somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিনি কাহিনী - চতুর্থ কিস্তি (জিয়াদের মা)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এপ্রিল ২০২০। কোভিড শাটডাউনের শুরুর দিকের সময়। বিনির সাথে পরিচয় ও বার্তালাপ কালের কিছুদিন অতিবাহিত হয়েছে মাত্র।

আজ বিকেলে এক সুন্দরীর সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। প্রকাশ্যে বা অন্তরালে অহঙ্কার করলেও মানায় এমন সুন্দরীদের সৌন্দর্যের বর্ণনা শুধুমাত্র মির্জা গালিব বা জীবনানন্দ দাশের কলমই করতে সক্ষম। আমার কীবোর্ড এহেন কর্ম সাধনে অপারগ। এরা এমন ধরনের সুন্দরী যাদের প্রথমে দর্শনে যেকোন কিশোর বা তরুণ মনে মনে ভাবতে শুরু করে, ছেলে হলে আব্রামোভিচ আর মেয়ে হলে শারাপোভা নাম রাখব। আমাদের কাছাকাছি বয়সীরা এদের নিয়ে খুব আশাবাদী না। কারণ আমাদের শ্রেণীর যুবকেরা হয় ইতিমধ্যে বিবাহিত, নতুবা এইধরনের সুন্দরী মেয়ে ও মেয়ের পরিবারের ব্যবসায় উপার্জন বা বিসিএস পদবী, মোটা অঙ্কের মাইনে, বিশ লক্ষ বা ততোধিক অঙ্কের দেনমোহরসহ আরও বিভিন্ন দানবীয় চাহিদার প্রেক্ষিতে বাস্তব উপলব্ধির সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে দিয়ে নিজের রাস্তা মাপতে শুরু করে দিয়েছে। আর আমার মত বেকার যুবকের এমন মেয়েদের প্রতি কাল্পনিক আগ্রহও যেন বিলাসিতা।
যাই হোক, আমার সামর্থ্যের বাইরের সুন্দরীর সাথে আমার আলাপচারিতার খানিকটা নিম্নরূপ-

আমি - আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?
সুন্দরী - ওয়ালাইকুম আসসালাম। ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। একটা জিনিস দেখবেন?
আমি - জি অবশ্যই। (আমার মত যুবকদের এমন সুন্দরীদের না করাটাও সারাজীবনের অভিশাপ।)
সুন্দরী - এই যে দেখেন... সুন্দরী তার বাম হস্ত উত্তোলন করে ক্যামেরার সামনে এনে ধরল। নকশা করা মেহেদী রাঙা হাত। মোহিত আমি ভাবছিলাম, মেয়েটি নিশ্চয় বেশ রুচিশীল। অবশ্য আমার ব্যাপারে সামান্য ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করলে আমার তার রুচি নিয়ে একটুও সংশয় থাকত না। তবুও আশাবাদী মন আরও আগ বাড়িয়ে ভাবছিল, সুদূর ভবিষ্যতে এই সুন্দরীকে কি ডাকা যায়। "জিয়াদের মা" নামটা কি খুব বেশি সেকেলে হয়ে যাবে? খুব বেশি চিন্তামগ্ন হয়ে আলাপের ধারা নষ্ট করার কোন মানে হয় না ভেবে আবার শুরু করলাম।
আমি - আপনি নিজে করেছেন?
সুন্দরী - হ্যাঁ। আজকে বাম হাতে করেছি। কাল আবার ডান হাতে করব।
এটা শুনেই হঠাৎ মাথায় একটা প্রশ্ন উঁকি দিল। যেসব প্রশ্নের কারণে আমাদের মত কৌতূহলী, নিরীহ ছেলেদের প্রতি সুন্দরীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তেমনই একটা প্রশ্ন। কিন্তু অভব্য মন তো আর এদের সামনে সভ্য হয়ে বসে থাকতে পারে না! তাই প্রশ্নটা করেই ফেললাম।
আমি - আচ্ছা, বাম হাতে মেহেদী লাগানোর পর যদি মেহেদী কাঁচা থাকতেই প্রকৃতির ডাক আসে, তখন কি করেন?
সুন্দরী - আমার তো কখনো এমন হয়নি।
আমি - অন্যদের কারও কি কখনো এমন হয়না?
সুন্দরী - উমমম... তাহলে ডান হাত দিয়ে ধুয়ে চলে আসবে।
আমি - ইয়াক! আমি আর কখনো আপনার হাতে রান্না করা কিছু খাব না।
সুন্দরী - তো, কিছুক্ষণের জন্য না ধুয়েও চলে আসতে পারে।
আমি - ওয়াক থু! আমি আর কখনো কোন মেয়ের হাতেই রান্না করা কিছু খাব না।

প্রতিদিনের মত আজ সন্ধ্যায়ও ভাবী চুলায় কফির পানি বসিয়েছিল। তাকে পাশ কাটিয়ে নিজের কফি নিজেই বানালাম। বৃষ্টির ঠাণ্ডা পরিবেশে উষ্ণ কফির মগে চুমুক দিতে দিতে মনটা হঠাৎ উদাস হয়ে গেল। মনে হচ্ছিল, "জিয়াদের মা" নামটা আসলেই খুব সেকেলে।

সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় শাটডাউনের কারণে আশেপাশের সব ঔষধের দোকান বন্ধ। দুপুরের আংশিক চর্বিত আলুসহ এক মুঠো অন্ন বমনের পরেও বিচ্ছিরি ঢেঁকুর এখনো বন্ধ হয়নি। কারও কাছে অম্বলের দাওয়া আছে

বিনি কাহিনী - তৃতীয় কিস্তি
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৫৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×