্থনাঃ

হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরের ক্ষুদ্রতা, হীনতা এবং নিচতাকে আপনি দূর করে দিন। সত্যকে সত্য বলে মেনে নেয়ার তাওফিক দান করুন। মিথ্যাকে পরিহার করার মত সদগুণে আমাদের অন্তরকে আলোকিত করুন আপনি।

তথ্যসূত্র ও কৃতজ্ঞতাঃ

[1] এ অংশটুকু ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’তে আছে

[2] কুরআনুল কারীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসির), ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া, ১ম খণ্ড, সুরা আনফালের ৭০ নং আয়াতের তাফসির, পৃষ্ঠা ৯২৮-৯২৯

[3] ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ – ইবন কাসির(র.) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫২২

[4] সহীহ মুসলিম, হাদিস নং : ৩৫০ দ্রষ্টব্য

[5] সহীহ বুখারী, হাদিস নং : ৫৭৭৭

[6] সঠিকভাব এতগুলো লোকের বাবার নাম বলে দেয়া কোন সাধারন ব্যাপার নয়। সে যুগে জন্ম নিবন্ধন হত না, কোন ডাটাবেসও ছিল না।

[7] ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ – ইবন কাসির(র.) (ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ), ৪র্থ খণ্ড, পৃষ্ঠা ৫২২

[8] "No one knows the unseen in the absolute sense except Allaah" -- islamQa (Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid)

https://islamqa.info/en/101968

[9] আল কুরআন, সূরা আশ শুরা, আয়াত ৫২

[10] আল কুরআন, জিন ৭২ : ২৬-২৮

কৃতজ্ঞতা response-to-anti-islam.com সাইটটির প্রতি। সংশোধিত ও পরিমার্জিত নিবন্ধটির মূল কথাগুলো এখান থেকে নেয়া।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০২১ দুপুর ১:১২
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×