somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে কোন বনের হরিণ ছিলো আমার মনে- শেষ পর্ব

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আমাদের যশোরের সেই মায়া মায়া সুশীতল ছায়াঘেরা বাড়িটাকে আমি প্রায়ই স্বপ্নে দেখি। যেন শুনশান দুপুরবেলা ভাতঘুমের পর ঘুমাচ্ছে বাড়ির মা চাচী দাদীমা ও বাচ্চারা। অন্য ছেলেমেয়েগুলো সব স্কুল বা কলেজে। ছোট চাচীর ছোট মেয়েটা তারস্বরে কাঁদছে। কেউ তাকে কোলে নিচ্ছে না কেনো? ভাবতে ভাবতেই ঘুম ভেঙ্গে যায় আমার। আবার কোনো কোনো দিন দেখি মা আমার চুল ধরে হিড় হিড় করে দাদীমার কাছে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। দাদীর কাছে নালিশ দিচ্ছে, খুব শাসাচ্ছে মা। বলছে,
- বল বল কেনো চুল কাটতে চেয়েছিলি? কি ছিলো তোর মনে? কি চাস তুই বল?
আমি আয়নায় দেখি আমার সারা মাথায় কোনো চুল নেই। কি ভয়ানক স্বপ্ন! তবুও স্বপ্নের ভেতরেই আমার ভয়ানক কষ্ট হতে থাকে।
স্বপ্নের ভেতরেই আমার চোখ দিয়ে গলগল পানি পড়তে থাকে। আমি ফোঁপাতে থাকি। বালিশ ভিজে যায়। ঘুম ভেঙ্গে চেয়ে দেখি আমার স্বামী অবাক হয়ে চেয়ে আছেন আমার দিকে। আমার লজ্জা লাগে। আমি বলি আমি খুব দুঃখের একটা স্বপ্ন দেখছিলাম। উনি কিছুই বলেন না। জানতেও চান না কোন সে দুঃখের কথা বুকের মাঝে জমা আছে আমার যেই দুঃখ বুকের গভীর থেকে উঠে এসে ঘুমের মাঝেও হানা দেয় আমার চোখের পাতায়। আমি ঐ রাত দুপুরেও তাকে সাত পাঁচ বুঝাবার আপ্রাণ চেষ্টা করি। উনি কিছু বলেন না। নিশব্দে আমার মাথা বুকের মাঝে টেনে নেন। আমি যতক্ষন না ঘুমিয়ে পড়ি মাথায় হাত বুলিয়ে যান।

প্রায়ই স্বপ্নে আমি পথ হারিয়ে ফেলি। কোথায় যে চলে যাই! জায়গাটা চেনা চেনা লাগে কিন্তু ঠিক চিনতে পারি না। সেদিন দেখলাম বিশাল খোলা এক প্রান্তরে একাকী দাঁড়িয়ে আমি। আকাশে রোদ নেই। চারিদিক মেঘে ঢাকা। কে যেন চিল্লিয়ে বলে উঠলো, ঈষান কোনে মেঘ জমিছে, চাতক পাখীরা উড়াউড়ি করতিছে, মেঘ হবে, দেওয়া হবে মনি, শিগগিরি বাড়ি ফিরতি হবি। আমি চারিদিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজে পাই না। স্বপ্নে আমি বুঝতেই পারিনা এ কোথায় এসেছি আমি। কেই বা ফিরে যেতে বলে আমাকে? আমি সামনে আগাই। অকূল সেই পাথারে একলা একাকী আমি কোনো কূল কিনারা খুঁজে পাইনা কোথাও।

দেখতে দেখতে বিয়ের ছয় মাস পেরুলো। সেই যে ফিরানীতে গিয়েছিলাম তারপর আর বাবার বাড়ি যাওয়া হয়নি আমার। আমার কলেেজে ক্লাস শুরু হয়েছে। রোজই কলেজেও যাচ্ছি আমি। কিন্তু শুধু ঐ যাওয়া আর আসা পর্যন্তই। বাসায় পড়ালেখার কোনো পরিবেশই নেই। ফিরলেই শ্বাশুড়ির নানা বাক্যবাণ তারপর বিকালের নাস্তা, রাতের খাবার, অনুষ্ঠান অতিথী অভ্যাগত। আমি একান্নবর্তী পরিবারের মেয়ে। এসবে অভ্যস্ত।লোকজন গল্প গুজব ভালোই লাগে আমার তবে সবকিছুর পর মনে হয় কোথায় যেন এক বিশাল ফারাক। এক বুক শূন্যতা খা খা করে আমার হৃদয়ের অলিন্দে অলিন্দে! আমাদের যশোরের বাড়িতে সারাদিনমান যে প্রানচাঞ্চল্য ছিলো সেই প্রান আমি এ বাড়ির কোথাও খুঁজে পাই না।

