
লুটেরা পাচারচক্রকে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে হবে- তা তারা যত শক্তিশালীই হোন। দেশে, বিদেশে কিংবা প্রভূদেশে তারা যেখানেই থাকুন- খুঁজে বের করতে হবে তাদেরকে। গর্ত খুড়ে হলেও বের করে আনতে হবে তাদেরকে। আষ্টেপৃষ্ঠে বেধে ফেলতে হবে। এমনকি, প্রভূদেশে পালালেও ফিরিয়ে আনতে হবে তাদের প্রত্যেককে। সোপর্দ করতে হবে আদালতের হাতে। অতঃপর, উদ্ধার করতে হবে লুট আর পাচার করে নেওয়া দেশের যাবতীয় সম্পদ - ঝুঁকি তাতে যতই থাকুক। খুঁটির জোর তাদের যতই থাকুক।
দেশের সম্পদ কথাটা বৃহদার্থ দেয়। যদি আরেকটু স্পেসিফিক্যালি বলা হয়, জনগণের সম্পদ, তাহলে বুঝতে সুবিধা হয়। রাষ্ট্রের সম্পদ মানে জনগণের সম্পদ। রাষ্ট্রের সত্যিকারের মালিকও তারাই। যারা কুক্ষিগত করে রেখেছে, পাচার করেছে জনগণের এই সম্পদ, তা উদ্ধার করতে হবে। দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। জনগণের সম্পদ উদ্ধার করে, দেশে ফিরিয়ে এনে, পাই পাই করে বুঝিয়ে দিতে হবে জনগণের হাতে।
এই যে কুক্ষিগত করে রাখা, পাচার করা বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা, এই টাকার আসল মালিক এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ। মুটে মজুররা এই টাকার আসল হকদার। এই মাটির প্রাণ, কৃষকরা এই অর্থের সত্যিকারের মালিক। এই দেশের অর্থনীতির বৃহৎ যোগানদাতা গার্মেন্টস শ্রমিকরা এই টাকার প্রকৃত অংশীদার। রিকশাওয়ালা, ঠেলাওয়ালা, মুদি দোকানি, গৃহিনী, শিক্ষক, আইনজীবি, ডাক্তার, ফ্রিল্যান্সার, বাসের হেলপার, অটো ড্রাইভাররা পাচারকৃত এই টাকার মালিক।
বিপুল অর্থ লুট করা হয়েছে। জনগণের লুটের টাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যক্তিনামে রিসোর্ট করা হয়েছে। কোম্পানি খোলা হয়েছে। আস্ত একেকটা ব্যাংক হজম করে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। দেশে দেশে টাকা পাচার করা হয়েছে। বিপুল বিত্ত বৈভবের মহাসমারোহ তৈরি করা হয়েছে একেক দেশে। রাষ্ট্রীয় সহায়তা আর সহযোগিতায় পাচার হওয়া এসব অর্থ গেছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের আনাচে কানাচে। সুরম্য বাগানবাড়ি, আলীশান বালাখানা, অভিজাত হারেম আর ফ্লাটবাড়ি, অট্টালিকার পর অট্টালিকা, বিশালায়তনের ভূখন্ড, নামে বেনামে কোম্পানি - দেশে দেশে, জনপদে জনপদে কি খরিদ করেনি পাচারকারীচক্র?
এই চক্রকে ধরতে হবে। ধরতে হবে পাচারের পৃষ্ঠপোষক, সহযোগী, সুবিধাভোগী, ফায়দালোভী সকল দোসরদেরও। সত্যিকারের মালিকদের হাতে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। গুণে গুণে। কড়ায় গন্ডায়। যতদিন তা পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন না হবে, ততদিন চলতে থাকবে আমাদের সংগ্রাম। জনতার সংগ্রাম। দেশরক্ষার জনতার এই সংগ্রামে বিজয়, বিজয় এবং বিজয়ই একমাত্র চূড়ান্ত লক্ষ্য।
লুট আর পাচারের ভয়াবহতা অনুমান করার সুবিধার্থে এখানে কিছু মিডিয়ার লিঙ্ক যুক্ত করে দিচ্ছি। অবশ্য, এটাও অসম্ভব নয় যে, কোনো সুশীল ভদ্রলোক এই পোস্টে এসে দাবি করে বসবেন যে, "এগুলো সবই মিডিয়া-সৃষ্ট, কোনো অর্থ লুট কিংবা পাচারের ঘটনা আসলে ঘটেনি এবং বাস্তবে এর কোনো প্রমানও নেই।"
তেমনটি হতে পারে আশঙ্কায় আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, কারণ, লুট কিংবা পাচারের ঘটনাগুলোর বাস্তব প্রমান হাতেনাতে ধরিয়ে দেওয়ার মত কোনো সুযোগ সাধারণতঃ সাধারণ নাগরিকদের থাকে না। আমারও নেই্। স্বশরীরে দেশে বিদেশে ঘুরে ঘুরে লুট আর পাচারকৃত অর্থ সম্পদ বাস্তবে দেখিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা কিংবা সুযোগ কোনোটাই আমার না থাকায় দুঃখ প্রকাশ করা ব্যতিত কিছুই করার নেই।
এস আলমের আলাদিনের চেরাগ
অর্থপাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জন: বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে
আজিজের অবৈধ সম্পদ তথ্য সংগ্রহ করছে দুদক
মাফিয়ায় ছিন্নভিন্ন আর্থিক খাত
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চরম অপব্যবহার সব সময়ই অধরা শেয়ারবাজার-ব্যাংক খাতের মাফিয়া সালমান
সালমান এফ রহমানের টাকার পাহাড়ের রহস্য
আর্থিক খাতের অভিশপ্ত নাম সালমান এফ রহমান ঋণখেলাপি, অর্থ পাচার এবং শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে শীর্ষে
চৌধুরী নাফিজ সরাফাত: রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যাঁর উত্থান, মালিক হাজার কোটি টাকার
চাকরি করেই দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের মালিক হারুন
যুক্তরাষ্ট্রে আটকে গেছে হারুনের স্ত্রীর ১৫শ কোটি টাকা
‘ডিবি হারুনের’ যত বিত্ত-বৈভব
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



