somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০১৮ ফুটবল বিশ্বকাপ, রাশিয়াঃ সেরা পাঁচ দল

১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইতালী-নেদারল্যান্ড-চিলির মত জায়ান্টদের বাদ করে প্রথমবার খেলতে এসেছে ওয়েলস-আইসল্যান্ডের মত দল। তাই বলে তো বিশ্বকাপের উত্তাপ কমে নাই।
আছে মিসরের কিং খ্যাত সালাহ, তুর্কী সেনা খ্যাত রোনালদো, কাভানি-সুয়ারেজের উরুগুয়ে ছাড়াও সকল বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ব্রাজিল, গতবারের রানার্সআপ আর্জেন্টিনা, চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, ফুটবল আবিষ্কারের দাবিদার ইংল্যান্ড আর সাজানো বেলজিয়াম সহ ভারসাম্যপূর্ন মোট ৩২টি দল। কিন্তু কাপের দাবিদার কজন?

সবাই যার যার সমর্থনের দলকেই সেরা মানতে ভালোবাসে। ধারে ভারে অভিজ্ঞতা আর সমর্থকদের বিচারে সেরা পাচ দলের বিস্তারিত জানাচ্ছি আমি নোমান প্রধান !

ফ্রান্স



তারুন্যের প্রাচুর্যে ভরা এবারের ফ্রান্স ফুটবল দল। পেলে-ম্যারাডোনার মতন মহারথীরাও এই ফ্রান্স দলকে মানছেন অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে। তা মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে কি আছে এই দলে? কি এমন তাদের শক্তি? চমকে উঠার মত ব্যাপার হলো ইউরোপের শীর্ষ পাচটি লিগের সেরা দল গুলোতেই খেলে ১৯ জন, যেখানে স্কোয়াডেই আছে ২৩ জন।

তাদের বড় শক্তির জায়গা কোনটি? ডিফেন্সে আছে পিএসজি, রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সালোনা আর আর্সেনালের বড় তারকারারা। যাদের ছাড়া ক্লাব সমর্থকেরা একাদশ ভাবতেও পারে না! কাতালান ক্লাবের উমতিতি কিংবা মাদ্রিদের ভারানে , তারাই ডিফেন্সের বড় শক্তি। এবার আসি মিডফিল্ডে! চেলসি’স কান্তে, ইউনাইটেডের পগবা, পিএসজি’স আদ্রিয়েন রাবিত আর বায়ার্নের টলিসও (Toliss) ছাড়াও ইতালির জুভেন্টাস আর ফ্রান্স ওয়ান লিগের ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন মোনাকোতে খেলছে আরো দুই জন।

এই তো গেলো ডিফেন্স আর মিডফিল্ড! ফরোয়ার্ড কেমন? যে দলে রিয়াল মাদ্রিদে নিয়মিত খেলা একজন স্ট্রাইকার স্থান পায় না সে দলের ফরোয়ার্ড কতটা ভয়ংকর হতে পারে? হ্যা! বেনজেমা স্কোয়াডে নেই। আছে কিলিয়ান এমবাপ্পে আর গ্রিজম্যানের মত ত্রাস! আরো আছে আর্সেনালের দুই প্লেয়ার জিরোড আর আলেক্সান্ডা, আছে মিউওনিখের কোমান! তাহলে তারকা সমৃদ্ধ এই দল হারবে কখন?

কেবল নিয়তি আর ভারসাম্যহীনতাই হতে পারে তাদের হারের কারন। বিভিন্ন ক্লাবের বিভিন্ন ট্যাকটিস কতটা কার্যকরী থাকবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আসরটিতে সেটাই দেখার বিষয়। দুর্বলতা হতে পারে তারুন্য। গত বিশ্বকাপে ফেবারিট থেকেও বড় বাজে অভিজ্ঞতা হয়েছিলো ব্রাজিলের, কারণ ছিলো চাপ নিতে না পারা।

ব্রাজিল



অনেকেই বলছে তিতের কাছে জাদু আছে। নয়তো লাতিন আমেরিকার মত অঞ্চলে বাছাইপর্ব খেলে এত্ত আগে বিশ্বকাপে অংশগ্রহন নিশ্চিত করা কোন সামান্য অর্জন নয়। যেখানে মেসি’স আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত। বিগত দুই আসরের চেয়ে অনেক বেশী ভারসাম্যপূর্ণ দল ব্রাজিলের।

রক্ষনভাগে আছে সেরাদের সেরা মার্সেলো ! মাদ্রিদের প্রাণ ভমরা। গোল যেমন আটকাবে সুযোগে গো্ল করতেও ছাড়ে না। আছে পিএসজির নিয়মিত খেলোয়ার মাড়োকূইনোশ; আলভেস আর সিলভা, ইন্টার মিলানের মিরান্ডা, ম্যানচেস্টারের দানিলো, এ্যথলেটিকোর ফিলিপ লুইস! এই রক্ষন ভেদ করা হয়ত অনেক আক্রমন ভাগের স্বপ্ন হয়েই থাকবে।

আর মাঝমাঠ? বার্সালোনাতে সদ্য আসা কুতিনহো আর পাওলিনহো, রিয়ালের ক্যাসিমিরো আর ম্যাচেস্টারের ফার্নান্দিনহো! মাঠের নিয়মিতই তারা কাল বৈশাখী তোলে। মোনাকো তে খেলা জ্যামারসন হয়ত বেঞ্চেই থাকবেন। তাছাড়া ফ্রেড, আর্থার এবং ডিয়াগো তো আছেন।

