somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিষাদী অথবা বিজয়ী বর্ণশরীরের কাছে

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(অ)

মাঝে মাঝে কিছু মুহূর্ত আসে, অশ্লীল এবং অনাকাঙ্খিত শব্দশকটের নৈরাজ্যময় যাতায়াতে জেরবার হতে হয়। তাদেরকে পরিচালিত করে জাত্যবিমুখ অভিজাতেরা ধার করা জাত্যভিমান নিয়ে। তখন আমার খুব ইচ্ছে করে প্রিয় বর্ণমালার বাঙ্ময় শরীর জড়িয়ে ধরে একটি সুন্দর বাক্যের জন্যে মিনতি করতে। ক্ষমা চাইতে ইচ্ছে করে অর্বাচীন চেতনাহন্তারক আবালবৃদ্ধবণিতার পক্ষ থেকে। বর্ণমালা বড্ড অভিমানী। তাকে খুঁজে পাই না আমি। বোকাবাক্সের চতুর নীলনকশায় সে হারিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে যাচ্ছে আমাকে নির্বাক এবং বকলম করে দিয়ে।

মাঝেমাঝেই এমন কিছু মুহূর্ত আসে যখন আমার পণ্যাগ্রাসিত পুন্য বিপন্নতাবোধ হিরন্ময় নিস্তব্ধতায় আশ্রয় নিতে চায় বর্ণমালার ছায়াশরীরে। আশেপাশের অট্টালিকা এবং বস্তিতে বসতি গড়ে নিয়েছে বিজাতীয় শব্দসন্ত্রাসীরা। আমার ছোট্ট ঘরে এসবের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ। জানালা বন্ধ করে দিয়েছি। দরজাটাও আটকানো। হল্লা করতে করতে হামলে পড়ে তারা। আমি তখন প্রিয় বর্ণমালার কাছ থেকে খিস্তিপিস্তলটা নিয়ে গুলিবর্ষণ করি তাদের ওপর।

তারা অনেক চেষ্টার পরেও আমার কাছে ঘেঁষতে পারে নি। সজোরে কড়া নেড়ে দুদ্দার লাথি মেরে ক্লান্ত হয়ে চলে গেছে অবশেষে। আমি ক্লান্ত হই না এই প্রতিকূল যুদ্ধে। আমার রুদ্ধবোধ রুদ্ররূপ ধারণ করে সম্মুখসমরে। অদৃশ্য তরোয়াল দিয়ে অশ্রাব্য শব্দগুলোকে কচুকাটা করার সময়ে আমি চেয়ে থাকি বিলীয়মান বর্ণমালার ছায়াশরীরের দিকে। যুদ্ধ শেষে আমি চিৎকার করে ডাকি তাকে,
"প্রিয় বর্ণমালা, তুমি কি শুনতে পাচ্ছো আমার ডাক? চলে যেও না, যেও না আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে। ফিরে এসো আমার দিনলিপিতে। ফিরে এসো রাগ, ক্ষোভ, ভালোবাসা, ঘৃণা আর চেতনার পঞ্চব্যঞ্জনে। অবহেলা কর না আমাকে, কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না তোমার দ্বারা প্রকাশিত আমার অনুভূতিপ্রকাশক অব্যয়।"