তবে আমার ভালোমানুষ স্বামী তার মায়ের রাক্ষুষী ছোবল থেকে বটগাছের মত আমাকে আগলে রাখেন। এই লোকও যদি মায়ের মত ভ্রু কুচকানো স্বভাবের হত তাহলেই হয়েছিলো আমার। একেবারে সোজা মর্ত্যেই নরকবাস। আমার শ্বশুর মানুষটাও ভালো। আমার দাদুর মত বা বাবা চাচাদের মত এত শাসন বারন নেই তার মাঝে। সত্যি বলতে এই নিপাট ভদ্রলোক কি করে অমন কাঠখোট্টা মহিলার সাথে এতগুলো বছর কাটিয়ে গেলো সেই ভেবেই অবাক হই আমি। আমার মন হঠাৎ একাকী দুপুরগুলোতে বিষন্ন হয়ে পড়ে। আমি জানালায় তাকিয়ে থাকি। এই শহুরে জানালায় সেই ঘন পত্র পল্লবিত আমাদের বাড়ির পেছনের বিশাল বাগান নেই তবে সেখানে দাঁড়িয়ে আছে এক বিশাল কৃষ্ণচূড়া গাছ। কৃষ্ণচূড়ার ঝিরিঝরি পাতাগুলি বাতাসে দোল খায় আমার জানালায়। আমি অপলক তাকিয়ে থাকি। মনে মনে আঁকি সেই যশোরে ফেলে আসা আমাদের বাড়ির পেছনের বিশাল বাগানের তমাল তরুরাজী। আমার বুকের ভেতরে হাহাকার ওঠে কিন্তু আমি সেসবে খুব একটা পাত্তা দেই না। সেই সব দুপুরগুলোতে আমি ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে গালে ব্লাশন লাগাই। আলমারী থেকে জ্যুয়েলারী বক্স বের করে দরজা বন্ধ করে এক এক করে পরি। আয়নায় নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখি। সুন্দর সুন্দর সব শাড়িগুলি খুলে খুলে গুছাই একে একে।

হঠাৎ যশোর থেকে খবর এলো আমার মামাত বোন উপমার বিয়ে। ছেলে ব্যবসা করে। বিয়ের পর উপমা খুলনা চলে যাবে। আমি সব সময় আমার দাদুর বাড়ির গল্পই বলেছি আমার নানুবাড়ি কিংবা মামাত খালাতো ভাইবোনদের কথা বলিনি বা লিখিনি। সেসব না হয় লিখবো অন্য কোনো সময়। তবে মামাত বোন উপমার কথাটি এইখানে আনছি কারণ এই ঘটনাটির সাথেই আমার বিয়ের ৬ মাস পর যশোরের বাড়িতে যাবার কারণ ঘটলো। যদিও আমার স্বামীর এখন দারুন ব্যস্ততা তায় আবার উনাকে ৩ সপ্তাহের জন্য দেশের বাইরে যেতে হবে কাজেই এই বিয়েতে যাবার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমি আজীবন শাসন বারণে থাকা মানুষটা মেনেই নিলাম আমার যাওয়া হচ্ছে না।

কিন্তু আমার ভালোমানুষ স্বামী বললেন,
- ভালোই হলো আমি থাকবো না। একা একা থাকতে তুমি, তার চেয়ে তোমাকে যশোরে পাঠিয়ে দেই। মনের আনন্দে বোনের বিয়েতে এই ক'টা দিন কাটিয়ে আসতে পারবে। আমিও এর মাঝে ঘুরে আসবো .....
আমার মনের মাঝে এই কথা শুনে নেচে ওঠে একশো ময়ূর কিন্তু আমি কিছু বলি না।
পরদিন শ্বাশুড়িকে বলতেই উনার চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। বলেন,
- বলিস কি বাবু? না না তুই থাকবি না আর নীরা একা যাবে? কখন আবার কি বিপদ হয়। নীরার কোথাও যাওয়া হবে না।
আমার ভালোমানুষ স্বামী দৃঢ় কঠিন কন্ঠে কিন্তু গলার স্বর নীচুতে রেখে বলেন,
- মা নীরা যাবে। নীরা ওর মামাত বোনের বিয়েতে যাবে। আমি কাল ওকে রেখে আসবো।
বলে বেরিয়ে যান। আর আমার শ্বাশুড়ি বোয়াল মাছের মত হা করে সেই যাত্রা পথে তাকিয়ে থাকেন। তখনও তার ভ্রু দুটো কুঁঞ্চিতই ছিলো।

