সাতাশে অক্টোবর দুই হাজার আট এ
সোমবারের দিবাগত রাতের শেষ প্রহরে
কার্তিকের বার তারিখ ১৪১৫ সালের ভোরের কিছু আগে
তোমার আগমনের জানান দিলে,
মায়ের রক্ত মাংসে লালিত গর্ভ হতে।
ভোরের স্নিগ্ধ আলোতে চোখ মেললে তুমি
অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে হাসালে ধরনীতল,
অনাবিল আনন্দে।
তোমার আগমন ক্ষনে পাশে থাকার সৌভাগ্য হয়নি
তাই বড় ব্যথা এই পোড়া মনে।
আজও দেখা হয়নি সযতনে স্পর্শ করে তোমাকে
কিন্তু স্থান নিয়েছ এ বুকে ছোট হৃদপিন্ডের মাঝে।
যখন তোমার আব্বু ডাক আমার কানে বাজে
তখন পৃথিবীর সমস্ত শব্দ আমার অর্থহীন মনে হয়।
ভাবনার কক্ষপথে কল্পনায় তোমার ছবি আঁকি
আম্মু বলে যখন তোমাকে ডাকি
তখন মনের শত কালিমা দুঃখবোধ ভুলে যাই নিমিষে।
মনের গভীরে স্থান নিয়েছ যে তুমি
সেতো আমার মায়ের প্রতিচ্ছবি ছোট মা’মনি।
হৃদয়ে লালিত সুখের অনুভূতি
নয়ন সন্মুখে নেই তব তুমি
সারা কল্পনায় বিরাজিত আমার ভাবনার ভূমি।
অভিমানের সুরে বল যখন আব্বু বাড়ীতে আস না কেন তুমি..
তখন সমস্ত মনভূমি লন্ডভন্ড হয়ে কাল বৈশাখী ঝড় বয়ে যায়,
শত না পাওয়ার মাঝে হাজার প্রশ্ন
কেন এ প্রবাস জীবন ?
যেন দেয়ালহীন এক ব্যস্ত কারাগার।
যেখানে প্রতি মূহুর্ত জড়িয়ে আছে স্ত্রীর হতাশা ভরা প্রানের আকুতি,
সন্তানের আহাজারী, মায়ের ব্যাকুলতা, বাবার দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
ছোট মেয়ের পিতাকে কাছে না পাওয়ার অভিযোগ,
প্রতিক্ষন পিতার আদরের প্রত্যশায় অপেক্ষার প্রহর গুনা।
এ যেন এক অসহ্য প্রবাস যন্ত্রনা
প্রিয়জন শূন্য স্থায়ী নিবাস,
ছোট মা’মনি প্রিতুর শত আবদার ভুলে থাকার মাঝে…
অনুভূতিহীন নিঃপ্রান এক হৃদয় শূন্য দেহ।
এ যেন হৃদয় গঙ্গার অবিরাম বারি বর্ষন,
যেন আমার না দেখা ছোট মা’মনির স্পর্শহীন নিথর দেহ।
যেন আমার প্রিতু মা’মনির আকুল প্রানের সমস্ত চাওয়া পাওয়ার
হিসাব সম ব্যথতার ডালি।
জানিনা আর কত কাল বয়ে বেড়াতে হবে এ প্রবাসে ?
ছোট মা’মনিকে বলেছি, তুমি বড় হও
যেদিন আব্বু ডেকে বলবে যেতে,
আসব সেদিন দেখবে হেসে….
সে যে আমার মা সম ওবায়দা হামিদ প্রিতু
তাকে ভেবে এ প্রবাসে হই না কখনোও ভীতু।
***************************
তাং ২৫/০৮/২০১১
আল-খোবার, সৌদি আরব।