somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ! যা চেয়েছিলাম, তার চেয়েও বেশি দয়া করেছেন আমার পরম প্রিয় রব। যা পাইনি, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই—কারণ জানি, তিনি দেন শুধু কল্যাণই। সিজদাবনত শুকরিয়া।nnপ্রত্যাশার একটি ঘর এখনও কি ফাঁকা পড়ে আছে কি না, জানি না। তবে এটুকু জানি—

রিযিক ও হিকমাহ: আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত নিয়ামতের অন্তরঙ্গ উপলব্ধি

১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
রিযিক ও হিকমাহ: আল্লাহর দেওয়া প্রকৃত নিয়ামতের অন্তরঙ্গ উপলব্ধি

ছবি অন্তর্জাল থেকে।

মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় নিয়ামত কী? অনেকেই বলবেন—অঢেল ধন-সম্পদ, বিলাসবহুল জীবনযাপন, উচ্চশিক্ষিতা ও রূপবতী স্ত্রী, কিংবা দামি গাড়ি। কিন্তু আল্লাহর পছন্দের মানুষদের আমরা দেখেছি—তারা অতি সাধারণ খাবারেও তৃপ্ত, অল্পতেই শান্তিতে। কেন? কারণ, আল্লাহ তাদের দিয়েছেন হিকমাহ—অর্থাৎ প্রজ্ঞা। আর যার মাঝে হিকমাহ থাকে, তার হৃদয়ে নেমে আসে সাকিনা—যার অর্থ শান্তি, স্থিরতা, প্রশান্তি।

একজন মানুষ যদি টেবিলভর্তি খাবার পেয়েও তৃপ্তি না পায়, প্রতিটি খাবারে দোষ খোঁজে, তবে বুঝতে হবে তার মাঝে সাকিনা নেই। অন্যদিকে, যার মধ্যে হিকমাহ আছে, সে আলু ভর্তা আর ডাল দিয়ে খেয়েও সন্তুষ্টচিত্তে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে পারে।

ধন নয়, প্রজ্ঞা—এটাই প্রকৃত সৌভাগ্য।

টয়োটা এলিয়ন কিংবা বিলাসবহুল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও যদি মনে প্রশান্তি না থাকে, তাহলে সেই সম্পদের কী মূল্য? হিকমাহ না থাকলে মানুষ নিজের অবস্থানে তৃপ্ত থাকতে পারে না, বরং সবসময় ‘আরো চাই’ মানসিকতায় ভোগে।

আল্লাহ তা'আলা কোরআনে বলেন:

وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا

“যাকে হিকমাহ দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়।” -সুরা বাকারা, আয়াত ২৬৯

এখানেই আসে রিযিক বোঝার বিষয়টি। রিযিক কেবল অর্থ বা সম্পদ নয়। এটি এক গভীর ও বিস্তৃত ধারণা:

সর্বনিম্ন স্তর: অর্থ, সম্পদ, টাকা-পয়সা

সর্বোচ্চ স্তর: শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা

সর্বোত্তম স্তর: নেককার জীবনসঙ্গী ও পূতপবিত্র সন্তান

পূর্ণাঙ্গ রিযিক: আল্লাহর সন্তুষ্টি

আমাদের রিযিক পূর্বনির্ধারিত। জীবনে কত টাকা আয় করবো, কী খাবো, কবে ও কোথায় মারা যাবো—সব কিছুই লিপিবদ্ধ রয়েছে। এমনকি, কয়টি ভাতের দানা আমরা খেয়ে মৃত্যুবরণ করবো তাও নির্ধারিত।

আপনি হয়তো ইতালি থেকে আসা একটি আম খাচ্ছেন। কিন্তু সেই আম যখন গাছে মুকুল ধরেছিল, তখন থেকেই নির্ধারিত ছিল এটি আপনার জন্য। অসংখ্য পাখি, মানুষ, বেচাকেনার মাধ্যমে সেটি অবশেষে আপনার হাতে পৌঁছেছে—কারণ এটি আপনার রিযিক।

অন্যের রিযিক কখনো কেউ গ্রহণ করতে পারে না।

আমার বাসায় যে আত্মীয় এসেছে এবং আমার খাবার খাচ্ছে, সে আসলে নিজের রিযিকই খাচ্ছে—আল্লাহ তা'আলা কেবল আমার মাধ্যমে সেটি তার কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।

এখানে আসে তাওয়াক্কুল—আল্লাহর ওপর ভরসা। কেউ যদি হালাল পথে চলে, ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ সেই পূর্বনির্ধারিত রিযিক হালাল উপায়েই তাকে দান করবেন। হারাম উপায় বেছে নিলেও তার আয় নির্ধারিত সীমা ছাড়াবে না—"Nothing more, nothing less!"

আল্লাহ বলেন:

وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا

“ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী কোনো প্রাণী নেই যার রিযিকের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর নয়।” -সুরা হুদ: আয়াত ৬

তিনি আরও বলেন:

وَمَن يَتَّقِ اللَّهَ يَجْعَل لَّهُ مَخْرَجًا وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لَا يَحْتَسِبُ ۚ وَمَن يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ

“আর যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার জন্যে নিস্কৃতির পথ করে দেবেন এবং তাকে তার ধারণাতীত জায়গা থেকে রিযিক দেবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট।” -সুরা ত্বালাক: আয়াত ২-৩

শেষ কথা:
জীবনে প্রশান্তি চাইলে সম্পদের পেছনে নয়, হিকমাহর জন্য প্রার্থনা করুন। হিকমাহ থাকলে আপনি অল্পতেই সুখী হবেন, নিজের রিযিক নিয়ে কখনো চিন্তিত হবেন না, বরং আল্লাহর রহমতে সন্তুষ্ট থাকবেন সর্বদা।

আল্লাহ যেন আমাদের হিকমাহ ও হালাল রিযিক দান করেন এবং সকল প্রকার হারাম থেকে হিফাজত করেন। আমীন।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:৫১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৌলবাদ: ইতিহাসের সবচেয়ে ব্যর্থ প্রযুক্তি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫১




মজার বিষয়—

আজকের মৌলবাদীরা রোকেয়া বেগমকে মুরতাদ ঘোষণা করে বুক ফুলিয়ে হাঁটে, অথচ নিজেদের অস্তিত্ব টিকেই আছে যাদের ঘৃণা করে— সেই “কাফেরদের” বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে। ইতিহাস পড়লে এদের বুকফুলা হাওয়া বের... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতী এখন পুরোপুরিভাবে নেতৃত্বহীন ও বিশৃংখল।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩



শেরে বাংলার নিজস্ব দল ছিলো, কৃষক প্রজা পার্টি; তিনি সেই দলের নেতা ছিলেন। একই সময়ে, তিনি পুরো বাংগালী জাতির নেতা ছিলেন, সব দলের মানুষ উনাকে সন্মান করতেন। মওলানাও জাতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাময়িক পোস্ট

লিখেছেন আরোগ্য, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৬



ওসমান হাদী অন্যতম জুলাই যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র, স্পষ্টবাদী কণ্ঠ, প্রতিবাদী চেতনা লালনকারী, ঢাকা ৮ নং আসনের নির্বাচন প্রার্থী আজ জুমুআর নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর গুলিবিদ্ধ হয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×