পরদিন খুব ভোরে রওয়ানা দিয়ে আমরা যশোরে গিয়ে পৌছালাম। তখন ঠিক মধ্য দুপুর। জামাই আসবেন বলে মা চাচী দাদীমারা এক্কেবারে জামাই ভোজনই আয়োজন করেছিলেন। পোলাও কোরমা বিরিয়ানী মাছ মাংস কোনো কিছুরই বাদ ছিলো না সেখানে। যাইহোক পরদিন ভোরেই চলে গেলেন আমার ভালোমানুষ স্বামী। কিন্তু সেজচাচা সেই একরাতে ছাদে বারবিকিউ পার্টির আয়োজনও করে ফেললেন। সেসব দিনে আমরা তো আর বারবিকিউ বলতাম না আমরা বলতাম কাবাব পার্টি। জামাই একদিনের মাঝে বিদায় নেবেন বলেই অমন আয়োজন বা আপ্যায়ন ছিলো যেন জামাই আদরের কোনো ত্রুটি না হয়। আমরা সব চাচা চাচী, তাদের ছেলেমেয়েরা কাজের লোকজন এমনকি দাদু দাদীমাও সকলেই জড়ো হলাম আমার সেই স্মৃতি বিজড়িত চির চেনা ছাদটিতে।

কাবাব তৈরীর জন্য ছাদের এক কোনে জামাল বাবুর্চি তার চুলা বসিয়েছিলো। সবাই গরম গরম রুটি পরোটা আর শিককাবার খাচ্ছিলো। সব মেয়েরা একদিকে আড্ডা দিচ্ছিলো। আমি ছিলাম তাদের মাঝে আর বাড়ির সকল পুরুষেরা আড্ডা জমিয়েছিলো আরেকদিকে। উৎসবে আনন্দে সারা বাড়ি গমগম করছিলো। আমি আড়চোখে দেখলাম চারিদিকে এত আনন্দ, এত উচ্ছাস তবুও এরই মাঝে খোকাভায়ের ঘরটা আলোহীন অন্ধকার। সেই দুপুরে এসেছি আমি কিন্তু কাউকেই খোকাভায়ের কথা জিগাসা করিনি। সবার অলখে দীর্ঘশ্বাস পড়লো আমার। মনে মনে বললাম, খোকাভাই কোথায় আছো?
ছোটচাচী বললেন,
- এ্যাই নীরু একটা গান গা। কতদিন পর সবাই আমরা এক সাথে?
রুমা, রুনি, মীরা আপা সবাই হই হই করে উঠলো। সবাইকেই গান গাইতে হবে একে একে। পিন্টু তার গিটার নিয়ে আসলো দৌড়ে গিয়ে। কিন্তু কি গাইবো আমি? আমার তো কোনো গানই মনে আসছিলো না। হঠাৎ যে গানটি মনে পড়লো সেই গানটিই গাইতে শুরু করলাম-
প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন, তবুও প্রাণ কেনো কাঁদেরে?
চারি দিকে হাসিরাশি, তবু প্রাণ কেন কাঁদে রে।।

গান শুরু করতেই চারিদিকের গল্প গুজব হাসাহাসি কমে একদম পুরা ছাঁদই নিস্তব্ধ হয়ে গেলো। শুধু জামাল বাবুর্চীর কাবার ওল্টানোর শব্দ ভেসে আসছিলো হুশ হাশ। আর থালা প্লেট বাসন কোসনের টুং টাং। সবাই গান শুনছিলো।আমার চোখে জল ভরে আসছিলো। চাঁদনী রাত ছিলো সেদিন। আকাশে অনেক আলো তবুও ঐ আঁধারে কেউ তেমন খেয়াল করলো না। আমার চোখের ঐ জল আমার হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসা সেই বাণী। কেউই খেয়াল করলো না। শুধু গান শেষে রুনি বলে উঠলো এই আনন্দের মাঝে কি প্যানপেনে গান ধরলি তুই? পিন্টু গিটারে ঝংকার তুললো-

