somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাঠকের প্রতিক্রিয়া- বেড়ালতমা

৩১ শে মার্চ, ২০২১ সকাল ৯:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


“মরছ না বটে তবে মৃত্যু ভয় তোমাদের কখনই ছেড়ে যাবে না।”
যাদের মৃত্যু ভয় কখনই ছেড়ে যায় না তারা কি অমরত্ব লাভ করে? যে জীবন মরণ লড়াই করে কেবল বেঁচে থাকবার জন্য তার স্বাধীনতা কিসে? বেঁচে আছে সেই ঢের। সেই অনেক অনেক অনেক। রাষ্ট্র যন্ত্রের সকল মাধ্যম কে জোরেশোরে উপস্থিত করে অদ্ভুতুড়ে আবহে চলছে- চলতেই আছে।
সমুদ্র উপকুলে শাপলা পুকুর। সাপের আবাদ। বিষ। সাপের বিষের বাজার নাই। চামড়া, মাংস বিক্রি এর নতুন প্রজেক্টের সম্ভাবনা খুঁজে দেখার চেষ্টা চলছে। সাপের বিষ প্রাণঘাতী। সাপের বিষ মানুষের প্রাণ বাঁচানো মহৌষধ।
মানুষের সুকুমার বৃত্তি নিধন- উন্নয়নের মডেল। মানুষের মানবিক উন্নয়ন কে পদদলিত করে নগর কে কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত কর- উন্নয়ন। মানুষের সুকুমার বৃত্তি নিষ্পেষিত কুলসিত করে মানুষকে বিচ্ছিন্ন কর মানুষের কাছ থেকে। প্রতিক্ষণ শক্ত বিভেদের প্রাচীর তুলে দাও উভয়ের মাঝে। হত্যা কর প্রেম। বাণিজ্য উন্মুক্ত হোক মানুষের মাঝে। মানুষ বুঝুক মানুক, বিনিময়। কর্পোরেট ভালবাসায় ভেসে যাক ভেলা। হতাশার নদীতে সাঁতার কাটুক মানুষ। প্রতিযোগিতার রাজপথে ছুটুক তার পাগলা ঘোড়া অথবা মানুষ নিজেই হয়ে উঠুক ছুটন্ত পাগলা ঘোড়া।
থকথকে চটচটে প্রেম লেপটে থাকে শাপলা হ্রদের পাড়ে চুম্বনে অথবা আড়ালে আবডালে সঙ্গমে। চুমু সঙ্গম ছাড়া কি প্রেম? পতিতা কাছেও তো মিলে চুমু সঙ্গম? প্রিয় বন্ধু / বান্ধবী পরম মমতায়ও বুকে টেনে নেয় উদম করে নিজেকে। করে কি? শহরের অলি গলি কোথাও কোন জায়গা নাই নিঃশ্বাস নিবার। উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যায় পথের দুপাশের ছায়া বীথি। আকাশ নদী আর দেখা হয় না ঊর্ধ্বশ্বাসে পথ চলতে চলতে। মানুষ ছোটে কেবল। ছুটে চলে ছুটে চলে- কোথায় চলে সে? চুমু নিষিদ্ধ সংগম পাপ। শহরের সকল উন্মুক্ত প্রান্তর কর্পোরেট ভালবাসার থাবার অধীন। ছকে বাঁধা জীবনের ছুটে চলা সময়ের ফাঁক ফোকরে কচলানো উপকরণ প্রেম!
জীবন নগর স্টেশনে হুড়োহুড়ি হুল্লোড়। কে আগে পালাবে জীবন থেকে। এক ঘেয়ে ক্লান্তিকর জীবন থেকে। পালাতে গিয়ে আরও বেশি আটকে যায়, জড়িয়ে যায়। ঝিনুক হ্রদ ভরাট হয় কর্পোরেট বিকিকিনির মুনাফায়। জিডিপি বাড়ে। খরচ বাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে। জীবন শুকিয়ে যায়। কাবেরী নগরে গোলাপ বাগানে গোলাপ উৎপন্ন হয় মানুষের হৃদয় ছিঁড়ে। প্রেমহীন কর্পোরেট মানুষ ছুটে চলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায়। ভালবাসা-হীন সভ্য নগরে লাশের পাহাড় জমে প্রতিদিন। ফুল না থাকলে যেমন বাগানের সার্থকতা মেলে না ঠিক তেমনি হতাশা, নিরাশা, বেঁচে থাকার ক্লান্তিকর যুদ্ধের শহরে প্রতিদিন লাশ না পড়লে আত্মহত্যা না করলে তা হয়ে ওঠে না শহর।
