( অামি দুঃখিত:অাপনি খেয়াল করলে দেখবেন, অামি শুধু অনুজদের জন্য লিখি। ওদের নিয়েই অামার সব স্বপ্ন। তাই অামার ব্যক্তিগত বিষয়,দেশ ও দশে,কোন গল্প কিংবা ইতিহাস! তা যাই হউক না কেন কেমন করে যেন, অনুজরা ঢুকে পড়ে। অামার সীমাবদ্ধতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে, ইতিহাস থেকে বরং গল্পটা শোনাই)
#পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়’র প্রসঙ্গ এলে, বিশ্বখ্যাত কোকা-কোলার কথা প্রথমেই চলে আসবে? কিন্তু এই কোকা-কোলার আবিষ্কার ছিল একটা মজার ভূল? কী সেই ভূল বরং সেটি শোনো..
জন স্মিথ পেমবার্টন নামে একজন হাতুড়ে ডাক্তার বা রসায়নবিদ ছিলেন। তিনি তাঁর তৈরি করা ওষুধ ফেরি করে বিক্রি করতেন, আর অবসরে আবিষ্কারের নেশায় মেতে থাকতেন। তিনিই কিন্তু অাজকের বিখ্যাত কোকা-কোলার আবিষ্কারক। সময়টি ছিল ১৮৮৬ সাল। যথারীতি নতুন এক ধরনের সিরাপ আবিষ্কার করেন এবং এবার সেটা ফেরি করে বিক্রির সময় প্রচার করতে থাকলেন, তার নতুন এই সিরাপটি নাকি মাথা ব্যথার টনিক হিসেবে চমৎকার কাজ করে। প্রথমদিকে সেটি ঠাণ্ডা পানির সাথে মিশিয়ে প্রতি গ্লাস ৫ সেন্ট করে বিক্রয় করা শুরু করলেন। বেশ ভালই অায় হচ্ছিল তাঁর নতুন সিরাপের ব্যবসায় কিন্তু একদিন এক কাণ্ড ঘটলো, ঐ দিন সকাল সকাল দোকানে এক লোক এলো প্রচণ্ড মাথাব্যথা নিয়ে, এসেই এক গ্লাস সিরাপ চাইলো? হয়তবা নতুন কোন পরীক্ষার জন্য সিরাপটি ঠাণ্ডা পানির পরিবর্তে কার্বোনেটেড মেশানো পানির সাথে মিশ্রিত ছিল কিন্তু ভুল করে পেমবার্টন তারই এক গ্লাস লোকটিকে পান করতে দিল। মজার ব্যাপার হলো, লোকটি সেই বিচিত্র সিরাপ খেয়ে ব্যাপক আনন্দ পেলো! তখনই পেমবার্টনের মাথায় আইডিয়াটা এলো এই পানীয়টি বাজারজাত করার। প্রথম বছরে তিনি ৫০ ডলার আয় করেন বটে, বিপরীতে ৭০ ডলার মুলধন হারিয়ে বিমর্ষ, পেমবার্টন তার প্যাটেন্টটি বিক্রি করে দেন। কোকা-কোলা প্রথমদিকে জনপ্রিয় হয় সেই ক্রেতার উচ্ছাসের কারনেই। তিনি জনে জনে বলে বেড়াতেন, একটি নতুন কিন্তু অসাধারন পাণীয়, এরকমটি তোমরা কখনোই পান করনি। তার পরের গল্পটি তো তোমরা সবাই জানো। তাই না? বর্তমানে পৃথিবীর ২০০টির বেশি দেশে কোকা-কোলা বাজারজাত করা হয়। পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ বোতল কোকা-কোলা পান করা হয়ে থাকে!! ৪ফিট প্রস্ত অার ১ ফিট উচ্চতার একেকটি ধাপ, এমন কোন কোন সিড়ির কথা কল্পনা কর, এতদিনে যত কোকা-কোলা খাওয়া হয়েছে, সেইসব বোতলগুলো এক সাথে করলে, ওই মাপের কয়েকটি সিড়ি বানানো যেত। লম্বায় কত বড় হত, জান? অনায়সে সেগুলো দিয়ে, অনুজরা দলে দলে লাফাতে লাফাতে পৃথিবী থেকে চাঁদ মামার দেশে ঘুরে অাসতে পারতো !!
কিন্তু পথটা যে হত অনেক লম্বা? ওভাবে সিড়ি বেয়ে উঠাও যে বেশ কষ্টকর! তবে উপায়? উপায়টা তোমাদের ভিতরেই লুকিয়ে অাছে। তোমাদের মধ্যথেকেই কেউ একদিন অামাদের সহজ পথ দেখাবে মহাশুন্যে ঘুরে অাসার। হয়তবা অবলীলায় হয়ে যাওয়া তোমাদের কোন ভূল, পৃথিবীর বড় বড় বিজ্ঞানীদের অনেক গবেষণা এক মূহুর্তে বাতিল করে দিবে !! তার জন্য শুধু পেমবার্টনেরর মত অাগ্রহ থাকতে হয়।
অনুজ, তোমরা জানো, মহাজগৎ এর অজানা অনেক রহস্য তোমাদের ছোট্ট মাথাগুলোতে লুকিয়ে অাছে। বড়দের কি সেই সাধ্য অাছে? তোমাদের মত করে ভাবতে পারে? তাই, তোমরা বাসায়, স্কুলে যেথায় ইচ্ছে সেথায়, মজার মজার ভুল করে মেতে থাক নতুন কিছু তৈরি কিংবা অাবিস্কারের ইচ্ছেয় !! মামনির একটু বকা খেতে পার, কিন্তু যখন তোমাদের গৌরবময় কাজের জন্য, পৃথিবী অবাক বিষ্ময়ে তোমায় অভিনন্দন জানাবে! তখন সব প্রাপ্তি বরং তোমার মামনিকে উৎসর্গ করিও। মানুষ হিসেবে মামনির গর্বিত সন্তান হওয়া,পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ট সাফল্য।