রক্ত দিতে লাইনে দাড়িয়ে আছেন আড়াই ঘণ্টা। তারপরেও আপনার সিরিয়াল আসার নামগন্ধও নেই। যার জন্য রক্ত দিতে আসছেন সেই রোগী মৃত্যুর দুয়ারে বসে গগণবিদারী চিৎকার করলেও কোন পরোয়া নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। রক্ত দিতে গিয়েও প্রচণ্ড রকমের হয়রানি আর দুর্ভোগের শিকার হতে হবে আপনার। কিন্তু কেন এই কালক্ষেপণ? কেন এই বিড়ম্বনা?
দেশের একমাত্র ও প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় রাজধানীর শাহবাগ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই বেহাল অবস্থা। হাসপাতালের রক্ত বিভাগে ঢোকা মাত্রই চোখে পড়বে এই বেহাল ব্যবস্থাপনার করুণ চিত্র। এতবড় হাসপাতাল। কিন্তু সরকারি এই হাসপাতালের রক্তগ্রহণ বিভাগে অগোছালো ব্যবস্থাপনা, দায়িত্ব অবহেলা, দায়িত্বরত চিকিৎসকদের হেয়ালিপনা, অসহনীয় কাল-ক্ষেপণ যেন নিয়মিত হয়ে পড়েছে। প্রত্যহ রোগী বিড়ম্বনা বেজায় বিরক্তিকর আর বেঘটপ ঠেকবে যেকোন সচেতন নাগরিকের।
প্রথমেই দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে রক্ত পরীক্ষার স্লিপ সংগ্রহ করতে হচ্ছে। বুঝলাম যেকোনো কার্যক্রমের একটি নিয়মনীতি রয়েছে। এরপর এক ঘণ্টা পরে সেই স্লিপ নিয়ে ঐ স্থানে কর্মরত ডাক্তারের কাছে প্রেরণ করা হবে। সেখানেও রীতিমত দীর্ঘ অপেক্ষা। সেই স্লিপ নিয়ে আপনার সাথে ডাক্তারের কিছুক্ষণ আলাপচারিতা। এরপর আবারো দীর্ঘ অপেক্ষা। দীর্ঘ ২ ঘণ্টা পরে আপনার নাম আসলে আসতেও পারে নাহলে চাতক পাখির মত অপেক্ষার প্রহর গুনতে হবে।
কথা হচ্ছে আমি গিয়েছিলাম মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে থাকা দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত এক মহিলার রক্ত দিতে। শুধু একজন ক্যান্সার রোগী নয়, এমন শ’য়ে শ’য়ে রোগীদের জন্য রক্ত দিতে লাইনে দাড়িয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার বিড়ম্বনায় কেন পড়তে হবে? কোথাও তো এমন নজির পাওয়া যায় না। একটি হাসপাতালের এমন দুরাবস্থা হবেই বা কেন? এমন কঠিন ও বেহাল অবস্থার অবসান ঘটবে কবে? জীবন বাঁচাতে গিয়ে রোগীর অবস্থা আরো বেগতিক হলে তার দায়িত্ব নিবে কে?