
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্ক অস্বাভাবিক দ্রুততায় খারাপের দিকে গড়িয়েছে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দুই দেশের মধ্যে যে আস্থার সেতু গড়ে উঠেছিল, তা ভেঙে পড়তে শুরু করেছে। একসময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ট্রাম্পকে ‘বন্ধু’ বলে অভিহিত করেছিলেন, কিন্তু এখন সেই বন্ধুত্বই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রথম বড় ধাক্কা আসে বাণিজ্যে। মোদি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র, তেল ও গ্যাস কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তবে বিনিময়ে ট্রাম্প যেন শাস্তিমূলক শুল্ক না আরোপ করেন—এমন অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প তা অগ্রাহ্য করে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৭ শতাংশ শুল্ক চাপান, যা চীনের ওপর আরোপিত শুল্কের চেয়েও বেশি। এতে নয়াদিল্লির জন্য পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।
তারপর আসে কাশ্মীর সংকট। সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত–পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর ট্রাম্প প্রকাশ্যে দাবি করেন, তিনি দু’পক্ষকে সমঝোতায় এনেছেন এবং কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে মধ্যস্থতা করবেন। পাকিস্তান এতে খুশি হলেও ভারত ক্ষুব্ধ হয়। কারণ, ভারতের নীতি হলো কাশ্মীর শুধু দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে মীমাংসিত হবে, কোনো তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ নয়। ট্রাম্পের অবস্থান ভারতের এ মূলনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
চূড়ান্ত বিরূপতা তৈরি হয় যখন ট্রাম্প মোদিকে অনুরোধ করেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। মোদি তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করলে দুই নেতার মধ্যে যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ট্রাম্প ভারতের শুল্কহার ৫০ শতাংশে বাড়িয়ে দেন এবং বাণিজ্য আলোচনাও স্থগিত করেন।
এখন ভারত এক অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে পুরোপুরি হারালে ভারতের বাজার, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও কূটনৈতিক সমর্থনের বড় একটি উৎস বন্ধ হয়ে যাবে। তাই নয়াদিল্লি বিকল্প হিসেবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে, রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে এবং জাপানের সহযোগিতা চাইছে। তবে এসব সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প হতে পারছে না।
সব মিলিয়ে, মোদির সামনে এখন কঠিন পথ। ট্রাম্পকে আবার পাশে টানার উপায় বের করতে না পারলে ভারতের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও কূটনীতিতে আগামী কয়েক বছর বড় ধরনের চাপ তৈরি হবে।
Donald Trump was once India’s best friend. How did it all go wrong? অবলম্বনে।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



