somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সম্মান

১৪ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশের জীবিকা নির্বাহের জন্য পুরুষ লোকেরাই শ্রম করে থাকেন । পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন কাজ করে থাকেন । একজন পিতা তাঁর ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণের জন্য ঠেলাগাড়ি চালিয়ে তাঁদের সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলানোর চেষ্টা করছে । কিন্তু একসময় দেখা যাচ্ছে সেই ছেলেই সমাজের বড় মাস্তান হিসেবে আখ্যায়িত পাচ্ছে ।
-
একজন ভিখারিনী ভিক্ষা করে তাঁর ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছে । তাঁর চোখে অনেক স্বপ্ন যে, "তাঁর ছেলে-মেয়ে একদিন পুলিশ হবে, ডাক্তার হবে, আমার নাম উজ্জ্বল করবে" । কিন্তু পরমুহুর্রতে দেখা যাচ্ছে যে, ভিখারিনীর ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে ঠিক-ই কিন্তু তারা (ছেলে-মেয়ে) পরিবর্তন হয়ে গেছে । তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন আসার কারণটা সেই ভিখারিনীর বুঝতেও সমস্যা হলো না ।
-
ছোট্ট ছেলেটির পিতা মারা গেছে ছোটবেলায়-ই । তার মা তাকে অনেক কষ্টে বড় করেছে এর-ওর বাড়ি কাজ করে । তাকে লেখাপড়া করে যোগ্য মানুষ হিসেবে বিশ্বের কাছে দাঁড় করিয়েছেন তাঁর কিডনী বিক্রি করে । কিন্তু ছেলেটি জানেনা যে, "তার মা কিডনী বিক্রি করে তাকে ডাক্তার বানিয়েছে" ।
মা যখন কিডনী বিক্রি করে একটা হাসপাতালে গিয়ে তখন একজন ডাক্তার তাঁকে (মা'কে) প্রশ্ন করেন সে, - "আপনি কেন কিডনী বিক্রি করছেন । আপন তো একটা কিডনী দ্বারা বেশিদিন বাঁচতে পারবেন না । কয়েকবছর ভালো যাওয়ার পর আপন শরীর ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়বে । কেনোনা আপনার শরীর এখন-ই অনেকটাই দূর্বল" । উত্তর মা বলেছিলেন, - "সমস্যা নেই ডাক্তারবাবু, চিন্তা করবেন না । আমার ছেলেকে আমরা ডাক্তারি লাইনে পড়াচ্ছি । বাবা, একদিম তোমার মতো আমার ছেলে এরকম সাদা পোষাক পড়ে থাকবে । আমার তো গর্বে বুক ভেসে যাবে তখন । ছেলেকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ডাক্তারবাবু । ছেলেকে এখন কিডনী বিক্রি করে ডাক্তার বানাবো, তখন আমার ছেলেটা ডাক্তার হয়ে গেলে সে নিজেই আমাকে একটা কিডনী লাগিয়ে দিবে ডাক্তারবাবু" ।
এখন মা'র ছেলেটি ডাক্তার হয়েছেন । কিন্তু মা আজ মৃত্যুশয্যায় শায়িত । ছেলেটি সেই কবে ডাক্তার হয়েছে, কিন্তু সেই যে শহরে গিয়েছিলো আর ফিরে আসেনি । লোকমুখে শুনেছেন ছেলেটি অনেক বড় হয়েছে । তার অনেক নাম-ডাক-যশ-খ্যাতি ।
-
একটি মেয়ে কষ্ট করে গার্মেন্টসে কাজ করছে জীবিকা নির্বাহ করছে । বাসায় তাঁর বাবা অসুস্থ । মা ও কিছুটা অসুস্থ । ভাই-বোনের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য গার্মেন্টসে গিয়ে কাজ করছে মেয়েটি । চোখ আর হাত জীর্ণ করে একনাগাড়ে সেলাই করে যাচ্ছে । সে এই কাজের প্রেক্ষিতে কেমন মর্যাদা পেয়ে থাকে জানেন?
মেয়েটি গার্মেন্টসে চাকরী করে, মেয়েটির স্বভাব চরিত্র কখনোই ভালো হতে পারেনা, কারণ মেয়েটি গার্মেন্টসকর্মী ।
-
(লেখাটি এখানেই শেষ করছি । হতে পারে আমার লেখনীতে অনেক ভুল থাকতে পারে । ভুল থাকলে অবশ্যই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । আসলে আমি আমার লেখনী দ্বারা এটাই বুঝাতে চেয়েছি যে, আমাদের পিতা-মাতা আমাদের অনেক কষ্টে লালন-পালন করে আমাদের বড় করেছেন । আমরা যেন তাঁদের কষ্টের মূল্য দিই । আমরা অনেকেই সভ্য সমাজে থেকেও টাকার লোভে, খারাপ লোকেদের খপ্পরে পড়ে, খারাপ লোকেদের খারাপ যুক্তি নিয়ে আমাদের মা-বাবাদের ভুলে যাই, ভুলে যাই তাঁদের কষ্টের কথা । একদিন আমাদেরও সন্তান হবে, আমরাও তাদের কষ্ট করে লালন পালন করব । তারাও যে আমাদের এভাবে অবহেলা করবে না তার কি গ্যারান্টি? তাই বলছি কী, নিজের বাবা-মায়ের সাথে যেমন ব্যবহার করবেন, ভবিষ্যতেও আপনিও সেটার ভালোই ফল পাবেন ।)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০১৮ সকাল ৯:৩২
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×