ব্রাজিলের আক্রমনভাগের আনুমানিক দাম আজকের বাজারে কম করে হলেও ৬০০-৭০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। নেইমার, চেলসিতে খেলা উইলিয়ান, লিবারপুলে ফিরমিনহো, আড় সিটিতে আছে গ্যাব্রেল জেসুস! যে কোন রক্ষন ভাগে ধারালো এবং বুদ্ধিদীপ্ত আক্রমনে সক্ষম প্রতিটি খেলোয়ার।

ইনজুরি ব্যাতীত অন্য কোন দুর্বলতা নেই আপাতদৃষ্টিতে।

স্পেন



যে কোন কোচ চাইবে বিশ্বকাপে এমন একটা দল। যাদের নিজেদের মধ্যে খুব দ্রুত বোঝাপড়া করে নিতে পারে। দেখলে কেউ বুঝবে না এই দলে প্রাদেশিক স্বাধীনতাকামী খেলোয়ার খেলছে, দেশটি চলছে স্বাধীনতার বিপ্লব।

ম্যানচেস্টারের গোলকীপার ডেভিড ডি গিয়া’কে আগলে রাখবে রক্ষনে মাদ্রিদ অধিনায়ক রামুস-কারভাহাল-নাচো, বার্সালোনার পিকে-আলভা! আরো আছে চেলসির চেসার আর ডর্টমুন্ডের বার্তা আর আর্সেনালের নাচো মনর্যা ল! হাজার কোটি দাম হতে পারে এই রক্ষনভাগের!

আসলে স্পেনের মাঝমাঠটায় এমন একজন নেই যে কিনা তারক না! লাকে রেখে কার কথা বলি? রিয়ালের ইস্কো-এ্যসেনসিও, বার্সায় ইনিয়েস্তা-সার্জিও, এ্যথলেটিকো মাদ্রিদে সাওল-কোকে, বায়ার্নে থিয়াগো, সিটিতে ডেভিড সিলভা আর সোসিয়েদাদে এ্যসিয়ের। মাঝমাঠের দামও হাজার কোটি ছুই ছুই! আর এই মাঝমাঠের ইস্কো-ইনিয়েস্তা প্রায়ই তো আক্রনভাগে খেলে, সুতরাং বুঝতেই পারছেন তাদের ধার এবং ভার!

এ্যটাকে আছে চেলসির মোরাতা আর পেদ্রো, সেল্টা ভিগো,ভ্যালেন্সিয়া আর নাপোলির তিন খেলোয়ার যারা নিজেদের দলে স্টার।

জার্মান




আসলে জার্মানীর বড় শক্তি যে তারা জার্মানী দল। শুনতে কিছুটা বেখাপ্পা লাগলেও এটাই সত্য। বিশ্বকাপে যে কোন দলকে নিশ্ব করতে পারে হিটলারের উত্তরসূরিরা।আট বার বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলা দলটির দিন দিন এই আধিপত্য বেড়েই চলছে।

ডিফেন্ডার চ্যাম্পিয়নদের রক্ষনভাগে আছে বায়ার্নের ম্যাটস, মিউওনিখের কিমিচ-নিকলাস, রোমার এ্যন্থনিও, আর আছে হেক্টর, গিন্টার ও বেঞ্জামিন।

মাঝমাঠ আর আক্রমনভাগের আলোচনা একসাথেই করি। কারণ তারা ফরমেশনের চেয়ে বেশি বিশ্বাসী মুভমেন্টে। একসাথে উঠা নামায়। লিবারপুলের ক্যান, পিএসজির ড্রাক্সলার, আর্সেনালে ওজিল, মাদ্রিদে টনি ক্রুস, বায়ার্নে মুলার-রুডি! লি চমৎকার সব খেলোয়ারের মহামিলনে ভেসে যেতে পারে যে কোন দল। তারা ছাড়াও বেশ কিছু ক্ষীপ্র উঠতি খেলোয়ার আছে।

নতুনদের মাঝে তেমন কোন তারকা খেলোয়ার নেই যে কি’না প্রবীনদের ছাড়িয়ে যাবে।

আর্জেন্টিনা



বিশেষ একজন মানুষের কারণে এই আর্জেন্টিনা একটু বেশিই ফেভারিট। একবিংশ শ্বতাব্দীর ফুটবলের বিস্ময়টা যে আর্জেন্টিনায় খেলে। গত আসরের মত এবারও আক্ষেপ ঘুচানোর আশা নিয়েই খেলবেন মেসি। বিশ্বকাপ ব্যাতীত আর কোন অপ্রাপ্তি নেই তার। দেশকে একটা শিরোপা এনে দেয়ার স্বপ্ন নিয়েই খেলবেন তিনি।

মেসির দলে আছে গোলপোস্ট পাহারায় ইউওনাটেডের সার্জিও রোমারিও। রক্ষনভাগে আছে মেসির সাথে বার্সায় খেলা ম্যাসচেরানো, সিটির নিকোলাস, রোমার ফ্যাজিও আর সেভিয়ার গ্যাব্রেল।

মাঝমাঠের পাহারায় ডি মারিয়ার সাথে থাকবে মিলানের লুকাস, সেভিয়ার বেনেগা।
আক্রমভাগে মেসির সঙ্গ দেবে দিবালা, এগুয়্যারা এবং ইকার্দি।

দুর্বলতা আছে রক্ষন আর মাঝমাঠে তবে মেসির নেতৃত্বে নিজেদের দিনে কেবল আক্রমন দিয়েই ভড়কে দিতে পারে যে কোন দলকে।

তাছাড়াও চমকে দিতে পারে আরো বেশ ক’টি দল, তাদের নিয়ে আলোচনা করবো অন্য কোন পর্বে।


বলে রাখা ভালো, এটা আমার প্রথম স্পোর্টস রিপোর্টিং, ত্রুটি মার্জনীয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×