"স্টার জলসা" -এখানে ২টি শব্দ মিলে এই
চ্যানেলের নামকরণ করা হয়েছে। ১ম শব্দটি
'স্টার' ইংরেজি শব্দ যার অর্থ তারা বা তারকা।আর ২য় শব্দটি 'জলসা' এটা আবার বাংলা শব্দ যার অর্থ মজলিশ বা গানবাজনাসহ বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
এখানে দেখা যাচ্ছে, এই চ্যানেলের নাম অর্ধেক বাংলা আর অর্ধেক ইংরেজি সংক্ষেপে বলা যায় 'বাংরেজি'(বাংলিশ)। আর বাগধারা বা বাগবিধিতে দেখলে বলা যায় 'গোড়ায় গলদ' বা শুরুতে ভূল।গ্রামের ভাষায় বলা যায় যে, এটা ঘোড়াও না আবার গাধাও না।
তাহলে এটা কি? তাহলে এটা 'ঘোচ্চর'।এই ঘোচ্চরে আজ বাংলাদেশের মানুষের বিদ্যা-বুদ্ধি,মান-সম্মান, ঘর-সংসার সব কিছুই ডুবে যেতে বসেছে। আপনাদের মনে প্রশ্ন
জাগতে পারে কেমন করে, কিভাবে? আমি বলছি ঠান্ডা মাথায় শ্রবণ করুন।
এই বাংরেজি চ্যানেলের সিরিয়াল নামক সংক্রামক ব্যাধিটি শুরু হয় ঠিক সন্ধ্যে ৬টার দিকে, চলে একটানা বিরতিহীনভাবে রাত ১২টা পর্যন্ত। শুধু মাত্র এই প্রতিবেদনটি লেখার জন্যে আমি কয়েকদিন এই বাংরেজি ঘোচ্চর চ্যানেলটিকে উপভোগ করেছি।সিরিয়ালগুলো দেখে অনেকের মত আমার ও যে অভিজ্ঞতা অর্জন হলো তা নিচে বর্ণনা করা গেল :
১। গোটা পুরুষ জাতিকে কিভাবে মেয়েরা অপমান, অপদস্থ করে। সংসারে পুরুষ নামের বলদটিকে কিভাবে গাধা বানিয়ে রাখা যায়।
২। পুত্রবধূকে বাড়ি থেকে তারিয়ে দিয়ে কিভাবে মা তার ছেলের বেড রুমে অন্য মেয়ে ঢুকিয়ে দেয়,ছেলের বিনোদনের জন্য।
৩। সুন্দর একটা সাজানো গোছানো সংসারকে কিভাবে ভেঙে খান খান করা যায়।
৪। সুকৌশলে কিভাবে একটা যৌথ পরিবারকে
আলাদা করা যায়।
৫। শাশুড়ির পক্ষ নিয়ে কিভাবে দেবর/ভাশুরের বৌকে হেস্ত-নেস্ত করা যায়।
৬। অন্য পুরুষের সাথে গভীর সম্পর্ক করেও
কিভাবে স্বামীর প্রাণের প্রিয় হওয়া যায়।
৭। 'মা' সমতুল্য বড় বৌদি কত বড় বেহায়া
বেলাজ হয়ে কিভাবে দেবরের সাথে প্রেম (কাম) লীলা করে।
৮।কিভাবে দেবরকে বিয়ে করতে বাধা দিয়ে বিয়ের পরে দেবরের স্ত্রীকে মেরে ফেলে নিজেই ঐ স্থানে থাকা যায়।
৯। একটি রমণী কতবার প্রেম করে কতজনের
সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়, কতবার
বিবাহবন্ধন ছিন্ন করে।
১০। দুষ্টবুদ্ধি কত প্রকার হতে পারে আর কত
সূক্ষ্মভাবে এর প্রয়োগ করা যায়।
উপরিউক্ত সবগুলোই মহিলা নামক
মায়াবিনীদের টনিক হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছে।
বাংলাদেশে এর প্রতিফলন ব্যাপকভাবে লক্ষ্য
করা যাচ্ছে। বাংলাদেশী মহিলাদের সাথে কিছু
উঠতি বয়সের মেয়েরাও এই চ্যানেল আকন্ঠ
পর্যন্ত গিলে সংসারের উপর বর্মণ করতে শুরু করে। উঠতি বয়সের মেয়েরা এগুলোকে গিলে আপতদৃষ্টিতে হজম করে রাখে যাতে পরবর্তীতে বিয়ের পরে স্বামীর সংসারে গিয়ে সুন্দর সুচারুরূপে কার্যগুলো সম্পাদন করতে পারে। আর মহিলারা সন্ধ্যার সময় (অনেকেই নামাজ/কালাম, পূজা/অর্চনা বাদ দিয়ে) রিমোট নামক ডিজিটাল বাটন যন্ত্রটিকে নিজের হস্তগত করে TV থেকে ঠিক ৬/৭ ফুট দূরে জগদ্দল পাথরের মত আসন গ্রহণ করে থাকে। এবার শুরু হয় সিরিয়ালগুলো।স্বামীরা সাধারণত এ সময়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে বাড়ির বাইরে অবস্থান করে। আর ছেলে মেয়েরা কি করছে সেটা দেখার বা বোঝার মত একটু সুযোগ.ও মহিলাদের হাতে থাকে না। উপরন্তু ছেলে যদি জিজ্ঞাস করে মা ৭+৮= কত হয়? তখন তিরিক্ষি মেজাজে উত্তর আসে জানি না। আবার মেয়ে এসে যদি জিজ্ঞাস করে মা 'আমি বাড়ি যাই' এর ইংরেজি I go to home আর 'সে বাড়ি যায়' এর ইংরেজি He goes to home. এখানে go এর জায়গায় goes হলো কেন? এবার