কিন্তু তারপরদিনই অতি অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা ঘটলো। দুপুরে গোসলের পর ছাদে কাপড় মেলতে উঠছিলাম সিড়ি বেয়ে। সিড়িঘরের দরজায় হঠাৎ খোকাভাই। একদম মুখোমুখি পড়ে গেলো। গত রাতেও আমরা যখন ছাদে কাবাব পার্টি করছিলাম তখনও দেখেছিলাম খোকাভায়ের শূন্য ঘর। অন্ধকার ঝুপসী হয়ে দাড়িয়ে ছিলো ছাদের এক কোনে। তবে কি কাল রাতেই শুধু খোকাভাই বাড়ি ছিলো না? কবে ফিরেছে খোকাভাই? এতদিন কোথায় ছিলো? এক গাদা প্রশ্ন হুড়মুড় করে নামলো আমার চোখের পাতায়। কিন্তু খোকাভাই! আমাকে দেখে কোনো উচ্ছাস ছিলো না তার চোখে বরং যেন ভূত দেখার মতই চমকে দাড়ালো, ক্ষণিক থমকালো এবং
কিছু না বলে ফের তড়িঘড়ি চলে গেলো তার নিজের ঘরে। আমার চিরচেনার, সেই ছোট্ট ঘরটিতে।

ঐ এক নিমিষের মাঝে দেখলাম খোকাভায়ের চোখে ছিলো না কোনো মায়া, মমতা, ভালোবাসা বা আনন্দ বরং সেখানে জ্বলছিলো ঘৃনা, ক্রোধ আর অবহেলার এক তীব্র অগ্নি ঝিলিক। তবুও পায়ে পায়ে গিয়ে দাঁড়ালাম ঐ ছাদের ঘরের দোরগোড়ায়। খোকাভাই মাথা নীচু করে টেবিলের ড্রয়ারে কি যেন খুঁজছিলো। আমি গিয়ে দাঁড়াতেই মুখ না ফিরিয়েই হিস হিসিয়ে উঠলো,
চলে যা,
চলে যা প্লিজ ........
প্রথম বাক্যটিতে ছিলো কঠোরতা। দ্বিতীয়বারেরটিতে মিনতি।

চৌকাঠে হাত রেখে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি স্থানুবৎ। এতদিন পরে খোকাভায়ের এ হেন আচরণে হত-বিহ্বল ছিলাম আমি! কোনো কথাই বলতে পারছিলাম না। মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম তারপরেও। আমার দুচোখ জলে ভরে আসলো। সেই চোখ ভর্তি টলমল জল টুপ করে ঝরে পড়লো মেঝের উপর এবং পড়েই তা মিশে যেতে লাগলো ইট, কাঠ বালু আর সিমেন্টের ঐ পাষান গভীরে। চিলেকোঠার ঐ খরখরে মেঝের অমসৃন ত্বক মুহুর্তেই শুষে নিলো আমার সবটুকু দুঃখজল, লুকিয়ে ফেললো আমার লজ্জা আর অপমানটুকু ।

ফিরে চললাম আমি। পেছন ফিরে না তাকিয়েও বুঝলাম খোকাভাই ফিরে দাঁড়িয়েছে এবং তাকিয়ে আছে আমারই দিকে। খোকাভাই বললো,
-"দাঁড়া"
আমি দাঁড়ালাম। দাঁড়িয়ে রইলাম উল্টোদিকে ফিরেই। খোকাভাই ফের বললো,
-"আর কখনও আসিসনা।"
অবাক হয়ে ফিরে তাকালাম আমি। সেই শান্ত গভীর কালো ফ্রেমে মোড়ানো দুটি চোখ। একদিন ঘুমন্ত দুপুরে যা আমার ওষ্ঠ ছুঁয়েছিলো। ফুঁপিয়ে উঠলাম আমি। এক দৌড়ে নীচে নামলাম। কার থেকে, কিসের থেকে পালাতে চেয়েছিলাম ?
জানিনা ....


খোকাভায়ের সাথে সেই আমার শেষ দেখা। খোকাভায়ের সাথে সেই আমার শেষ কথা। খোকাভাই বলেছিলো "আর কখনও আসিস না"।
আমি এরপর ২২ দিন ঐ বাড়িতে ছিলাম কিন্তু একটাবারের জন্যও যাইনি খোকাভায়ের ঘরে। একটাবারের জন্যও ছাঁদে উঠিনি। একটা বারের জন্যও দেখতে দেইনি তাকে আমাকে। তবুও সারাটাক্ষন আমার মাথায় একই প্রশ্ন ঘুরতো। কোথায় ছিলো খোকাভাই? আমাকে কথা দিয়ে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলো সে? আমার আর তার উপরে কোনো দাবী দাওয়া ছিলো না। আমার তার কাছে তো আসলে আর চাওয়া পাওয়ার কিছুই ছিলো না। শুধু ছিলো জানা অজানা কিছু অবাক বিস্ময়!

