সল এলাকাটা অবশ্য সমতল। হোটেলের বুকিংটা দেয়াটা সম্ভব হয় নাই আসার আগে শুধু ক্রেডিট কার্ডটির জন্য। সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এখনি একটা হোটেলে উঠতে হবে। চত্বরে বসে উপভোগ করছিলো সে মাদ্রিদের সৌন্দর্য্য, যেনো দেখছে কোনো নববিবাহিতা বধুকে! বাসরে সোনালী রঙের শাড়ী পরে যেনো বসে আছে তার সামনে! হঠাৎ সম্বিত ফিরল তার "সার্ভেসা, সার্ভেসা" শব্দে। তাকিয়ে দেখে একজন শ্যামলা অল্পবয়স্ক (২০) ছেলে জিজ্গাসু নয়নে তাকিয়ে আছে, হাতে বিয়ার। কথা বলে জানতে পারলো ছেলেটিও বাংগালী। ওকে কিছুতেই বোঝানো গেলো না যে সে এখানে শুধু বেরাতে এসেছে। ওর ধারনা নিও এসেছে এখানে কাজ করতে। নিজের করুন পরিস্হিতির কথা ভেবে নিও'র প্রতি আর্দ্র হয়ে উঠে তার মন। হো হো করে হেসে উঠে নিও। ওকে বোঝায় যে সে কোনো বিপদে পড়ে নাই।এখনি হোটেলে গিয়ে উঠবে।
বাংগালী যেখানেই থাকুক আবেগ তাদের থাকবেই। কিন্তু এখানে বিদেশ বিভুইয়ে তার মুল্য দেয়ার উপায় নাই। এখানে কাজের অভাব আর রিসেশনের কারনে সবারই মোটামুটি করুন দশা।তারপরও দেশের বেকারত্ব আর কম বেতনে কাজ করার চেয়ে বাংগালী এখানে থাকাটাই বেশী পছন্দ করে। কিন্তু তার জন্য তাদের যে কি পরিমান মুল্য দিতে হয় তা শুধু তারাই জানে। অনেক মধ্যবয়স্ক তাদের পুরো সংসার দেশে ফেলে রেখে এখানে পড়ে আছেন শুধু টাকা কামানোর জন্য।
ছেলেটি প্রস্তাব দিলো যে নিও আজ রাতের জন্য তার পরিচিত এক বাসায় থাকতে ও খেতে পারে।ঐ বাসায় এমনিতেই একটি রুম খালি আছে। তারা এমনিতেই একজন স্হায়ী ভাড়াটিয়া খুঁজছে। নিও দেখল খরচ পরবে যদিও আবাসিক হোটেলের মত কিন্তু বাংগালী খাবার সাথে ফ্রী! ভাত, মাছ ভাজা, শুটকী, সবজি।আহ.... লোভ সামলানো দায় হয়ে পড়ল। হোটেল তো তার শুধু দরকার ব্যাগ রাখা আর রাতে শোয়ার জন্য! আর ঐ শালাদেরকে টাকা দেয়ার চেয়ে বাংগালীদের সামান্য উপকার করা ঢের ভালো।সিকিওরিটি নিয়ে সামান্য চিন্তিত হলেও,শেষতক নিও রাজি হয়ে যায়। ওকে বলে যে রাতে একসাথে তারা ঐ বাসায় ফিরবে।
নিও নেমে পড়ল রাতের মাদ্রিদ ভ্রমনে। সকালের জন্য একটা গাইডেড টুরের টিকেট কাটা আছে। বুলফাইট দেখার খুব ইচ্ছে ছিল, কিন্তু ঐদিন কোনো প্রোগ্রাম নাই! আজ রাত্রিটা উদ্দেশ্যহীন ভাবেই ঘুরতে হবে। তবে ট্যুরিস্ট ম্যাপ আছে সাথে, তাই কোনো চিন্তা নাই।গুরুত্বপুর্ন একটা রাস্তা ধরে হাটা শুরু করল ও
বুলফাইট
স্পেন, এক অনন্য মুসলিম সভ্যতার আদি দর্শন হলেও মুসলিম রাজত্বের পতনের পর এখন মুলত খ্রীস্টান অধ্যুষিত। কালচারও তাই তেমনই। স্পেনিশ মেয়ে, ও ফ্ল্যামেন্কো ড্যান্সের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। পেনিলোপির দেশ বলে কথা! আজ রাতটা হেটে আর ঐগুলা দেখেই কাটানো যেতে পারে। সামারের পিক সময় বলেই হ্য়ত মেয়েদের জামার খুব দৈন্য দশা। শুধু স্পেন নয় সারা ইউরোপ থেকে ছুটে আসছে পর্যটকের দল। উদ্ভিন্ন যৌবনা সব তরুনীর টাইট টপস আর মিনি স্কার্টের নীচের ফর্সা উরু মনে কামনার আগুন জ্বেলে দেয়। স্লীভলেস টপস পরে যখন ওরা চুল ঠিক করতে থাকে, তখন তা দেখে বুকের সবকিছু এলোমেলো হতে শুরু করে।হৃদস্পন্দন হয়ে যায় ড্রামবিট, আর গলা আসে শুকিয়ে!
ফ্ল্যামেন্কো
বত্রিশ বছর বয়স্ক নিও, ভার্জিনত্ব নিয়ে ভাবতে গিয়ে হেসে ফেলল। সারা জীবন রাম গরুরের ছানার মত কাটিয়ে শুধু এটিই রাখতে পেরেছে; কিন্তু এর কি কোনো মুল্য আছে আজকের এই দুনিয়ায়? যৌবন অনেকের কাছে আজ সবজির মত; ফ্রেশ খাওয়াই ভালো, রেখে দেয়া মানে পঁচানো। সে সন্দিহান যে সে তার মতই ভার্জিন একটা মেয়েকে বিয়ে করতে পারবে কিনা। ওয়েস্টার্ণ সোসাইটিতে তো ঐটা আজ রীতিমত একটা গালি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলবে....
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৫৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




