
এক.
বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হয়ে থাকে যে, হিটলার তার জীবনে ৬০ লক্ষাধিক ইহুদিকে হত্যা করেছেন।
ফাঁসি দেওয়ার পূর্বে হিটলারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো যে, "তার শেষ কোনো চাওয়া পাওয়া বা আশা আকাঙ্খা আছে কি না।"
তিনি বললেন, "তার জীবনের শেষ আশা একটাই। তিনি ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক।"
সকলেই তার এই কথায় আশ্চর্য্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন যে, "তার এমন ইচ্ছের পেছনের কারণ কী?"
হিটলার সহাস্যে বললেন যে, "আমি মৃত্যুর পূর্বে এটা নিশ্চিত হয়ে যেতে চাই যে, একটু পরেই আরেকজন ইহুদির মৃত্যু হচ্ছে। পৃথিবী থেকে একটা ইহুদি অন্ততঃ হ্রাস পাবে। এতে করে মৃত্যুর পরেও আমি কিছুটা শান্তি পাব।"
দুই.
কোনো এক গ্রামে এক ডাক্তার নতুন করে ডাক্তারি শুরু করেছেন। রীতিমত একেবারে ক্লিনিক খুলে বসেছেন। অল্প দিনেই রোগী পত্তরে গমগম অবস্থা।
তবে তার ক্লিনিকের অদ্ভূত একটা নিয়ম আছে। নিয়মটা হচ্ছে, তার কাছে চিকিৎসা নিতে হলে যে কোনো রোগীকে ৫০০ টাকা দিয়ে সিরিয়াল এন্ট্রি করতে হবে। উক্ত ৫০০ টাকার বিনিময়ে তিনি রোগীর প্রয়োজনীয় সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ নির্নয় করবেন। কোনো রোগীর রোগ নির্নয়ে ডাক্তার যদি ভুল করে বসেন তাহলে সেই রোগীকে উল্টো নগদ ১০,০০০ (দশ হাজার) টাকা জরিমানা বাবদ পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবেন।
এসব নিয়ম কানূন একেবারে বিশালাকারের সাইনবোর্ডে লিখে ঝুলিয়েও দেওয়া হয়েছে, যাতে সবার চোখে পড়ে। ব্যাপকভাবে প্রচার হয়।
পাশের গ্রামের জনৈক লোক, যিনি কি না নিজেকে অতিশয় চালাক ভাবতেন। তিনি এই ক্লিনিকের ১০,০০০ টাকার অফারের খবর শুনেই ভাবলেন রিস্ক একটা নিতেই হবে। ৫০০ টাকা তো! গেলে তো ৫০০ টাকাই যাবে। ১০,০০০ টাকা কোনোভাবেই ছাড়া যাবে না। যেই চিন্তা সেই কাজ। ছুটলেন সেই ডাক্তারের ক্লিনিকে।
৫০০ টাকা দিয়ে সিরিয়াল নিয়ে ডাক্তারের কাছে গিয়ে বললেন যে, "ডাক্তার সাহেব, আমার কোনো কিছুতেই রুচি নেই। আসল কথা হলো, কোনো কিছুর স্বাদ আমি একেবারেই অনুভব করতে পারি না।" এই কথা বলে চালাক ব্যক্তিটি মনে মনে এই ভেবে কিছুটা হেসেও নিলেন যে, স্বাদ বুঝা না বুঝা সেটা তো একান্তই আমার ব্যাপার। আমি কোনোভাবেই স্বীকারই করবো না যে, আমি স্বাদ অনুভব করতে পারছি। ডাক্তারের ১০,০০০ টাকা আজ নিশ্চিত আমার পকেটে ঢুকে যাবে।
ডাক্তার তাকে অভয় দিয়ে বললেন যে, "ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। ব্যবস্থা আছে। সবকিছুরই ব্যবস্থা থাকে।"
একটু পরে ডাক্তার তাকের উপর থেকে একটি বোতল নামিয়ে এনে সেটির কর্ক খুলে রোগীকে বললেন, "মুখ হা করুন।"
রোগী মুখ হা করলে ডাক্তার তার মুখে সেই বোতল থেকে খানিকটা তরল ঢেলে দিলেন।
সাথে সাথে রোগী চেঁচিয়ে উঠলো- "ডাক্তার সাহেব, আপনি কী দিলেন আমার মুখে? এ তো সাঙ্ঘাতিক বাজে জিনিষ। মারাত্মক ঝাঁঝালো উটকো গন্ধ!"
ডাক্তার বললেন যে, "এটা ছয়মাসের পুরাতন গরুর চনা।"
রোগী বললেন, "ছি! ছি! আপনি আমাকে এমন জিনিষ খাওয়ালেন?"
ডাক্তার বললেন যে, "আপনি যেহেতু কোনো কিছুর স্বাদ আদৌ অনুভবই করতে পারেন না, তাই আপনাকে হাই ডোজটা দিয়েই পরীক্ষা করাতে হয়েছে বলে আমি দুঃখিত! আশা করছি, আপনি এখন বুঝতে পেরেছেন যে, আপনার স্বাদ আস্বাদনের ক্ষমতা পুরোপুরি ঠিক আছে।"
৫০০ টাকা খুইয়ে নিরুপায় হয়ে চালাক লোকটি চলে গেলেন। তবে তার মনের ক্ষোভ কমে না। দিন দিন বরং আরও বাড়তে থাকে। কিছু দিন পরে নতুন একটি ফন্দি আঁটলেন ডাক্তারকে কাবু করতে। ১০,০০০ টাকা এবার আদায় করেই ছাড়বেন। এবার ভাবলেন যে, ডাক্তারকে বলবেন যে, তার কিছুই মনে থাকে না। কারণ, মনে থাকা না থাকার বিষয়টি তো ডাক্তার বুঝার কথা নয়।
যেই চিন্তা সেই কাজ। আবার গেলেন ডাক্তারের ক্লিনিকে। রীতিমত ৫০০ টাকায় আবার টিকেট কেটে গেলেন ডাক্তারের কাছে। বললেন, "ডাক্তার সাহেব, আমার কিছুই মনে থাকে না। সবকিছুই ভুলে যাই।"
ডাক্তার আগেরবারের মতই অভয় দিয়ে বললেন যে, "চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন। ব্যবস্থা আছে। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।"
ডাক্তার একটু ভেবে আলমারির সেই আগের স্থানটিতেই হাত দিলেন, যেখান থেকে গত কিছু দিন পূর্বে গরুর চনার বোতল বের করে এনেছিলেন।
রোগী এই দৃশ্য দেখে সাথে সাথে প্রতিবাদ করে উঠলেন, বললেন, "ডাক্তার সাহেব, করছেন কি? সেই একই ওষুধ? সর্বনাশ!"
ডাক্তার বললেন, "আপনি তো দেখছি সবকিছু ভালোই মনে রাখতে পারেন।"
রোগী হেরে গেলেন এ যাত্রায়ও। নিরুপায় হয়ে এবারেও ৫০০ টাকা হারিয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন নিজেকে অতিশয় চালাক মনে করা রোগী।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