মাঝরাতে শব্দদূষণ থিতিয়ে এলে কেউ কড়া নাড়ে আমার দরজায় মৃদুভাবে।
-কে?
-অম্বল।
আজকে অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত মধ্যাহ্নভোজনের কারণে খানিকটা অম্বল হয়েছে বটে, তারই ফলশ্রূতিতে কী সব বাজে শুনছি!
-আরে কে রে এত রাতে ফাজলামি করতে এসেছে?
-অক্রম!
অদ্ভুত লোক তো দেখি! দুপুরের পাচকরস জনিত বিভ্রাটের বিষয় থেকে রাত্তিরের বিশৃঙ্খল বেয়াদব শব্দদের সাথে যুদ্ধ সবই জানে দেখছি! কে সে!
-অভিপ্লুত অভিব্যক্তি
যাক, একটু একটু করে মুখ খুলছে। দেখাই যাক না আরেকটু। বেশি ত্যাড়ামো করলে মানে মানে কেটে পড়তে বলব।
-অবলম্বন!
হু, বলতে থাকুক। ঝাঁপি খুলে বসুল। দেখি কী কী আছে তার থলেতে!
-অবলম্বন
-অবলম্বন
-অবলম্বন
সে পুনরাবৃত্তি করতে থাকে। এবার ব্যাপারটা আমি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করি। আমি যাকে খুঁজছিলাম সেই কী? তার রহস্যপ্রিয়তা আমার কৌতুহলকে পরাজিত করে। আমি দরজা খুলে দেই।
-কে?
-'অ'
সে এসেছে! এসেছে আমার প্রিয় বর্ণমালার প্রথমজন। অগূঢ় অনুভূতির অনিঃশেষ অদ্বয়বাদ অধমের অঙ্গনে অঙ্কিত করে।

আমার অবলম্বন! ক্ষীনদেহী, আঘাতে জর্জরিত, কিন্তু অমর। আমি জানতাম সে না এসে পারবে না!

(ম)

মচ্ছব বসেছে বৈঠকখানায়, বানিজ্যবিতানে। বিদ্যালয়গুলোতেও মদদ যোগানো হচ্ছে। শব্দবিনাশীদের দল নতুন ব্যাকরণ পুস্তক এবং কথ্যভাষা প্রণয়ন করে মোক্ষধামে গিয়ে বিজয়োৎসব করছে। তাদের মৌতাতে আকৃষ্ট হয়ে চলে এসেছে মুদ্দাফরাশের দল। মরণতৃষ্ণ মৃগিরোগীরা শব্দমৈথুনে চরম পূলক পাচ্ছে। তাদের জিহবায় বাসা গড়েছে যৌনচেতনা। নবপ্রণীত অপশব্দমালার মাংসল উরুসন্ধির গহবরে জিহবা প্রবিষ্ট করে নির্গত করছে বায়বীয় শব্দবীর্য। তাদের শব্দবীর্য অপশব্দের জরায়ূতে না ঢুকে ভেসে বেড়ায় বিভিন্ন নামে।

ধামাকা
চাম্মাক চাল্লে
চুতিয়া
-আপকো নাম?
-উই আর থ্রি ইডিয়টশ ড্যুড!

তিন গর্দভের অসংখ্য দল মানচিত্র এবং বর্ণমালার দিকে পশ্চাদ্দেশ প্রদর্শন করে। তাদের একাংশ কেতাদুরস্ত উচ্চারণে আমাদের "ডিয়ার লিশেনার্শ" সম্বধোন করে সম্বর্ধনা পায়।

মুষ্টিমেয় মৃতবৎসা নারী সখেদে তাকিয়ে দেখে এসব। মলিন মিনারের পাদদেশে প্রেমরত যুগলদের ফেলে দেয়া ঝালমুড়ির ঠোঙা এবং বাদামের খোসা কুড়িয়ে নিয়ে তারা খুঁজে ফেরে প্রিয় শব্দমালা।

হঠাৎ তাদের উপলদ্ধি হয়, কেউ একজন আছে পাশে। কেউ একজন মৃত্যুশয্যা থেকে উঠে এসেছে। তার মরণ নেই, রণে অনীহা নেই। সে মৃত্যুঞ্জয়ী। মেঘডম্বরের আবির্ভাবে সবার যাবার তাড়া দেখা দিলে সে মৃদুলয়ে মৃদঙ্গ বাজিয়ে শোনায় মৃতবৎসাকে। আদর করে পান করিয়ে দেয় মৃদ্ভান্ডে সঞ্চিত অক্ষরনির্যাস।

কেউ কারও পরিচয় জানতে চায় না। দরকারও নেই। চারিদিক ম-ম করে ওঠে মিষ্টি এক সুবাসে। মরমিয়া মিঠেসুরে জেগে ওঠে মৃতস্মৃতি।

আমি আমার 'অবলম্বন' সাথে করে মৃত্যুঞ্জয়ীর সাথে হাত মিলাই। মৃতবৎসা সেই নারীদের আলিঙ্গন করি।

মহাশ্নশানেই একদিন রচিত হবে মাহেন্দ্রক্ষণ !

