somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি এসেছি -(২য় পর্ব)

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমি এসেছি - ( ১ম পর্ব )

আজ জেনিনের ১৯তম জন্মদিন ছিল । সাথে আমাদের সম্পর্কের ২ বছর পূর্ণ হল । অর্থাৎ , ১৭ বছর বয়সী এক বালিকার সাথে আমার প্রেমের সূএপাত হয়েছিল বছর দুয়েক আগে । বিষয়টা নিয়ে আমি জেনিনকে বলতাম “ তুমি পিচ্ছি একটা মেয়ে প্রেমের কিছু বোঝ “???
এটা বললে জেনিন অনেক লজ্জা পেত । সত্যি কথা বলতে জেনিনের মত লাজুক মেয়ে আমি জীবনে দেখিনি ।আমাদের দু-বছরের সম্পর্কের মধ্যে জেনিন আর আমার কখনো ঝগড়া হয়নি । সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল আমরা একে অপরকে ভাল বুঝি । দুজন সবসময় একটি কথাই বলতাম - যাই হোক আর তাই হোক আমরা আলাদা হব না । এ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য আমাদের অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়েছে । জেনিনের সাথে পরিচয় না হলে হয়ত জানতাম না ধৈর্য্য কি জিনিষ । জেনিনের ধৈর্য্য ক্ষমতা দেখে আমি মাঝে মাঝে অবাক হই । একটা মানুষ কিভাবে এত ধৈর্য্যশীল হতে পারে ?

জেনিন পূর্বজন্ম সূএে ক্যাথলিক ছিল, পরবর্তীতে ওদের পরিবার পূর্ন খ্রীষ্টান ধর্ম গ্রহন করে । আমার জানা মতে এই দুই ধর্মের মধ্য কোন যোগসূএ আছে । এটা সম্পর্কে এত ভাল বলতে পারব না । জেনিন যতটুকু বলেছে ততটুকু বললাম । এটা নিয়ে ওর কোন মাথা ব্যাথা নেই কারন জেনিন সবসময় ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে রাজি।

শিকাগো আর ফিলিপাইনের সময়ের পার্থক্য ১৪ ঘন্টা !! বলা চলে একদিন আগে পরে । তবে সৌদিতে আসার পরে সেটি কমে ৫ ঘন্টা হয়েছে । জেনিন আর আমার মেসেজ আদান-প্রদান বেশী হতো । মজার ব্যাপর হল আমরা ভিডিও কলে কথা বলতে পারতাম না , শুধু একে অপরকে দেখতাম । আমি সেই আবেগ বোঝাতে পারবো না । চোখের সাথে চোখের কথা , মনের সাথে মনের কথা । জেনিনের কয়েক হাজার ছবি আমার কাছে আছে । সে কিভাবে ঘুমায় , কিভাবে ওর বিড়ালের সাথে দুষ্টমি করে , গাছে পানি দেয়, ওর বন্ধু সমাজ , সব ছবি । জেনিনের সবচেয়ে কাছের বন্ধু রিসেলা । রিসেলার সাথে আমার বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে । তার একটাই কথা , আমি যেন জেনিনকে কখনো ছেড়ে না যাই ।

জেনিন সবসময় বলে -তুমি যখন আমার শহরে আসবে , আমার শহরের মায়া তুমি ছাড়তে পারবে না , একটি সুঘ্রান তোমার পিছু ছাড়বে না । একথা বলার পর জেনিনের মন খারাপ হতো । এ মন খারাপের কারন আমি জানি।
জেনিন যে গোত্রের অন্তরভূক্ত ,সে গোত্রের মানুষ নিজেস্ব গোত্রের বাইরে বিয়ে করতে পারে না । আর এটাই জেনিনের সবচেয়ে ভয়ের কারন ।

৩য় পরিচ্ছেদ-

আমাদের দিন গুলো খুব ভাল চলতে থাকে । শত ব্যস্ততার মাঝেও জেনিনকে সময় দিতে হয় । দিন শেষে একবার হলেও ভিডিও কলে বলতে হয় আমি ভাল আছি , আমি খেয়েছি , আমার কেন সমস্যা হচ্ছে না । সৌদি আরবে আসার পর থেকে জেনিন আমার জন্য অনেক চিন্তা করে । প্রতিটি দিন সে গুনতে থাকে কবে ৬ মাস শেষ হবে আর আমি আবার শিকাগোতে ফিরে যাব ।

আমি জেনিনকে কথা দিয়েছি আমি সৌদি থেকে ফিরলে তাকে নিয়ে মালদ্বীপ যাব । আমাদের প্লান, আমাদের প্রথম দেথা মালদ্বীপে হবে । জেনিন বিড়াল অনেক পছন্দ করে এজন্য তার সাথে সাথে আমাকেও বিড়াল পুষতে হয় । ও সব সময় বলত - তুমি আমার বিড়াল বাবু । একথা শুনলে আমি এক-অশ্লীল হাসি হাসতাম ।

তখন জেনিন বলত-

-এই তুমি এভাবে হাসো কেন ?

-প্রিয়তমা , তুমি সেটা বুঝবে না !!!

-বললে তো বুঝব ।

-বুঝবে না , বুঝবে না , হা হা হা !!!

আসলে বিড়াল যে মাছের সাথে সাথে অন্য কিছুও পছন্দ করে এটা মনে হয় শুধু বাঙালি ছেলেরাই জানে ।

একরাতে জানতে পারি জেনিন খুব অসুস্থ । তাকে হাসপাতালে এডমিট করা হয়েছে । এগুলো বৃষ্টিতে ভেজার ফলাফল । বৃষ্টিতে ভিজলে সে নাকি আমাকে অনূভব করতে পারে ।

-তোমাকে না বলেছি বৃষ্টিতে ভিজবা না ! তুমি আমার কথা শুনবা না কখনো ?

-বৃষ্টিতে না ভিজলে তোমাকে ছুঁব কিভাবে ?

-আর তো কিছুদিন !! তারপরেই আমি শিকাগো শিফট করলে আমরা মালদ্বীপ ঘুরতে যাব । তখন ছুঁতে পারতে না ? এখন হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আমার সাথে ভিডিও কলে কথা বলতে ভাল লাগছে ?

-তুমি আমাকে কবে নিয়ে যাবে ?

-পড়াশুনা তো শেষ করবা ! আর আমিও একটু স্থির হই । আচ্ছা শুনো !!! এখন ঘুমাও তো , কাল তোমাকে ফোন দিব ।

-সকালে ফোন দিবা কিন্তু !!!

-আচ্ছা ঠিক আছে ।

সকাল থেকে কোন ভাবেই জেনিনের খবর নিতে পারছি না । ওর হোয়াসএ্যাপ , লাইন , মেসেঞ্জার , সব ডিসকানেক্ট । লোকাল নাম্বারেও ফোন যাচ্ছে না । রিসেলার সাথেও যোগাযোগ করতে পারছি না ।

কি করব !!! দুশ্চিন্তায় নিজেকে পাগল মনে হচ্ছে !!!

চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:৪২
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×