
সাম্প্রতিক অনিশ্চয়তায় ঘেরা দিনগুলো কেটেছে ঘোরতর উদ্বিগ্নতায়। দিন এবং রাত দু'টোই যেন ছিল আমার কাছে সমান। রাত বাড়তো। টেনশনও বাড়তে থাকতো একইসাথে সমানতালে। দুশ্চিন্তা একটাই, কার মায়ের বুক না জানি আবার খালি হয়ে যায়। কত সন্তান না জানি আরও ইয়াতিম হয়ে যায়। নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্রদের যৌক্তিক দাবি আদায়ের মিছিলে গুলি বর্ষনের ভয়াবহ দৃশ্য আমাকে ঘুমুতে দিত না। দুশ্চিন্তায় মোড়ানো একেকটি রাত যেন হয়ে যেত দীর্ঘ থেকেও দীর্ঘতর। প্রায় নির্ঘুম অনেকগুলো রাত কাটানোর পরে আজ নতুন সূর্যের উদয় হয়েছে প্রিয় মাতৃভূমির আকাশজুড়ে। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে খুনী স্বৈরাচারের হাত থেকে। এ যেন আমাদের আরেকবারের স্বাধীনতা লাভ।
চোখের জলে ভিজতে ভিজতেই সিজদায় পড়ে গেলাম। দুই রাকাত শুকরিয়ার নামাজ আদায় করে নিলাম। আর মহান রব্বে কারিমকে বললাম, আয় আল্লাহ, হে আকাশ এবং পৃথিবীর মালিক, আপনার কুদরত বুঝার সাধ্য আমাদের নেই। আপনি সবই পারেন। মুহূর্তেই ভয়ঙ্কর স্বৈরাচারী, হাজারো নিরপরাধ মানুষের খুনী এবং নিকৃষ্ট জালিমের তখত তাউস ভেঙে খান খান করে দেয়া, এমন করুণভাবে দেয়া কেবলমাত্র আপনার পক্ষেই সম্ভব। আপনি ফেরাউনকে ধ্বংস করেছিলেন। পবিত্র কাবা ঘর ধ্বংস করতে আসা হস্তিবাহিনীকে আপনিই নাস্তানাবুদ করেছিলেন। নমরুদকে আপনি সামান্য মশা দিয়ে ধ্বংস করেছিলেন। আপনিই ফকিরকে রাজা আবার রাজাকে পথের ফকির বানাতে পারেন। এসব করতে আপনার মুহূর্তকাল সময়ের প্রয়োজনও হয় না। আপনি শুধু 'কুন' বললেই হয়ে যায়।
ছাত্র জনতার এই আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের প্রত্যেককে আল্লাহ তাআ'লা যেন শহীদ হিসেবে কবুল করে নেন। স্বজনহারাদের প্রতিটি পরিবারের দায়িত্ব আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ'লা যেন আপন কুদরতি হাতে তুলে নেন। তাদের যাবতীয় কষ্ট দূর করে দেন। সকল প্রয়োজন পূরণের উত্তম ব্যবস্থা করে দেন। মান্যবর সেনাবাহিনী প্রধানের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শুনলাম। দেশবাসী সকলকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন তিনি। দেশে শান্তি, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। খুবই সুন্দর কথা বলেছেন তিনি। নতুনভাবে দেশ গড়ার কাজে তিনি যেন সফলতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন, কায়োমনোবাক্যে সেই প্রার্থনা করছি।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