(র)

রক্তমাখা শার্টটা এখনও কারা যেন টাঙিয়ে রেখেছে বারান্দায়।

একুশ বছর বয়সের পোশাকবিলাসীনি এক যুবতী বিরক্ত ভঙ্গিতে তাকায় সেদিকে।
-বুয়া! তোমাকে না কতবার বলসি ঐ শার্টটা সরাবা ওখান থেকে? কথা কানে যায় না?
-রক্ত ভয় লাগে আফা!
-আমারও ভয় লাগে। আচ্ছা কার শার্ট এটা বলত? এখানে কীভাবে এলো?
-এইগুলা ভূতের কান্ড আফা। খুউব সাবধান!

সাবধানে সে থাকে বৈকি! উৎকট ধারাবাহিকের পরম্পরাগত পোশাকবিধান, ভাষাবিধান, চাতুর্য্যের সাথে ভজঘট বানিয়ে সুন্দরের উৎসবে নিজেকে ক্রমেই উচ্চস্থানে নিয়ে যাচ্ছে। অন্তর্জালে তার অন্তরনিঃসৃত মিশ্রভাষার ঠাটবাট পছন্দ করার জন্যে সারিবদ্ধ সমগোত্রীয়রা আছেই, নতুন মাসাক্কালি, কাঁচুলি অথবা ল্যাহেঙ্গা পরিহিত পোষাকে তাকে দেখার জন্যে উন্মুখ থাকে সদ্য গুপ্তকেশ গজানো বালকের দল। তবে একবার তার মসৃণ চুলের প্রশংসা করে চুলকানি ওঠা এক বালক নতুন ভাষারীতিতে "নাইস বাল সুইটহার্ট" বলাতে এক অপ্রীতিকর অবস্থায় পড়তে হয়েছিলো তাকে। অবশ্য নতুন ভাষারীতি সকলে ধীরে ধীরে আত্মস্থ করে ফেলছে বলে একুশে পা রাখা তরুণীটি তেমন বিচলিত হয় না।

এখন সে মশগুল স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে যাবার জন্যে যথাযথ পোশাক এবং রসদ প্রস্তুত করতে। ভিনদেশী সুদর্শন সবল শারিরীক কাঠামোর এক যুবকের কাছে সে অর্ঘ্য নিবেদন করবে। যাবার আগে মুগ্ধচোখে আয়নায় নিজের একুশ বছরের অর্জিত যৌনসম্পদ এবং পোশাক ঠিকঠাক করে বেরুবার সময় আবারও সেই হতশ্রী রক্তভেজা শার্টটার দিকে চোখ পড়ে তার।
-উফ! ডিসগাস্টিং!
সে বিরক্তি প্রকাশ করে।
-কী হয়েছে মা?
বাবা ঠিকই জানবে এই ভৌতিক শার্টের ইতিহাস। সে সোৎসাহে তাকে সুধোয়,
-আচ্ছা বাবা, এই শার্টটার বয়স কত হবে বলত? এটা কী তোমার শার্ট?
-নাহ, আমার শার্ট না। তবে এটার বয়স ষাট হবে যদ্দুর ধারণা আমার।
-ষহাট বছর? হাউ ইউ ক্যান বি সো শিওর? আর এটা এলোই বা কীভাবে এখানে?
-জানিনা রে মা...
মাথা চুলকিয়ে প্রবীণ অভিভাবক বলেন
-বয়সের সাথে সাথে সাথে কত স্মৃতিতে ধূলো জমে যায়! তবে মনে পড়লে তোকে বলব।
-ওক্কে ড্যাডি। বাই!

