বুয়েটে আবরার ফাহাদের মৃত্যুতে পুরো বাংলাদেশ নড়ে চড়ে উঠেছিলো। সিসিটিভি ফুটেজে মৃত আবরারকে বহন করে নিয়ে আসার দৃশ্য দেখে সবাই শিউরে উঠেছিলো।
ঠিক একইরকম একটা ঘটেছে ঢাকা থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দূরের আরেকটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। একই গোত্র এই কাজটি করেছে। শুধু পার্থক্য, আবরারকে শারীরিক আঘাত করে মেরে ফেলা হয়েছিলো, আর কুয়েটের অধ্যাপক সেলিম রহমানকে মানসিক অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনারও সিসিটিভি ফুটেজ আছে। সেখানে দেখা যাবে প্রায় চল্লিশজন ছাত্র সেলিম রহমানকে ঘিরে ধরে জোর করে রুমে ঢোকাচ্ছে। ভেতরে কী হয়েছে তার ফুটেজ নেই। কিন্তু অপ্রীতিকর কিছু হয়েছে এটা নিশ্চিত। নইলে সুস্থ-সবল একজন মানুষ বাসায় ফিরে হঠাৎ হার্ট এ্যাটাক করবে কেন? হ্যাঁ, ভীষণ অপমান আর লাঞ্চনার জেরে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সেলিমের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজে যাদের দেখা গেছে সবাই না কি ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগের চেনামুখ। তারা এখন আবার কুয়েটের ছাত্রদের পোস্টে কমেন্ট করে হুমকিও দিচ্ছে। সেলিমের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব ছিলো হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগ নিয়ে। সেলিম লালন শাহ হলের প্রভোস্ট ছিলো। সে ডাইনিংয়ের মান উন্নয়ন করতে চেয়েছিলো। এটা নিয়েই তার সাথে ছাত্রলীগের দ্বন্দ্ব। এরকম লোভনীয় একটা পদ তাদের ইচ্ছামত দেয়া হবে না এটা কি মানা যায়?
ক্যাম্পাস তো তাদেরই! দুইদিন পরপর এখন একটা বাজে ঘটনা ঘটে। আর তাদের আস্কারা দেয় লাল নীল রঙের প্রশাসন! এই কদিন আগেই ফুটবল খেলার সময় বাবার বয়সী একজন রেফারিকে লাথি মেরে বুকের পাঁজর ভেঙে দেয়া হলো। তার কয়েকদিন পরে দলবদ্ধভাবে একজন মেয়েকে অনলাইনে হ্যারাজ করা হলো। আর কালকে যা ঘটলো, তা তো অকল্পনীয়! একজন শিক্ষককে মানসিক অত্যাচার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া, কোন ধরণের জানোয়ারেরা এটা করতে পারে!
কুয়েট এখন অনেক সুন্দর, অনেক আধুনিক, অনেক সুন্দর সুন্দর স্থাপনা, রাতের কুয়েট নাকি এক আলো ঝলমলে এক দর্শনীয় জায়গা! এই আলো আর শান শওকতের মধ্যে দিয়ে যে অন্ধকারের কীটগুলো সাম্রাজ্য বানিয়ে বসেছে, কুয়েটে আপনার সন্তানকে পাঠানোর আগে সেই কথাও একটু ভাইবেন, ঠিক আছে?
কাফনের কাপড় রেডি রাইখেন জরুরী প্রয়োজনের জন্যে। এখানে ইদানিং অদ্ভুতভাবে মৃত্যু ঘটছে।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ৯:৪৪