somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পারিবারিক খুনসুটি এবং একটি জরূরী নোটিফিকেশন ( To define your acted level of respect)

৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
'লেট লতিফ' হিসেবে নিজবলয়ে আমার একটা রাজকীয় গূরূত্ব আছে


বিশেষ করে পারিবারিক বা সামাজিকতার অনুষ্ঠানমূলক পর্ব গুলোতে। হয়তবা আমি লান্চের জন্য নিমন্ত্রিত, কোন কারনে বিকেল গড়িয়ে আমার আগমন। কিন্ত অনুমিত লেট ছেলেটির প্রিয় উপস্থিতিতে, বিরক্ত না হয়ে স্বজনরা বরং স্বজনপ্রীতি মূলক বিশেষ যত্ন নিয়ে সবসময় আমায় আপ্যায়িত করে থাকে। ছোটবেলা থেকে বরাবর এভাবেই আমি, প্রিয় মানুষদের ভালবাসা পেয়ে এসেছি। আর, কোন একজন কে ঘিরে, বিশেষ খাতিরে কোন আপ্যায়ন হলে, সেখানে একটু রাজকীয় ফ্লেভার চলে আসেই বৈকি।
ফ্লেভার যাই হউক বরং দৃষ্টিভঙ্গিতে একরাশ সতর্কতা নিয়েও এদানিং "সঙ্গ দোষে, লোহা ভাসে" ব্যাপারটি ঠেকাতে পারছিনা। খুলেই বলি, লেট লতিফের স্ত্রী "ধর তক্তা মার পেরেক" টাইপের চট জলদি হওয়ায় যথা সময়ে তথা কাজের মন্ত্র "Decipline" এখন ভাইবন্ধুর মত আপন হয়ে গেছে। কিছু সময় দ্রুতশেষের তাড়না এমন, যা আপনায় ভুল ম্যাসেজ দিতে পারে। যেমন ধরূন, মেয়ের মুখ থেকে নতুন কোন শব্দ উচ্চারন হওয়া মাত্রই আমার সহধর্মিনী, কিশোরী উচ্ছলতায় এত দ্রুত দিনক্ষণ নিজ ডায়রিতে টুকে নেয় তা দেখে, আপনার "গাজনী" ফিল্মে আমির খানের শর্ট মেমোরি ক্যারেকটারটি মনে হলে, দোষনীয় কিছু হবেনা।
যাহোক, রমজান মাসে আমি সাধারনত সেহরি শেষকরে, ফজর নামাজ পড়ে বিছানায় যাই। শোয়ামাত্র ঘুমও মাশাল্লাহ! যেন, উসাইন বোল্টের ফিরে পাওয়া ফর্মের গতিতে আমার দুচোখের দিকে ছুটে আসে। গতরাতে তেমনি উসাইন বোল্ট মাত্রই শেষ লাইন ছুঁয়ে ফেলেছে এমনি সময়, হঠাৎ বউয়ের উৎকন্ঠিত ডাক, ধরমর করে উঠে বসেই বলি, কি হল? আচ্ছা, এবার বাবা দিবসে তুমি মেয়েকে কিছু লিখলেনা, বউ জিগ্যেস করে? ওরে..আমারে মাইর্রাল্লা ! কি করে বুঝাই, উসাইন বোল্টের টাছিং লাইন এসে গেলে, কেউ আমারে চোখ মেলে 'নোবেল খেতাব' হাতে নিতে বললেও বোধকরি, সকাল দশটার পর আসতে বলতাম। আর যতদুর মনেহয় "Father's Day" নামক ব্যাপারটি ১২/১৩ দিন আগেই গত হয়েছে, উনি আমার সাথে পাল্লা দিয়ে ধীরে ধীরে "লেট লতিফায়" রুপান্তরিত হচ্ছেন নাকি!!
ভালবাসা কে নির্দিষ্ট দিনকরণ করে খতনা দেয়ার কিছু নেই বলে, এইদিনে বাবাকে কখনও কিছু বলা হয়না। হয়ত বাবাকে কেন্দ্র করে দিনটা আসে বলে সন্তানেরা, বাবাকে নিয়ে কিছু ভালবাসা শেয়ার করে, আমি বাবা, তবে আমি কেন? মেয়েকে জাগায় বরং কিছু বল। আমার দেড় বছরের মেয়েটা তো জেগে থাকলে..সারাক্ষণ বাবার সাথে কিছু না কিছু বলেই যায়। এমন অবস্থায়, বিরক্ত হয়ে আপনি হয়ত বউকে কিছু বলতে পারেন কিন্তু যদি আপনার দৃষ্টি পড়ে..জোড়াচোখের সতেজে সংসার সামলানো এক মায়ের আর্তিময় মুখ, ভোর হয়ে যাওয়া ক্লান্ত চোখে..সন্তানের প্রতি গভীর মমতা নিয়ে অর্থহীন হউক তবুও চাওয়া, কিছু লিখলেনা? তখন আর কিছু বলা যায় না। তাই বললাম ঘুমাও, আমি কাল লিখব।