মানুষের এই নিত্য দিনের খুন হওয়ার সাথে আপোষ করে তালে তাল মিলিয়ে কুচকাওয়াজ তোলে মিডিয়া। মিডিয়া মাফিয়া হাতে হাতে হাত মিলায়।
প্রকৃতি। শব্দটার সাথে কি ‘আমি’ যুক্ত? ‘আমি’ বিযুক্ত কি প্রকৃতি? মানুষ প্রকৃতিকে জয় করতে চেয়েছে নাকি প্রকৃতিকে বশীভূত করতে লড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রকৃতির সাথে খাপ খাইয়ে নিজের বিকাশ নিশ্চিত করতে গিয়ে মানুষ কি গ্রাস করছে প্রকৃতি? যুদ্ধে জড়িয়ে পরছে? মানুষ না থাকলে কি প্রকৃতি থাকবে? হয়তো থাকবে কারন মানুষের দেয়া নাম প্রকৃতি। সে কখনও নিজেকে প্রকৃতির সাথে বিচ্ছিন্ন করে অনেক অনেক উপর থেকে দেখে নিতে চাইছে প্রকৃতিকে। পরাজিত করতে চাইছে ‘মানুষ’ বিহীন প্রকৃতিকে। নিজেকে প্রকৃতির অংশ না ভেবে ভাবছে প্রকৃতির প্রতিদ্বন্দ্বী।
অদ্ভুতুড়ে, আজগুবি, অবিশ্বাস্য, লোমহর্ষক এবং গাঁজাখুরি কল্পনা বিলাসে বয়ান করে এগিয়ে চলে হাসান মাহবুবের বেড়ালতমা। বিড়ালের মত পায়ে পায়ে গায়ে গা ঘেঁসে। গায়ের সাথে লেপটে থেকে প্রেমময় জীবনেরই বয়ান করে। প্রেমহীন মানুষ প্রকৃতি বিচ্ছিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধির মানুষ না হয়ে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় বিচ্যুতি গুলি। কোন সমাধান এর স্বপ্ন না দেখিয়ে কারন পষ্ট উচ্চারণে জানিয়ে দেয় স্বপ্ন দেখা বারণ। মুক্তচিন্তা নিষিদ্ধ এই জনপদে। লেখকের চমৎকার উপস্থাপনায় মুগ্ধ আমি ।
উপন্যাসের শেষ অংশের প্রকৃতির বর্ণনা নিশ্চিত করে দোজখ বেহেস্তের মাঝ খানের সেই নো ম্যান্স ল্যান্ড আমারই সেই স্বদেশ ভূমি বাংলাদেশ কে।
সে তবু সন্ধ্যায় আজ আলো জ্বালে / শিশুর সবুজ জন্ম তুলে নেয় কোলে / হত্যা হীরা ভস্ম হয় তবু কুমারের চাকা ঘোরে - - -
সীসার বাতাস পূর্ণ শহর বিশ্বের সব চেয়ে দূষিত শহরে আবারও ফিরে আসে। ফুল পাখি প্রেম ময় নতুন বাস যোগ্য শহরের কল্পনা করে। দিন শেষে আবারও পুনর্জন্ম প্রত্যাশা করে এই পৃথিবীতে প্রকৃতির কোলে প্রকৃতির অংশ হয়ে। মানব-মানবী প্রেমময় জীবন প্রত্যাশা করে। সঙ্গমে স্বপ্ন বোনে নিজের উত্তরাধিকারের। তাই তো চেরেনোবিলে হয়ে ওঠে বাগান আপন মনে গেয়ে ওঠে-
Goodbye papa it’s hard to die
When all the birds are singing in the sky”

লিখেছেন আদিল এ হোসাইন।

আমার তৃতীয় উপন্যাস বেড়ালতমা কিনতে পারেন বইমেলার পেন্ডুলামের স্টল থেকে। স্টল নাম্বার ৪৪৮
অথবা রকমারির এই লিংক থেকে- https://www.rokomari.com/book/212423/beraltoma
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×