বরং আমার সহনশীল ভালোমানুষ স্বামীর জন্য আমার হৃদ মাঝারে তখন মায়ার পাহাড় জন্মেছে। সেই পাহাড়ের আড়ালে চাপা পড়ে যাচ্ছিলো খোকাভায়ের দেওয়া কষ্টগুলো। খোকাভায়ের জন্যও একটা সময় আমার এক বুক মায়াই জন্মেছিলো। এই মায়া আর সেই মায়ায় প্রভেদও ছিলো। খোকাভাই ছিলো একটি অভিমানী চুপচাপ ছেলে যার পৃথিবীতে কেউ ছিলো না। অবহেলায় অনাদরে বাগানের কোনে জন্ম নেওয়া কোনো আগাছার মত এই বিশাল বাড়ির এত প্রাচুর্য্যতার মাঝে অযত্নে অবহেলায় পড়ে ছিলো খোকাভাই। আমি তাকে ভালোবাসা ও মমতায় সকল দুঃখ ভুলিয়ে দেবো। এমনই হয়ত ভেবেছিলাম আমি। এ মনে হয় ছিলো একজন নারীর মনের কোনের সুপ্ত
সহজাত স্বভাবই। ভেবেছিলাম আমিই হবো খোকাভায়ের সকল দুঃখ মোচনকারী নিরুপমা।

তবে মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক। আমার এত ভালোবাসা, খোকাভাইকে নিয়ে এত চিন্তা, তাকে আগলে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা সবই বিফলে গেলো অথবা গেলো না। খোকাভায়ের জীবনে আমার আবির্ভাব হয়ত তার মাঝেও কোনো পরিবর্তন ঘটিয়েছিলো। না হোক তা আজীবনের জন্য। খানিক সময়ের জন্যও যদি কেউ ভালোবাসায় ভরিয়ে রাখতে পারে তাকে সেইটুকুই বা কম কি? সবার কি সব হয়? সবকিছুই কি আজীবন থাকে! এই নশ্বর পৃথিবীতে সবই তো হারায়।

উপমার বিয়ের কারণে পুরা বাড়িশুদ্ধু দাওয়াৎ ছিলো আমাদের। সে সব নিয়েও হৈ হৈ কেটে গেলো কয়েকটাদিন। বিয়ের আগের আমার মা আর বিয়ের পরের আমার মায়ের আচরনে এত পার্থক্য আমার বিয়ে না হলে আমি জানতাম না। সকল সময় ছোঁক ছোঁক আমার উপর খবরদারী করা মা একটা বারের জন্যও বকাঝাকা করলেন না আমাকে। বরং বার বার জানতে চাইতেন আমি কেমন আছি। কি খাই কি করি? শ্বাশুড়ি কেমন? শ্বশুর কেমন। কোনো ঝামেলা হচ্ছে কিনা? আমি হাসিমুখে সবই ইতিবাচক বলি। কারণ আমি জানি আমার কোনো কষ্ট দুঃখ বেদনার কথাই মা কখনও শুনবে না। আমার মা শুধু জানার জন্য জানতে চাইতেন। আমি নিশ্চিৎ জানি আমি যদি বলতাম, এমন বিয়ে দিয়েছো কেনো আমার এই সমস্যা সেই সমস্যা। মা নিশ্চিৎ বলতেন আমরা ভালো বুঝে বিয়ে দিয়েছি এখন এটা তোমার ভাগ্য। তুমি এই ভাগ্য গড়ে নেবে নাকি তোমার উপর ভাগ্য সুপ্রসন্ন করবেন বিধাতা তা তো আমাদের দেখার নয় মা।

দাদীমার সঙ্গেই ঘুমিয়েছি আমি এই কটা দিন। চাচীমারা চুলে তেল দিয়ে দিয়েছেন, রোজ সন্ধ্যায় বেনী করে দিয়েছেন। সবই ঠিক সেই আগের মতই। মনেই হয় না আমার যে বিয়ে হয়ে গেছে। কিছুদিন পরই চলে যেতে হবে আমাকে আমার নিজের বাড়িতে। নিজের বাড়ি মানে স্বামীর বাড়িতে। এই বাড়ির এই চিরচেনা পরিবেশ, উঁচু উঁচু ছাদে লাগানো কড়িকাঁঠ, শান বাঁধানো উঠান, কলতলা সবই মনে হয় আমার, একান্ত আমার। শুধু কটা দিনের জন্য বুঝি আমি কোথাও গিয়েছিলাম। আবার ফিরে এসেছি অভিমান ভুলে। সব ঠিক আগের মতই আছে। শুধু খোকাভাইই পর হয়ে গেছে। দূরে চলে গেছে। অনেক অনেক দূরে।