একুশ বছরের তরুণী ষাট বছর আগের শার্টের কথা ভেবে তার গণ্ডিবদ্ধ মস্তিষ্কে চাপ ফেলতে আগ্রহ অনুভব করে না।

রক্তমাখা শার্টটি তাদের দিকে চেয়ে থাকে রসিকতার দৃষ্টিতে। রক্ত থেকে রোশনাই বিকিরিত হলে তারা অস্বস্তি বোধ করে।

রক্তের রোশনাই!
রক্তের রোষ আছে।

রক্ত। পবিত্র।

(এ)

একাকী। সে একাকীত্ব ভালোবাসে। তার বর্ণমানচিত্রে সমগোত্রীয় কারো অযাচিত অনুপ্রবেশ পছন্দ করে না। এটাকে অবশ্য বৃদ্ধ বয়সের আত্মম্ভরীতা ভাবলে ভুল হবে। তার অহংকার করার হাজারো কারণ আছে। বছরের পর বছর সে টিকে আছে মানুষের হৃদয়ে, গানে, সুরে, কবিতায়, গালাগালি, দরাদরি সবকিছুতেই। তবে তার ঔদার্য নিয়েও সংশয় নেই। সস্নেহে বুকে স্থান দিয়েছে পৃথিবীর নানাপ্রান্তের বুলি অথবা গালি। কিন্তু আজকাল কিছুটা সতর্ক না হলেই চলছে না। সন্ত্রাসী শব্দশকটের দল তাকে মথিত করে চলে যাচ্ছে, তবুও সে বেঁচে আছে অফুরান প্রাণশক্তি নিয়ে। তাকে জীবিত রাখতে এখনও যুঝে যাচ্ছে মৃতবৎসা নারী, মর্মপীড়ায় ভোগা যুবক, স্মৃতিপরায়ণ চেতনাধারী প্রবীণ এবং দেশজুড়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য স্মৃতির মিনার। এইক্ষণে সে তাদের সাথে গল্প করছে।
-তোমাকে হারিয়ে যেতে দেবো না। আমি রাতের পর রাত তোমাকে খুঁজে ফিরেছি শব্দসমাধিতে। প্রতিহত করেছি অশ্লীল, অবুঝ, যুদ্ধংদেহী, আগ্রাসী শব্দশকটদের। আমি যে শপথাবদ্ধ! তুমি যে আমার অমর অবলম্বন!
দৃপ্ত কন্ঠ যুবকের।
যুবকের স্থান হয় তার বিশাল বুকে।
-আমি আর একটি সন্তানকেও মৃত দেখতে চাই না!
মৃতবৎসা রমণীর কান্নাজড়িত কন্ঠ উবে যায় তার আশ্বাসের হাসি দেখে।
-দেখি কোন চুতমারানি আসে অনুপ্রবেশ করতে!
মৃত্যুঞ্জয়ীর খিস্তি শুনে রাগ করতে গিয়েও হেসে ফেলে সে। সবাই উৎফুল্ল সময় কাটায় মিনারের পাদদেশে।
রক্তমাখা শার্টটির সাথে পুরোনো বন্ধুত্বের সুবাদে সে হাসি বিনিময় করে।
"সাবধান! পল্টিবাজ মুখোসধারী অপশব্দ রচয়িতারা এগিয়ে আসছে এখানে ফুল নিয়ে! সবাই তৈরী থাকো প্রতিরোধের জন্যে।"
মৃত্যুঞ্জয়ী সতর্ক উচ্চারণ করে।

সবাই মিশে যায় একীভবনের মাধ্যমে।

তারা এখন একাঙ্গ।
একজোট।

(কু)

কুজঝটিকার আবরণে শব্দকুঞ্জকানন অস্পষ্ট হতে থাকে কুচক্রী কুলপুরোহিতদের কাছে। তারা আজ তাদের অশ্রাব্য শব্দশকটের ভেঁপু না বাজিয়ে খালি পায়ে এসেছে এখানে।

