ওরা এখনও ৭১-এর চেতনা ফেরি করে পার পেতে চায়
ষোলো বছর ধরে যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজের প্রতিটি স্তরকে কলুষিত করেছে। গুম-খুনের রাজনীতি, দমন-পীড়নের শাসন, এবং দুর্নীতির জালে তারা গোটা জাতিকে বন্দি করে রেখেছিল। হাজারো পরিবার আজও তাদের প্রিয়জনের হদিস জানে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যে তরুণদের একসময় স্বপ্ন দেখার কথা ছিল, তাদের অনেকেই গুলিতে ঝরে গেছে।
এখন, সেই একই গোষ্ঠী আবার মুখে এনেছে ৭১-এর চেতনার বুলি। বের করেছে সেই পুরনো, মলিন পতাকা, যেটির রঙে লেগে আছে লুটের কালি, গুমের ছায়া আর বিদেশে পাচার করা টাকার দাগ। তারা চেঁচাচ্ছে, “রাজাকাররা জিতে গেছে!” বলে।
কিন্তু তাদের ছেলেমানুষি দেখে মানুষ হাসছে। কারণ, রাজাকাররা ১৯৭১ সালে হেরেছিল এদেশের মাটি ও মানুষের কাছে। আর ২০২৪ সালে হেরেছে তাদের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষকরা, যারা “জয় বাংলা” বলতে বলতে স্বাধীনতার বিরোধীদের সঙ্গে গোপন আঁতাত করেছিল; যারা ভুয়া ভোটের আড়ালে নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করে আনন্দে বিভোর হয়েছিল; যারা মুক্তিযোদ্ধার কোটার নামে বাণিজ্য করেছে, যারা জঙ্গি নাটক সাজিয়ে নিরীহ নির্দোষ মানুষদের খুন করেছে, আর যারা তরুণ প্রজন্মের রক্তে রাজপথ ভিজিয়েছে।
আজ তাদের মিথ্যের পতাকা ছিঁড়ে গেছে, অবৈধভাবে আকড়ে থাকা মসনদ হারিয়েছে, আর মুখে আর্তনাদ ছাড়া কিছুই নেই। তাদের পতন ধ্বনি বাজিয়ে দেওয়া নতুন প্রজন্ম জেগে উঠেছে, যাদের হাতে পুরনো পতাকা নেই, রয়েছে আগুন। তারা রক্ত দিয়ে লিখেছে নতুন ইতিহাস, “যারা ৫৩ বছর ধরে ৭১-এর চেতনা বিক্রি করেছে, তাদের পরিণতি লেখা আছে ৫ আগস্টের রাস্তায়।”
আজ আর কেউ তাদের মিথ্যা চেতনা কিনবে না। ৭১-এর চেতনা এখন কোনো দলের সম্পত্তি নয়, এটি শহীদের রক্তে জ্বলন্ত আগুন, যা অন্যায় ও প্রতারণার গলা চেপে ধরেছে।
এখন তাদের জন্য একটাই বার্তা, বাগাড়ম্বর ছেড়ে দাও, মুখ ঢেকে নাও, লজ্জায় মাথা অবনত করে জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাও। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে শেখো, এই বাংলাদেশ আর কারো বাপের জমিদারি নয়। এই আকাশ, এই মাটি, সবই জনগণের। কোন ফ্যাসিবাদী দানবের পৈত্রিক দান দক্ষিণা নয়।
জয় হোক সেই ছাত্র-জনতার, যারা প্রমাণ করেছে, স্বাধীনতা কোনো দলের নয়, স্বাধীনতা রক্তে লেখা এক চিরন্তন সত্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