খোকাভাই আমার জীবনের এক বিস্ময়! অনেক না বলা কথা না জানা ব্যথা বুকে গোপন করে চলা এক অভিমানী যুবকের নাম। সে আমার খোকা ভাই। খোকাভায়ের মত এমন আর একটা মানুষও হয়ত আর দেখা হবে না আমার এই জীবনে। খোকাভাই ছিলেন বড় স্বল্পভাষী সন্যাসী ঠাকুর আর আমি ছিলাম কথার ফুলঝুরির এক গিরিবাজ পায়রা। খোকাভায়ের সাথে আমার ভালোমানুষ স্বামীটির এক বিশেষ মিল আছে। দু'জনেই বড় কথা কম বলেন। বড় চুপচাপ বড় ভালোমানুষ।তবে আমার ভালোমানুষ স্বামীটি নিজের ঔজ্বল্যে জ্বাজল্যমান আর খোকাভায়ের নিজের কোনো আলো ছিলো না। তার জীবনে আলো জ্বালাতে প্রদীপ হাতে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। তবুও আলো জললো না ..... আশা ছিলো ভাষা ছিলো শুধু আমার খোকাভাই কোনো কথা বললো না।




যাইহোক আমার বিয়ের প্রায় ৭ বছর পার হতে চলেছে। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি সংসারে। জড়িয়ে নিয়েছি ভালোবাসায় এই বাড়ির সকলকেই। খুব শিঘরীই আমি সকল দায়িত্ব মাথায় তুলে নিয়ে অব্যহতি দিয়েছিলাম আমার শ্বাশুড়িকে। তিনি এখন ক্লাব পার্টি অতিথি অভ্যাগত নিয়েই থাকেন বেশিটা সময়। ভ্রু দুইটা সামান্য সোজা হয়েছে। ননদিনীর বিয়ের কথা চলছে। সে চলে গেলে আবারও কিছু শূন্য হবো আমি। একান্নবর্তী বাড়ির মেয়ে আমি। এই শহুরে জীবনের গুটিকয় মানুষের বসবাসরত বাড়িগুলি আমার বড় প্রাণহীন লাগে।

দাদু মারা গেছেন মাস ছয়েক হলো। দাদুর মৃত্যু মানে ও বাড়ির একটি যুগের সমাপ্তি। দাদুর মৃত্যু একেবারেই বদলে দিয়েছে ও বাড়ির চেহারা। দাদুর মৃত্যুর পর যে ক'টা দিন ছিলাম ও বাড়িতে মনে হয়েছিলো বাড়িটা যেন রাতারাতি বদলে গেছে। ছোট চাচা আমেরিকা পাড়ি জমানোর ভাবনা চিন্তায় আছে। ন' চাচা ত'চাচারাও যে যার মত থাকবার চিন্তায় আছেন। বড়চাচী কোথায় যাবেন কেউ জানে না। খোকাভাই ফের নিরুদ্দেশ। এবারের তার নিরুদ্দেশের সময়সীমা অন্যান্য সকল বারের সীমা অতিক্রম করে গেছে। আর ছাদের সেই ঘরটি একেবারেইজনশূন্য। কেউ আর থাকে না সেখানে। আমি ভর দুপুরে একা একা ঘুরে বেড়াই এব বাড়ির আনাচে কানাচে প্রেতিনীর মত, ছাদ, ছাদঘর, ছাদের এক কোনে এক গাদা কবুতরের উড়াউড়ি। আমাকে নিয়ে যায় সুদূর অতীতে, আমার আনন্দময় কৈশোরে আমার ভালোলাগায়। রুনির বিয়ে হয়ে গেছে ফিনল্যান্ড প্রবাসী এক সোনার টুকরা পাত্রের সাথে। পিন্টু রাজশাহী মেডিকেলে পড়ছে। একদিনের সেই প্রাণচাঞ্চল্যে ঘেরা বাড়িটা অনেকটাই যেন বিষন্ন চুপচাপ।


একদিন দুপুরে আমি বড় চাচীমার ঘরে ঢুকি। বড় চাচীমা বেশ বুড়িয়ে গেছেন। সাদা ধপধপে এক ঢাল চুল ছড়িয়ে ছিলো মেঝের উপর। বড় চাচীমা মেঝেতে বালিশ পেতে শুয়ে ছিলেন চোখ বুজে। মনে হয় চৈত্রের গরমের কারনেই মেঝেতে শুয়েছিলেন তিনি। এ বাড়ির সকল রান্নাবান্নার কাজ তার হাতেই। তাই হয়ত ক্লান্ত চাচীমা দুপুরের এই টুকু অবসরে আঁচল পেতে শুয়ে ছিলেন মেঝেতে একটু বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমি তার মাথার কাছে বসে কপালে হাত ছোঁয়ালাম। চাচীমা চোখ মেললেন না। আমার হাতের উপরে হাত রেখে চেপে ধরলেন আমার হাতটা। তার দু'চোখের কোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়লো। আমি চমকে উঠলাম। চাচীমার ঐ নীরব কান্না আমাকে বুঝিয়ে দিলো অনেক কিছুই। আমি জানতে চাইলাম,
- চাচীমা, খোকাভাই কোথায় চলে গেছে?
এই প্রথম। এই প্রথম আমি মুখ ফুটে কারো কাছে খোকাভায়ের নাম উচ্চারণ করলাম। কিন্তু চাচীমা নিরুত্তর রইলেন। পাষান প্রতিমার মত চোখ মুঁদে রইলেন চাচীমা। আমি খুব চুপি চুপি বললাম,

