somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্মলেন্দু গুন যা বলেন

১৩ ই জুলাই, ২০১০ দুপুর ১২:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিশিষ্ট পদোগলক ‘বিশেষ অজ্ঞ’ নির্মলেন্দু গুন প্রথম আলুতে ‘হল্যান্ড, তোমার চোখের জল আমার চোখে দাও’ শীর্ষক নিবন্ধে যা বলেন,” ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে যেমন ভয় পায়, আমিও তেমনি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা পরিচালনার জন্য ফিফা-মনোনীত ব্রিটিশ রেফারির কোজাক-মার্কা চেহারা দেখে, সত্যি বলতে কি, কিছুটা ভয়ই পেয়েছিলাম। ব্রিটিশ রেফারি সম্পর্কে পত্রিকায় সদর্থক প্রচারণা পাঠ করার পরও আমার সন্দেহ কাটেনি। আমার কাছে ওই রেফারি সম্পর্কে তাঁর স্ত্রীর মন্তব্যটি অত্যন্ত প্রণিধানযোগ্য বলেই মনে হয়েছিল। ১১ জুনের বিকেলে প্রচারিত চ্যানেল আই-এর একটি লাইভ অনুষ্ঠানে ওই রেফারি সম্পর্কে আমি আমার সন্দেহের কথাটি বলেও ছিলাম। রেফারি সম্পর্কে তাঁর স্ত্রীর মন্তব্যটি ছিল এ রকম : ‘ও তো ওর ছেলেপুলেদেরই সামলাতে পারে না, বিশ্বকাপ ফাইনালের ২২ জন খেলোয়াড়কে ও সামলাবে কীভাবে?’
বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা দেখার সময় ওই ব্রিটিশ রেফারি সম্পর্কে তাঁর বিদুষী স্ত্রীর নির্ভুল ভাষ্যটি আমার বারবার মনে পড়ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যেই, সম্ভবত প্রথম পনেরো মিনিটের মধ্যেই, তাঁর হলুদবাণে বিদ্ধ হলেন হল্যান্ডের তিন আর স্পেনের দুই খেলোয়াড়। স্পেনের চেয়ে ডাচদের বিরুদ্ধে হলুদের প্রয়োগ যখন ক্রমশ বাড়তেই থাকল, তখন আমি স্মরণ করলাম সার্বিয়া বনাম জার্মানির খেলা পরিচালনাকারী রেফারির কথা। তাঁরা দুজন কি একই ব্যক্তি? আমি তো পেশাদার ক্রীড়ালেখক নই, তাই ওদের ঠিকুজি স্মরণে রাখি না। দেহে এক না-ও যদি হন, অন্তরে যে তাঁরা এক, তাঁদের মাঠের আচরণ দেখে আমি তা বেশ বুঝতে পেরেছি। এই দুই রেফারিকে নিয়ে গবেষণা করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলেই আমি বিশ্বাস করি। ক্রীড়াসাংবাদিকতায় যাঁরা নিয়োজিত আছেন, আমি তাঁদের ওপর এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানোর দায়িত্ব দিতে চাই। ইউরোপের দুটি দেশের মধ্যকার ফাইনালে ইউরোপিয়ান রেফারি কেন দেওয়া হলো, সেটিও অনুসন্ধানের বিষয় হতে পারে। অন্য কোনো মহাদেশের রেফারি হলে ফাইনালটা আরও বৈশ্বিক রূপ পেত। এ ছাড়া আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপে আফ্রিকান কোনো রেফারিকে ফাইনাল পরিচালনার দায়িত্ব দিলে আফ্রিকার প্রতিও সম্মান দেখানো হতো।