আরো চড়াস্বরে উত্তর আসে যা তোর বাপ এলে জিজ্ঞাস করিস। তোদের বলেছি না যে,
এই সময় আমাকে Disturb করবি না।তোরা
দেখছি আমাকে একটু শান্তিতেও থাকতে দিবি
না। জীবনে কি পেলাম তোদের বাবার সংসারে এসে? মা, ছেলে মেয়েদের বুঝিয়ে দিল এ সংসারটা তাদের বাপের। তার নয়।শুধু মহিলারা নয়, কিছু কিছু পুরুষ নামের
কলঙ্করাও এই বাংরেজি ঘোচ্চর চ্যানেলের
পাগল। আসলে এদের পুরুষ বলা যায় না।কিন্তু
মহিলাও বলা যায় না। তাহলে কি বলা যায়?
এদেরকে পুরুষের আকৃতিতে মহিলা জাতিয় হিজরা বলাতে আমার একটু ও দিধা হয় না। (একটু বোঝার চেষ্টা করেন)
এবার বাংলাদেশের মা-বোন, ভাবি, কাকিদের
প্রতি আমার সবিনয় অনুরোধ আপনারা এই
বাংরেজি ঘোচ্চর চ্যানেলটিকে দেখা বন্ধ করুন,ভবিষ্যৎ প্রজম্মকে রক্ষা করুন। এতে আপনাদের সংসারে শান্তি ফিরে আসবে। আপনার ছেলে মেয়েরা সু-শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। আপনি হয়তো জানেন না, আপনার চেলেমেয়েরা যাতে পৃথিবীর বুকে ১০ জনের ১ জন না হতে পারে, সে জন্যই ঠান্ডা মাথায় সুপরিকল্পিতভাবে এই চ্যানেলটিকে তৈরি করা হয়েছে। এ জন্যই এরা সন্ধে ৬ টা থেকে রাত ১২ টা (ছেলেমেয়েদের পড়ার সময়) পর্যন্ত যথাক্রমে বিরতিহীনভাবে সিরিয়ালগুলো (নাটক) প্রচার করে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে,ভারতের মেয়েরা সিরিয়ালগুলো দেখে শতকরা ৪০ থেকে ৪৫ জন।আর বাংলাদেশের মেয়েরা এর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৭৫ থেকে ৮০ জন। তাই এরা চেষ্টা করছে যেকোন মূল্যে এই সিরিয়াল নামক স্লো পয়জনটি মাথায় ঢুকিয়ে দিতে। আমাদের চরিত্রকে নষ্ট করে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিতে।এই চ্যানেলের কারনেই আমাদের দেশীয়
চ্যানেলগুলোর অস্তিত্ব ধ্বংসের মুখে পতিত
হচ্ছে। এমনকি সিরিয়ালের নেশায় আচ্ছন্ন
থাকায় দেশে ঘটে যাওয়া নিত্য দিনের ঘটনাবহুল প্রতি ঘন্টার খবরটাও দেখতে ও আমরা নারাজ।আপনারা তো সবাই জানেন, আমাদের দেশেই জম্মেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ খাঁন ভাষানি, নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন, ড. ইউনূস প্রমুখ। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে তাঁদের মত সন্তানেরা কি আর জন্ম নিবে এই
সিরিয়ালমুখী মায়েদের গর্ভে? যারা রাষ্ট্রের
কর্ণধার, তাঁদের প্রতি অনুরোধ যেকোন মূল্যে এই চ্যানেলটিকে কি বন্ধ করা যায় না? নাকি কর্তৃপক্ষের মুখ টাকা দিয়ে অটিজমে পরিনত করে রেখেছে ভারতীয় কুচক্র?
কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি যে,দেশের উপকারের জন্য অতি দ্রুত দয়া করে
★Star_জলসা'র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।আর বাঙালী (বাংলাদেশী) পুরুষদের প্রতি আমার অনুরোধ ফেলে দিন রিমোট, বন্ধ করুন ★Star_জলসা'র নগ্ন আগ্রাসন, রক্ষা করুন জাতিকে চরম অবক্ষয়ের হাত থেকে। আর এটাও হবে আপনার অথবা আমাদের (পুরুষের) দেশপ্রেমের পরিচয়।