somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভোট সম্পর্কে কী বলে ইসলাম

১৪ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমনকি বিভিন্ন সংগঠন, সমিতি ইত্যাদির নির্বাচনে আমরা ভোট প্রদান করি। এক সময় ছিল যখন যুদ্ধজয়ের মাধ্যমে ক্ষমতার পালা বদল হতো। ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থায় জনগণের রায় তথা বাইয়্যাত বা আনুগত্য প্রকাশের মাধ্যমে খলিফা নির্বাচিত হতো। বর্তমানের ভোট প্রদান তারই ধারাবাহিকতা। তাফসিরে মারেফুল কোরআন বাংলা অনুবাদের তিনশত পনের পৃষ্ঠায় সুরা মায়িদার ৮ নং আয়াতের ব্যাখায় ভোটদানের তিনটি দিক উল্লেখ করা হয়েছে।

১। সাক্ষ্যদান : ভোট প্রদানে ভোটদাতার পক্ষ থেকে সাক্ষ্য দেয়া হয়, আমার মতে এ ব্যক্তি ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সততা ও বিশ্বস্ততার দিক দিয়ে জাতির প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্য। এখন চিন্তা করা প্রয়োজন, আমাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে কয়জন এমন রয়েছে যাদের বেলায় এ সাক্ষ্য সত্য ও বিশুদ্ধ হতে পারে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, আমাদের জনগণ নির্বাচনকে একটি হার-জিতের খেলা মনে করে। এ কারণে কখনও পয়সার বিনিময়ে, কখনও চাপের মুখে, কখনও সাময়িক বন্ধুত্ব এবং সস্তা প্রতিশ্র“তির ভরসায়, ব্যক্তিস্বার্থে, দলীয় স্বার্থে, লোভ-লালসায় পড়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষিত ধার্মিক মুসলমানও চিন্তা করে না, অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার মতো মহা পাপ করে খোদায়ী অভিশাপ ও শাস্তির উপযুক্ত হয়ে যাচ্ছে।

২। সুপারিশ করা : ভোটদাতা ব্যক্তি যেন সুপারিশ করে যে অমুক প্রার্থীকে প্রতিনিধিত্ব দান করা হোক। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে - যে ব্যক্তি উত্তম ও সত্য সুপারিশ করবে, যার জন্য সুপারিশ করে, তাকে তার পুণ্য থেকে অংশ দেয়া হবে এবং যে ব্যক্তি মন্দ ও মিথ্যা সুপারিশ করবে, সে তার মন্দ কর্মের অংশ পাবে। এর ফলে এ প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে তার কর্ম জীবনে যেসব ভ্রান্ত ও অবৈধ কাজ করবে তার পাপ ভোটদাতাও বহন করবে।

৩। ওকালতি : ভোটদাতা প্রার্থীকে নিজ প্রতিনিধিত্বের জন্য উকিল নিযুক্ত করে। কিন্তু এ ওকালতি যদি ভোটদাতার ব্যক্তিগত অধিকার সম্পর্কে হতো এবং এর লাভ-লোকসান কেবল সেই পেত, তবে এর জন্য সে নিজেই দায়ী হতো। কিন্তু এখানে ব্যাপারটি তেমন নয়। কেননা এ ওকালতি এমন সব অধিকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত যাতে তার সঙ্গে সমগ্র জনগণ শরিক, কাজেই কোন অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রতিনিধিত্বের জন্য ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করলে জনগণের অধিকার খর্ব করার পাপও ভোটদাতার কাঁধে চেপে বসবে।

উল্লিখিত তিনটি ক্ষেত্রে সৎ, ধর্মভীরু ও যোগ্য ব্যক্তিকে ভোটদান করা যেমন সওয়াবের কাজ এবং এর সুফল ভোটদাতাও প্রাপ্ত হন। তেমনি অধর্মপরায়ণ, অযোগ্যকে ভোট দেয়া মিথ্যা সাক্ষ্যদান, মন্দ সুপারিশ ও অবৈধ ওকালতির অন্তর্ভুক্ত এবং এর পাপের ভাগিদার হওয়া ও মারাত্মক ফলাফল ভোটদাতার আমলনামায় লিপিবদ্ধ হবে। তাছাড়া ভোট একটি পবিত্র আমানত। আল্লাহপাক আমানতকে যথোপযুক্ত স্থানে প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। যদি কারও মনে প্রশ্ন জাগে সৎ লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর তবে কোথায় আমানত প্রয়োগ করব। উত্তর হল - যে কয়জন প্রার্থী থাকবে তাদের মধ্যে আপনার বিবেক অনুযায়ী তুলনামূলকভাবে যাকে খোদাভীরু, সৎ ও যোগ্য বলে মনে করবেন তাকে ভোট দিলে আপনার দায়িত্ব পালন করা হবে, কেননা শতভাগ সৎ লোক না পেলেও আপনি বৈষয়িক স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে মন্দের ভালো খুঁজে নিয়েছেন।

সূত্র : জুন ১০, ২০১১, শুক্রবার : জ্যৈষ্ঠ ২৭, ১৪১৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×