somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নাস্তিকতা আর অসাম্প্রদায়িকতা এক নয়

০৬ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাস্তিকতা আর অসাম্প্রদায়িকতা দুটো ভিন্ন জিনিস। আমি আবার বলছি, নাস্তিকতা আর অসাম্প্রদায়িকতা দুটো ভিন্ন জিনিস।

কতিপয় সো কল্ড নাস্তিক ধর্মালম্বীরা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক হিসেবে জাহির করতে চায়। যেটা নাস্তিকতার সংজ্ঞার সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছি।
বর্তমানে আমাদের সমাজে এক শ্রেণীর মানুষের উদ্ভব ঘটেছে, যারা নিজেদেরকে নাস্তিকতাবাদ বা তার কাছাকাছি কিছু একটা ধরনের নিজেদের ভাবতে শুরু করছে অথবা নিজেদেরকে ধর্মীয় ব্যাপারে উদাসীন বলে পরিচয় দিতে স্ট্যান্ডার্ড, হাইলি এডুকেটেড, এওয়ার অব রাইটস বা ওয়েস্টার্ন ধাঁচের ভেবে আধুনিক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় মত্ত।

এক শ্রেণির উঠতি বয়সের ছেলে -মেয়েরাও এই ধরনের ভাব-সাব লালন করছে, তবে এদের কিছু অংশ এটার গণ্ডি থেকে বের হতে পেরেছে অর্থ্যাৎ ইউ-টার্ন নিয়েছে। আবার বাকিগুলো তাদের বিকৃত ধারণা লালন করছে। নারীবাদ, নারী-অধিকার, সম-অধিকার বলে তাদের বুলি উড়াচ্ছে। কিন্তু, অধিকাংশ নারী এই নারী-অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে, তার নারীবাদী ভাইটির কাছে, চোখের, হাতের, ঠোঁটের এমনকি ফাইনালি শারীরিক ধর্ষনের স্বীকার হচ্ছে সেটা অনুমেয়।

আবার এক শ্রেণির মানুষ যারা উগ্রপন্থী, কট্টরপন্থি, বা মৌলবাদী। আর বর্তমানে মৌলবাদ সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই তীর ছোড়া হয় "ইসলাম" ধর্মের দিকে। এ বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করার দরকার বলে মনে করছি। সনাতন বা প্রাচীন বিষয় বা রীতিনীতির প্রতি যাদের অগাধ বিশ্বাস, তারাই মৌলবাদী। অথবা যারা ধর্মের মূল বিষয়কে অনুসরণ করে তারাই মৌলবাদী ***[[[মৌলবাদীরা তাদের ধর্মে কোনো প্রকার সংস্কার বা আধুনিকায়নে বিশ্বাস করে না। উইকিপিডিয়ার ভাষ্য মতে, ইউরোপ-আমেরিকায় খ্রিস্টান মৌলবাদীদের গোড়াপত্তন ঘটে উনিশ শতকে এবং বিশ শতকের শুরুর দিকে। তখন খ্রিস্টানদের মধ্যে সংস্কারপন্থীদের বিরুদ্ধে খ্রিস্টধর্মের মূলতত্ত্বসমূহকে সংরক্ষণের জন্য ‘ফান্ডামেন্টাল মুভমেন্ট’ নামে আন্দোলন গড়ে উঠেছিলো। ( কালেক্টেড)]]]*** অর্থাৎ মৌলবাদ বা ফান্ডামেন্টালিজমের সূচনা এখান থেকেই। কিন্তু বর্তমানে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিভিন্নভাবে হাইলাইট করে শুধু ইসলাম ধর্মের দিকে মৌলবাদ বিষয়টাকে স্পষ্ট করতে অপচেষ্টা করছে বলা যায়। তবে মৌলবাদ যেকোন ধর্মেরই হতে পারে, সেটা ভুলে গেলে চলবে না। ধর্ম নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করবে, ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে, ধর্মকে নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ব্যবহার করবে তারাই মৌলবাদী, কট্টরপন্থী, আর তারাই উগ্রপন্থী হয়ে থাকে। সেটা পৃথিবীতে প্রচলিত যেকোন ধর্মেরই হতে পারে, যেকোন দেশেই থাকতে পারে।

আবার কিছু মানুষ আছে যারা নিজের ধর্মই ঠিকঠাক মতো পালন করে না, কিন্তু অন্যজন কি করছে, কোন ধর্ম পালন করছে সেটা নিয়ে তার মাতামাতি থেকে শুরু করে, সোস্যাল মিডিয়ায় উক্তব্যক্তির ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত করে বসে। এইটা একধরনের মূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এরকম বিষয়গুলো থেকে বের হয়ে আসা অত্যন্ত জরুরী মনে করছি।

আর নাস্তিকরা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না, অর্থ্যাৎ ঈশ্বরবিহীন ধর্ম পালন করে। বর্তমানে এই নাস্তিকরা অন্য আর একটি ধর্ম পলন করছে সেটা স্পষ্টভাবেই চোঁখে পড়ছে। নাম বলতে বাধ্য করবেন না।

আর অসাম্প্রদায়িকতা বলতে আমি মনে করি, এমন ব্যক্তি, যিনি যেকোন একটি ধর্মের অনুসারী, তবে তিনি প্রত্যেকটি ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, কোন ধর্ম সম্পর্কে বা কোন ধর্মের কোন মৌলিক বিষয়ে কটাক্ষ করে কথা বলবেন না অথবা, কোন প্রকার উস্কানিমূলক কথা বলে কোন প্রচলিত ধর্মকে খাটো করবেন না অথবা কোন ধর্মীয় বিষয়ে চলমান সঙ্কট নিরসনে গঠনমূলক আলোচনা বা লেখালিখির মাধ্যমে প্রশমিত করবেন।

কিন্তু আমাদের দেশে তথাকথিত নাস্তিকরা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক হিসেবে পরিচিত করতে গিয়ে, কোন প্রকার চলমান ধর্মীয় সঙ্কটকে তাদের উস্কানি, কটাক্ষ, অপ্রকৃতস্থ ও ভিত্তিহীন মন্তব্যদ্বারা আরও প্রকট করে তোলেন। যা নাস্তিকতা ও অসাম্প্রদায়িকতাকে আলাদা করার জন্য যথেষ্ট। আমি মনে করি তারা এই নাস্তিকতা ছেড়ে অসাম্প্রদায়িকতার ট্যাগ লাগিয়ে তাদের নাস্তিকতাবাদকেই কি খাটো করলেন না?
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×