somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বনসাই গল্পসমূহ

২১ শে মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(১)
আজ শূদ্ধর ত্রয়োদশ জন্মদিন। প্রচুর মোমবাতি, কেক, বেলুন, এবং উপহারে একটা জমজমাট পরিবেশ। সবাই খুব আনন্দিত এবং সুখী...

চৌদ্দ বছর আগের এক রাতে, শূদ্ধর বাবা এবং মা শয়নে, সঙ্গোপন বিলাসে মত্ত। কিন্তু আনন্দময় সূচনার পরিণতি সবসময় শুভ হয় না।

কনডমটা লিক হয়ে গেছে।

(২)
আমি আমার একজন অতি ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর প্রতি যৌন আকর্ষণ বোধ করতাম। সম্প্রতি তার জটিল একটি রোগ হয়েছে শুনলাম। সে হাসপাতালে ভর্তি আছে। শুনলাম যে'ই তার কাছে যাচ্ছে তাকেই নাকি জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। এমন সুযোগ কি আর পাওয়া যাবে? নতুন জুতো, যৌন উত্তেজক বডি স্প্রে আর মাড় দেয়া শার্ট পরে তাকে দেখতে গেলাম।

(৩)
তার বয়সের কোন গাছপাথর নেই। আশি, নব্বই, এমন কী একশও হতে পারে। দীর্ঘদিন আমাদের অফিসে ঝাড়ুদারের কাজ করেছেন। একদিন তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হলো। আমি কখনও তাকে নিয়ে আমার ভাবনার নূণ্যতম অংশও ব্যয় করি নি। কিন্তু যখন সে তার বিদায় সম্বর্ধণা অনুষ্ঠানে সুন্দরী সিইও'র কাছ থেকে হ্যান্ডশেক করে কড়কড়ে পাঁচ হাজার টাকা এবং একটা লুঙ্গি ও পাঞ্জাবি-পায়জামা পেলো, তখন তাকে নিয়ে না ভাবে আমি পারি নি।
Wet dreams...my fucking wet dreams! গোসল করা সম্ভব না এখন। তার কাছ থেকে একটা পায়জামা ছিনতাই করা সম্ভব কি?

(৪)

"দয়া করে টয়লেটের মেঝে শুকনো রাখুন, এবং টিস্যু ঝুড়িতে ফেলুন। ঠিকভাবে ফ্লাশ করুন"।
ফ্লাশ করার নির্দেশিকা দেখে আমি ভাবলাম একটা ফ্ল্যাশ ফিকশন লিখে ফেলা যায় কি না! অজস্র প্রকাশকের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত আমি জানি, দুটোর গন্তব্যই এক। প্রকাশকের বদলে আমি বরং একজন ভালো প্লাম্বার মিস্তিরির খোঁজ করতে পারি।

(৫)

সেদিন দেখা হলো এক সুখী যুগলের সাথে। আমার ভার্সিটির জুনিয়র তারা। কথায় কথায় ছেলেটি জানালো আমাকে নাকি সে প্রায়ই দেখে কাওরানবাজার সিগন্যাল থেকে দৌড়ে, লাফিয়ে, ঝাঁপিয়ে বাসে উঠতে। আমি অবশ্য এই কাজটা করি শুক্রাবাদ থেকে। তবে তারা ভুল কিছু বলে নি। আমার মত অসংখ্য প্রতিমানব সাজানো আছে এই শহরের ট্রাফিকে। আর তাছাড়া কাওরানবাজার থেকে শুক্রাবাদের দূরত্বও এমন বেশি কিছু না। হ্যাঁ, সেটা আমিই। আমি না হয়ে কোনো উপায় নেই।

(৬)
-টয়লেট পেপার দিন।
-গোলাপী নাকি সাদা?
আমি হতচকিত হয়ে গেলাম। শেষ পর্যন্ত শৌচকার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রেও শ্রেণীবৈষম্য? অথচ দেখুন, আমার পাশের লোকটা কত রঙ বেরঙের চকলেট কিনে হাজার টাকার বিল দিচ্ছে! তার কাছ থেকে আমার সাহায্য নেয়া দরকার। সে বিল মিটিয়ে দৃঢ়পায়ে বেরুচ্ছে। আমি তাকে অনুসরণ করতে গিয়ে দেখলাম সে একজন হাওয়াই মিঠাইঅলা হয়ে গেছে। গোলাপী আর সাদা রঙের হাওয়াই মিঠাই। বিকোচ্ছে ভালোই।

(৭)
দরজাটা খুব ধীরে ধীরে খুলছে। আলো আসছে বাহির থেকে। আমার ঘুমের সমস্যা হচ্ছে। আধা ঘুম আধা জাগরণে বিরক্তি ভরে আমি সুধোলাম, "কে, কে ওখানে?"।
কোন উত্তর এলো না। আরো বেশি হাওয়া আর আলো আসতে লাগলো। অদৃশ্য কেউ ছিনতাই করে নিলো আমার দরোজাটি। আমি কি খুব বেশি রূঢ় আচরণ করে ফেলেছি?
আর আলো আসছে না। হাওয়া আসছে না। ঘুমও আসছে না। কেই যদি জাগিয়ে দেয়ার জন্যে না'ই থাকে, তাহলে ঘুমিয়ে লাভটা কী?

(৮)
বসন্ত উৎসবের দিনে আমার প্রেমিকা আবদার ধরলো ফুল কিনে নিয়ে আসতে হবে। অফিস থেকে বের হতে আমার দেরী হয়ে গেলো। ততক্ষণে সব ফুল চুরি করে নিয়ে গেছে লুটেরা এবং প্রেমিকগণ। তাই আমি কনডম কিনলাম এক প্যাকেট।
রোজ ফ্লেভারড।

(৯)
কথা হচ্ছিলো এক লোডশেডিংয়ের রাতে আমাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে। কে কবে কী দেখে ভয় পেয়েছে এসব নিয়ে। ভূত, প্রেত, জ্বীন, সাপ প্রভৃতি ছিলো আলোচনার অনুষঙ্গ। হঠাৎ কলিংবেলের আওয়াজ। কারেন্ট তো নেই। তাহলে কলিংবেলটা বাজালো কে? নিশ্চয়ই কোনো প্রতিভাধর ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার?
সবাই সবার গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট ছিড়ে ফেলতে লাগলো মন্দ্রলয়ে। ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে মসজিদের ইমাম হলে বরং গল্পটা শেষ করা যেতো ভালোভাবে। এখন নতুন করে শুরু করবে কে আবার? কলিংবেলটা বেজেই চলেছে...

(১০)
ফোন এলো। মেসেজ এলো। সবই মিস করে ফেললো বেচারা লোকটি। কলব্যাক না করলেই না। অপারেটর থেকে প্রায়ই এমন মেসেজ আর ফোন আসে। অদ্ভুত সব নাম্বার থেকে। সে সব সেভ করে রাখে।

২৩৫৮-সুস্মিতা
৩৬৭৭-সুমি
৮৯০৭-আব্বা
৩৪৯৮-আম্মা

এবং আরো অনেকেই।



সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:২৫
৮৯টি মন্তব্য ৮৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×