- তোমার কাছে একটা জিনিস দিয়ে যেতে চাই।

চাচীমা চোখ মেলললেন। উঠে বসে নিরুত্তর জিজ্ঞাসু নেত্রে চাইলেন আমার দিকে। আমি চাচীমার হাতের মুঠোয় গুঁজে দিলাম একটি চিঠি। বললাম,
- যদি কখনও খোকাভাই ফিরে আসে তাকে আমার এই চিঠিটা দিও চাচীমা। একটা কথা বড় জানবার ছিলো আমার তার কাছে।
জানি সে কথার উত্তর হয়ত কখনও পাওয়া হবে না আমার। তবুও তুমিই একমাত্র মানুষ এই পৃথিবীতে যাকে আমি বিশ্বাস করতে পারি।

চাচীমা ডুকরে কেঁদে উঠলেন। আমাকে বুকে চেপে ধরলেন। সেই মধ্যদুপুরের শুনশান নীরবতার মাঝে একটি শব্দ ভেসে আসছিলো অনবরত। পিছের বাগানে একটি তক্ষক ডেকে চলছিলো অবিরাম। কোথাও মনে হয় সাপে ব্যঙ ধরেছিলো। ব্যঙ তার মোটাগলার সূর বদলে অদ্ভুৎ সুরে আর্তচিৎকার করছিলো। আমি চাচীমার হৃদপিন্ডের ধ্বনী শুনতে পাচ্ছিলাম। চাচীমার চোখের জলে আমার পিঠ ভেসে যাচ্ছিলো।


এর প্রায় মাস তিনেক পর হঠাৎ একদিন আমাদের বাড়ির মেইনগেটের ডাকবাক্স খুলে চিঠি নিয়ে এলো বাড়ির দারওয়ান। আমার নামে একটি চিঠি এসেছে আমার দেশের বাড়ি থেকে। সচরাচর কেউ চিঠি লেখা তো দূরের কথা এই এতগুলো বছরে কখন কেউই চিঠি লেখেনি আমাকে। খবর যা নেবার ফোনেই নেওয়া যেত। তাই আমার শ্বাশুড়ি আমাকে কেউ চিঠি লিখেছে দেখে বেশ অবাক হলেন। বললেন,
- কে চিঠি লিখলো তোমাকে নীরা? কখনও তো কাউকে তোমাকে চিঠি লিখতে দেখিনি। খামটা বাড়িয়ে দিলেন আমার দিকে। আমি তখন রান্নাঘরে দুধ জ্বাল দিচ্ছিলাম। আঁচটা কমিয়ে দিয়ে খামটা নিয়ে উপরের লেখাগুলি দেখে একটু থমকে দাঁড়ালাম। তারপর খামটা পাশে রেখে ফের দুধ জ্বাল দিতে শুরু করলাম। আমার শ্বাশুড়ি হা করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন একটি উৎসুক বিষয়েও আমাকে নীরব থাকতে দেখে তিনি বেশ অবাক হলেন বোধ হয়। আমি আড়চোখে দেখলাম কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে উনি চলে গেলেন। আমার বুকের মাঝে তখন হাতুড়ি পিটছিলো। যতই মুখে আমি নির্লিপ্ত থাকি না কেন। এতগুলো দিন পর খোকাভায়ের চিঠি। এত অপ্রত্যাশিত, এত কাংঙ্খীত এত বেদনা ও অভিমান ও হয়তবা হেরে যাওয়ার ইতিহাস লেখা সেই চিঠিটি হাতে করে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি।