বিতায়িত সেই সময়ের সূএ ধরে, আজ আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, মাতা-পিতা সম্পৃক্ত বহুল পঠিত দোয়াটিতে যে অংশটি হৃদঙ্গম করা সবথেকে জরূরী, অথচ অনেকের এখনও বোধগম্য নয়।
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
বাংলা উচ্চারণঃ "রাব্বীর হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা"
বাংলা অর্থঃ হে পালনকর্তা, তাদের (মা-বাবা) উভয়ের প্রতি রহম কর, যেমনিভাবে তারা আমাকে শৈশবকালে লালন- পালন করেছেন (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত-২৪)
খেয়াল করুন:
আমরা প্রত্যেকে হয়তবা লক্ষ, হাজার, শতবার করে এই দোয়াটি পড়েছি। আল্লাহতালা আপনার পিতা-মাতা কে, কবুল করে এই দোয়ার বরকত তাদের দান করুন (আমিন) এই দোয়াটিতে শৈশবের উদাহরণ টেনে আল্লাহ্‌তালাহ, মুলত পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের করনীয় এবং আচরন সীমারেখার স্পস্ট নির্দেশ দিয়েছেন। সেটাই আমি,আমার বুঝে ব্যখা করার চেস্টা করছি। ভূল-ত্রূটি আল্লাহ মাফ করূক। আপনি সহমত না হলে কারন টূকূ জানাবেন, যাতে নিজের বুঝতে ভূল হলে শোধরায় নিতে পারি।
এখানে সন্তান হিসেবে আপনাকে, আল্লাহতালা শৈশবের ঐ ভালবাসাময় বাবা-মা কে স্মরণ করায় দিয়েছেন যখন আপনি ছিলেন চরম অসহায়। মাত্র পৃথিবীতে আসা নাজুক সন্তানটির প্রতি অকৃএিম ও সীমাহীন ভালবাসায় যে বাবা-মা বুক পেতে দিয়েছিল..সন্তান হিসেবে সেই সময়ের নিঃস্বার্থ বাবা-মার মহাব্বতকে হৃদয়ে ধারন করে নিজ জীবনপথে তাদের প্রতি সর্বোচ্চ বিনয়ী থাকার জন্য আল্লাহ আপনাকে নির্দেশ দিয়েছেন।বাস্তবতা, এখানে আপনি কোনভাবেই বিচারে আনতে পারবেন না। মানূষ মাত্রই ভূল হয়। মানুষ হিসেবে আমাদের বাবা-মায়ের ও ভূল থাকতে পারে। সময়ের ব্যবধানে সন্তানের সাথে বাবা-মায়ের সম্পর্কের প্রায় টানা-পোড়ান তৈরি হয়। উদাহরন দিয়ে বলি, ধরূন আপনি নিজেকে ভীষণ ভাবে বন্চিত ভাবছেন, আপনার দৃষ্টিতে এরজন্য আপনার বাবা-মায়েই সম্পূর্ণ দায়ী। ধরে নিলাম, বর্তমান আপনার এই বন্চনা, দৃশ্যমান এই দূর্দশার হেতু আপনার বাবা-মার অন্যায় বৈরীতা। তবূও আপনি সন্তান হয়ে, বাবা-মায়ের কাছে জোর গলায় এর কোন কৈফয়ত? সরবে কোন জিঙ্গাসা? কিংবা মাত্রা ছাড়ানো আচারণে কোন অভিযোগ করার একটুও অধিকার আল্লাহতালা আপনাকে দেননি। আর সেজন্যই আপনার নাজুক সময়ের উদাহরন টেনে, বাবা মায়ের হক আদায়ে সন্তানোচিত আচরন সীমারেখা শৈশবকালের আপণ অসাহয়ত্ব অবস্থার দৃষ্টিতে ঘিরে দেয়া হয়েছে।এর বাইরে যে কোন কারণ তা সম্পদ, সম্পাত, দারিদ্র্য, বন্চণা সহ যত বিপদ, মান, অভিমান,ঝগরা,বিবাদ,বৈরিতা আসুক না কেন,বাবা-মায়ের প্রতি আচরন মানদন্ডের কারন করা যাবেনা। একমাত্র শৈশবের ঐ নিঃস্বার্থ বাবা মাকেই উদাহরন হিসেবে নিয়ে তাদের প্রতি সর্বোচ্চ সদয় থাকতে হবে। যদি বাস্তবিকতার পরাঘাতে, বাবা-মায়ের প্রতি বর্তমান পারিপার্শ্বিকতায় সম্পর্ক নির্ধারন করে তথাপি আচরন করেন। তবে পরকালে সীমালঙ্ঘন কারী হিসেবে আপনার জন্য আছে কঠিন আজাব। আল্লাহ্‌ আপনাকে মাফ করুক। তবে, কোন বাবা-মা যদি কোন সন্তানকে আল্লাহকে অস্বীকার বা তার কোন আদেশের বিরোধীতা করতে বলেন, শূধুমাএ তখনি আপনি পিতা মাতার আদেশ অমান্য করতে পারবেন। পৃথিবীর আর সব ব্যাপারে সন্তান হিসেবে তাদের চাওয়া বা আদেশ নিরূঙ্কুশ ভাবে মানতে হবে অথবা বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে রাজি খুশি রাখতে হবে। এটাই আপনার প্রতি মহান আল্লাহর নির্দেশ।


আর যদি আপনি একজন পিতা হন, তাহলে কল্ল্যানী নেয়ামত হিসেবে সন্তানকে পেতে বেশি বেশি এই দুয়া করুন' "রাব্বানা হাবলানা মিন আজওয়াযিনা ওয়া জুররি ইয়াতিনা কুররাতা আ ইয়ুনেও ওয়াজ আলনা লিল্ মুত্তাকিনা ইমামা"
বাংলা অর্থ : হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে ও আমাদের সন্তানদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। (সুরা ফুরকান, আয়াত-৭৪)

ভাল থাকবেন
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:২১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×