স্পেনের ডিফেন্ডার (দূর থেকে বুনো শূকরের মতো ছুটে এসে জার্মানির জালে বল পাঠিয়ে যিনি বিখ্যাত হয়েছেন) পুয়োল যে বাংলাদেশের গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে তৈরি করা রোবেনের কমলা জার্সি টেনে ধরেছিলেন, রহস্যজনকভাবে রেফারির কাছে তা অশোভন বা অসংগত বলে মনে হয়নি। বরং প্রতিবাদ করতে গিয়ে রেফারির রক্তচক্ষু দেখলেন রোবেন। কিন্তু কিছুক্ষণের ব্যবধানে তার চেয়েও কম অপরাধের দণ্ড মাথায় নিয়ে জার্মানির ক্লোসার মতোই দুই হলুদের চিপায় (২ হলুদ = ১ লাল) পড়ে নেদারল্যান্ডের একজন ডিফেন্ডারকে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। ১২০ মিনিটের খুব কাছাকাছি পৌঁছেও টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে যাওয়া নেদারল্যান্ড পরিণত হয় দশজনের দলে। তার পরই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। কলম্বাসের আমেরিকা আবিষ্কারের মতোই স্পেনের ইনিয়েস্তাও খুঁজে পান নেদারল্যান্ডের গোলের জাল। তার আগে নয়। ”

একজন হল্যান্ড সমর্থক হিসাবে দুঃখ তিনি করতেই পারেন, কিন্তু একটি উলটাপালটা জিনিস বলতে পারেন না। তার খোড়াঁ যুক্তিগুলো খন্ডন না করা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছি না। প্রথমেই বলতে চাই ইউরোপের সেরা লীগ ইপিএল, তাই ওখানকার রেফারী যে সেরা হবেন এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া ওই লিগেই শরীর নির্ভর খেলা বেশী হয় (স্প্যানিশ লীগের তুলনায়), তাই এই রেফারীদেরই ওই রকম খেলা পরিচালনায় অভিজ্ঞতা বেশী।
বিশিষ্ট পদোগলক ‘বিশেষ অজ্ঞ’ নির্মলেন্দু গুন রেফারীর কার্ড প্রীতি দেখলেন, কিন্তু ভ্যান ভোম্বল আর ডি জং মারপিট দেখলেন না। হল্যান্ড স্পেনকে স্বাভাবিক খেলা খেলতে দিবে না এইটা অনুমেয়ই ছিল কিন্তু এভাবে মাইরপিট করবে এটা কিভাবে বুঝা যাবে... ডি জং জাবি আলন্সোকে বুক বরাবর ঝেড়ে লাথি মেরে শুধু হলুদ কার্ড খেলেন, তাতে বলাই যায় রেফারী গুরু পাপে লঘু দন্ড দিয়েছেন। হল্যান্ড মাত্র একটি লাল কার্ড খেলো, কিন্তু সংখ্যাটা আরো বেশী হওয়া উচিত ছিল।
নির্মলেন্দু গুন বার্সা দলপতি কার্লোস পুয়োলকে যেভাবে সম্বোধন করলেন আমি বাকরুদ্ধ। কার্লোস পুয়োলই সেইসব খেলোয়াড়দের মধ্যে অন্যতম যারা ক্লাব ও জাতীয় উভয় পর্যায়ই সর্বোচ্চ সাফল্য পেয়েছেন (২০০৯ এর বার্সার হয়ে ৬টি শিরোপা, ২০০৮ এ ইউরো এবং সর্বশেষ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন)। তার সম্পর্কে শব্দচয়নে একটু শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।
আর আমি যতটুকু জানি বাংলাদেশের কোন গার্মেন্টসই বিশ্বকাপের খেলোয়ারদের জার্সি তৈরীর কাজ পায়নি (ইপিলিয়ন গ্রুপ দর্শক জার্সি বানানোর কাজ পেয়েছিল সম্ভবত)।
নিজেরদল সমর্থন করা খারাপ কিছু নয়, কিন্তু এভাবে অযক্তিকভাবে বিজয়ীদের ধুয়ে দেওয়াটা কি ঠিক?
১৩টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×