somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

* ইয়েমেন সংকট *

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনে চলছে যুদ্ধ। শুরুতে গৃহযুদ্ধ হিসাবে বিবেচিত হলেও বর্তমানে এটি একটি নতুন রূপ লাভ করেছে। বিশেষ করে সৌদি আরবের নেতৃত্বে ১০টি রাষ্ট্রের একটি জোট ইয়েমেনের বৈধ সরকারের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেছে। এই অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে দরিদ্র কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র চরম সংকটে পতিত হয়েছে।এই সংকটের একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।

১৯৬৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর উত্তর ও দক্ষিণ ইয়েমেন নামক ২টি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইয়েমেনিদের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তারর সূত্রপাত ঘটে। উত্তর ইয়েমেন ও দক্ষিণ ইয়েমেনের ঐতিহাসিক বিভক্তি থেকেই রাষ্ট্রটি অস্থিথিশীল হিসাবে পরিগণিত। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব। মুসলিম বিশ্বে শিয়া-সুন্নী বিরোধ কারও অজানা নয়। কিন্তু ইয়েমেনে এই বিরোধ ভয়ংকর রূপ ধারণ করে আছে। যে কারণে কোন সরকার সফলভাবে দেশ পরিচালনা করতে পারছে না। গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে গৃহযুদ্ধের বিষয়টি ছাড়াও ইয়েমেন অর্থনৈতিকভাবে এই অঞ্চলে পশ্চাৎপদ রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচিত। দেশটির প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো যখন ব্যাপক অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ইয়েমেন তখন ক্রমাগত দারিদ্রের কবলে নিমজ্জিত। অথচ সাড়ে পাচঁ লক্ষ বর্গকিলোমিটার আয়তনে আড়াই কোটি মানুষ দেশটিতে বসবাস করে। 'এডেন' এর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দর রয়েছে। যে বন্দর দিয়ে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার চলাচল করে।

অভ্যন্তরীণ বাস্তবতারর আরেকটি দিক হচ্ছে দুর্বল শাসন ব্যবস্থা। ১৯৯০ সালে দুই ইয়েমেন একত্রিত হলেও ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়। রাজনৈতিকভাবে সব সময়ই উত্তর-দক্ষিণ বিরোধ লেগে আছে। বর্তমান বাস্তবতায় বহিঃশক্তির হস্তক্ষেপের ফলে ইয়েমেন সংকটটিকে এক ধরনের প্রক্সি যুদ্ধ বলা যায়। একদিকে ইরান সমর্থিত শিয়া বিদ্রোহী গোষ্ঠী, অন্যদিকে সৌদি আরবসহ সুন্নি রাষ্ট্রসমূহের সমর্থনপুষ্ট ইয়েমেন সরকার। তাছাড়া যখনই ইয়েমেনে রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে, তখনই সৌদি আরব ইরানসহ বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত হয়েছে।


আমরা যেমন ইয়েমেনে দৃশ্যত সুন্নি সরকার ও হুতি বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধ দেখছি পাশাপাশি দুটি ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী সামরিক দিক থেকে সক্রিয় হয়েছে এবং তাদের স্বার্থ ভিন্ন। ফলে এই সংকটে আইএস (ইসলামিক স্টেটস) চাচ্ছে তাদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে অন্যদিকে একাপ (আল কায়দা ইন দা এরাবিয়ান পেনিনসুলা) চাচ্ছে তাদের প্রভাব বলয় সৃষ্টি করতে। হুতি বিদ্রোহীরা চাচ্ছে শিয়াদের আধিপত্য প্রতিষ্টা করতে। অন্যদিকে সুন্নিগোষ্ঠী হাদী সরকারের অবস্থানকে চাচ্ছে আরও সুদৃঢ় করতে। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, পশ্চিমা বিশ্ব চাচ্ছে ইয়েমেনে তাদের ভূ-রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্বার্থ বজায় রাখতে। এক্ষেত্রে সৌদি আরব কিংবা আরব লীগ তাদের প্রক্সি হিসাবে কাজ করছে। ফলে দেখা যাচ্ছে ইয়েমেন রাষ্ট্রটি গভীর থেকে গভীরতর সামরিক সংকটে নিপতিত হচ্ছে। এই সংকট থেকে বের হওয়া কঠিন একটি চ্যালেঞ্জ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×