খোকাভাই এর চিঠি
২৬ শে জুন, ২০১০ দুপুর ১২:২০
নিরু
কবিতার ভাষায় লেখা তোর চিঠিটা পড়লাম। ভুলে গিয়েছিলাম, অনেক কিছুই। কিছুটা ইচ্ছেই, কিছুটা অনিচ্ছেই। চিঠিটা পড়তে পড়তে একরাশ স্মৃতি হুড়মুড় করে নামলো আমার হৃদয়ের দূয়ারে। আজকাল বুকে প্রায়ই একটা ব্যাথা হয় অনিয়মিত জীবন যাপনের ফল। চিঠিটা পড়ার পর থেকে চাপধরা ব্যাথাটা যেন বেড়ে চলেছে।

যাইহোক, ভালোই আছিস তাহলে। মনেও রেখেছিস আমাকে? ভালো আছিস কেমন করে বুঝলাম জানিস? মানুষ যখন সবচেয়ে বেশী সূখে থাকে তখনি ধরে তাকে দুঃখবিলাস রোগ। তোরও হয়েছে সেটাই। রাগ করিসনা, একটা সত্যি বলি তোকে ভুলে গেছি। যদি বলিস ইচ্ছে করে, তাহলে তাই। তোর সব গান , ছবি, কলকথা, সব ভুলেছি আমি নইলে এই আমার আর বেঁচে থাকার উপায় ছিলোনারে।

ভুল শুনেছিলি তুই বিয়ের পরদিন থেকে নয়, নিরুদিষ্ট আমি তোর বিয়ের দিনটি হতেই। সেদিন সন্ধ্যায় টুনি বাল্বে সজ্জিত ঝলমলে বাড়ী থেকে যখন তুই মেরুনরঙ মার্সিডিজে চড়ে ভুস করে বেরিয়ে গেলি, সন্ধ্যার আবছায়া আলোয়, গলির ধারের বুড়ো অশত্থ গাছটার আড়ালে
দেখতে পাসনি আমাকে ।

সেদিন রাতের ট্রেনেই চলে গিয়েছিলাম কক্সেস বাজার। বিশালতার অবগাহন অসীম সমুদ্রাশ্রয়ে। সমুদ্র আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলো
প্রতিদানে সমুদ্রকে দিয়েছিলাম এই নিঃস্বের কয়েকফোটা দূর্লভ অশ্রুজল।

ভালো থাকিস নিরু, পারলে আমাকে ভুলে যাস। প্রাচুর্য্য তোর সঙ্গী, তুই চাইলেই মুঠো মুঠো দিতে পারিস। বিত্ত বৈভবের কমতি নেই তোর। আমার মত ভ্যাগাবন্ডের থেকে কি আর পাবার ছিলো বল?

এমন করে আর কখনও লিখিসনা আমাকে
আমার কষ্ট হয়,
ভীষন কষ্ট!
তুই কি পারিস আমাকে কষ্ট দিতে?


চিঠিটা এখানেই শেষ ছিলো। সাক্ষরবিহীন। অসমাপ্ত। তবুও সকল কথাই যেন সমাপ্ত করে দিতে চাইছিলো চিঠিটা সেদিন। আমার দুচোখ বেয়ে তখন শ্রাবনের বারিধারা। না আমি কষ্ট দিতে চাইনা খোকাভাইকে। কষ্ট দিতে চাইনা এ পৃথিবীর একটা মানুষকেও। শুধু প্রতিত্তরে লিখলাম আমার শেষ চিঠিটি।

খোকাভাই
আর কখনও লিখবোনা তোমাকে
জানতে চাইবো না আর কখনও
কেমন আছো?
শুধু

তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম..


কিন্তু চিঠিটা ডাকে ফেলা হলো না আমার। ছিড়ে টুকরো করে উড়িয়ে দিলাম আকাশের ঠিকানায়.......


সমাপ্ত

সে কোন বনের হরিণ ছিলো আমার মনে-১৯
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৫
৩৯টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

আমরা সবাই জানি, ইরানের সাথে ইজরায়েলের সম্পর্ক সাপে নেউলে বললেও কম বলা হবে। ইরান ইজরায়েলকে দুচোখে দেখতে পারেনা, এবং ওর ক্ষমতা থাকলে সে আজই এর অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়।
ইজরায়েল ভাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

নগ্ন রাজা কর্তৃক LGBTQ নামক লজ্জা নিবারনকারী গাছের পাতা আবিষ্কার

লিখেছেন মুহাম্মদ মামুনূর রশীদ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪০

LGBTQ কমিউনিটি নিয়ে বা এর নরমালাইজেশনের বিরুদ্ধে শোরগোল যারা তুলছেন, তারা যে হিপোক্রেট নন, তার কি নিশ্চয়তা? কয়েক দশক ধরে গোটা সমাজটাই তো অধঃপতনে। পরিস্থিতি এখন এরকম যে "সর্বাঙ্গে ব্যথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×