সারা দেশে শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকায় হামলা করল জামায়াত শিবির। এদের কাছে এই জাতির প্রতীকগুলোর কোন মূল্য নাই। বায়তুল মোকাররমে সাংবাদিকদের উপর হামলা করল তারা। এদের কাছে জাতীয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের কোন সম্মান নাই। পুলিশ পেটানো তাদের কাছে ডাল ভাত। এদের কাছে আইন শৃংখলা বাহিনী কোন মানুষই না। এরা বোমাবাজ । সময় সুযোগ পেলেই বোমা তৈরি করছে।বোমা তৈরি করে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় নিয়ে মানুষ মারছে। মানুষের উপর বোমা নিক্ষেপ করছে। এরা কোন যুক্তির কথা শোনে না। তাদের বিপক্ষে গেলেই তার উপর ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে রাতের আঁধারে । তাদের কাছে নিরাপদ নয় কিছুই।
তারা অনলাইনে ব্লগারদের ব্যক্তিগত আক্রমণ করছে। তারা মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। অশ্লীল ছবি দিয়ে শাহবাগের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যুক্তি নয়, মিথ্যাচারই তাদের অস্ত্র।
এরা আসলে ইসলামী দল নয়। এরা ধর্ম ব্যবসায়ী। এরা ইসলামের নাম করে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখে। এরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এরা পরমত সহিষ্ণু নয়। এরা কোন সভ্য মানুষই নয়।
বিএনপি জামাত জোটের ক্ষমতার সময়ে কেন জেএমবি নামক একটা আত্মঘাতী দল তৈরি হয়েছিল ? কারা তৈরি করেছিল জেএমবি ? তারা ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর জেএমবি বিলুপ্ত হয়ে গেল কেন ?
দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে যেমন জেএমবি তাদের দল ভারী করেছিল, তেমনি জামাত শিবির দরিদ্র মেসবাসী যুবকদের চাকুরির লোভ দেখিয়ে দলে ভেড়ায়। তারা লিল্লাহ বোর্ডিং এ থাকার এতিম শিশুদের মগজ ধোলাই করে তাদের কর্মী বানায়। এদের দেয়া হয় বেহেস্তের টিকেট। মরলে শহীদ বাচলে গাজী শ্লোগান শুনিয়ে এদের উত্তেজিত করা হয়। এরা তাদের জামাতী প্রভু ছাড়া আর কোন কথা বিশ্বাস করে না।
জামায়াত শিবির একটা ভয়ংকর জঙ্গীবাদী দল। ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তীব্র বিরোধিতা করে। ২৫ মার্চ রাতে সংঘটিত অপারেশন সার্চলাইট এর ছয় দিন পর গোলাম আযম ঢাকা বেতার কেন্দ্র থেকে একটি ভাষণ দেন। এ ভাষণে তিনি ভারতের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, " ভারত সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী প্রেরণ করে কার্যত পূর্ব পাকিস্তানীদের দেশপ্রেমকে চ্যালেঞ্জ করেছে।...আমি বিশ্বাস করি যে, এই অনুপ্রবেশকারীরা পূর্ব পাকিস্তানী মুসলমানদের নিকট হতে কোন প্রকার সাহায্য পাবে না। [১৮]
জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সাহায্য করতে রাজাকার, আলবদর, আলশামস্ প্রভৃতি বাহিনী গড়ে তোলেন। এরা পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীর পক্ষে কাজ করে। ৩০ জুন লাহোরে সাংবাদিকদের কাছে গোলাম আযম বলেন, "তাঁর দল পূর্ব পাকিস্তানে দুস্কৃতকারীদের (মুক্তিযোদ্ধা) তৎপরতা দমন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে এবং এ কারণেই দুস্কৃতকারীদের হাতে বহু জামায়াত কর্মী নিহত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষার উদ্দেশ্য ঢাকায় শান্তি কমিটি গঠন করা হয়। এর সদস্য ছিলেন পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা। গোলাম আযম ও এই কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭১ সালের ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দৈনিক সংগ্রাম এ গোলাম আযমের পশ্চিম পাকিস্তান সফরকালের একটি সাক্ষাৎকারের পূর্ণ বিবরণ দুই কিস্তিতে ছাপা হয়। এই সাক্ষাতকারে তিনি মুক্তিবাহিনীর সাথে তার দলের সদ্স্যদের সংঘর্ষের বিভিন্ন বিবরণ ও পূর্ব পাকিস্তান পরিস্থতির ওপর মন্তব্য করেন। তিনি বলেন বিচ্ছিন্নতাবাদীরা জামায়াতকে মনে করতো পহেলা নম্বরের দুশমন। তারা তালিকা তৈরি করেছে এবং জামায়াতের লোকদের বেছে বেছে হত্যা করছে, তাদের বাড়িঘর লুট করছে জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং দিচ্ছে। এতদসত্বেও জামায়াত কর্মীরা রেজাকারে ভর্তি হয়ে দেশের প্রতিরক্ষায় বাধ্য। কেননা তারা জানে 'বাংলা দেশে' ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য কোন স্থান হতে পারে না। জামায়াত কর্মীরা শহীদ হতে পারে কিন্তু পরিবর্তিত হতে পারে না। [১৯]
১৯৭১ সালের পর ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হলে জামায়াত ও এর আওতায় পড়ে। ১৯৭৬ সালের আগস্টে জিয়াউর রহমান সরকার সকল ধরণের রাজনৈতিক দলের রাজনীতি উন্মুক্ত করে রাজনৈতিক দল অধ্যাদেশ ঘোষণা করেন। এ সময় ইসলামিক ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নামক একটি দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী যুক্ত ছিল। পরে গোলাম আযম বাংলাদেশে ফিরে এলে ১৯৭৯ সালের মে মাসে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ গঠিত হয়। এর ভারপ্রাপ্ত আমীর পদ লাভ করেন আব্বাস আলি খান।
যারা বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না, যারা বাংলাদেশের জন্ম চায় নি, যারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করে, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোন দরকার নাই। তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হোক।
এই লেখার কিছু অংশ ইউকি পেডিয়া থেকে কপি/পেস্ট করা হয়েছে। বিস্তারিত জানার জন্য এই লিংকে যান : Click This Link