এখানে প্রতিপক্ষ একীভূত কুলপ্রদীপ জ্বালিয়ে। অপশব্দকারীরা অবশ্য এতে অভ্যস্ত। বছরের এই বিশেষ দিনটায় একটু ঝঞ্ঝা পোহাতেই হয়! ভীড় ঠেলেঠুলে কোনমতে একটা পুষ্পস্তবক অর্পণ করলেই দায়িত্ব শেষ। কুয়াশা ভেদ করে কষ্টেসৃষ্টে তারা সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছিলো।
-কুলাঙ্গারের দল! তোদের কুষ্পস্তবকের কোন প্রয়োজন নেই আমাদের!
কারা যেন বলে ওঠে কর্কশ কন্ঠে। এরকম আক্রমণের শিকার তাদেরকে আগে হতে হয় নি। তবুও তারা নিয়মরক্ষার্থে খালি পায়ে এগিয়ে চলে। অনভ্যস্ত্যতার দরুণ তাদের পা কেটে ছিলে যায়। তবুও তারা এগিয়ে চলে। একটা দিনই তো! তারপর আবার বিন্দাস ধামাকা!
ওয়ে ওয়ে!
ওয়ে ওয়ো আ!
লাভিউ বেইবি। তুহি মেরা জান!

"আজকের মহান দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অমুক ইউনিয়নের তমুক তামুক খেতে খেতে, অমুক ওয়ার্ডের তমুক কমিশনার ফরোয়ার্ড করে দেন জাতীর ক্রুহত্বর স্বার্থে, এদিকে জানা যায় যে বৃহৎ নেতারা তেনা প্যাচাতে ব্যস্ত ছিলেন"

এসব সুসংবাদের পরেও কারা যেন কারাবন্দী অবস্থায় কুশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ করে,
"কুত্তার বাচ্চা! কুচক্রীদের কোলাহলের কামুক অংশে কুলফি লাগিয়ে দিয়ে কালিক আকাঙ্খা ঘুচাবো তোদের !"

সমগ্র জাতি এতে বিব্রত বোধ করলেও এড়িয়ে যায়।

কুলত্যাগকারীদের কুলজি তো এমনই, কেউ কেউ অন্তত জানে!

(শ)

শহীদেরা জেগে ওঠে সমাধিক্ষেত্রের শয়নকক্ষ থেকে শতপদে। তাদের কঙ্কালশরীর শোভাবর্ধন করে রক্তভেজা শার্ট। ষাট বছরের পুরোনো পোশাক। শহীদ মিনারে জড় হওয়া মৃতবৎসা নারী, ক্রুদ্ধ যুবক আর মৃত্যুঞ্জয়ী বর্ণমালাদের সাথে একাত্মতা জানায়। দলিত ফুলেদের ফেলে দেয় আস্তাকুড়ে। তারপরেও আস্ত একটা বর্ণমালা জীবিত থাকে। খিস্তিপিস্তলের আক্রমনাত্মক অবস্থানে পিছু হটে মৌসুমবাদীরা। তারা স্বস্তি খুঁজে পায় "কালাভারি ডি'র নিরাপদ অবস্থানে। এরকম সাময়িক পরিত্রানের প্রতিবাদ করায় তারা আশ্বস্ত করে শবানুগমনের শশঘ্ন দেখিয়ে। আমরাও তুষ্ট হয়ে উড়ে যাই রক্তভেজা শার্ট পরিহিত হয়ে উচ্চাম্বরে, উষ্ণ উচ্চারণে।

শহীদদের সাথে উড়ে পাখির চোখে দৃষ্টি প্রক্ষেপণ করে শিকারের জন্যে বাছাই করি অজস্র অনুপ্রবেশিত শব্দ!

আমার আর একা লাগে না। আমার আছে শব্দ।

শব্দ!

পরিশিষ্ট

নিশুতি রাতে, শব্দত্রাসের সময়ে আমি এখন আরো বেশি প্রস্তুত সমরের জন্যে। আমার আছে বিন্যাস এবং সমাহারের সমস্ত বিকল্প। যা দিয়ে আমি প্রকৃতভাবে ভালোবাসতে পারি, ঘৃনা করতে পারি, খিস্তিবাজ হতে পারি। আমার একান্ত আপন পঞ্চাশজন-

অ আ ই ঈ উ ঊ ঋ এ ঐ ও ঔ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ য় ড় ঢ় ৎ ং ঃ ঁ

পঞ্চাশজনকে সাথে নিয়ে ষাট বছরের পুরোনো রক্তভেজা শার্ট পরে নিজেকে একুশ বছরের টগবগে তরুণ মনে হয়...

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২৭
১৩৫টি মন্তব্য ১৩৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×