অস্থির জীবন, ১ম অধ্যায়:
বাল্যকালের স্বপ্ন২ যে কৈশোরেই পূরন হইবে তাহা কখনোই ভাবিতে পারি নাই। তখন আমরা দুই জনেই নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত। আমাদের বাড়ি ছিল প্রায় পাশাপাশি। বিদ্যালয়ে প্রতিদিনই তাহার সহিত দেখা হইত। দেখিতে-দেখিতে, ভাবিতে-ভাবিতে কখন- কিরূপে যে ভাল লাগিয়া গেল তাহা বুঝিতে পারি নাই। যদিও আমার প্রতি তাহার পক্ষ হইতে নূন্যতম দূর্বলতাটিও কখনো প্রকাশ পায় নাই। বরং তাহার মধ্যে আমাকে এড়াইয়া যাইবার প্রবনতাই প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হইত। তথাপি আমিও পশ্চাদপসারণ করিবার লোক নহে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অন্তত এইবারের জন্য হইলেও আমি সফলকাম হইব। কিন্তু দু:খের বিষয়,বিদ্যালয় জীবন শেষ হইতে না হইতেই আমি তাহাকে হারাইয়া ফেলিলাম।
অস্থির জীবন, ২য় অধ্যায়
এইভাবে দীর্ঘকাল কাটিয়া গেল। অত:পর মহাবিদ্যালয় জীবন পার করিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইলাম। হঠাৎ এক বসন্ত প্রহরে একটি অপরিচিত মোবাইল নম্বর হইতে ফোন আসিল। সে ছিল আমার সেই স্বপ্নের রাণী। এ যেন মেঘ না চাহিতেই জলের ফল্গুধারা । তাহার পর হইতে শুরু হইল কথোপকথন। দুই জনেই আকস্মিক এ জলের তোড়ে ভাসিতে লাগিলাম। ক্রমান্বয়ে দুজনের ঘনিষ্ঠতা বাড়িতে থাকিল। কিন্তু মধ্যখানে বাধা হইয়া দাড়াইলো তাহার পিতা-মাতা। তাঁহারা অন্য জায়গায় তাহার বিবাহ ঠিক করিল কিন্তু এরূপ বিবাহে তাহার সম্মতি ছিল না কারন ততদিনে আমাদের সম্পর্ক এমন ঘোর-ঘনিষ্টতর পর্যায়ে পৌছাইয়াছিল যে তাহার স্বসস্মানে ফিরিবার আর কোন উপায় ছিল না। এমতাবস্থায় সে আমার নিকট নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পালাইয়া আসিল।
অস্থির জীবন, ৩য় অধ্যায়:
তখন আমি তৃতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত। কিন্তু একজন সচেতন প্রেমিক হিসাবে তাহার জন্য নিরাপদ আশ্রয় সুনিশ্চিত করিতে আমার কোনরূপ কার্পণ্য ছিল না। জানিতাম, ছাত্রাবস্থায় বিবাহ করিলে শতধা বাধা বিপত্তি আসিবে কিন্তু তাহাতেও আমি শংকিত কিংবা পিছপা হইলাম না। বারংবার অনুরোধ সত্বেও হলের বন্ধুরা আমার বিবাহে সাক্ষ্য দিতে রাজী হইল না।
আমি জানিতাম আমার ভালবাসা যদি সত্য হয় তবে কোন কিছুই আমাদের মিলনের সামনে বাধার প্রাচীর হইয়া দাড়াইতে পারিবে না। অত:পর বহু চড়াই উৎরাই পার হইয়া বিবাহ করিয়া ফেলিলাম এবং একটি বাসা ভাড়া লইয়া দুইজনে সুখে-শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলাম।
পুনশ্চ: বিবাহ করিয়াছি অদ্যবধি দুই বছর গত হইল। এখন বন্ধুরা ঠাট্টা করিয়া বলে আমি কেন এখনো বাবা হইতে পারি নাই। তাহাদের বিশ্বাস দিনে দিনে নাকি আমার অযোগ্যতাই পরিষ্ফুট হইয়া উঠিতেছে। আপনারা আশীর্বাদ করিবেন আমি যেন অতি শীঘ্রই বাবা হইবার গৌরব লাভ করি।
পাদটীকা:
১.গো. মোস্তফা ( স্নাতকোত্তর শ্রেণী, বাঙলা বিভাগ, জা.বি.) এর সফল প্রেম অবলম্বনে।
২. প্রেমে বহুগামী হইলেও কেবলমাত্র এই মেয়েকে লইয়া ঘর বাঁধিবার স্বপ্ন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




