somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তোমরা অপরাধী

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকের মতে নাস্তিকতা একটি ব্যাধি এবং এর চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমি মনে করি নাস্তিকতা একটি ধর্ম। ইসলাম ধর্মে যেমন আমরা আল্লাহকেই সৃষ্টিকর্তাকে, পালনকর্তা এবং সর্বোপরি সর্বেসর্বা মনে করি এবং তার উপাসনা করি বা সনাতন ধর্মে যেমন ব্রহ্মাকে সৃষ্টিকর্তা, শিবকে পালনকর্তা ইত্যাদি মানা হয় এবং তাদের পুজা করা হয় তেমনি নাস্তিকরাও প্রকৃতিকে সৃষ্টিকর্তা, প্রয়োজনীয়তাকে পালনকর্তা এবং ঈশ্বরেরঅনুপস্থিতিকে লালন করে। আমরা (মুসলিমরা) বিশ্বাস করি যে মৃত্যুর পড়ে একটি জীবন আছে এবং সেখানে আমরা আমাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী জান্নাত অথবা জাহান্নামে প্রেরিত হব বা হিন্দুরা যেমন মনে করে যে মৃত্যুর পরের জীবনে তারা জন্মান্তরবাদ তত্ত্ব অনুযায়ী নিজেদের কৃতকর্মের উপর নির্ভর করে পুনরায় পৃথিবীতে প্রেরিত হবে তেমনই তারাও বিশ্বাস করে যে মৃত্যুর পরবর্তী জীবন বলে কিছু নেই। তাদের দেহ এবং প্রাণ মৃত্যুর পর অসার হয়ে যাবে।

উল্লিখিত নাস্তিকতা সম্পর্কে আমার ধারণায় হয়ত কিছুটা ভুলও থাকতে পারে। তবুও বলছি, যারা এমনটা বা হিংসাত্মক ও বিদ্বেষপূর্ণ নয় এমন ভাবেন তাদের নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র চিন্তিত নই। আপনারা আপনার চিন্তা চেতনা নিয়ে থাকুন। তাতে আমার কি? আমি আপনাদের চিন্তা চেতনাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু যারা নিজেদের নাস্তিক পরিচয় দিয়ে নাস্তিকতার নামে অন্যদের ধর্মকে বিশেষ করে ইসলাম ধর্মকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন তাদের এহেন চিন্তাধারার বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। কারণ আপনি আমার শ্রদ্ধাকে ছোট করার চেষ্টা করছেন। আমি ইসলাম ধর্ম পালন করি তাতে সমাজের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কিন্তু ভেবে দেখুন তো আমি মুসলিম বলে যদি হিন্দু বা অন্যান্য ধর্মের দেব দেবীদের ছোট করে অভক্তিমূলক গালমন্দ করি তাহলে বিষয়টি কি সামাজিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে নাকি তা চরম অসৌজন্যমূলক অসামাজিক একটা ব্যাপার হবে?

আপনার চিন্তা, আপনার ভাবনা, আপনার চেতনা... এগুলোকে নিজের মত করে নেয়ার স্বাধীনতা অবশ্যই আপনার আছে। আপনার যা খুশি ভাবতে পারেন, কিন্তু আপনি অবশ্যই আপনার ভাবনাটাকে দিয়ে সামাজিক সংস্কার পরিপন্থী কাজ করতে পারেন না। আপনি চাইলেও এমনটা ভাবতে পারেন, কিন্তু আপানার ভাবনাটাকে প্রকাশ করাটা অবশ্যই সামাজিক সংস্কার পরিপন্থী কারণ আপনার ভাবনা সমাজের অন্য ব্যক্তিদের মনে আঘাত করছে। কারো পিতামাতার সম্পর্কে মন্দ কিছু বলা যেমন সামাজিকতা পরিপন্থী; এটাও তেমনই। অতএব আপনার কোন অধিকার নেই ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব প্রকাশ করার। আসুন একটু অন্যভাবে ভাবি... আপনার স্ত্রী, আপনার বাহু, আপনার নিজের ঘর। আপনার অধিকার আছে ঘরে তাকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে তার কাছে নিজের ভালবাসা প্রকাশ করার। এমনকি তার সাথে সব ধরণের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনেরও। সমাজ নিজেই আপনার এই অধিকারটুকু নিশ্চিত করছে। কিন্তু এই একই কাজটি কি সমাজ আপনাকে জনসম্মুখে করার অধিকার দেয়? এমন করাটাও কিন্তু সামাজিক সংস্কার পরিপন্থী। আর যারাই সামাজিক সংস্কার পরিপন্থী কাজ করে তারাই সামাজিক অপরাধী।

ধর্ষণ একটি আইনি অপরাধ, সামাজিক অপরাধও বটে। ধর্ষিতা যদি ধর্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে বা আইনের কাছে নালিশ জানায় তবে আইনানুযায়ী তাকে প্রমাণসাপেক্ষে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। কিন্তু ব্যভিচার কোন আইনি অপরাধ না হলেও আমাদের সমাজের দৃষ্টিতে এটি একটি গর্হিত সামাজিক অপরাধ। ব্যভিচার আইন সমর্থন না করলেও যেহেতু বিরোধিতাও করছে না তাই তারা হয়ত কোন আইনি শাস্তির মুখোমুখি হচ্ছে না বটে, কিন্তু সমাজের আদালতের কাঠগড়ায় ব্যভিচারী সর্বদা একজন অপরাধী হয়েই দাঁড়ায়। যারা ব্যভিচার করছে তারা শাস্তির হাত থেকে বেচে গেলেও সমাজের চোখে অবশ্যই একজন সামাজিক অপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে থাকে। তেমনই ধর্মবিদ্বেষী বা ধর্মের নামে বিষোদগার ছড়ানো নাস্তিকরাও আইনি শাস্তির হাত থেকে বেঁচে গেলেও আজীবন একজন সামাজিক অপরাধী হিসেবেই পরিগণিত হবে।

হ্যাঁ, ধর্মবিদ্বেষী বা ধর্মের নামে বিষোদগার ছড়ানো নাস্তিকদের বলছি। তোমরা প্রত্যেকেই এক একজন সামাজিক অপরাধী।



কনডম, রসায়ন, ম্যাডাম ব্লাজো, অতঃপর তৎসমরা - ১
এবং কনডম, রসায়ন, ম্যাডাম ব্লাজো, অতঃপর তৎসমরা -২

# গতকাল প্রকাশিত আমার লেখা উক্ত পোস্টদুটির সূত্র ধরে লিখিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ২:১৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×