somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

*হাইতি * লাতিন আমেরিকার প্রথম স্বাধীন দেশ

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'হাইতি' লাতিন আমেরিকার প্রথম স্বাধীন দেশ। এর সাংবিধানিক নাম 'রিপাবলিক অফ হাইতি'। 'পোর্ট-অফ-প্রিন্স' দেশটির রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এর রাষ্ট্রীয় ভাষা ফারসি ও হাইতিয়ান ক্রিওল। এই দেশের জহনগণ 'হাইতিয়ান' নামেই সমধিক পরিচিত।

১৮০৪ সালের পহেলা জানুয়ারি ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে দেশটি। দেশের মোট আয়তন ২৭,৭৫০ বর্গকিলোমিটার। মোট জনসংখ্যা প্রায়১কোটি ৬লক্ষ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩৫০ জন। মোট জনসংখ্যার ৯৫ভাগই কৃষ্ণাঙ্গ। আর বাকী ৫ ভাগ শ্বেতাঙ্গ।


দেশটির আইনসভা দুইকক্ষ বিশিষ্ট। উচ্চকক্ষের নাম 'সিনেট' এবং নিম্নকক্ষের নাম 'চেম্বার অব ডিউটিস'।

স্পেনীয় অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস যেইদিন হাইতির মাটিতে পা ফেললেন ঐ দিন থেকেই এর দুঃখ-দুর্দশার সূত্রপাত। প্রথমে স্পেনীয়রা এবং পরবর্তীতে ফরাসিরা দেশটিতে উপনিবেশ স্থাপন করে। শাসকরা সোনাসহ মূল্যবান সব খনিজসম্পদ ইউরোপে পাচার করে দেয়। অরণ্যবেষ্টিত দেশটির বন-জঙ্গল উজাড় করে দিতে থাকে।

ইউরোপীদের নিয়ে আসা রোগ ও মহামারিতে মৃত্যু হয় অজস্র মানুষের। এরপর আফ্রিকা থেকে আট লক্ষ দাস ধরে নিয়ে এসে জোরপূর্বক কাজ করাতে বাধ্য করে। কিন্তু হাইতিবাসী মাথা নত করেনি অন্যায়ের কাছে। হাইতি পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখান দাসবিদ্রোহ জয়লাভ করেছিল


হাইতির জন্মলগ্ন থেকেই দেশটি মার্কিন আগ্রাসনের শিকারে পরিণত হয়েছে। ১৯১১ সালে হাইতির একমাত্র কেন্দ্রীয়
বাণিজ্যিক ব্যাংক ও সরকারি
কোষাগার এবং ১৯১৬ সালে ঋণের
অজুহাতে গোটা দেশটিই দখল করে
নেয় আমেরিকা। ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত এই
নৃশংস দখলদারি কায়েম থাকে।
দখলাধীন ইরাকের কায়দায় মেরিন
সেনারা দেশটিতে পুতুল সরকার ও
মার্কিনপসন্দ সংবিধান প্রতিষ্ঠা করে।
ওই সংবিধানে হাইতির ভূমি
বিদেশিদের মালিকানায় দেওয়ার
বিধান রাখা হয়। কিন্তু হাইতির সংসদ
এটা পাস করতে রাজি না হওয়ায়
সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। অধিকাংশ
হাইতিয়ানকে প্রায় দাসত্বের মধ্যে
কাজ করতে হয় মার্কিন মালিকানার
চিনি ও কফির খামারগুলোতে। কৃষি
উৎপাদন থেকে সরিয়ে তাদের নিয়ে
আসা হয় রপ্তানিমুখী অর্থনীতিতে।
এভাবে মার্কিন রাজনৈতিক, সামরিক
ও অর্থনৈতিক আগ্রাসনে হাইতি
নিঃশেষ হয়ে যায়।
হাইতির জনগণ যতবার বিদ্রোহ করেছে,
ততবারই মার্কিন মদদপুষ্ট সেনা
অভ্যুত্থান কিংবা সরাসরি মার্কিন
সেনা দিয়ে তা দমন করা হয়। বারবার
উচ্ছেদ করা হয় নির্বাচিত সরকারকে।
১৯৫৭-১৯৮৭ পর্যন্ত চলে স্বৈরশাসন। ১৯৮৭
সালের গণ-আন্দোলনে তার পতন ঘটে।
এরপর থেকে একবার সামরিক শাসন,
তারপর তিন-চার মাসের নির্বাচিত
সরকার_ এভাবেই চলছে হাইতি। ১৯৯০ এর
পর প্রতিটি নির্বাচনে জনপ্রিয়
লাভালাস আন্দোলন জয়ী হলেও সরকার
চালাতে দেওয়া হয়নি। শেষ
নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট
অ্যারিস্টিডকে মার্কিন মদদে উচ্ছেদ
করে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
চিলে’র পর হাইতি, হন্ডুরাসের
নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ এবং
ভেনেজুয়েলা ও বলিভিয়ার
সরকারকে অস্থিতিশীল করবার চেষ্টা
প্রমাণ করে নির্বাচন নিচের তলার
মানুষের মতায়নের লড়াইয়ের শেষ মঞ্চ
নয়, বরং প্রথম মঞ্চ হতে পারে।
সবখানেই, তৃণমূল সামাজিক সংগঠনকে
প্রতিরোধ করতে হয়েছে সেনা-
মিলিশিয়া-গুন্ডা বাহিনীকে। এসব
দেশের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে,
রাজনৈতিক এলিটদের পাশাপাশি
সেনাবাহিনী, ব্যবসায়ি গোষ্ঠী
এবং আমলাতন্ত্র আজকের দুনিয়ায়
বৈশ্বিক পুঁজি তথা সাম্রাজ্যবাদের
সঙ্গে এমন জৈব সম্পর্কে যুক্ত যে, তারা
আর জাতীয় নয়, তারা দেখে
সাম্রাজ্যেরই স্বার্থ।


তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, বাংলাপিডিয়া,বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×