আমি যা ভেবেছিলাম। যা বলেছিলাম, যা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাই করেছিলাম। সব কিছুই স্বার্থপরের মত ছিলো আমার, একচেটিয়া। শুধু নিজের কথা ভাবা। তোমার ভেতরে কি হচ্ছে। তুমি কতটা পুড়ে যাচ্ছো ভাবিনি আমি কোনোদিন। যখন যা ইচ্ছে হয়েছে, খামখেয়ালীপনায় তাই করেছিও আমি। তুমি তার সবই মেনে নিয়েছিলে। কোনোদিন প্রতিবাদ করোনি আমার যে কোনো সিদ্ধান্ততেই। বার বার হারিয়েছি, বার বার ফিরে এসেছিও। তুমি বার বার নির্দ্বিধায় আমাকে টেনে নিয়েছো তোমার বুকের কুঠুরে। একবারও কি ভেবেছো এই হারিয়ে যাওয়া আর বার বার ফিরে আসা এর কারণ কি ছিলো? দ্বিধা দ্বন্দ ভুল বুঝাবুঝির বাইরেও এমন কিছু শান্তি দিচ্ছিলোনা আমাকে কোনোভাবেই, যার কারণে আমি নিজেই স্থিরতায় আসতে পারিনি। আর তাই আমি শেষমেশ তোমাকেই হারিয়ে ফেলতে হয়েছিলো।
একটা ফাটা রেকর্ডের মতো শুধু একি কথা শুনালাম্।
আমি তোমার কাছে আসবো বলে তোমাকেই হারালাম।
শুধু আমার নিজের কথাই ভেবে গেলাম।
অঞ্জন দত্তের এই গান কি আমাদের জন্যই লেখা? আমার তেমনই মনে হয়। তোমার কাছে আসবো বলে তোমাকেই হারালাম। আমি শুধু নিজের কথাই ভেবে গেলাম। আসলেই কি তাই? নিজের কথাই শুধু ভেবেছিলাম আমি? তোমার কথা ভাবিনি একটুও? দ্বিধাদ্বন্দ মান অভিমান, ভুল বুঝাবুঝি। এর মাঝেও সেই আশ্চর্য্য কোমল অদ্ভুত ভালোবাসা। সে মায়াজাল কেটে কি করে গেলাম আমি? আসলেও কি কাটতে পারলাম!
আমি তোমার সাথে অনেক গুলো দিন কাটিয়েছি
তোমার কথা ভেবে তোমার হাতটা ধরে রেখেছি
আমরা কি সত্যি সত্যিই ভালোবেসেছি ?
এই প্রশ্নের কোনো অবকাশ নেই আজ আর। এই যদি সত্যি না হয় তবে মিথ্যে কাকে বলে জানা নেই আমার। এ শুধু সত্যিই না ধ্রুবসত্যি। এ আমাদের ধ্রুব সত্য ভালোবাসা। জনম জনম ধরে অস্পৃষ্যে হাতটা ধরে রেখেছি তোমার। আর অনেকগুলো দিন? দিন, রাত, ঘন্টা প্রহর মাসের পর মাস বছরের পর বছর কারো দিকেই চাইনি আমি। সারা জগত জুড়ে শুধু তখন একটাই মুখ, শুধু একটাই তুমি। শুধু তুমি।
একটা দিন ছিলো একটা দিন একটা বৃষ্টি ভেজা পাহাড়ের মাথায়
ছিলো না ছিলো না লজ্জা ছিলো না কোনো কষ্ট
ছিলো না কিছু হারিয়ে ফেলার ভয়।
একটা রাত ছিলো একটা রাত ছিলো অনিশ্চয়তা হাতে পায়
ছিলো না কোনো আফসোস ছিলো না অপরাধবোধ
ছিলো না সারা শরীরে শংসয়।
সেই পাহাড় আমার হারিয়ে গেলো কোথায়?
শত সহস্র দিন রাত্রী সংশয়বিহীন প্রহর কাটিয়েছিলাম আমরা। সেই বৃষ্টিভেজা পাহাড়ে আমরা ছিলাম অপ্রতিরোধ্য। নীল সাদা স্কুল ড্রেস। বাড়ি ফিরেই এক দৌড়ে তোমার কাছে ছুটে যাওয়া। সেই বৃষ্টি ভেজা পাহাড়ের মাথায়। চিৎকার ডাকে অপেক্ষা শেষে তন্দ্রা ভেঙ্গে উঠে বসা তুমি রাখাল বালক। সারাদিনের গল্প বলে চলা মুখের পরে মুগ্ধ দৃষ্টি মন্ত্র বালক! অনর্গল কথার ফাঁকে একটু আধটু হু হা। সবুজ ঘাসের বিছানায় একসাথে আকাশ দেখা। সেই আকাশ আমাদের কোথায় হারালো?
এখন টেবিল ল্যাম্পের আলো এখন আমাদের সেলফোন
ঘুরে ফিরে একি এসএমএস স্বান্তনাও তেমন।
এটাই তোমার”আমাদের জীবন।”
হ্যাঁ এটাই জীবন। হারিয়ে ফেলা জীবনের একটুখানি ছায়া। একটুখানি সান্তনা। এটাই জীবন এটাই এখন আমাদের জীবন।
ধরো আমি চলে যাবো শুধু হাতে রয়েছে একটা রাত
সেই একটা রাতের বদলে খুঁজে পাবো সেই আমাদের পাহাড়
সেই একটা রাতের জন্য আবার।
সেই পাহাড়টা খুঁজে পেতে সেই একটা রাত আসলেই বড় দরকার আমার। হোক সেটা জীবনের শেষ দিন। তবুও শেষবারের মত হলেও
পাহাড়টাকে দেখতে চাই আমি আবারও একটাবার। সেই একটা রাতের জন্য আবার। সেই একটা রাতের বদলে নিশ্চয়ই খুঁজে পাবো আমাদের সেই পাহাড়।
সেই একটা রাতের বদলে আমি কি আমাদের ফিরে পাবো ?
সেই একটা রাতের পর সারা জীবন একা কাটাবো?
সেই একটা রাতের পর
বাঁচবো…….?
অনেক গুলি প্রশ্ন বয়ে চলে বুকের গভীরে। সান্তনা খুঁজে ফেরে। উত্তর জানা নেই। তবুও মনে হয় এই একটা রাতের বড় দরকার আমার। তারপর মৃত্যু বা বেঁচে থাকা কোনোটাতেই আপত্তি নেই আর ......
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২১ ভোর ৪:৪২