ছেলেটি পড়ে ছিল ওভাবেই
ইট ধুলোর তোষকে, কি নির্লিপ্ত ভঙ্গিমায়!
কি এক সৌম্য স্বাধীনতার আশায়
ছড়িয়ে দিয়েছে দু হাত সে
আনমনে ঐ আকাশের দিকে
"হা" হয়ে থাকা খোলা ঐ মুখে
মাছিদের অবাধ প্রবেশাধিকার
কি গণতাণ্ত্রিক গঠনে
মারা গেছে ছেলেটি ।
আমি বলেছিলাম, দোষ দিওনা তাকে
তাকে অভিশপ্ত বোলনা
তারও প্রাণ ছিল, ছিল বাঁচবার আকুতি
ছিল এক মুঠো অন্ন আর ভালবাসার অভাব
মিঠে-রোদ বিকেলে অস্পষ্ট প্রেয়সীর ছোঁয়া
আর শেষ জীবনে মৃত্যু অপেক্ষার ইচ্ছা।
আমি বলেছিলাম কি পেয়েছিল সে?
স্বদেশ ভূমিতেই সে ছিল বাস্তুহারা।
আর সোনালী ধানে তার ছিলনা কোন অধিকার
আজ তার মৃত্যুর পরেও
নিগৃহীত সে। অবহেলিত লাশের প্রতি
কেউ ফেলেনা দু ফোঁটা অশ্রু।
আমি বলেছিলাম এমন অজস্র মৃত্যুর কথা
এমন অজস্র বাস্তুহারার কথা
স্নিগ্ধ কৃষ্ঞবিবরের পথ ধরে, বিবর্ণ পৃথীবিতে
না পাওয়া স্বপ্নের লোভে, হারানো বিশ্বাসের খোঁজে
যারা ফিরে ফিরে এসেছিল
আমাদের এই মৃত শহরে।
আমি বলতে চেয়েছিলাম, ফিরে এসনা।
আমাদের প্রয়োজন নেই মৃত্যুর।
আমরা মৃতদেহ নিয়ে উৎসব করতে জানিনা
জানিনা শেকল ভাঙ্গতে, কারাগারে বিদ্রোহ করতে।
আমারা জানি শুধু কথা বলতে
অজস্র অজস্র বাক্যের বন্যায় ঢেকে দিতে
বাস্তুহারার নিষ্প্রাণ দেহ
অথচ তারা বলতে দেয়নি আমায়।
গাঢ় নীল আয়োডিন ঢেলে নিষ্প্রাণ করে দিয়েছে আমাকে
স্তব্ধ কণ্ঠনালী নিয়ে আমি দেখি
তোমাদের মৃতদেহ নিয়ে উৎসবে মত্ত
সব আজকের ভূস্বামীরা।
উত্তর মেরূর শেষ প্রান্তে। যেখানে লাল মদের নামে
তারা পান করে ফেনীল রক্তধারা।
আমি তবুও বলে যাব
আমার কলমের খোঁচায় কাগজের আঁচল কলঙ্কিত করে
আমার স্তব্ধ কন্ঠস্বর নিয়ে
আমি বলে যাব সেই ছেলেটিকে
আমার চিৎকার দিয়ে আতঙ্কিত করে
স্বপ্ন দেখাব তাকে, এক মুঠো অন্ন আর ভালোবাসার
মিঠে-রোদ বিকেলে প্রেয়সীর স্পর্শের
আর সোনালী ধানের প্রতি তার সুপ্ত অধিকার।
প্রতিশ্রুতি তোমার প্রতি আরেক বাস্তুহারার।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




